প্রতিটি উপজেলায় চাকরি পাবে এক হাজার তরুণ-তরুণী

প্রতি বছর প্রতিটি উপজেলা থেকে এক হাজার তরুণ-তরুণীকে চাকরি দেয়া হবে। এছাড়া কর্মভিত্তিক দক্ষতা অর্জনে আগ্রহীদের জন্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি করা হবে। গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত এনইসি সম্মেলন কক্ষে ‘রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবে রূপায়ণ : বাংলাদেশের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১’ শীর্ষক জনঅবহিতকরণ সভায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস। সভার সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) ড. শামসুল আলম।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, কোভিডের যন্ত্রণা আমাদের একটু ভোগাচ্ছে। আমরা অনেক ক্ষেত্রে ভালো আছি, সঠিক পথেই আছি। অনেক সূচকে ভালো আছি তবে, আদর্শিক সূচকে ভালো নেই। এছাড়া বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ সব থেকে পরিকল্পিত দেশ দাবি করে তিনি আরও বলেন, আমরা ধারণা পাওয়ার জন্য পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা করে থাকি। আমাদের ৫ বছর মেয়াদি, ১০, ২০ ও শতবর্ষ মেয়াদি পরিকল্পনা আছে। বিশ্বের অন্য কোন দেশে এমন পরিকল্পনা আছে বলে আমার জানা নেই।

প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় (২০২১-২০৪১) মানসম্মত শিক্ষার মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং জনমিতিক লভ্যাংশ আহরণ বিষয়ে বলা হয়েছে, ২০৪১ সালের মধ্যে নিরঙ্কুশ দারিদ্র্য সর্বাংশে দূর করাসহ উচ্চ আয়ের মর্যাদা অর্জনের জন্য মূল্য প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য নিরসন সংশ্লিষ্ট অভীষ্ট সামনে রেখে মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০৪১-এর কর্মসূচি পরিচালিত হবে। বিশেষ করে এর অন্তর্ভুক্ত থাকবে একটি জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির প্রতিষ্ঠান, জনসংখ্যার শতভাগ সাক্ষরতা, ১২ বছর বয়সীদের জন্য সর্বজনীন অবৈতনিক শিক্ষা, কর্মভিত্তিক দক্ষতা অর্জনে আগ্রহীদের জন্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি, সাশ্রয়ী মূল্যে স্বাস্থ্যবিমা স্কিমে সর্বজনীন অভিগম্যতা, সংগঠিত খাতে সব কর্মীকে কর্মকালীন দুর্ঘটনা ও স্বাস্থ্য বীমার শতভাগ আওতায় আনা এবং প্রতি উপজেলা থেকে প্রতি বছর এক হাজার তরুণ-তরুণীর জন্য চাকরির নিশ্চয়তা প্রদান করা।

প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় (২০২১-২০৪১) মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ে লক্ষ্যমাত্রা হলো-দেশের মানুষের সম্ভাব্য আয়ু ২০৩১ সালের মধ্যে ৭৫ বছর এবং ২০৪১ সালে ৮৩ বছরে নিয়ে যাওয়া, জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার ২০৩১ সালের মধ্যে এক শতাংশে নিয়ে আসা এবং ২০৪১ সাল পর্যন্ত এই হারই ধরে রাখা, মাতৃমৃত্যুর হার ২০৩১ সালে প্রতি লাখে ৭০ জন এবং ২০৪১ সালে তা কমিয়ে ৩৬ জনে নিয়ে আসা, শিশুমৃত্যুর হার ২০৩১ সালের মধ্যে প্রতি হাজারে (জীবিত জন্ম) ১৫ জনে নিয়ে আসা ও ২০৪১ সালে তা চারজনে নিয়ে আসা, পাঁচ বছরের কম বয়সীদের কম ওজন (৬ থেকে ৫৯ মাস) ২০৩১ সালে পাঁচজনে নিয়ে আসা ও ২০৪১ সালে তা কমিয়ে দুইজনে নিয়ে আসা, খর্বকায় ২০৩১ সালের মধ্যে ১৫ জনে নিয়ে আসা ও ২০৪১ সালে তা দুইজনে নিয়ে আসা, মোট উর্বরতার হার ২০৩১ সালে ১ দশমিক ৮ শতাংশে এবং ২০৪১ সাল পর্যন্ত তা ধরে রাখা, স্বাস্থ্যবীমার কাভারেজ ২০৩১ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশে এবং ২০৩১ সালের মধ্যে ৭৫ শতাংশে নিয়ে আসা এবং স্বাস্থ্যের জন্য পাবলিক ব্যয় ২০৩১ সালে ১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে তা ২ শতাংশ করা।

শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রাপ্তবয়স্কদের সাক্ষরতার হার ২০৩১ সালের মধ্যে শতভাগ নিশ্চিত করা এবং তা ২০৪১ সাল পর্যন্ত ধরে রাখা, নেট প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির হার ২০৩১ সালের মধ্যে শতভাগ নিশ্চিত করা এবং তা ২০৪১ সাল পর্যন্ত ধরে রাখা, প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়ার হার ২০৩১ সালের মধ্যে শূন্যে নিয়ে আসা এবং ২০৪১ পর্যন্ত তা ধরে রাখা, নিট মাধ্যমিক শিক্ষা ২০৩১ সালের মধ্যে ৯০ শতাংশ নিশ্চিত করা এবং ২০৪১ সালে তা ৯৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়া, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছাড়ার হার ২০৩১ সালে শূন্যে নিয়ে আসা এবং ২০৪১ সাল পর্যন্ত তা ধরে রাখা, উচ্চশিক্ষার হার ২০৩১ সালে ৫০ শতাংশ নিশ্চিত করা এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৮০ শতাংশ নিশ্চিত করা, উচ্চশিক্ষায় নারী শিক্ষার্থীদের শতকরা ভাগ ২০৩১ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ নিশ্চিত করা এবং ২০৪১ সাল পর্যন্ত তা ধরে রাখা, টেকনিক্যাল ও ভোকেশনাল শিক্ষায় ভর্তির হার ২০৩১ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ করা এবং ২০৪১ সালে তা ৪১ শতাংশ করা এবং শিক্ষায় জনসাধারণের ব্যয় ২০৩১ সালে মোট জিডিপির ৩ দশমিক ৫ শতাংশ করা এবং ২০৪১ সালে ৪ শতাংশ করা।

শুক্রবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২১ মহররম ১৪৪২, ২৩ ভাদ্র ১৪২৭

প্রতিটি উপজেলায় চাকরি পাবে এক হাজার তরুণ-তরুণী

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

image

প্রতি বছর প্রতিটি উপজেলা থেকে এক হাজার তরুণ-তরুণীকে চাকরি দেয়া হবে। এছাড়া কর্মভিত্তিক দক্ষতা অর্জনে আগ্রহীদের জন্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি করা হবে। গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত এনইসি সম্মেলন কক্ষে ‘রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবে রূপায়ণ : বাংলাদেশের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১’ শীর্ষক জনঅবহিতকরণ সভায় এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউস। সভার সভাপতিত্ব ও সঞ্চালনা করেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (জ্যেষ্ঠ সচিব) ড. শামসুল আলম।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, কোভিডের যন্ত্রণা আমাদের একটু ভোগাচ্ছে। আমরা অনেক ক্ষেত্রে ভালো আছি, সঠিক পথেই আছি। অনেক সূচকে ভালো আছি তবে, আদর্শিক সূচকে ভালো নেই। এছাড়া বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ সব থেকে পরিকল্পিত দেশ দাবি করে তিনি আরও বলেন, আমরা ধারণা পাওয়ার জন্য পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা করে থাকি। আমাদের ৫ বছর মেয়াদি, ১০, ২০ ও শতবর্ষ মেয়াদি পরিকল্পনা আছে। বিশ্বের অন্য কোন দেশে এমন পরিকল্পনা আছে বলে আমার জানা নেই।

প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় (২০২১-২০৪১) মানসম্মত শিক্ষার মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং জনমিতিক লভ্যাংশ আহরণ বিষয়ে বলা হয়েছে, ২০৪১ সালের মধ্যে নিরঙ্কুশ দারিদ্র্য সর্বাংশে দূর করাসহ উচ্চ আয়ের মর্যাদা অর্জনের জন্য মূল্য প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য নিরসন সংশ্লিষ্ট অভীষ্ট সামনে রেখে মানবসম্পদ উন্নয়নের জন্য প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০৪১-এর কর্মসূচি পরিচালিত হবে। বিশেষ করে এর অন্তর্ভুক্ত থাকবে একটি জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির প্রতিষ্ঠান, জনসংখ্যার শতভাগ সাক্ষরতা, ১২ বছর বয়সীদের জন্য সর্বজনীন অবৈতনিক শিক্ষা, কর্মভিত্তিক দক্ষতা অর্জনে আগ্রহীদের জন্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের সৃষ্টি, সাশ্রয়ী মূল্যে স্বাস্থ্যবিমা স্কিমে সর্বজনীন অভিগম্যতা, সংগঠিত খাতে সব কর্মীকে কর্মকালীন দুর্ঘটনা ও স্বাস্থ্য বীমার শতভাগ আওতায় আনা এবং প্রতি উপজেলা থেকে প্রতি বছর এক হাজার তরুণ-তরুণীর জন্য চাকরির নিশ্চয়তা প্রদান করা।

প্রেক্ষিত পরিকল্পনায় (২০২১-২০৪১) মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ে লক্ষ্যমাত্রা হলো-দেশের মানুষের সম্ভাব্য আয়ু ২০৩১ সালের মধ্যে ৭৫ বছর এবং ২০৪১ সালে ৮৩ বছরে নিয়ে যাওয়া, জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার ২০৩১ সালের মধ্যে এক শতাংশে নিয়ে আসা এবং ২০৪১ সাল পর্যন্ত এই হারই ধরে রাখা, মাতৃমৃত্যুর হার ২০৩১ সালে প্রতি লাখে ৭০ জন এবং ২০৪১ সালে তা কমিয়ে ৩৬ জনে নিয়ে আসা, শিশুমৃত্যুর হার ২০৩১ সালের মধ্যে প্রতি হাজারে (জীবিত জন্ম) ১৫ জনে নিয়ে আসা ও ২০৪১ সালে তা চারজনে নিয়ে আসা, পাঁচ বছরের কম বয়সীদের কম ওজন (৬ থেকে ৫৯ মাস) ২০৩১ সালে পাঁচজনে নিয়ে আসা ও ২০৪১ সালে তা কমিয়ে দুইজনে নিয়ে আসা, খর্বকায় ২০৩১ সালের মধ্যে ১৫ জনে নিয়ে আসা ও ২০৪১ সালে তা দুইজনে নিয়ে আসা, মোট উর্বরতার হার ২০৩১ সালে ১ দশমিক ৮ শতাংশে এবং ২০৪১ সাল পর্যন্ত তা ধরে রাখা, স্বাস্থ্যবীমার কাভারেজ ২০৩১ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশে এবং ২০৩১ সালের মধ্যে ৭৫ শতাংশে নিয়ে আসা এবং স্বাস্থ্যের জন্য পাবলিক ব্যয় ২০৩১ সালে ১ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে তা ২ শতাংশ করা।

শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের বিষয়ে বলা হয়েছে, প্রাপ্তবয়স্কদের সাক্ষরতার হার ২০৩১ সালের মধ্যে শতভাগ নিশ্চিত করা এবং তা ২০৪১ সাল পর্যন্ত ধরে রাখা, নেট প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির হার ২০৩১ সালের মধ্যে শতভাগ নিশ্চিত করা এবং তা ২০৪১ সাল পর্যন্ত ধরে রাখা, প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়ার হার ২০৩১ সালের মধ্যে শূন্যে নিয়ে আসা এবং ২০৪১ পর্যন্ত তা ধরে রাখা, নিট মাধ্যমিক শিক্ষা ২০৩১ সালের মধ্যে ৯০ শতাংশ নিশ্চিত করা এবং ২০৪১ সালে তা ৯৫ শতাংশে নিয়ে যাওয়া, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ছাড়ার হার ২০৩১ সালে শূন্যে নিয়ে আসা এবং ২০৪১ সাল পর্যন্ত তা ধরে রাখা, উচ্চশিক্ষার হার ২০৩১ সালে ৫০ শতাংশ নিশ্চিত করা এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৮০ শতাংশ নিশ্চিত করা, উচ্চশিক্ষায় নারী শিক্ষার্থীদের শতকরা ভাগ ২০৩১ সালের মধ্যে ৫০ শতাংশ নিশ্চিত করা এবং ২০৪১ সাল পর্যন্ত তা ধরে রাখা, টেকনিক্যাল ও ভোকেশনাল শিক্ষায় ভর্তির হার ২০৩১ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ করা এবং ২০৪১ সালে তা ৪১ শতাংশ করা এবং শিক্ষায় জনসাধারণের ব্যয় ২০৩১ সালে মোট জিডিপির ৩ দশমিক ৫ শতাংশ করা এবং ২০৪১ সালে ৪ শতাংশ করা।