করোনার আতঙ্কে যখন সবাই গৃহকোণে

এগিয়ে আসেন স্বপ্নবাজ যুবক সাজ্জাদ চট্টগ্রামে গড়ে তোলেন ১০০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার

চট্টগ্রামে করোনার ভয়ে সবাই যখন নিজেকে গুটিয়ে রেখেছে চার দেয়ালের মধ্যে, তখন অন্যদের মতো এগিয়ে আসেন স্বপ্নবাজ এক যুবক। চট্টগ্রামে করোনার প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালগুলো রোগী ভর্তি না নেয়ার ঘটনা ছিল নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়। তখন বেসরকারি হাসপাতালগুলো করোনা রোগী তো দূরের কথা সাধারণ শ্বাসকষ্টের রোগীকেও ভর্তি নিত না। এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ছুটতে ছুটতে পথেই মারা যেত অনেক রোগী। চট্টগ্রামে চিকিৎসা ব্যবস্থার এমন করুণ অবস্থায় এগিয়ে আসেন স্বপ্নবাজ যুবক মোহাম্মদ সাজ্জাত হোসেন। কিছু যুবককে সঙ্গে নিয়ে গড়ে তুলেন ১০০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার। যা এক পর্যায়ে রূপ নেয় পরিপূর্ণ ট্রিটমেন্ট সেন্টারে। গতকাল পর্যন্ত এ সেন্টারে ২২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে।

জানা গেছে, ১২ জন ডাক্তার, ৭ জন নার্স ও ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে নগরীর হালিশহরের কিং অব চিটাগং নামক কমিউনিটি হলে যাত্রা শুরু করে এই আইসোলেশন সেন্টার। এখান থেকে গত রাত পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫২৬ জন রোগী। যাদের অধিকাংশই কোভিড রোগী। তাদের খাওয়া, থাকা, চিকিৎসা ও ওষুধ সবকিছুই দেয়া হচ্ছে বিনামূল্যে। বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি পর্যায়ের অনুদানে পরিচালিত এই আইসোলেশন সেন্টারে বর্তমানে রয়েছে করোনার নমুনা সংগ্রহের বুথ, এক্স-রে মেশিন, সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম, হাই ফ্লো ন্যাজল ক্যানোলাসহ করোনা চিকিৎসার বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি।

করোনা আইসোলেশন সেন্টার চট্টগ্রামের প্রধান উদ্যোক্তা সাজ্জাত হোসেনের বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়ায়। বর্তমানে সে ব্যবসার পাশাপাশি যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ছাত্রজীবনে ছিলেন তুখোর ছাত্রনেতা। ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন তিনি। ছাত্রাবস্থা থেকেই মানুষের জন্য কাজ করা তার নেশায় পরিণত হয়। তাই তো করোনার ভয়ে সবাই যখন নিজেকে গুটিয়ে রেখেছে চার দেয়ালের মধ্যে, তখন তিনি করোনা রোগীদের সেবায় গড়ে তুলেছেন আইসোলেশন সেন্টার। দিনরাত সেবা দিয়ে সুস্থ করে তুলেছেন শত শত করোনা রোগী। এদিকে করোনা রোগীদের সংস্পর্শে এসে তাদের দেখাশোনা, সেবা ও খোঁজ-খবর নিতে গিয়ে আইসোলেশন সেন্টার চালু হওয়ার মাসখানেক পর ২১ জুলাই সাজ্জাত নিজেই করোনায় আক্রান্ত হয়। এক পর্যায়ে তার অবস্থা বেশি খারাপ হয়ে যায়। ৯ দিন জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসা নিতে হয়।

সাজ্জাত হোসেন বলেন, রোজায় আমার ছোট ভাই করোনায় আক্রান্ত হয়। সে চট্টগ্রামের পাঁচ তারকা হোটেল রেডিসন ব্লুতে কর্মরত। তার চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল ছুটতে থাকি। কিন্তু কেউ ভর্তি নিচ্ছে না। পরবর্তীতে তার অফিস থেকে সিএসসিআর হাসপাতালে কল করলে তাকে ভর্তি নেয়। তখন আমার মাথায় এলো আমার ভাই বড় প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে বলে ভর্তি হতে পারছে। কিন্তু প্রতিদিন অসংখ্য রোগী ভর্তি না নেয়ার খবর আসে, সামান্য অক্সিজেনের অভাবে রোগী মারা যাচ্ছে তাদের কী হবে? এসব বিষয় চিন্তা করে ঈদের আগের দিন আমি ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিই। যার সারমর্ম হলো, আমি একটা আইসোলেশন সেন্টার করতে চাই। আমার সঙ্গে কারা সারথী হতে চান? যারা সারথী হতে চান হাত তুলুন। এরপর আমি আওয়ামী উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন ভাইয়ের সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করি। উনি বললেন এটা খুব ভালো উদ্যোগ। তুমি করো, আমি আমার জায়গা থেকে যতটুকু পারি সহযোগিতা করবো। এরপর অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুম চৌধুরীও সমর্থন করলেন। তিনি কয়েকটা জায়গার কথাও বললেন। এরপর আমার সঙ্গে অনেকেই যোগাযোগ করলেন। পরে আইসোলেশন সেন্টার কমিউনিটি হলে করবো বলে সিদ্ধান্ত। এরপর আমরা সাতকানিয়ার আবু ভাই থেকে কিং অব চিটাগংটা আইসোলেশন সেন্টারের জন্য নির্ধারণ করি। এসব কিছু হলো ঈদের দুই-তিনদিনের মধ্যেই।

তিনি বলেন, হালিশহর কিং অব চিটাগংয়ে আইসোলেশন সেন্টার হচ্ছে শুনেই তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে স্থানীয়রা। তারা কোনমতেই এখানে আইসোলেশন সেন্টার করতে দিবে না। তারা কমিউনিটি হলের মালিক আবু ভাইয়ের সঙ্গে রাগারাগি শুরু করেন। তখন তিনি বললেন আমার পক্ষ থেকে তো কোন বাধা নেই, কিন্তু স্থানীয়রা তো ঝামেলা করেতেছে। এরপর আমি তাদের সঙ্গে কথা বললাম। তারা তাদের কথায় অনড়, এখানে কোন আইসোলেশন সেন্টার হতে দিবে না। পরে আমরা পুলিশ কমিশনার, ডিসি ফারুক সাহের, জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জনকে জানালাম। পরবর্তীতে পুলিশ কমিশনারের হন্তক্ষেপে বিষয়টি সুরাহা হয়।

সাজ্জাত বলেন, স্থান নির্ধারণের পর চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নেতা জাওইদ আলী চৌধুরী, জাফর আল তানিয়ার, অ্যাডভোকেট টি.আর খাঁন, সুমনসহ আমার সঙ্গে যারা থাকতে আগ্রহী বলে যোগাযোগ করছিল তাদের নিয়ে একটা মিটিং করি। প্রথম দিকে ডাক্তার নার্স পাচ্ছিলাম না। পরে আমার চমেকের আমার কিছু বন্ধুর মাধ্যমে ১২ জন ডাক্তার ঠিক করলাম। এরপর আরেকটা মিটিং আহ্বান করি। এ সময় নুরুল আজিম রনি বলল সে আমাদের সাথে থাকতে চায়। এরপর অ্যাডভোকেট জিনাত সোহানাকে নিয়ে আসলো রণি। প্রথম তিনি তিনটা বেড দিলেন। এরপর আমরা বসে কিছু পরিকল্পনা করলাম। আইসোলেশন সেন্টার চালু হওয়ার কিছুদিন পর আমরা ১৩ সদস্যের একটা পরিচালনা পর্ষদ গঠন করি। এর মাধ্যমেই সব পরিচালিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, সবকিছু ঠিকঠাক করার পর আমরা ১৩ জুন ১২ জন ডাক্তার, ৭ জন নার্স ও ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে আইসোলেশ সেন্টারের যাত্রা শুরু করি। এরপর থেকে বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার করোনা ও করোনা উপসর্গের রোগী আসতে শুরু করে। আমরা বিনামূল্যে তাদের চিকিৎসা, খাওয়া ও ঔষধ সরবারহ করি। ধীরে ধীরে এটা চট্টগ্রামের করোনা রোগীদের আস্থার শীর্ষে

একটি আইসোলেশন সেন্টার ধরতে গেলে একটা হাসপাতালের মতোই। এখানে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা সরঞ্জামের প্রয়োজন আছে। বিভিন্ন ধরনের খরচ আছে। এসব খরচের যোগান দিতে কিছু ব্যক্তি আর কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসে। বলা যায় এটি একটি অনুদান নির্ভর প্রতিষ্ঠান। আমাদের তিনজনের স্বাক্ষরে একটা ব্যাংক একাউন্ট আছে। সেখান থেকে ডাক্তার, নার্সদের বেতনসহ আনুষাঙ্গিক খরচ করা হয়।

শনিবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৫ মহররম ১৪৪২, ১৯ ভাদ্র ১৪২৭

করোনার আতঙ্কে যখন সবাই গৃহকোণে

এগিয়ে আসেন স্বপ্নবাজ যুবক সাজ্জাদ চট্টগ্রামে গড়ে তোলেন ১০০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার

চট্টগ্রাম ব্যুরো

image

চট্টগ্রামে করোনার ভয়ে সবাই যখন নিজেকে গুটিয়ে রেখেছে চার দেয়ালের মধ্যে, তখন অন্যদের মতো এগিয়ে আসেন স্বপ্নবাজ এক যুবক। চট্টগ্রামে করোনার প্রকোপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালগুলো রোগী ভর্তি না নেয়ার ঘটনা ছিল নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়। তখন বেসরকারি হাসপাতালগুলো করোনা রোগী তো দূরের কথা সাধারণ শ্বাসকষ্টের রোগীকেও ভর্তি নিত না। এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ছুটতে ছুটতে পথেই মারা যেত অনেক রোগী। চট্টগ্রামে চিকিৎসা ব্যবস্থার এমন করুণ অবস্থায় এগিয়ে আসেন স্বপ্নবাজ যুবক মোহাম্মদ সাজ্জাত হোসেন। কিছু যুবককে সঙ্গে নিয়ে গড়ে তুলেন ১০০ শয্যার আইসোলেশন সেন্টার। যা এক পর্যায়ে রূপ নেয় পরিপূর্ণ ট্রিটমেন্ট সেন্টারে। গতকাল পর্যন্ত এ সেন্টারে ২২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে।

জানা গেছে, ১২ জন ডাক্তার, ৭ জন নার্স ও ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে নগরীর হালিশহরের কিং অব চিটাগং নামক কমিউনিটি হলে যাত্রা শুরু করে এই আইসোলেশন সেন্টার। এখান থেকে গত রাত পর্যন্ত চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫২৬ জন রোগী। যাদের অধিকাংশই কোভিড রোগী। তাদের খাওয়া, থাকা, চিকিৎসা ও ওষুধ সবকিছুই দেয়া হচ্ছে বিনামূল্যে। বড় বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি পর্যায়ের অনুদানে পরিচালিত এই আইসোলেশন সেন্টারে বর্তমানে রয়েছে করোনার নমুনা সংগ্রহের বুথ, এক্স-রে মেশিন, সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম, হাই ফ্লো ন্যাজল ক্যানোলাসহ করোনা চিকিৎসার বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রপাতি।

করোনা আইসোলেশন সেন্টার চট্টগ্রামের প্রধান উদ্যোক্তা সাজ্জাত হোসেনের বাড়ি চট্টগ্রামের পটিয়ায়। বর্তমানে সে ব্যবসার পাশাপাশি যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ছাত্রজীবনে ছিলেন তুখোর ছাত্রনেতা। ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন তিনি। ছাত্রাবস্থা থেকেই মানুষের জন্য কাজ করা তার নেশায় পরিণত হয়। তাই তো করোনার ভয়ে সবাই যখন নিজেকে গুটিয়ে রেখেছে চার দেয়ালের মধ্যে, তখন তিনি করোনা রোগীদের সেবায় গড়ে তুলেছেন আইসোলেশন সেন্টার। দিনরাত সেবা দিয়ে সুস্থ করে তুলেছেন শত শত করোনা রোগী। এদিকে করোনা রোগীদের সংস্পর্শে এসে তাদের দেখাশোনা, সেবা ও খোঁজ-খবর নিতে গিয়ে আইসোলেশন সেন্টার চালু হওয়ার মাসখানেক পর ২১ জুলাই সাজ্জাত নিজেই করোনায় আক্রান্ত হয়। এক পর্যায়ে তার অবস্থা বেশি খারাপ হয়ে যায়। ৯ দিন জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসা নিতে হয়।

সাজ্জাত হোসেন বলেন, রোজায় আমার ছোট ভাই করোনায় আক্রান্ত হয়। সে চট্টগ্রামের পাঁচ তারকা হোটেল রেডিসন ব্লুতে কর্মরত। তার চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল থেকে হাসপাতাল ছুটতে থাকি। কিন্তু কেউ ভর্তি নিচ্ছে না। পরবর্তীতে তার অফিস থেকে সিএসসিআর হাসপাতালে কল করলে তাকে ভর্তি নেয়। তখন আমার মাথায় এলো আমার ভাই বড় প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে বলে ভর্তি হতে পারছে। কিন্তু প্রতিদিন অসংখ্য রোগী ভর্তি না নেয়ার খবর আসে, সামান্য অক্সিজেনের অভাবে রোগী মারা যাচ্ছে তাদের কী হবে? এসব বিষয় চিন্তা করে ঈদের আগের দিন আমি ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিই। যার সারমর্ম হলো, আমি একটা আইসোলেশন সেন্টার করতে চাই। আমার সঙ্গে কারা সারথী হতে চান? যারা সারথী হতে চান হাত তুলুন। এরপর আমি আওয়ামী উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন ভাইয়ের সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করি। উনি বললেন এটা খুব ভালো উদ্যোগ। তুমি করো, আমি আমার জায়গা থেকে যতটুকু পারি সহযোগিতা করবো। এরপর অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুম চৌধুরীও সমর্থন করলেন। তিনি কয়েকটা জায়গার কথাও বললেন। এরপর আমার সঙ্গে অনেকেই যোগাযোগ করলেন। পরে আইসোলেশন সেন্টার কমিউনিটি হলে করবো বলে সিদ্ধান্ত। এরপর আমরা সাতকানিয়ার আবু ভাই থেকে কিং অব চিটাগংটা আইসোলেশন সেন্টারের জন্য নির্ধারণ করি। এসব কিছু হলো ঈদের দুই-তিনদিনের মধ্যেই।

তিনি বলেন, হালিশহর কিং অব চিটাগংয়ে আইসোলেশন সেন্টার হচ্ছে শুনেই তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে স্থানীয়রা। তারা কোনমতেই এখানে আইসোলেশন সেন্টার করতে দিবে না। তারা কমিউনিটি হলের মালিক আবু ভাইয়ের সঙ্গে রাগারাগি শুরু করেন। তখন তিনি বললেন আমার পক্ষ থেকে তো কোন বাধা নেই, কিন্তু স্থানীয়রা তো ঝামেলা করেতেছে। এরপর আমি তাদের সঙ্গে কথা বললাম। তারা তাদের কথায় অনড়, এখানে কোন আইসোলেশন সেন্টার হতে দিবে না। পরে আমরা পুলিশ কমিশনার, ডিসি ফারুক সাহের, জেলা প্রশাসক, সিভিল সার্জনকে জানালাম। পরবর্তীতে পুলিশ কমিশনারের হন্তক্ষেপে বিষয়টি সুরাহা হয়।

সাজ্জাত বলেন, স্থান নির্ধারণের পর চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নেতা জাওইদ আলী চৌধুরী, জাফর আল তানিয়ার, অ্যাডভোকেট টি.আর খাঁন, সুমনসহ আমার সঙ্গে যারা থাকতে আগ্রহী বলে যোগাযোগ করছিল তাদের নিয়ে একটা মিটিং করি। প্রথম দিকে ডাক্তার নার্স পাচ্ছিলাম না। পরে আমার চমেকের আমার কিছু বন্ধুর মাধ্যমে ১২ জন ডাক্তার ঠিক করলাম। এরপর আরেকটা মিটিং আহ্বান করি। এ সময় নুরুল আজিম রনি বলল সে আমাদের সাথে থাকতে চায়। এরপর অ্যাডভোকেট জিনাত সোহানাকে নিয়ে আসলো রণি। প্রথম তিনি তিনটা বেড দিলেন। এরপর আমরা বসে কিছু পরিকল্পনা করলাম। আইসোলেশন সেন্টার চালু হওয়ার কিছুদিন পর আমরা ১৩ সদস্যের একটা পরিচালনা পর্ষদ গঠন করি। এর মাধ্যমেই সব পরিচালিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, সবকিছু ঠিকঠাক করার পর আমরা ১৩ জুন ১২ জন ডাক্তার, ৭ জন নার্স ও ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে আইসোলেশ সেন্টারের যাত্রা শুরু করি। এরপর থেকে বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার করোনা ও করোনা উপসর্গের রোগী আসতে শুরু করে। আমরা বিনামূল্যে তাদের চিকিৎসা, খাওয়া ও ঔষধ সরবারহ করি। ধীরে ধীরে এটা চট্টগ্রামের করোনা রোগীদের আস্থার শীর্ষে

একটি আইসোলেশন সেন্টার ধরতে গেলে একটা হাসপাতালের মতোই। এখানে বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা সরঞ্জামের প্রয়োজন আছে। বিভিন্ন ধরনের খরচ আছে। এসব খরচের যোগান দিতে কিছু ব্যক্তি আর কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠান এগিয়ে আসে। বলা যায় এটি একটি অনুদান নির্ভর প্রতিষ্ঠান। আমাদের তিনজনের স্বাক্ষরে একটা ব্যাংক একাউন্ট আছে। সেখান থেকে ডাক্তার, নার্সদের বেতনসহ আনুষাঙ্গিক খরচ করা হয়।