গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় শ্মশানের জমি উদ্ধার

এক সময়ের হিন্দু অধ্যুষিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের রুটি গ্রামে সর্বসাকুল্যে ২০টি হিন্দু পরিবারে জনা পঞ্চাশেক মানুষের বসবাস। সেখানকার শ্মশানে সৎকারে বাধা ও জায়গা দখল বিষয়ে খোঁজ নিতে প্রশাসনের লোকজন আসছেন শুনে জড়ো হয়েছেন পাঁচ শতাধিক মানুষ।

মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের একই কথা জায়গাটি শ্মশান হিসেবেই ব্যবহৃত হতো ও কাগজপত্রেও তা সার্বিক বিবেচনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেখানে লাল নিশান টানিয়ে জায়গাটিকে শ্মশান হিসেবে ব্যবহারের কথা বলা হয়। এ সময় মুসলমানদের বানিয়ে আনা শ্মশানের দু’টি সাইনবোর্ডও টানিয়ে দেয়া হয়। শ্মশানটির পরিমাণ ৮২ শতাংশ। উদ্ধারের পর এখানে নিয়মিত পূজা অর্চণা ও এ বছর দুর্গাপূজা করার পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে একটি কমিটি করার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এসব কাজেও স্থানীয় মুসলমানরা সহযোগিতা করছেন।

শ্মশান উদ্ধারে শুরুর ভূমিকা মুসলমানদেরই। আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে রুটি গ্রামের বেশ কয়েকজন মুসলমান ব্যক্তি শ্মশান দখল বিষয়ে আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক তাকজিল খলিফা কাজলকে অবহিত করেন। পরবর্তীতে মুসলমান সম্প্র্রদায়ের লোকজন স্থানীয় কয়েকজন হিন্দুকে নিয়ে মেয়রের কাছে আসেন ও এ বিষয়ে অবগত করেন। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ করার জন্য এ প্রতিবেদককেও আহবান জানানো হয় ওই আলোচনাকালে। পরে প্রতিবেদক ২৮ আগস্ট সরেজমিনে গিয়ে শ্মশানে সৎকার করতে গেলে প্রতিবেশীদের বাঁধার বিষয়টি স্থানীয়দের কাছ থেকে নিশ্চিত হন।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হলে প্রশাসনিকভাবে উদ্ধারের উদ্যোগ নেয়া হয়। কাগজপত্র ঘেঁটে জায়গাটি শ্মশানের নিশ্চিত হওয়ার পর রবিবার দুপুরে অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর-এ-আলম সেখানে গিয়ে প্রথমে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনি জায়গার মালিক দাবিকারীদের কাগজ দেখাতে বললে ব্যর্থ হয়। এক পর্যায়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেখানে লাল নিশান টানিয়ে দেয়া হয়। পরে স্থানীয় মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজন শ্মশানের নামে দু’টি সাইনবোর্ড টানিয়ে দেন।

ইউএনও নূর-এ-আলম বলেন, ‘কাগজপত্র অনুযায়ী জায়গাটি শ্মশানের। আমরা যাওয়ার পর চার-পাঁচশ মানুষ উপস্থিত হয়েও একই কথা বলেছেন। এ অবস্থায় এখানে সৎকার করতে যেন বাধা না দেয়া হয় সেটি বলে দেয়া হয়েছে।

আরও খবর
সময়-অর্থ-শ্রম সাশ্রয়ী রাইস ট্রান্সপ্লান্টারে আগ্রহ বাড়ছে চাষির
বদরগঞ্জের কলা এখন রাজধানীর বাজারে
বগুড়ায় বজ্রাঘাতে বাবা-ছেলের মৃত্যু
ঝিনাইগাতীতে অজ্ঞাত নারীর মৃতদেহ
জগন্নাথপুরে দু’পক্ষে সংঘর্ষে আহত ৫
মহেশপুরে ফেনসিডিল গ্রেফতার একজন
বশেমুরবিপ্রবি’র কম্পিউটার চুরির ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল
ভাণ্ডারিয়ায় ইয়াবা গ্রেফতার এক
বাঁশখালীতে দুর্বৃত্তের আগুনে পুড়ল ২শ’বর্ষী মন্দিরের পূজিত বটগাছ
নানা অভিযোগে কুষ্টিয়া যুবলীগের কমিটি বিলুপ্ত
বগুড়ায় ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার
তাড়াশ-বারুহাস বাইপাস সড়কে বড় বড় গর্ত ! নিত্য দুর্ঘটনা
শহীদ সুরেন্দ্র মোহন’র ভাঙা স্মৃতিফলক দুই মাসেও সংস্কার হয়নি
চৌগাছায় কৃত্রিম সঙ্কটে ভর্তুকির সার বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ

মঙ্গলবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৮ মহররম ১৪৪২, ২২ ভাদ্র ১৪২৭

হিন্দু-মুসলিম আমরা সবাই বাঙালি

গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় শ্মশানের জমি উদ্ধার

প্রতিনিধি, আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)

এক সময়ের হিন্দু অধ্যুষিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের রুটি গ্রামে সর্বসাকুল্যে ২০টি হিন্দু পরিবারে জনা পঞ্চাশেক মানুষের বসবাস। সেখানকার শ্মশানে সৎকারে বাধা ও জায়গা দখল বিষয়ে খোঁজ নিতে প্রশাসনের লোকজন আসছেন শুনে জড়ো হয়েছেন পাঁচ শতাধিক মানুষ।

মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের একই কথা জায়গাটি শ্মশান হিসেবেই ব্যবহৃত হতো ও কাগজপত্রেও তা সার্বিক বিবেচনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেখানে লাল নিশান টানিয়ে জায়গাটিকে শ্মশান হিসেবে ব্যবহারের কথা বলা হয়। এ সময় মুসলমানদের বানিয়ে আনা শ্মশানের দু’টি সাইনবোর্ডও টানিয়ে দেয়া হয়। শ্মশানটির পরিমাণ ৮২ শতাংশ। উদ্ধারের পর এখানে নিয়মিত পূজা অর্চণা ও এ বছর দুর্গাপূজা করার পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে একটি কমিটি করার জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এসব কাজেও স্থানীয় মুসলমানরা সহযোগিতা করছেন।

শ্মশান উদ্ধারে শুরুর ভূমিকা মুসলমানদেরই। আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহে রুটি গ্রামের বেশ কয়েকজন মুসলমান ব্যক্তি শ্মশান দখল বিষয়ে আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক তাকজিল খলিফা কাজলকে অবহিত করেন। পরবর্তীতে মুসলমান সম্প্র্রদায়ের লোকজন স্থানীয় কয়েকজন হিন্দুকে নিয়ে মেয়রের কাছে আসেন ও এ বিষয়ে অবগত করেন। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ করার জন্য এ প্রতিবেদককেও আহবান জানানো হয় ওই আলোচনাকালে। পরে প্রতিবেদক ২৮ আগস্ট সরেজমিনে গিয়ে শ্মশানে সৎকার করতে গেলে প্রতিবেশীদের বাঁধার বিষয়টি স্থানীয়দের কাছ থেকে নিশ্চিত হন।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হলে প্রশাসনিকভাবে উদ্ধারের উদ্যোগ নেয়া হয়। কাগজপত্র ঘেঁটে জায়গাটি শ্মশানের নিশ্চিত হওয়ার পর রবিবার দুপুরে অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর-এ-আলম সেখানে গিয়ে প্রথমে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। পরে তিনি জায়গার মালিক দাবিকারীদের কাগজ দেখাতে বললে ব্যর্থ হয়। এক পর্যায়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেখানে লাল নিশান টানিয়ে দেয়া হয়। পরে স্থানীয় মুসলমান সম্প্রদায়ের লোকজন শ্মশানের নামে দু’টি সাইনবোর্ড টানিয়ে দেন।

ইউএনও নূর-এ-আলম বলেন, ‘কাগজপত্র অনুযায়ী জায়গাটি শ্মশানের। আমরা যাওয়ার পর চার-পাঁচশ মানুষ উপস্থিত হয়েও একই কথা বলেছেন। এ অবস্থায় এখানে সৎকার করতে যেন বাধা না দেয়া হয় সেটি বলে দেয়া হয়েছে।