সময়-অর্থ-শ্রম সাশ্রয়ী রাইস ট্রান্সপ্লান্টারে আগ্রহ বাড়ছে চাষির

যন্ত্র দিয়ে রোপণ করা হচ্ছে ধানের চারা। এতে সাশ্রয় হচ্ছে সময় ও অর্থের, কমছে উৎপাদন খরচ আর অধিক লাভবান হচ্ছে চাষিরা। কৃষিবান্ধব এমন যন্ত্রটির নাম ‘রাইস ট্রান্স প্লান্টার’। অল্প সময়ের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েউঠেছে ফরিদপুর অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে। আর কৃষিবিভাগ বলছে সরকার কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের উদ্যোগ নিয়েছে। মেশিনের মাথ্যমে ধার রোপণ ও মাড়াই হলে চাষিরা অধিক লাভবান হবে। আর মেশিন ক্রয়ে সরকার চাষিদের আর্থিক সহায়তা করছে। দেশে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে নগর ও শিল্পায়নের দিকে। শ্রমিকরা বেশি আয়েল লক্ষ্যে ঝুঁকছে নির্মাণশিল্পসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানায়। এ কারণে কৃষিখাতে শ্রমিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। দিনদিন এ সঙ্কট প্রবল হচ্ছে। বিশেষত ধান রোপণ ও কাটার মৌসুমে শ্রমিক সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করে। শ্রমিক সঙ্কটে অনেক সময় কৃষকের ধান মাঠেই পড়ে থাকে। এজন্য কৃষিখাত বাঁচাতে সরকার কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের উদ্যোগ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে গত এক বছর ধরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর এর সহযোগিতায় ফরিদপুরের চাষিরা ‘রাইস ট্রান্স প্লান্টার’ যন্ত্রের মাধ্যমে ধান রোপণ করছে এবং পাকা ধান কম্বাইন্ড হারভেস্টর দিয়ে কাটছেন। এতে অধিক লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। রাইস ট্রান্স প্লান্টার দিয়ে একজন শ্রমিক দিনে ৩ থেকে ৪একর জমিতে ধানের চারা দ্রুত রোপণ করতে পারে। এতে সাশ্রয় হয় সময় ও অর্থের। কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, এই যন্ত্র দিয়ে একসঙ্গে ৬ লাইনে ধানের চারা রোপণ করা যায়। ধানের চারা রোপণে যন্ত্রটি ব্যবহার করলে রোপণ খরচ ৫০ ভাগ কমানো সম্ভব। সনাতন পদ্ধতিতে এক বিঘা জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে কমপক্ষে চারজন শ্রমিককে কাজ করতে হয়। এতে খরচ হয় কমপক্ষে ২হাজার থেকে ২হাজার ২৫শটাকা। আর রাইস ট্রান্স প্লান্টার দিয়ে এক বিঘা জমিতে ধান রোপন করতে খরচ হয় ৫শ থেকে ৭শ টাকা। এছাড়া রাইস ট্রান্স প্লান্টার দিয়ে চারা রোপণ করলে লাইন সোজা হয়। ফলে পরবর্তীতে আগাছা নিংড়ানো, সার ও কীটনাশক ছিটানো ও ধান কাটা সহজ হয়। এ পদ্ধতিতে কৃষকেরা অধিক লাভবান হচ্ছে। ফরিদপুর সদর উপজেলার গধাধরডাঙ্গীর আদর্শ কৃষক শাজাহান বিশ্বাস বলেন, সনাতন পদ্ধতিতে এক বিঘা (৩৩ শতাংশ) জমির ধার রোপন করতে আমাদের ২ হাজার থেকে ২৫শ টাকা খরচ হয়। আর রাইস ট্রান্স প্লান্টার দিয়ে রোপণ করলে মাত্র ৫শ টাকা থেকে ৭টাকা খরচ হয়। মেশিন দিয়ে ধান রোপণ করলে আমাদের উৎপাদন খরচ কম হয়। আমরা অধিক লাভবান হচ্ছি। কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করতে হলে সরকারকে আরও বেশি বেশি সহযোগিতা করার দাবি জানান এই কৃষক। ফরিদপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আবুল বাসার মিয়া বলেন, আগামীর কৃষি মানেই যন্ত্র নির্ভর কৃষি। যন্ত্রে মাধ্যমে ধানের চারা রোপনের ব্যবস্থা করেছি। এর মূল কারণ হচ্ছে অল্প সময়ে অধিক জমিতে চারা রোপন করা সম্বব হচ্ছে, উৎপাদন খরচও কমে যাবে, কৃষিক লাভবান হবে। আর সে লক্ষে কৃষি বিভাগ কাজ করছে। আজ আমরা সদর উপজেলার গধাধর ডাঙ্গীতে কৃষক শাজাহানের জমিতে রাইস ট্রান্স প্লান্টার দিয়ে রোপা আমন ধানের চারা রোপণের উদ্বোধন করেছি। কৃষক শাজাহান গত একবছর ধরে রাইস প্লান্টার মেশিন দিয়ে ধান রোপণ করে অধিক লাভবান হচ্ছে। শাজাহানের সাফল্য দেখে এলাকার অনেকেই এখন রাইস ট্রান্স প্লান্টার দিয়ে রোপা আমন ধানের চারা রোপণ করছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ফরিদপুরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. হজরত আলী বলেন, চাইস ট্রান্স প্লান্টার দিয়ে রোপা আমন ধান চাষ ফরিদপুরে জনপ্রিয় হচ্ছে। চলতি মৌসুমে এই অঞ্চলে ৫০ হেক্টোর জমিতে রাইস ট্রান্স প্লান্টার দিয়ে ধান রোপণ করতে সক্ষম হয়েছি। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ পদ্ধতি কৃষকের মাঝে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। রাইস ট্রান্স প্লান্টার মেশিন, কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনে ক্রয়ে সরকার কৃষকদের সহযোগিতা করছে। রাইস ট্রান্স প্লান্টার দিয়ে রোপা আমন ধানের চারা রোপন উদ্বোধন কালে ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার সব সময় কৃষকের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে।

image
আরও খবর
বদরগঞ্জের কলা এখন রাজধানীর বাজারে
বগুড়ায় বজ্রাঘাতে বাবা-ছেলের মৃত্যু
ঝিনাইগাতীতে অজ্ঞাত নারীর মৃতদেহ
জগন্নাথপুরে দু’পক্ষে সংঘর্ষে আহত ৫
মহেশপুরে ফেনসিডিল গ্রেফতার একজন
বশেমুরবিপ্রবি’র কম্পিউটার চুরির ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল
ভাণ্ডারিয়ায় ইয়াবা গ্রেফতার এক
গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় শ্মশানের জমি উদ্ধার
বাঁশখালীতে দুর্বৃত্তের আগুনে পুড়ল ২শ’বর্ষী মন্দিরের পূজিত বটগাছ
নানা অভিযোগে কুষ্টিয়া যুবলীগের কমিটি বিলুপ্ত
বগুড়ায় ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার
তাড়াশ-বারুহাস বাইপাস সড়কে বড় বড় গর্ত ! নিত্য দুর্ঘটনা
শহীদ সুরেন্দ্র মোহন’র ভাঙা স্মৃতিফলক দুই মাসেও সংস্কার হয়নি
চৌগাছায় কৃত্রিম সঙ্কটে ভর্তুকির সার বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ

মঙ্গলবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৮ মহররম ১৪৪২, ২২ ভাদ্র ১৪২৭

সময়-অর্থ-শ্রম সাশ্রয়ী রাইস ট্রান্সপ্লান্টারে আগ্রহ বাড়ছে চাষির

প্রতিনিধি, ফরিদপুর

image

যন্ত্র দিয়ে রোপণ করা হচ্ছে ধানের চারা। এতে সাশ্রয় হচ্ছে সময় ও অর্থের, কমছে উৎপাদন খরচ আর অধিক লাভবান হচ্ছে চাষিরা। কৃষিবান্ধব এমন যন্ত্রটির নাম ‘রাইস ট্রান্স প্লান্টার’। অল্প সময়ের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়েউঠেছে ফরিদপুর অঞ্চলের কৃষকদের মাঝে। আর কৃষিবিভাগ বলছে সরকার কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের উদ্যোগ নিয়েছে। মেশিনের মাথ্যমে ধার রোপণ ও মাড়াই হলে চাষিরা অধিক লাভবান হবে। আর মেশিন ক্রয়ে সরকার চাষিদের আর্থিক সহায়তা করছে। দেশে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে নগর ও শিল্পায়নের দিকে। শ্রমিকরা বেশি আয়েল লক্ষ্যে ঝুঁকছে নির্মাণশিল্পসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানায়। এ কারণে কৃষিখাতে শ্রমিক সঙ্কট দেখা দিয়েছে। দিনদিন এ সঙ্কট প্রবল হচ্ছে। বিশেষত ধান রোপণ ও কাটার মৌসুমে শ্রমিক সঙ্কট তীব্র আকার ধারণ করে। শ্রমিক সঙ্কটে অনেক সময় কৃষকের ধান মাঠেই পড়ে থাকে। এজন্য কৃষিখাত বাঁচাতে সরকার কৃষিতে যান্ত্রিকীকরণের উদ্যোগ নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে গত এক বছর ধরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর এর সহযোগিতায় ফরিদপুরের চাষিরা ‘রাইস ট্রান্স প্লান্টার’ যন্ত্রের মাধ্যমে ধান রোপণ করছে এবং পাকা ধান কম্বাইন্ড হারভেস্টর দিয়ে কাটছেন। এতে অধিক লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। রাইস ট্রান্স প্লান্টার দিয়ে একজন শ্রমিক দিনে ৩ থেকে ৪একর জমিতে ধানের চারা দ্রুত রোপণ করতে পারে। এতে সাশ্রয় হয় সময় ও অর্থের। কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, এই যন্ত্র দিয়ে একসঙ্গে ৬ লাইনে ধানের চারা রোপণ করা যায়। ধানের চারা রোপণে যন্ত্রটি ব্যবহার করলে রোপণ খরচ ৫০ ভাগ কমানো সম্ভব। সনাতন পদ্ধতিতে এক বিঘা জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে কমপক্ষে চারজন শ্রমিককে কাজ করতে হয়। এতে খরচ হয় কমপক্ষে ২হাজার থেকে ২হাজার ২৫শটাকা। আর রাইস ট্রান্স প্লান্টার দিয়ে এক বিঘা জমিতে ধান রোপন করতে খরচ হয় ৫শ থেকে ৭শ টাকা। এছাড়া রাইস ট্রান্স প্লান্টার দিয়ে চারা রোপণ করলে লাইন সোজা হয়। ফলে পরবর্তীতে আগাছা নিংড়ানো, সার ও কীটনাশক ছিটানো ও ধান কাটা সহজ হয়। এ পদ্ধতিতে কৃষকেরা অধিক লাভবান হচ্ছে। ফরিদপুর সদর উপজেলার গধাধরডাঙ্গীর আদর্শ কৃষক শাজাহান বিশ্বাস বলেন, সনাতন পদ্ধতিতে এক বিঘা (৩৩ শতাংশ) জমির ধার রোপন করতে আমাদের ২ হাজার থেকে ২৫শ টাকা খরচ হয়। আর রাইস ট্রান্স প্লান্টার দিয়ে রোপণ করলে মাত্র ৫শ টাকা থেকে ৭টাকা খরচ হয়। মেশিন দিয়ে ধান রোপণ করলে আমাদের উৎপাদন খরচ কম হয়। আমরা অধিক লাভবান হচ্ছি। কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করতে হলে সরকারকে আরও বেশি বেশি সহযোগিতা করার দাবি জানান এই কৃষক। ফরিদপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আবুল বাসার মিয়া বলেন, আগামীর কৃষি মানেই যন্ত্র নির্ভর কৃষি। যন্ত্রে মাধ্যমে ধানের চারা রোপনের ব্যবস্থা করেছি। এর মূল কারণ হচ্ছে অল্প সময়ে অধিক জমিতে চারা রোপন করা সম্বব হচ্ছে, উৎপাদন খরচও কমে যাবে, কৃষিক লাভবান হবে। আর সে লক্ষে কৃষি বিভাগ কাজ করছে। আজ আমরা সদর উপজেলার গধাধর ডাঙ্গীতে কৃষক শাজাহানের জমিতে রাইস ট্রান্স প্লান্টার দিয়ে রোপা আমন ধানের চারা রোপণের উদ্বোধন করেছি। কৃষক শাজাহান গত একবছর ধরে রাইস প্লান্টার মেশিন দিয়ে ধান রোপণ করে অধিক লাভবান হচ্ছে। শাজাহানের সাফল্য দেখে এলাকার অনেকেই এখন রাইস ট্রান্স প্লান্টার দিয়ে রোপা আমন ধানের চারা রোপণ করছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ফরিদপুরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো. হজরত আলী বলেন, চাইস ট্রান্স প্লান্টার দিয়ে রোপা আমন ধান চাষ ফরিদপুরে জনপ্রিয় হচ্ছে। চলতি মৌসুমে এই অঞ্চলে ৫০ হেক্টোর জমিতে রাইস ট্রান্স প্লান্টার দিয়ে ধান রোপণ করতে সক্ষম হয়েছি। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ পদ্ধতি কৃষকের মাঝে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। রাইস ট্রান্স প্লান্টার মেশিন, কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনে ক্রয়ে সরকার কৃষকদের সহযোগিতা করছে। রাইস ট্রান্স প্লান্টার দিয়ে রোপা আমন ধানের চারা রোপন উদ্বোধন কালে ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকার সব সময় কৃষকের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে।