দুই মাসে রপ্তানি আয় ৬৮৮ কোটি ডলার

করোনায় বিপর্যস্ত পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। দেশের কলকারখানা চালু হয়েছে, বাতিল ও স্থগিত হওয়া ক্রয়াদেশগুলো ধীরে ধীরে ফিরে আসতে শুরু করেছে। এতে রপ্তানি আয়ে সুবাতাস লেগেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের আগস্ট শেষে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি বেড়েছে ১ শতাংশ এবং গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় বেড়েছে ২ দশমিক ১৭ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, নতুন অর্থবছরের (জুলাই-আগস্ট) প্রথম দুই মাসে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬৮১ কোটি মার্কিন ডলার। বিপরীতে আয় হয় ৬৮৮ কোটি ডলার। অর্থাৎ প্রথম দুই মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ১ শতাংশ। একই সঙ্গে অর্জিত রপ্তানি আয় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে ২ দশমিক ১৭ শতাংশ। আগে রপ্তানি হয়েছিল ৬৭৩ কোটি ২১ লাখ ডলার। দেশে রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। করোনার কারণে গত মার্চ থেকে এ খাতের রপ্তানি কমতে শুরু করে, এপ্রিলে পোশাক রপ্তানিতে ভয়াবহ ধস নামে। মে মাসেও তা অব্যাহত থাকে। তবে জুন থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। এর ধারাবাহিকতা জুলাই ও আগস্টেও অব্যাহত রয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-অগাস্ট সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে বাংলোদেশ যে আয় করেছে, গত বছরের জুলাই-আগস্ট সময়েও একই আয় করেছিল। তবে পোশাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ১ দশমিক ৮১ শতাংশ। জুলাই-আগস্ট সময়ে পোশাকখাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৫৭১ কোটি ২৯ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে আয়ের অঙ্ক ছিল ৫৭১ কোটি ৬৫ লাখ ডলার।

জানা যায়, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছে ১৫ কোটি ৪৭ লাখ ডলার যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি হলেও গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় কমেছে প্রায় ১৭ শতাংশ। গত বছর একই সময়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি আয় হয় ১৮ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। আলোচিত সময়ে প্লাস্টিক জাত পণ্য রপ্তানি কমেছে। জুলাই-আগস্ট সময়ে প্লাস্টিক জাত পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল দুই কোটি চার লাখ ডলার। বিপরীতে আয় হয়েছে এক লাখ ৭১ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কম হয়েছে ১৬ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় কমেছে ১৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে কৃষিপণ্য রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলার, বিপরীতে আয় হয়েছে ১৭ কোটি ৮২ লাখ ডলার। যা ক্ষ্যমাত্রার তুলানায় দশমিক ৩১ শতাংশ বেশি। এছাড়া গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় বেড়েছে প্রায় ৩৩ শতাংশ। গত বছর একই সময়ে এ খাতে রপ্তানি আয় হয়েছিল ১৩ কোটি ৪৪ লাখ ডলার। আলোচিত সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৯ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। বিপরীতে আয় হয়েছে ১৯ কোটি ৫৪ লাখ ডলার যা ক্ষ্যমাত্রার তুলানায় দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। এছাড়া গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় ৪৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি।

এদিকে একক মাস হিসাবে সদ্য সমাপ্ত আগস্টে পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ আয় করেছে ২৯৬ কোটি ৭১ লাখ ডলার যা গত বছরের আগস্ট মাসের চেয়ে ৪ দশমিক ৩২ শতাংশ বেশি। গত আগস্টে লক্ষ্যের চেয়ে আয় কমেছে ১১ দশমিক ৭২ শতাংশ। এর আগে অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৪৪ কেটি ৯০ লাখ ডলার। বিপরীতে আয় হয়েছে ৩৯১ কোটি ডলার। অর্থাৎ প্রথম মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেশি হয়েছে। একই সঙ্গে অর্জিত রপ্তানি আয় আগের বছরের একই সময়ে চেয়ে বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫৯ শতাংশ।

সোমবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৭ মহররম ১৪৪২, ২১ ভাদ্র ১৪২৭

দুই মাসে রপ্তানি আয় ৬৮৮ কোটি ডলার

করোনায় বিপর্যস্ত পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। দেশের কলকারখানা চালু হয়েছে, বাতিল ও স্থগিত হওয়া ক্রয়াদেশগুলো ধীরে ধীরে ফিরে আসতে শুরু করেছে। এতে রপ্তানি আয়ে সুবাতাস লেগেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের আগস্ট শেষে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি বেড়েছে ১ শতাংশ এবং গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় বেড়েছে ২ দশমিক ১৭ শতাংশ। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, নতুন অর্থবছরের (জুলাই-আগস্ট) প্রথম দুই মাসে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬৮১ কোটি মার্কিন ডলার। বিপরীতে আয় হয় ৬৮৮ কোটি ডলার। অর্থাৎ প্রথম দুই মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ১ শতাংশ। একই সঙ্গে অর্জিত রপ্তানি আয় আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেড়েছে ২ দশমিক ১৭ শতাংশ। আগে রপ্তানি হয়েছিল ৬৭৩ কোটি ২১ লাখ ডলার। দেশে রপ্তানি আয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ আসে তৈরি পোশাক খাত থেকে। করোনার কারণে গত মার্চ থেকে এ খাতের রপ্তানি কমতে শুরু করে, এপ্রিলে পোশাক রপ্তানিতে ভয়াবহ ধস নামে। মে মাসেও তা অব্যাহত থাকে। তবে জুন থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। এর ধারাবাহিকতা জুলাই ও আগস্টেও অব্যাহত রয়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের জুলাই-অগাস্ট সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি করে বাংলোদেশ যে আয় করেছে, গত বছরের জুলাই-আগস্ট সময়েও একই আয় করেছিল। তবে পোশাক রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ১ দশমিক ৮১ শতাংশ। জুলাই-আগস্ট সময়ে পোশাকখাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৫৭১ কোটি ২৯ লাখ ডলার। গত বছরের একই সময়ে আয়ের অঙ্ক ছিল ৫৭১ কোটি ৬৫ লাখ ডলার।

জানা যায়, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছে ১৫ কোটি ৪৭ লাখ ডলার যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ দশমিক ২৬ শতাংশ বেশি হলেও গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় কমেছে প্রায় ১৭ শতাংশ। গত বছর একই সময়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি আয় হয় ১৮ কোটি ৫৪ লাখ ডলার। আলোচিত সময়ে প্লাস্টিক জাত পণ্য রপ্তানি কমেছে। জুলাই-আগস্ট সময়ে প্লাস্টিক জাত পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল দুই কোটি চার লাখ ডলার। বিপরীতে আয় হয়েছে এক লাখ ৭১ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় কম হয়েছে ১৬ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় কমেছে ১৭ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের জুলাই-আগস্ট সময়ে কৃষিপণ্য রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলার, বিপরীতে আয় হয়েছে ১৭ কোটি ৮২ লাখ ডলার। যা ক্ষ্যমাত্রার তুলানায় দশমিক ৩১ শতাংশ বেশি। এছাড়া গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় বেড়েছে প্রায় ৩৩ শতাংশ। গত বছর একই সময়ে এ খাতে রপ্তানি আয় হয়েছিল ১৩ কোটি ৪৪ লাখ ডলার। আলোচিত সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৯ কোটি ৩৮ লাখ ডলার। বিপরীতে আয় হয়েছে ১৯ কোটি ৫৪ লাখ ডলার যা ক্ষ্যমাত্রার তুলানায় দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। এছাড়া গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় ৪৯ দশমিক ৬৪ শতাংশ বেশি।

এদিকে একক মাস হিসাবে সদ্য সমাপ্ত আগস্টে পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ আয় করেছে ২৯৬ কোটি ৭১ লাখ ডলার যা গত বছরের আগস্ট মাসের চেয়ে ৪ দশমিক ৩২ শতাংশ বেশি। গত আগস্টে লক্ষ্যের চেয়ে আয় কমেছে ১১ দশমিক ৭২ শতাংশ। এর আগে অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৪৪ কেটি ৯০ লাখ ডলার। বিপরীতে আয় হয়েছে ৩৯১ কোটি ডলার। অর্থাৎ প্রথম মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ বেশি হয়েছে। একই সঙ্গে অর্জিত রপ্তানি আয় আগের বছরের একই সময়ে চেয়ে বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫৯ শতাংশ।