ইরান ইউরেনিয়াম মজুদ দশগুণ বাড়িয়েছে

জাতিসংঘের পরমাণু বিষয়ক সংস্থা (আইএইএ) ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা পরিদর্শন শেষে বলছে, আন্তর্জাতিক সমঝোতা চুক্তিতে যে পরিমাণ ইউরেনিয়াম থাকার কথা ইরান তার চেয়ে অন্তত দশগুণ বেশি ইউরেনিয়াম মজুদ করেছে। ইউরেনিয়াম পারমাণবিক বোমা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। তবে ইরান সবসময় দাবি করছে যে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহারের জন্য। দ্য ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি জানিয়েছে, ইরানের বর্তমান ইউরেনিয়াম মজুতের পরিমাণ ২ হাজার ১০৫ কেজি। বিবিসি।

গত শনিবার সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে প্রকাশিত সন্দেহভাজন দুটি পুরোনো পারমাণবিক স্থাপনা পরিদর্শনে তদন্তকারীদের অনুমতি দেয় ইরান। গতকাল আইএইএর তদন্তকারীরা সন্দেহভাজন দুটি পারমাণবিক স্থাপনার মধ্যে ইরানের পুরনো একটি পারমাণবিক কেন্দ্র পরিদর্শন করে। এরপরই জাতিসংঘের পরমাণু বিষয়ক নজরদারি সংস্থাটি এমন দাবি করল। সংস্থাটি বলছে, দ্বিতীয় ক্ষেত্রটি তারা চলতি মাসের শেষ দিকে পরিদর্শন করবে। চুক্তিতে ইরান ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও যুক্তরাজ্য স্বাক্ষর করেছিল। পরে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ায়। এরপর শুরু হয় এ নিয়ে উত্তেজনা। ইরান প্রকাশ্যে চুক্তির শর্ত থেকে সরে আসার ঘোষণা দিতে শুরু করে। তবে বাকি পক্ষ চুক্তি থেকে সরে যায়নি।

চুক্তি অনুযায়ী পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে প্রয়োজনীয় ইউরেনিয়ামের চেয়ে অনেক কম মাত্রায় ইউরেনিয়াম ইরানের উৎপাদন করার কথা। চুক্তি অনুযায়ী ইরানের সর্বোচ্চ ৩০০ কেজি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে থাকার কথা। কম সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম যাতে ইউ-২৩৫ থাকে তিন থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে তা ব্যবহার হয় বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের তেল উৎপাদনে। আর অস্ত্র বানানোর ইউরেনিয়াম অন্তত ৯০ শতাংশ সমৃদ্ধ হতে হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়ার জন্য দীর্ঘ সময় লাগে। গত সপ্তাহে ইরান বলেছিল, তারা পরমাণু নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে ঝুলে থাকা ইস্যু সমাধানের লক্ষ্যে ভালো বিশ্বাসেই অস্ত্র পরিদর্শকদের পরিদর্শনের সুযোগ দিচ্ছে।

তবে আইএইএ ঘোষণা করা হয়নি এমন পরমাণু দ্রব্যাদি সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর না দেয়া এবং আরও দুটি ক্ষেত্রে প্রবেশাধিকার না দেয়ায় ইরানের সমালোচনা করেছে। সর্বশেষ বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে ইরান তাদের পরিদর্শকদের পরিবেশগত নমুনা সংগ্রহের সুবিধা দিয়েছে এবং এসব নমুনা পরীক্ষাগারে বিশ্লেষণ করা হবে।

রবিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৬ মহররম ১৪৪২, ২০ ভাদ্র ১৪২৭

ইরান ইউরেনিয়াম মজুদ দশগুণ বাড়িয়েছে

image

জাতিসংঘের পরমাণু বিষয়ক সংস্থা (আইএইএ) ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা পরিদর্শন শেষে বলছে, আন্তর্জাতিক সমঝোতা চুক্তিতে যে পরিমাণ ইউরেনিয়াম থাকার কথা ইরান তার চেয়ে অন্তত দশগুণ বেশি ইউরেনিয়াম মজুদ করেছে। ইউরেনিয়াম পারমাণবিক বোমা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। তবে ইরান সবসময় দাবি করছে যে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহারের জন্য। দ্য ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি জানিয়েছে, ইরানের বর্তমান ইউরেনিয়াম মজুতের পরিমাণ ২ হাজার ১০৫ কেজি। বিবিসি।

গত শনিবার সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে প্রকাশিত সন্দেহভাজন দুটি পুরোনো পারমাণবিক স্থাপনা পরিদর্শনে তদন্তকারীদের অনুমতি দেয় ইরান। গতকাল আইএইএর তদন্তকারীরা সন্দেহভাজন দুটি পারমাণবিক স্থাপনার মধ্যে ইরানের পুরনো একটি পারমাণবিক কেন্দ্র পরিদর্শন করে। এরপরই জাতিসংঘের পরমাণু বিষয়ক নজরদারি সংস্থাটি এমন দাবি করল। সংস্থাটি বলছে, দ্বিতীয় ক্ষেত্রটি তারা চলতি মাসের শেষ দিকে পরিদর্শন করবে। চুক্তিতে ইরান ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া ও যুক্তরাজ্য স্বাক্ষর করেছিল। পরে ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ায়। এরপর শুরু হয় এ নিয়ে উত্তেজনা। ইরান প্রকাশ্যে চুক্তির শর্ত থেকে সরে আসার ঘোষণা দিতে শুরু করে। তবে বাকি পক্ষ চুক্তি থেকে সরে যায়নি।

চুক্তি অনুযায়ী পারমাণবিক অস্ত্র বানাতে প্রয়োজনীয় ইউরেনিয়ামের চেয়ে অনেক কম মাত্রায় ইউরেনিয়াম ইরানের উৎপাদন করার কথা। চুক্তি অনুযায়ী ইরানের সর্বোচ্চ ৩০০ কেজি সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে থাকার কথা। কম সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম যাতে ইউ-২৩৫ থাকে তিন থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে তা ব্যবহার হয় বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের তেল উৎপাদনে। আর অস্ত্র বানানোর ইউরেনিয়াম অন্তত ৯০ শতাংশ সমৃদ্ধ হতে হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়ার জন্য দীর্ঘ সময় লাগে। গত সপ্তাহে ইরান বলেছিল, তারা পরমাণু নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে ঝুলে থাকা ইস্যু সমাধানের লক্ষ্যে ভালো বিশ্বাসেই অস্ত্র পরিদর্শকদের পরিদর্শনের সুযোগ দিচ্ছে।

তবে আইএইএ ঘোষণা করা হয়নি এমন পরমাণু দ্রব্যাদি সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর না দেয়া এবং আরও দুটি ক্ষেত্রে প্রবেশাধিকার না দেয়ায় ইরানের সমালোচনা করেছে। সর্বশেষ বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে ইরান তাদের পরিদর্শকদের পরিবেশগত নমুনা সংগ্রহের সুবিধা দিয়েছে এবং এসব নমুনা পরীক্ষাগারে বিশ্লেষণ করা হবে।