তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নামে ৫০ শয্যা : সেবাবঞ্চিত রোগীরা

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নতি হলে বাড়েনি চিকিৎসা সেবা। তারাগঞ্জের তিন লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা দেয়ার কথা থাকলেও মানুষ তেমন কোন চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন। জানা গেছে, কোটি কোটি টাকার ভবন পড়ে থাকলেও একজন ডাক্তারও এসব ভবনে থাকেন না। রোগীরা জানান, প্রতিদিন সকাল গড়িয়ে দুপুর হতে চললেও এখানে ডাক্তারের দেখা মেলে না। একই অবস্থা জরুরি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেরও। স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে কর্মরত ডাক্তার ও সংশিষ্টদের খামখেয়ালিপনায় ব্যাহত হচ্ছে উপজেলাবাসীর স্বাস্থ্যসেবা। ভুক্তোভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, কর্তব্যরত ডাক্তাররা প্রায় রোগীকে সেবা না দিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে রেফার্ড করে দেন। ফলে বাড়তি কষ্ট ও অতিরিক্ত খরচ করতে হয় গরিব রোগীদের। হাসপাতালে ডাক্তার সঙ্কট, কর্মকর্তা/কর্মচারী সঙ্কট, দায়িত্বে অবহেলাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। প্রায় সময় ডাক্তারের চেম্বার খালি পড়ে থাকে। কর্তব্যরত ডাক্তাররা নির্দিষ্ট টাইমের আগে তাদের কক্ষ ত্যাগ করেন। ফলে সাধারণ রোগীরা চিকিৎসা সেবা না পেয়ে শুকনো মুখে বাড়ি ফেরেন। গত বৃহস্পতিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গিয়ে রোগীদের সাথে কথা বলে জানা ও দেখা গেছে, হাসপাতালটির চিকিৎসকদের বিভিন্ন কক্ষ তালাবদ্ধ। সেখানে কথা হয় ঘনিরামপুর গ্রামের মজিদুল ইসলামসহ কয়েকজন জানান, তারাগঞ্জ উপজেলার এই হাসপাতালটিতে কোন ডাক্তার তো থাকে না। শুধু বড় বড় দালান কোটা গুলো দাঁড়িয়ে আছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মস্তফা জামান চৌধুরী নিজেও থাকে না। বর্তমান সরকার জনগণের দোর গোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা দিতে ডাক্তার-নার্সদের কর্মস্থলে থাকার নির্দেশ দিলেও এখানে তা মানা হচ্ছে না, তেমনি ডাক্তারের অভাবে পিয়ন এবং নাইট গাডের ভুল চিকিৎসায়ও রোগী মারা যায়। এছাড়াও দিনের বেলায়ও ডাক্তাররা নানা অজুহাতে প্রায়ই ছুটিতে থাকেন বলে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এ বিষয়ে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোস্তফা জামান চৌধুরী জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি অবকাঠামো ও প্রশাসনিক ভাবে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নতি করলেও সেই অনুযায়ী ডাক্তারসহ জনবল নেই। এখানে ১৫ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ৭(সাত) জন। সেই অনুযায়ী ৩১ শয্যার জনবল নেই। আবাসিক ভবনে ডাক্তার না থাকলেও দায়িত্ব অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টায় একজন এমবিবিএস ডাক্তার কর্মরত থাকেন বলে তিনি দাবি করেন।

রবিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৬ মহররম ১৪৪২, ২০ ভাদ্র ১৪২৭

তারাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নামে ৫০ শয্যা : সেবাবঞ্চিত রোগীরা

প্রতিনিধি, তারাগঞ্জ (রংপুর)

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নতি হলে বাড়েনি চিকিৎসা সেবা। তারাগঞ্জের তিন লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা দেয়ার কথা থাকলেও মানুষ তেমন কোন চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন। জানা গেছে, কোটি কোটি টাকার ভবন পড়ে থাকলেও একজন ডাক্তারও এসব ভবনে থাকেন না। রোগীরা জানান, প্রতিদিন সকাল গড়িয়ে দুপুর হতে চললেও এখানে ডাক্তারের দেখা মেলে না। একই অবস্থা জরুরি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেরও। স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে কর্মরত ডাক্তার ও সংশিষ্টদের খামখেয়ালিপনায় ব্যাহত হচ্ছে উপজেলাবাসীর স্বাস্থ্যসেবা। ভুক্তোভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, কর্তব্যরত ডাক্তাররা প্রায় রোগীকে সেবা না দিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে রেফার্ড করে দেন। ফলে বাড়তি কষ্ট ও অতিরিক্ত খরচ করতে হয় গরিব রোগীদের। হাসপাতালে ডাক্তার সঙ্কট, কর্মকর্তা/কর্মচারী সঙ্কট, দায়িত্বে অবহেলাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। প্রায় সময় ডাক্তারের চেম্বার খালি পড়ে থাকে। কর্তব্যরত ডাক্তাররা নির্দিষ্ট টাইমের আগে তাদের কক্ষ ত্যাগ করেন। ফলে সাধারণ রোগীরা চিকিৎসা সেবা না পেয়ে শুকনো মুখে বাড়ি ফেরেন। গত বৃহস্পতিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গিয়ে রোগীদের সাথে কথা বলে জানা ও দেখা গেছে, হাসপাতালটির চিকিৎসকদের বিভিন্ন কক্ষ তালাবদ্ধ। সেখানে কথা হয় ঘনিরামপুর গ্রামের মজিদুল ইসলামসহ কয়েকজন জানান, তারাগঞ্জ উপজেলার এই হাসপাতালটিতে কোন ডাক্তার তো থাকে না। শুধু বড় বড় দালান কোটা গুলো দাঁড়িয়ে আছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মস্তফা জামান চৌধুরী নিজেও থাকে না। বর্তমান সরকার জনগণের দোর গোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা দিতে ডাক্তার-নার্সদের কর্মস্থলে থাকার নির্দেশ দিলেও এখানে তা মানা হচ্ছে না, তেমনি ডাক্তারের অভাবে পিয়ন এবং নাইট গাডের ভুল চিকিৎসায়ও রোগী মারা যায়। এছাড়াও দিনের বেলায়ও ডাক্তাররা নানা অজুহাতে প্রায়ই ছুটিতে থাকেন বলে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এ বিষয়ে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোস্তফা জামান চৌধুরী জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি অবকাঠামো ও প্রশাসনিক ভাবে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নতি করলেও সেই অনুযায়ী ডাক্তারসহ জনবল নেই। এখানে ১৫ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ৭(সাত) জন। সেই অনুযায়ী ৩১ শয্যার জনবল নেই। আবাসিক ভবনে ডাক্তার না থাকলেও দায়িত্ব অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টায় একজন এমবিবিএস ডাক্তার কর্মরত থাকেন বলে তিনি দাবি করেন।