নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শিমরাইলে মুনস্টার মার্কেটিং প্রাইভেট লিমিটেডের কারাখানায় বিশ্বের নামিদামি ব্যান্ডের বিপুল পরিমাণ নকল প্রসাধনী ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী জব্দ করেছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। গত বৃহস্পতিবার রাতে র্যাব-৩ এর গোয়েন্দা বিভাগ ও বিএসটিআই এর সহযোগিতায় র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসুর নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয়। র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, ৯০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের এসব নকল প্রসাধনী ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী উৎপাদন করে কোম্পানি গোডাউনে মজুদ করে রাখা হয় বাজারজাত করার জন্য।
নকল পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করার অভিযোগে মুনস্টার মার্কেটিং কোম্পানির মালিক বেলায়েত হোসেনসহ কাখানার ৭ কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। গ্রেফতারকৃত অন্যরা হচ্ছে- অপারেটর মঈনুল ইসলাম, মোহাগ, আমিনুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, কাওছার হোসেন, রাজিব সেরনিয়াবাত।
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু জানান, মুনস্টার কারখানার মালিক দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। অধিক মুনাফা লাভের জন্য কারখানার ভেতের মিথানল ও স্পিরিটসহ মেয়াদোত্তীর্ণ কেমিক্যাল মিশিয়ে বানানো হচ্ছে বিশ্বের বহুল পরিচিত নামিদামি ব্র্যান্ড ফগ, সিগনেচার, ব্লু লেডি, জ্যাসমিন, কোবরা, ম্যাক্সসহ বিভিন্ন নকল প্রসাধনী সামগ্রী। এছাড়া সনি ব্রাভিয়া, প্যানাসনিক, এলজি টেলিভিশন বানানো হচ্ছে। নকল এক্সেসোরিজ দিয়ে এসব নামিদামি ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী তৈরি করে দেশের বাজারে বিক্রি করে আসছে কোম্পানিটি।
পলাশ কুমার বসু আরও জানান, মুনস্টার মার্কেটিং প্রাইভেট লিমিটেড কারাখানার মালিক বেলায়েত হোসেন ২০১৭ সাল থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ কেমিক্যাল ও একটি মাত্র মেশিন দিয়ে প্রসাধনী তৈরি করে বিশ্ববিখ্যাত নামিদামি কোম্পানির লেভেল ছপিয়ে তা ছোট ছোট কন্টেইনারে সাঁটিয়ে ও রিফিল করে বাজারজাত করে আসছে। প্রসাধনীর সবচেয়ে বড় বাজার চকবাজারসহ দেশের বিভিন্ন ছোট-বড় শপিংমলের প্রসাধনীর দোকানে এসব নকল পণ্য সরবরাহ করছে। এসব নকল পণ্য ব্যবহার করে মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন। এসব নকল পণ্য মার্কেটে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য রয়েছে তার বিশাল মার্কেটিং কর্মী বাহিনী।
তিনি জানান, এসব পণ্য উৎপাদনের জন্য কোন কাজগপত্র দেখাতে পারেনি কোম্পানির মালিক বেলায়েত হোসেন। এসব তার কাছে মিথানল ব্যবহার করার জন্য মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ও পরিবেশ অফিদফতরের ছাড়পত্র লাইসেন্স দেখতে চাইলেও তিনি দেখাতে পারেনি। এতেই বোঝা যায় কোন প্রকার লাইসেন্স না নিয়ে সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এসব নকল পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করছে মুনস্টার মার্কেটিং লিমিটেড। কারখানার ভেতরে ও গোডাউনে প্রায় ৯০ কোটি টাকার বেশি নকল প্রসাধনী ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী জব্দ করা হয়েছে। এসব নকলপণ্য যাতে দেশের বাজারে সরবরাহ করতে না পারে এজন্য কারখানার সিলিগাল করে দেয়া হয়েছে। কারখানার মালিকসহ গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ও প্রতারণার অভিযোগ নিয়মিত মামলা দায়ের করা হবে। উল্লেখ্য, প্রায় ৯ মাস আগে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ এই মুনস্টার কারখানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নকল প্রসাধনী সামগ্রী ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী জব্দ করেছিলেন। পরে কারাখানাটি সিলগালা করে দেয়। পরবর্তীতে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বের হয়ে এসে আবার নকল প্রসাধনী ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী উৎপাদন ও বাজারজাত করে আসছে কারখানার মালিক বেলায়েত হোসেন।
শনিবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৫ মহররম ১৪৪২, ১৯ ভাদ্র ১৪২৭
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শিমরাইলে মুনস্টার মার্কেটিং প্রাইভেট লিমিটেডের কারাখানায় বিশ্বের নামিদামি ব্যান্ডের বিপুল পরিমাণ নকল প্রসাধনী ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী জব্দ করেছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। গত বৃহস্পতিবার রাতে র্যাব-৩ এর গোয়েন্দা বিভাগ ও বিএসটিআই এর সহযোগিতায় র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসুর নেতৃত্বে এই অভিযান চালানো হয়। র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, ৯০ কোটি টাকার বেশি মূল্যের এসব নকল প্রসাধনী ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী উৎপাদন করে কোম্পানি গোডাউনে মজুদ করে রাখা হয় বাজারজাত করার জন্য।
নকল পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করার অভিযোগে মুনস্টার মার্কেটিং কোম্পানির মালিক বেলায়েত হোসেনসহ কাখানার ৭ কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। গ্রেফতারকৃত অন্যরা হচ্ছে- অপারেটর মঈনুল ইসলাম, মোহাগ, আমিনুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলাম, কাওছার হোসেন, রাজিব সেরনিয়াবাত।
র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু জানান, মুনস্টার কারখানার মালিক দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। অধিক মুনাফা লাভের জন্য কারখানার ভেতের মিথানল ও স্পিরিটসহ মেয়াদোত্তীর্ণ কেমিক্যাল মিশিয়ে বানানো হচ্ছে বিশ্বের বহুল পরিচিত নামিদামি ব্র্যান্ড ফগ, সিগনেচার, ব্লু লেডি, জ্যাসমিন, কোবরা, ম্যাক্সসহ বিভিন্ন নকল প্রসাধনী সামগ্রী। এছাড়া সনি ব্রাভিয়া, প্যানাসনিক, এলজি টেলিভিশন বানানো হচ্ছে। নকল এক্সেসোরিজ দিয়ে এসব নামিদামি ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী তৈরি করে দেশের বাজারে বিক্রি করে আসছে কোম্পানিটি।
পলাশ কুমার বসু আরও জানান, মুনস্টার মার্কেটিং প্রাইভেট লিমিটেড কারাখানার মালিক বেলায়েত হোসেন ২০১৭ সাল থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ কেমিক্যাল ও একটি মাত্র মেশিন দিয়ে প্রসাধনী তৈরি করে বিশ্ববিখ্যাত নামিদামি কোম্পানির লেভেল ছপিয়ে তা ছোট ছোট কন্টেইনারে সাঁটিয়ে ও রিফিল করে বাজারজাত করে আসছে। প্রসাধনীর সবচেয়ে বড় বাজার চকবাজারসহ দেশের বিভিন্ন ছোট-বড় শপিংমলের প্রসাধনীর দোকানে এসব নকল পণ্য সরবরাহ করছে। এসব নকল পণ্য ব্যবহার করে মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন। এসব নকল পণ্য মার্কেটে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য রয়েছে তার বিশাল মার্কেটিং কর্মী বাহিনী।
তিনি জানান, এসব পণ্য উৎপাদনের জন্য কোন কাজগপত্র দেখাতে পারেনি কোম্পানির মালিক বেলায়েত হোসেন। এসব তার কাছে মিথানল ব্যবহার করার জন্য মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের ও পরিবেশ অফিদফতরের ছাড়পত্র লাইসেন্স দেখতে চাইলেও তিনি দেখাতে পারেনি। এতেই বোঝা যায় কোন প্রকার লাইসেন্স না নিয়ে সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে এসব নকল পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করছে মুনস্টার মার্কেটিং লিমিটেড। কারখানার ভেতরে ও গোডাউনে প্রায় ৯০ কোটি টাকার বেশি নকল প্রসাধনী ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী জব্দ করা হয়েছে। এসব নকলপণ্য যাতে দেশের বাজারে সরবরাহ করতে না পারে এজন্য কারখানার সিলিগাল করে দেয়া হয়েছে। কারখানার মালিকসহ গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ও প্রতারণার অভিযোগ নিয়মিত মামলা দায়ের করা হবে। উল্লেখ্য, প্রায় ৯ মাস আগে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ এই মুনস্টার কারখানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নকল প্রসাধনী সামগ্রী ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী জব্দ করেছিলেন। পরে কারাখানাটি সিলগালা করে দেয়। পরবর্তীতে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বের হয়ে এসে আবার নকল প্রসাধনী ও ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী উৎপাদন ও বাজারজাত করে আসছে কারখানার মালিক বেলায়েত হোসেন।