বরিশাল-ঢাকা নৌপথে সংক্ষিপ্ত মিয়ারচর চ্যানেল অকেজো হয়ে আছে

নাব্যতা সংকটের সঙ্গে উজানের ঢলের প্রবল স্রোতে পায়রা, মোংলা ও বরিশাল বন্দরসহ সমগ্র দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকাসহ উত্তরবঙ্গের সংক্ষিপ্ত নৌপথ মিয়ারচর চ্যানেলটি মাসাধিক সময় ধরে বন্ধ। ফলে প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের শত শত নৌযানকে প্রায় ৩০ কিলোমিটর পথ ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে যাত্রীবাহী নৌযানসহ সবধরনের নৌযানেরই পরিচালন ব্যয় বেড়েছে ও সময় বেড়েছে দেড় থেকে দু’ঘণ্টা। ফলে যাত্রীদের ভোগান্তির সঙ্গে বাড়ছে জ্বালানি ব্যয়ও। অতিরিক্ত জ্বালানি ব্যায় করেও বেশিরভাগ নৌযানই সময়মত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না।

বিআইডব্লিউটিএ গত ৫ আগস্ট নৌ-সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে ‘ঢাকা-চাঁদপুর-বরিশাল’ নৌপথের মিয়ারচর ড্রেজিং খাড়িতে ৮ ফুট পানির গভীরতা পাওয়া গেলেও চলমান বন্যায় ও প্রবল স্রোতের কারণে উজান থেকে নেমে আসা পলি জমা হয়ে পানির গভীরতা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে বলে জানায়। কর্তৃপক্ষ বর্তমানে পূর্ণ ভাটার সময় মিয়ারচরের কিছু কিছু এলাকায় ৬ ফুট পানির গভীরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে বলে জানিয়ে, অনধিক ৮ ফুট গভীরতার নৌযানকে হিজলা-শৌলা-চরপ্রকাশ-লক্ষ্মীরচর চ্যানেল ব্যবহারের পরামর্শ প্রদান করে। পাশাপাশি ৮ ফুটের অধিক গভীরতার নৌযানগুলোকে কালিগঞ্জ-উলানিয়া-ইলিশা-চাঁদপুর হয়ে চলাচলের নির্দেশনা জারি করে। বরিশাল-মিয়ারচর-চাঁদপুর নৌপথের মিয়ারচর এলাকাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবেই বিবেচিত হয়ে আসছে নৌযানের চালকদের কাছে। ওই চ্যানেলটি ব্যবহার করে দক্ষিণাঞ্চল থেকে চাঁদপুর ও ঢাকাসহ উত্তরবঙ্গের নৌ-যোগাযোগ সহজতর বিধায় বিআইডব্লিউটিএ গত কয়েক বছরে একাধিকবার চ্যানেলটি ড্রেজিং সহ নৌ-সংকেত ব্যবস্থা পুনর্বাসন করেছে। কিন্তু উজানের অত্যাধিক বালু মিশ্রিত স্রোতের কারণে বার বারই চ্যানেলটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় নাব্য ধরে রাখা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ছে।

এরপরেও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিআইডিব্লিউটিএ বিষয়য়টি নিয়ে অনেক সমীক্ষা করে পুনরায় চ্যানেলটি চালুর লক্ষ্যে ড্রেজিং করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান সরজমিনে চ্যানেলটি পরিদর্শন করেছেন। এ লক্ষ্যে হাইড্রোগ্রাফি সার্ভেও সম্পন্ন হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ছিল। চ্যানেলটি ড্রেজিং করা শুরু থেকে তা সম্পন্ন করতে প্রায় ৩ মাস সময় লাগতে পারে বলেও জানা গেছে।

বরিশাল চেম্বারের সভাপতি ও সুন্দরবন নেভিগেশনের স্বত্বাধিকারী সাঈদুর রহমান রিন্টু অবিলম্বে মিয়ারচর চ্যানেলটির নাব্য উন্নয়নসহ দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ উত্তরবঙ্গের নৌযোগাযোগ নিরাপদ ও সহজতর করার দাবি জানিয়েছেন।

শনিবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৫ মহররম ১৪৪২, ১৯ ভাদ্র ১৪২৭

বরিশাল-ঢাকা নৌপথে সংক্ষিপ্ত মিয়ারচর চ্যানেল অকেজো হয়ে আছে

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরিশাল

নাব্যতা সংকটের সঙ্গে উজানের ঢলের প্রবল স্রোতে পায়রা, মোংলা ও বরিশাল বন্দরসহ সমগ্র দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকাসহ উত্তরবঙ্গের সংক্ষিপ্ত নৌপথ মিয়ারচর চ্যানেলটি মাসাধিক সময় ধরে বন্ধ। ফলে প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের শত শত নৌযানকে প্রায় ৩০ কিলোমিটর পথ ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে যাত্রীবাহী নৌযানসহ সবধরনের নৌযানেরই পরিচালন ব্যয় বেড়েছে ও সময় বেড়েছে দেড় থেকে দু’ঘণ্টা। ফলে যাত্রীদের ভোগান্তির সঙ্গে বাড়ছে জ্বালানি ব্যয়ও। অতিরিক্ত জ্বালানি ব্যায় করেও বেশিরভাগ নৌযানই সময়মত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না।

বিআইডব্লিউটিএ গত ৫ আগস্ট নৌ-সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তিতে ‘ঢাকা-চাঁদপুর-বরিশাল’ নৌপথের মিয়ারচর ড্রেজিং খাড়িতে ৮ ফুট পানির গভীরতা পাওয়া গেলেও চলমান বন্যায় ও প্রবল স্রোতের কারণে উজান থেকে নেমে আসা পলি জমা হয়ে পানির গভীরতা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে বলে জানায়। কর্তৃপক্ষ বর্তমানে পূর্ণ ভাটার সময় মিয়ারচরের কিছু কিছু এলাকায় ৬ ফুট পানির গভীরতা পরিলক্ষিত হচ্ছে বলে জানিয়ে, অনধিক ৮ ফুট গভীরতার নৌযানকে হিজলা-শৌলা-চরপ্রকাশ-লক্ষ্মীরচর চ্যানেল ব্যবহারের পরামর্শ প্রদান করে। পাশাপাশি ৮ ফুটের অধিক গভীরতার নৌযানগুলোকে কালিগঞ্জ-উলানিয়া-ইলিশা-চাঁদপুর হয়ে চলাচলের নির্দেশনা জারি করে। বরিশাল-মিয়ারচর-চাঁদপুর নৌপথের মিয়ারচর এলাকাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর ও ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবেই বিবেচিত হয়ে আসছে নৌযানের চালকদের কাছে। ওই চ্যানেলটি ব্যবহার করে দক্ষিণাঞ্চল থেকে চাঁদপুর ও ঢাকাসহ উত্তরবঙ্গের নৌ-যোগাযোগ সহজতর বিধায় বিআইডব্লিউটিএ গত কয়েক বছরে একাধিকবার চ্যানেলটি ড্রেজিং সহ নৌ-সংকেত ব্যবস্থা পুনর্বাসন করেছে। কিন্তু উজানের অত্যাধিক বালু মিশ্রিত স্রোতের কারণে বার বারই চ্যানেলটি ভরাট হয়ে যাওয়ায় নাব্য ধরে রাখা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ছে।

এরপরেও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিআইডিব্লিউটিএ বিষয়য়টি নিয়ে অনেক সমীক্ষা করে পুনরায় চ্যানেলটি চালুর লক্ষ্যে ড্রেজিং করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতোমধ্যে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী ও বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান সরজমিনে চ্যানেলটি পরিদর্শন করেছেন। এ লক্ষ্যে হাইড্রোগ্রাফি সার্ভেও সম্পন্ন হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে গত বৃহস্পতিবার নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ছিল। চ্যানেলটি ড্রেজিং করা শুরু থেকে তা সম্পন্ন করতে প্রায় ৩ মাস সময় লাগতে পারে বলেও জানা গেছে।

বরিশাল চেম্বারের সভাপতি ও সুন্দরবন নেভিগেশনের স্বত্বাধিকারী সাঈদুর রহমান রিন্টু অবিলম্বে মিয়ারচর চ্যানেলটির নাব্য উন্নয়নসহ দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী ঢাকাসহ উত্তরবঙ্গের নৌযোগাযোগ নিরাপদ ও সহজতর করার দাবি জানিয়েছেন।