সম্পদের নোটিস জারির পর গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলমের সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের সহকারী পরিচালক সাইদুজ্জামানকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা হিসেবে সম্প্রতি নিয়োগ দিয়েছে কমিশন। প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ঘুষ, দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়েছেন প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলম। বিতর্কিত ঠিকাদার জিকে শামীমের সঙ্গেও তার কানেকশন ছিল।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়ায় গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলম ও তার স্ত্রী সাবিনা আলমের সম্পদের হিসাব চেয়ে এর আগে চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি নোটিস দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তখন নোটিসে ২১ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে বলা হয়। সে সময় নোটিসে বলা হয়, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রাথমিক অনুসন্ধান করে কমিশনের স্থির বিশ্বাস জন্মেছে যে, তারা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত স্বনামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন। তাই নোটিস পাওয়ার ২১ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের নিজেদের, নির্ভরশীল ব্যক্তিদের যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, দায়-দেনা, আয়ের উৎস ও তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণ নির্ধারিত ফরমে দাখিল করতে বলা হয়েছে এর পর দুদকের সহকারী পরিচালক মেফতাহুল জান্নাত প্রাথমিক অনুসন্ধানে অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়ে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করে। তখন কমিশন আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়। ফলে যেকোন মুহূর্তে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে গণপূর্তের এ প্রধান প্রকৌশলীকে।
দুদক সূত্র জানায়, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ পান রংপুর গণপূর্ত জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম। প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ পাওয়া মো. আশরাফুল আলমকে ঘিরে তখন থেকেই নানা বিতর্ক শুরু হয়। ডিকে শামীম যখন গণপূর্ত নিয়ন্ত্রণ করতেন তখন তাকে নানাভাবে সহযোগিতা করে বিভিন্ন কাজ পাইয়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে আশফুল আলমের বিরুদ্ধে।
এনআরবি ব্যাংকের পরিচালক ও তার দুই স্ত্রীকে নোটিস
এদিকে এন আর বি ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালক এম বদিউজ্জামান ও তার দুই স্ত্রী মিসেস নাসরিন জামান এবং মিসেস তৌহিদা সুলতানার সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিস জারি করেছে দুদক। গতকাল দুদক পরিচালক কাজী শফিকুল আলম কমিশনের স্বাক্ষরিত এ নোটিস দেয়া হয়।
দুদক সূত্র জানায়, নোটিসে তাদের অর্জিত স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ও দায়-দেনা সম্বলিত সম্পদ বিবরণীর হিসেব দিতে বলা হয়েছে। নোটিস পাওয়ার ২১ কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনে দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
খাদ গুদামের কর্মকর্তাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
এদিকে কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পলাশ পাল চৌধুরীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা দায়ের। গতকাল দুদকের সহকারী পরিচালক রতন কুমার দাশ বাদী হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খণ্ডকালীন পরিচ্ছন্নকর্মী মো. শাহজাহান (মিন্টু) নিরাপত্তা প্রহারী নিজাম উদ্দিন, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দফতরের স্প্রেম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, মেসার্স হিমায়ন সি ফুডসের মালিক দিলরুবা হাসান এবং মেসার্স মোহনা এন্টারপ্রাইজের মালিক সেলিম রেজা।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে- আসামিরা একে অপরের সহযোগিতায় অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজে লাভবান হয়ে এবং অন্যকে লাভবান করার অসৎ উদ্দেশে ১৯০.৪৪২ মে.টন সরকারি চাল-যার বাজার মূল্য টনপ্রতি ৪৪,৭৬৬.৫৭৯ টাকা হারে সর্বমোট ৮৫,২৫,৪৩৭ (পঁচাশি লাখ পঁচিশ হাজার চারশত সাইত্রিশ) টাকা আত্মসাৎ করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
মঙ্গলবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৮ মহররম ১৪৪২, ২২ ভাদ্র ১৪২৭
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
সম্পদের নোটিস জারির পর গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলমের সম্পদের অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের সহকারী পরিচালক সাইদুজ্জামানকে অনুসন্ধান কর্মকর্তা হিসেবে সম্প্রতি নিয়োগ দিয়েছে কমিশন। প্রধান প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ ঘুষ, দুর্নীতিসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ গড়েছেন প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলম। বিতর্কিত ঠিকাদার জিকে শামীমের সঙ্গেও তার কানেকশন ছিল।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়ায় গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী আশরাফুল আলম ও তার স্ত্রী সাবিনা আলমের সম্পদের হিসাব চেয়ে এর আগে চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি নোটিস দেয় দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। তখন নোটিসে ২১ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে বলা হয়। সে সময় নোটিসে বলা হয়, প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রাথমিক অনুসন্ধান করে কমিশনের স্থির বিশ্বাস জন্মেছে যে, তারা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত স্বনামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন। তাই নোটিস পাওয়ার ২১ কার্যদিবসের মধ্যে তাদের নিজেদের, নির্ভরশীল ব্যক্তিদের যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, দায়-দেনা, আয়ের উৎস ও তা অর্জনের বিস্তারিত বিবরণ নির্ধারিত ফরমে দাখিল করতে বলা হয়েছে এর পর দুদকের সহকারী পরিচালক মেফতাহুল জান্নাত প্রাথমিক অনুসন্ধানে অবৈধ সম্পদের তথ্য পেয়ে কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করে। তখন কমিশন আশরাফুল আলমের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়। ফলে যেকোন মুহূর্তে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে গণপূর্তের এ প্রধান প্রকৌশলীকে।
দুদক সূত্র জানায়, গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ পান রংপুর গণপূর্ত জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম। প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে নিয়োগ পাওয়া মো. আশরাফুল আলমকে ঘিরে তখন থেকেই নানা বিতর্ক শুরু হয়। ডিকে শামীম যখন গণপূর্ত নিয়ন্ত্রণ করতেন তখন তাকে নানাভাবে সহযোগিতা করে বিভিন্ন কাজ পাইয়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে আশফুল আলমের বিরুদ্ধে।
এনআরবি ব্যাংকের পরিচালক ও তার দুই স্ত্রীকে নোটিস
এদিকে এন আর বি ব্যাংক লিমিটেডের পরিচালক এম বদিউজ্জামান ও তার দুই স্ত্রী মিসেস নাসরিন জামান এবং মিসেস তৌহিদা সুলতানার সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিস জারি করেছে দুদক। গতকাল দুদক পরিচালক কাজী শফিকুল আলম কমিশনের স্বাক্ষরিত এ নোটিস দেয়া হয়।
দুদক সূত্র জানায়, নোটিসে তাদের অর্জিত স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ও দায়-দেনা সম্বলিত সম্পদ বিবরণীর হিসেব দিতে বলা হয়েছে। নোটিস পাওয়ার ২১ কার্যদিবসের মধ্যে কমিশনে দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
খাদ গুদামের কর্মকর্তাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা
এদিকে কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া উপজেলার বড়ঘোপ খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পলাশ পাল চৌধুরীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা দায়ের। গতকাল দুদকের সহকারী পরিচালক রতন কুমার দাশ বাদী হয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খণ্ডকালীন পরিচ্ছন্নকর্মী মো. শাহজাহান (মিন্টু) নিরাপত্তা প্রহারী নিজাম উদ্দিন, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দফতরের স্প্রেম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, মেসার্স হিমায়ন সি ফুডসের মালিক দিলরুবা হাসান এবং মেসার্স মোহনা এন্টারপ্রাইজের মালিক সেলিম রেজা।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে- আসামিরা একে অপরের সহযোগিতায় অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজে লাভবান হয়ে এবং অন্যকে লাভবান করার অসৎ উদ্দেশে ১৯০.৪৪২ মে.টন সরকারি চাল-যার বাজার মূল্য টনপ্রতি ৪৪,৭৬৬.৫৭৯ টাকা হারে সর্বমোট ৮৫,২৫,৪৩৭ (পঁচাশি লাখ পঁচিশ হাজার চারশত সাইত্রিশ) টাকা আত্মসাৎ করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারা তৎসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।