ঢাকা ওয়াসার দুই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে বিপুল অবৈধ সম্পদ গড়ার অভিযোগ

সাময়িক বরখাস্ত অসিম কুমার ওএসডি কাজী খায়রুল

ঢাকা ওয়াসার সাময়িক বরখাস্ত ও ওএসডি হওয়া দুই নির্বাহী প্রকৌশলীর অবৈধ সম্পদ থাকার অভিযোগ জমা পড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। ওয়াসার মডস জোন ৮ এর সাময়িক বরখাস্ত হওয়া নির্বাহী প্রকৌশলী অসিম কুমার ঘোষ এবং ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী খায়রুল বাশার নামে এ দুই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে পছন্দের ঠিকাদারের কাছে টেন্ডারের গোপন নথি ফাঁস করে দিয়ে কাজ পাইয়ে দেয়া, ক্ষমতার অপব্যবহার, বিধিবহির্ভূত ঠিকদারি প্রতিষ্ঠান খুলে ওয়াসার ঠিকাদারি কাজসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ করা হয়েছে দুদকে। গত ১ সেপ্টেম্বর দুদকের দুই নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ যাচাই-বাছাই সেলে রয়েছে। দুদকে করা অভিযোগ বলা হয়েছে ঘুষ, দুর্নীতির মাধ্যমে ইতোমধ্যে শত শত কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন দুই প্রকৌশলী। নানা অনিয়মের অভিযোগ ওয়াসা কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় একজনকে প্রকৌশলী খায়রুল বাসারকে ওএসডি এবং অসীম কুমার ঘোষকে সাময়িক বরখাস্ত করে রাখা হয়েছে। এসবের স্বপক্ষে নথিপত্র রয়েছে এ প্রতিবেদকের কাছে।

দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, অভিযোগ জমা হয়েছে সেটা যাচাই-বাছাই শাখায় আছে। কমিশনে নথি উপস্থাপন করা হবে। অভিযোগের ধরন অনুযায়ী অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত দিবে কমিশন। এর পর অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে। অনুসন্ধান কর্মকর্তা তখন পরবর্তী বিষয়ে কাজ করবে।

দুদকে করা অভিযোগ সূত্র জানা গেছে, ঢাকা ওয়াসার পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা) মডস জোন ৮ এর নির্বাহী প্রকৌশলী অসিম কুমার ঘোষ সালে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে ঢাকা ওয়াসায় যোগ দিয়ে বর্তমানে ৫ম গ্রেডে কর্মকর্তা। কিন্তু ক্ষমতার অপব্যহার করে ঘুষ দুর্নীতি ও নিজের স্ত্রী ঝর্না রানী ঘোষের সহায়তায় অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। অধিকাংশ সম্পদ বেনামে রয়েছে। অসিম কুমার গোষ একজন সরকারি কর্মচারী হয়েও ঢাকায় ১৩টি বাড়ি ও প্লটের মালিক। এর মধ্যে রাজধানীর ভাটারা থানাধীন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ও বসুন্ধরা রিভারভিউ প্রকল্পে ৮টি প্লট ও আমুলিয়া গ্রিন মডেল টাউন ও কেরানীগঞ্জ তিনটি প্লট। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কাদেরাবাগ হাউজিং এলাকায় বাড়ি নং-১, সেকশন-২, ব্লক-ডি, নম্বর বাড়িতে ফ্ল্যাট ও সলিমুল্লাহ রোডে তার বিলাশ বহু ফ্ল্যাট আছে। গ্রামের বাড়ি বাগের হাটের ফকির হাতে অস্ট্রাকি গ্রামে শত শত বিঘা জমি কিনেছেন। অসিম কুমার একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও চাকরির বিধিমালা লঙ্ঘন করে কন্যা প্রমি কুমার ঘোষের নামে মেসার্স প্রমি এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান খুলেছেন। যার স্বত্বাধিকারী অসিম কুমার ঘোষের স্ত্রী ঝর্না রানী ঘোষ। এ ছাড়াও তার আরও একাধিক বেনামি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সরকারি কর্মচারী হয়েও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে স্ত্রী ও অন্য একাধিক কর্মকর্তার যোগসাজশে ঢাকা ওয়াসার বিভিন্ন ঠিকাদারি কাজ করে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। অসিম কুমার ঘোষ তার স্ত্রী ঝর্না রানী ঘোষের নামে বেনামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে হু-ির মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা ও বসুরহাটে বিলাসবহুল বাড়ি করেছেন।

তিনি সরকারি চাকরিদাতা হয়েও স্ত্রীর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান প্রমি এন্টারপ্রাইজসহ বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে পায়ারা বন্দরে ওরিয়ন গ্রুপের সঙ্গে বিভিন্ন সাব-কন্ট্রাকে ঠিকাদারি কাজ করেছেন। পদ্মা সেতু প্রকল্পেও সাব ঠিকাদারি কাজ রয়েছে অসিম কুমার ঘোষের।

২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে ওয়াসার এমডি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর শাহনাজ পারভীন মিতু। সেখানে তাকে দফতরে না পাওয়া, এলাকার জনসাধারণের অভিযোগ না শোনা, কাউন্সিলরসহ সাধারণ মানুষের সঙ্গে মোবাইল ফোনে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৭ সালের ৪ তার বিরুদ্ধ বিভাগীয় মামলা হয়। ওয়াসার নিজস্ব তদন্ত প্রতিবেদন থেকে থেকে জানা গেছে, অসিম কুমার ঘোষ ঢাকা ওয়াসার মড্স জোন-৮ থেকে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ৪০ লাখ টাকার বিভিন্ন মেরামত ও সংস্কার কাজের ঠিকাদারের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে নিজেই ঠিকাদারের ভূমিকায় ছিলেন। কিছু ক্ষেত্রে কাজ না করেই বিল তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেন। এ কারণে ২০১৭ সালের ২০ জুন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্তের আদেশে বলা হয়, ‘২০০৮ সাল থেকে ব্যবহৃত বিভিন্ন বিল রেজিস্ট্রিতে অসৎ উদ্দেশ্যে কার্যাদেশ নম্বর বাদ দিয়ে এন্ট্রি করে সংশ্লিষ্ট ইউডিকে জোরপূর্বক বাধ্য করেন। তিনি ২-৩ ট্রাক মাটি ফেলে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা বিল তুলে নেন। তিনি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার পাম্প মেরামতের নামে বিল তুলে নেন। বিনা অনুমতিতে বিদেশে অবস্থান করা সত্ত্বেও মেজারমেন্ট বহিতে স্বাক্ষর করেন। চাকরির শৃঙ্খলা পরিপন্থী নানা কাজের জন্য তাকে ঢাকা ওয়াসা থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

দুদকে করা অভিযোগে বলা হয়েছে, অসিমের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন ঠিকাদার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওয়াসা কর্তৃপক্ষের কাছে। অভিযোগ অনুযায়ী খিলবাড়িরটেক পানির পাম্প হাউজের বাউন্ডইর দেওয়াল ও রংয়ের কাজ করিয়ে মেসার্স শাহানা অ্যান্ড কোং নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৮৫ হাজার টাকা, মেহেদী এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মডস জোন-৮ এর অফিস কম্পাউন্ডের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, হাজীপাড়া পেট্রোল পাম্প হাউসের রক্ষণাবেক্ষণ কাজে ৯০ হাজার টাকা, মেসার্স বিপ্লব ট্রেডার্সের কাছ থেকে ওয়াসার মডস জোন-৮ সংস্কার মেরামত ও রংয়ের কাজে এক লাখ টাকা ঘুষ নেন। মডস জোন-৮ এর অফিস ভবন মেরামত, সংরক্ষণ ও রংয়ের ৪ লাখ ৭২ হাজার টাকা কাজ না করে তুলে নেন। মডস জোন-৮-এর পাম্প হাউসের মেরামত ও সংস্কারের ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা, মডস জোন-৮ এর ডিএমএ স্লুইস গেইটে বালু চেম্বার খুঁজে বের করা ও মেরামের কাজের ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বোসান ইন্টারন্যাশনালের কাছ থেকে ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা, মডস জোন-৮ থেকে বরিশাল এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৪ লাখ ৬৬ হাজার টাকার কাজে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ আছে। অভিযোগগুলো ওয়াসার নিজস্ব তদন্তে প্রমাণিত হয়। এছাড়াও অসিম কুমার ঘোষের দুটি পাসপোর্ট রয়েছে। ওয়াসিম কুমার ঘোষের বিরুদ্ধে মোট ১৭টি পয়েন্টে দুর্নীতি ও অনিয়মের নানা ফিরিস্তি তুলে ধরা হয় দুদকে করা অভিযোগে।

অপর ওয়াসার ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই সেক্টর ডেভলপমেন্ট প্রজেক্টের নির্বাহী কাজী খায়রুল বাশারের বিরুদ্ধে দুদকে করা অভিযোগে বলা হয়, ১৯৯৭ সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে ঢাকা ওয়াসায় নিয়োগ পান। বর্তমানে তিনি থেকে ঢাকা ওয়াসায় ৫ম গ্রেডে কর্মর থেকে ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। প্রকৌশলী কাজী খায়রুল বাশার স্ত্রী ইশরাত জাহান উর্মি ও মা বিলকিস আহমেদের মালিকানায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান (যার নাম মেসার্স ম্যাক কনসোর্টিয়াম) খোলেন। সরকারি দফতরের একজন কর্মচারী হয়ে ক্ষমতার অপব্যহার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খুলে তিনি ঢাকা ওয়াসার বিভিন্ন ঠিকাদারি কাজ নিয়ন্ত্রণ করেন। এর মাধ্যমে তিনি উত্তরার ২০ নম্বর রোডের ১৩ নম্বর সেক্টরের ১৭ নম্বর বাড়ির মালিক। এছাড়া মিরপুর ও নাখালপাড়ায় বাড়ি করেছেন। ঘুষ-দুর্নীতির টাকায় তিনি মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম তৈরি করেছেন। কাজী খায়রুল বাশার ও তার স্ত্রী ইশারাত জাহান উর্মির নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ টাকার লেনদেন রয়েছে। দুদকের অভিযোগে বলা হয়, ঢাকা ওয়াসার ড্রেনেজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে কাজী খায়রুল বাসার স্ত্রীর নামে ঠিকাদারি খোলেন। ওয়াসার ড্রেনেজ বিভাগের ঠিকাদারির অন্তত ১০ শতাংশ ঠিকাদারি কাজ নিয়ন্ত্রণ করে তার স্ত্রী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক কনসোর্টিয়াম। তার ব্যবসায়িক পার্টনার মতিউর রহমান। ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে ২০ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি। ২০০৮ সালে ম্যাক কনসোর্টিয়াম সর্বনিম্ন দরদাতা না হয়েও ৮টি পানির পাম্পের জন্য ২টি গ্যাস জেনারেটর সরবরাহের ১০ কোটি ৪৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকার কাজ বাগিয়ে নেয়। ওয়াসার সংগ্রহ বিভাগের অধীনে ২০০ কেবিএ ডিজেল জেনারেটর ক্রয়ের নিমিত্তে ২ কোটি ৯৫ লাখ টাকার কাজ করে ম্যাক কনসোর্টিয়াম। বিভিন্ন আকৃতির মিটার ক্রয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় ম্যাক কনসোর্টিয়াম। এ লাখ টাকার মিটারের দাম নেয় ৩ লাখ টাকা করে। ওয়াসার ড্রেনেজ বিভাগের জন্য ২৫ কিউসেকের পানির পাম্প সরবরাহের নামে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। তারা রাজধানীর বিভিন্ন বড় বড় পানির পাম্প স্থাপন ও সরবরাহে অপর ঠিকাদারদের সঙ্গে সিন্ডিকেট করে দেড় থেকে দুইগুণ দাম হাতিয়ে নেয়। ঢাকা ওয়াসার পয়ঃনির্মাণ ও ড্রেনেজ বিভাগের আওতায় ডাম্পিং ট্রাক সরবরাহ করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ম্যাক কনসোর্টিয়াম। ঘুষ দুর্নীতির ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মধ্যে প্রাপ্ত অর্থ কাজী খায়রুল বাশার মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করেছেন। তিনি মালয়েশিয়া ররাজধানী কুয়ালালামপুরে সেকেন্ড হোম তৈরি করছেন। তার গ্রামের বাড়ি খুলনার সোনাডাঙ্গায় বিপুল পরিমাণ জমিজমা ক্রয় করেছেন। এছাড়া গাজীপুরের শ্রীপুর থানার মাওনা চৌরাস্তা মূল সড়কের পাশে ১৪ বিঘা বাণিজ্যিক জমি ক্রয় করেন। সেখানে তিনি বাগান বাড়ি ও মাছের ঘের করেছেন। এই জমির বিষয়টি তার আয়কর নথিতে উল্লেখ নেই।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে পরিচয় দিয়ে ফোন করা হলে কাজী খায়রুল বাশার দৈনিক সংবাদের পরিচয় পেয়ে বলেন, হ্যাঁ দুদকে অভিযোগ আছে। এ বিষয়ে আমি ফোনে কথা বলব না। আপনি অফিসে আসেন বলেই ফোন লাইন কেটে দেন। অন্য কোন প্রশ্ন করার সুযোগ দেয়া হয়নি।

অন্যদিকে, নির্বাহী প্রকৌশলী অসিম কুমার ঘোসের অফিসিয়াল নম্বরে দৈনিক সংবাদের পরিচয় দিয়ে গত ৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে ফোন করা হলে একজন ফোন রিসিভ করে বলেন, তিনি অসিম কুমার ঘোষ নন। তিনি বলেন আপনি তার ব্যক্তিগত নাম্বারে ফোন করেন। পরে তার ব্যক্তিগত নাম্বারে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করে সংযোগ কেটে দেন। এরপর গতকাল দ্বিতীয় দিন তার বক্তব্য নিতে একাধিকবার ব্যক্তিগত নম্বরে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

আরও খবর
সামরিক অভিধান থেকে ‘মার্শাল ল’ শব্দটি বাদ দিন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী আজ জিসিএ’র আঞ্চলিক কার্যালয় উদ্বোধন করবেন
চসিকে অর্থ আত্মসাৎকারী কর্মকর্তাদের পদোন্নতি
আজ আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস
দক্ষিণে ইলিশের মোকামে বরফ ও জ্বালানি সংকট
বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে স্থান পেতে ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করা হবে : ইউজিসি
গণপূর্তের প্রধান প্রকৌশলীর সম্পদ অনুসন্ধানে দুদক
চার্জশিটের ৭ বছর পর মামলা পুনঃতদন্তের আবেদন
খাদ্য কর্মকর্তাসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪
চাকরির নামে প্রতারণা : ৫ জন গ্রেফতার
সিলেটে শ্রমিক নেতাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা
তীর পুনর্দখল উচ্ছেদ

মঙ্গলবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ১৮ মহররম ১৪৪২, ২২ ভাদ্র ১৪২৭

ঢাকা ওয়াসার দুই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে বিপুল অবৈধ সম্পদ গড়ার অভিযোগ

সাময়িক বরখাস্ত অসিম কুমার ওএসডি কাজী খায়রুল

সাইফ বাবলু

ঢাকা ওয়াসার সাময়িক বরখাস্ত ও ওএসডি হওয়া দুই নির্বাহী প্রকৌশলীর অবৈধ সম্পদ থাকার অভিযোগ জমা পড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। ওয়াসার মডস জোন ৮ এর সাময়িক বরখাস্ত হওয়া নির্বাহী প্রকৌশলী অসিম কুমার ঘোষ এবং ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই সেক্টর ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী খায়রুল বাশার নামে এ দুই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে পছন্দের ঠিকাদারের কাছে টেন্ডারের গোপন নথি ফাঁস করে দিয়ে কাজ পাইয়ে দেয়া, ক্ষমতার অপব্যবহার, বিধিবহির্ভূত ঠিকদারি প্রতিষ্ঠান খুলে ওয়াসার ঠিকাদারি কাজসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ করা হয়েছে দুদকে। গত ১ সেপ্টেম্বর দুদকের দুই নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ যাচাই-বাছাই সেলে রয়েছে। দুদকে করা অভিযোগ বলা হয়েছে ঘুষ, দুর্নীতির মাধ্যমে ইতোমধ্যে শত শত কোটি টাকার সম্পদ গড়েছেন দুই প্রকৌশলী। নানা অনিয়মের অভিযোগ ওয়াসা কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় একজনকে প্রকৌশলী খায়রুল বাসারকে ওএসডি এবং অসীম কুমার ঘোষকে সাময়িক বরখাস্ত করে রাখা হয়েছে। এসবের স্বপক্ষে নথিপত্র রয়েছে এ প্রতিবেদকের কাছে।

দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য বলেন, অভিযোগ জমা হয়েছে সেটা যাচাই-বাছাই শাখায় আছে। কমিশনে নথি উপস্থাপন করা হবে। অভিযোগের ধরন অনুযায়ী অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত দিবে কমিশন। এর পর অনুসন্ধান কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে। অনুসন্ধান কর্মকর্তা তখন পরবর্তী বিষয়ে কাজ করবে।

দুদকে করা অভিযোগ সূত্র জানা গেছে, ঢাকা ওয়াসার পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা) মডস জোন ৮ এর নির্বাহী প্রকৌশলী অসিম কুমার ঘোষ সালে সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে ঢাকা ওয়াসায় যোগ দিয়ে বর্তমানে ৫ম গ্রেডে কর্মকর্তা। কিন্তু ক্ষমতার অপব্যহার করে ঘুষ দুর্নীতি ও নিজের স্ত্রী ঝর্না রানী ঘোষের সহায়তায় অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। অধিকাংশ সম্পদ বেনামে রয়েছে। অসিম কুমার গোষ একজন সরকারি কর্মচারী হয়েও ঢাকায় ১৩টি বাড়ি ও প্লটের মালিক। এর মধ্যে রাজধানীর ভাটারা থানাধীন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ও বসুন্ধরা রিভারভিউ প্রকল্পে ৮টি প্লট ও আমুলিয়া গ্রিন মডেল টাউন ও কেরানীগঞ্জ তিনটি প্লট। রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কাদেরাবাগ হাউজিং এলাকায় বাড়ি নং-১, সেকশন-২, ব্লক-ডি, নম্বর বাড়িতে ফ্ল্যাট ও সলিমুল্লাহ রোডে তার বিলাশ বহু ফ্ল্যাট আছে। গ্রামের বাড়ি বাগের হাটের ফকির হাতে অস্ট্রাকি গ্রামে শত শত বিঘা জমি কিনেছেন। অসিম কুমার একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও চাকরির বিধিমালা লঙ্ঘন করে কন্যা প্রমি কুমার ঘোষের নামে মেসার্স প্রমি এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান খুলেছেন। যার স্বত্বাধিকারী অসিম কুমার ঘোষের স্ত্রী ঝর্না রানী ঘোষ। এ ছাড়াও তার আরও একাধিক বেনামি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সরকারি কর্মচারী হয়েও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে স্ত্রী ও অন্য একাধিক কর্মকর্তার যোগসাজশে ঢাকা ওয়াসার বিভিন্ন ঠিকাদারি কাজ করে শত শত কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। অসিম কুমার ঘোষ তার স্ত্রী ঝর্না রানী ঘোষের নামে বেনামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে হু-ির মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা ও বসুরহাটে বিলাসবহুল বাড়ি করেছেন।

তিনি সরকারি চাকরিদাতা হয়েও স্ত্রীর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান প্রমি এন্টারপ্রাইজসহ বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে পায়ারা বন্দরে ওরিয়ন গ্রুপের সঙ্গে বিভিন্ন সাব-কন্ট্রাকে ঠিকাদারি কাজ করেছেন। পদ্মা সেতু প্রকল্পেও সাব ঠিকাদারি কাজ রয়েছে অসিম কুমার ঘোষের।

২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে ওয়াসার এমডি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর শাহনাজ পারভীন মিতু। সেখানে তাকে দফতরে না পাওয়া, এলাকার জনসাধারণের অভিযোগ না শোনা, কাউন্সিলরসহ সাধারণ মানুষের সঙ্গে মোবাইল ফোনে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। তদন্তে বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৭ সালের ৪ তার বিরুদ্ধ বিভাগীয় মামলা হয়। ওয়াসার নিজস্ব তদন্ত প্রতিবেদন থেকে থেকে জানা গেছে, অসিম কুমার ঘোষ ঢাকা ওয়াসার মড্স জোন-৮ থেকে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ৪০ লাখ টাকার বিভিন্ন মেরামত ও সংস্কার কাজের ঠিকাদারের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে নিজেই ঠিকাদারের ভূমিকায় ছিলেন। কিছু ক্ষেত্রে কাজ না করেই বিল তুলে নিয়ে আত্মসাৎ করেন। এ কারণে ২০১৭ সালের ২০ জুন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বরখাস্তের আদেশে বলা হয়, ‘২০০৮ সাল থেকে ব্যবহৃত বিভিন্ন বিল রেজিস্ট্রিতে অসৎ উদ্দেশ্যে কার্যাদেশ নম্বর বাদ দিয়ে এন্ট্রি করে সংশ্লিষ্ট ইউডিকে জোরপূর্বক বাধ্য করেন। তিনি ২-৩ ট্রাক মাটি ফেলে মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের প্রায় সাড়ে চার লাখ টাকা বিল তুলে নেন। তিনি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার পাম্প মেরামতের নামে বিল তুলে নেন। বিনা অনুমতিতে বিদেশে অবস্থান করা সত্ত্বেও মেজারমেন্ট বহিতে স্বাক্ষর করেন। চাকরির শৃঙ্খলা পরিপন্থী নানা কাজের জন্য তাকে ঢাকা ওয়াসা থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

দুদকে করা অভিযোগে বলা হয়েছে, অসিমের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন ঠিকাদার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওয়াসা কর্তৃপক্ষের কাছে। অভিযোগ অনুযায়ী খিলবাড়িরটেক পানির পাম্প হাউজের বাউন্ডইর দেওয়াল ও রংয়ের কাজ করিয়ে মেসার্স শাহানা অ্যান্ড কোং নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৮৫ হাজার টাকা, মেহেদী এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মডস জোন-৮ এর অফিস কম্পাউন্ডের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের জন্য ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, হাজীপাড়া পেট্রোল পাম্প হাউসের রক্ষণাবেক্ষণ কাজে ৯০ হাজার টাকা, মেসার্স বিপ্লব ট্রেডার্সের কাছ থেকে ওয়াসার মডস জোন-৮ সংস্কার মেরামত ও রংয়ের কাজে এক লাখ টাকা ঘুষ নেন। মডস জোন-৮ এর অফিস ভবন মেরামত, সংরক্ষণ ও রংয়ের ৪ লাখ ৭২ হাজার টাকা কাজ না করে তুলে নেন। মডস জোন-৮-এর পাম্প হাউসের মেরামত ও সংস্কারের ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা, মডস জোন-৮ এর ডিএমএ স্লুইস গেইটে বালু চেম্বার খুঁজে বের করা ও মেরামের কাজের ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বোসান ইন্টারন্যাশনালের কাছ থেকে ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা, মডস জোন-৮ থেকে বরিশাল এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৪ লাখ ৬৬ হাজার টাকার কাজে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ আছে। অভিযোগগুলো ওয়াসার নিজস্ব তদন্তে প্রমাণিত হয়। এছাড়াও অসিম কুমার ঘোষের দুটি পাসপোর্ট রয়েছে। ওয়াসিম কুমার ঘোষের বিরুদ্ধে মোট ১৭টি পয়েন্টে দুর্নীতি ও অনিয়মের নানা ফিরিস্তি তুলে ধরা হয় দুদকে করা অভিযোগে।

অপর ওয়াসার ঢাকা ওয়াটার সাপ্লাই সেক্টর ডেভলপমেন্ট প্রজেক্টের নির্বাহী কাজী খায়রুল বাশারের বিরুদ্ধে দুদকে করা অভিযোগে বলা হয়, ১৯৯৭ সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে ঢাকা ওয়াসায় নিয়োগ পান। বর্তমানে তিনি থেকে ঢাকা ওয়াসায় ৫ম গ্রেডে কর্মর থেকে ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। প্রকৌশলী কাজী খায়রুল বাশার স্ত্রী ইশরাত জাহান উর্মি ও মা বিলকিস আহমেদের মালিকানায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান (যার নাম মেসার্স ম্যাক কনসোর্টিয়াম) খোলেন। সরকারি দফতরের একজন কর্মচারী হয়ে ক্ষমতার অপব্যহার করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান খুলে তিনি ঢাকা ওয়াসার বিভিন্ন ঠিকাদারি কাজ নিয়ন্ত্রণ করেন। এর মাধ্যমে তিনি উত্তরার ২০ নম্বর রোডের ১৩ নম্বর সেক্টরের ১৭ নম্বর বাড়ির মালিক। এছাড়া মিরপুর ও নাখালপাড়ায় বাড়ি করেছেন। ঘুষ-দুর্নীতির টাকায় তিনি মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম তৈরি করেছেন। কাজী খায়রুল বাশার ও তার স্ত্রী ইশারাত জাহান উর্মির নামে-বেনামে বিভিন্ন ব্যাংকে বিপুল পরিমাণ টাকার লেনদেন রয়েছে। দুদকের অভিযোগে বলা হয়, ঢাকা ওয়াসার ড্রেনেজ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে কাজী খায়রুল বাসার স্ত্রীর নামে ঠিকাদারি খোলেন। ওয়াসার ড্রেনেজ বিভাগের ঠিকাদারির অন্তত ১০ শতাংশ ঠিকাদারি কাজ নিয়ন্ত্রণ করে তার স্ত্রী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক কনসোর্টিয়াম। তার ব্যবসায়িক পার্টনার মতিউর রহমান। ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে ২০ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ করে প্রতিষ্ঠানটি। ২০০৮ সালে ম্যাক কনসোর্টিয়াম সর্বনিম্ন দরদাতা না হয়েও ৮টি পানির পাম্পের জন্য ২টি গ্যাস জেনারেটর সরবরাহের ১০ কোটি ৪৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকার কাজ বাগিয়ে নেয়। ওয়াসার সংগ্রহ বিভাগের অধীনে ২০০ কেবিএ ডিজেল জেনারেটর ক্রয়ের নিমিত্তে ২ কোটি ৯৫ লাখ টাকার কাজ করে ম্যাক কনসোর্টিয়াম। বিভিন্ন আকৃতির মিটার ক্রয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় ম্যাক কনসোর্টিয়াম। এ লাখ টাকার মিটারের দাম নেয় ৩ লাখ টাকা করে। ওয়াসার ড্রেনেজ বিভাগের জন্য ২৫ কিউসেকের পানির পাম্প সরবরাহের নামে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতিষ্ঠানটি। তারা রাজধানীর বিভিন্ন বড় বড় পানির পাম্প স্থাপন ও সরবরাহে অপর ঠিকাদারদের সঙ্গে সিন্ডিকেট করে দেড় থেকে দুইগুণ দাম হাতিয়ে নেয়। ঢাকা ওয়াসার পয়ঃনির্মাণ ও ড্রেনেজ বিভাগের আওতায় ডাম্পিং ট্রাক সরবরাহ করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে ম্যাক কনসোর্টিয়াম। ঘুষ দুর্নীতির ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মধ্যে প্রাপ্ত অর্থ কাজী খায়রুল বাশার মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করেছেন। তিনি মালয়েশিয়া ররাজধানী কুয়ালালামপুরে সেকেন্ড হোম তৈরি করছেন। তার গ্রামের বাড়ি খুলনার সোনাডাঙ্গায় বিপুল পরিমাণ জমিজমা ক্রয় করেছেন। এছাড়া গাজীপুরের শ্রীপুর থানার মাওনা চৌরাস্তা মূল সড়কের পাশে ১৪ বিঘা বাণিজ্যিক জমি ক্রয় করেন। সেখানে তিনি বাগান বাড়ি ও মাছের ঘের করেছেন। এই জমির বিষয়টি তার আয়কর নথিতে উল্লেখ নেই।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে পরিচয় দিয়ে ফোন করা হলে কাজী খায়রুল বাশার দৈনিক সংবাদের পরিচয় পেয়ে বলেন, হ্যাঁ দুদকে অভিযোগ আছে। এ বিষয়ে আমি ফোনে কথা বলব না। আপনি অফিসে আসেন বলেই ফোন লাইন কেটে দেন। অন্য কোন প্রশ্ন করার সুযোগ দেয়া হয়নি।

অন্যদিকে, নির্বাহী প্রকৌশলী অসিম কুমার ঘোসের অফিসিয়াল নম্বরে দৈনিক সংবাদের পরিচয় দিয়ে গত ৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে ফোন করা হলে একজন ফোন রিসিভ করে বলেন, তিনি অসিম কুমার ঘোষ নন। তিনি বলেন আপনি তার ব্যক্তিগত নাম্বারে ফোন করেন। পরে তার ব্যক্তিগত নাম্বারে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করে সংযোগ কেটে দেন। এরপর গতকাল দ্বিতীয় দিন তার বক্তব্য নিতে একাধিকবার ব্যক্তিগত নম্বরে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।