আইনের শাসনের দৃষ্টান্ত

পুলিশি হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর ঘটনার করা এক মামলায় তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় পুলিশের দুই সোর্সকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে এ রায় দেয়া হয়। ৭ বছর আগে পাস হওয়ার পর এই প্রথম কাউকে উক্ত আইনে সাজা দেয়া হলো। রাজধানীর পল্লবী থানার তৎকালীন এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদ, এএসআই রাশেদুল হক এবং এএসআই কামরুজ্জামান মিন্টুকে আদালত উক্ত আইনে দোষী সাব্যস্ত করেন। অপরাধীদের বিরুদ্ধে পুলিশি হেফাজতে গাড়িচালক ইশতিয়াক হোসেন জনিকে নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় উক্ত সাজা দেয়া হয়।

নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে সাজা দেয়ার ঘটনা দেশের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। পুলিশি হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর অসংখ্য ঘটনা দেশে ঘটছে। কিন্তু অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কোন আইনি ব্যবস্থা নেয়া যেত না। ২০১৩ সালে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন পাস করা হয়। তবে এ আইন ভুক্তভোগী মানুষ বা তাদের স্বজনদের খুব কমই সাহায্য করতে পারছে। যে কারণে এ আইনের অধীনে সুবিচার পেতে দেশের মানুষকে ৭ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। মূলত পুলিশের ভয়ে ভুক্তভোগীরা উক্ত আইনের দ্বারস্থ হন না। সাহস করে কেউ মামলা করলেও তাকে বা তাদের নানা ভাবে পুলিশি হয়রানি করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজির করাও কঠিন হয়ে পড়ে। উল্লিখিত রায়ের পর এ অবস্থার অবসান হবে বলে আমরা আশা করি। নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে আরও যেসব মামলা আছে সেগুলো গতি পাবে এবং দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি হবেÑ সেটা আমাদের আশা।

আদালতে পুলিশ কর্মকর্তাদের অপরাধী প্রমাণ ও আইন অনুযায়ী সাজা হওয়ায় দেশে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো। এ রায়ের মধ্যদিয়ে এটা প্রমাণ হলো যে, অপরাধী যে বা যারাই হোক না কেন তাকে সাজা পেতে হবে। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন। আমরা চাইব, পুলিশি হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর যত ঘটনা দেশে ঘটেছে তার প্রতিকার এ আইনের অধীনে করা হোক। পুলিশি হেফাজতে দেশের কোন নাগরিক নির্যাতিত হবেন বা নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যাবেন সেটা মেনে নেয়া যায় না।

শুক্রবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২১ মহররম ১৪৪২, ২৩ ভাদ্র ১৪২৭

পুলিশ কর্মকর্তাদের দণ্ড

আইনের শাসনের দৃষ্টান্ত

পুলিশি হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর ঘটনার করা এক মামলায় তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় পুলিশের দুই সোর্সকে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে এ রায় দেয়া হয়। ৭ বছর আগে পাস হওয়ার পর এই প্রথম কাউকে উক্ত আইনে সাজা দেয়া হলো। রাজধানীর পল্লবী থানার তৎকালীন এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদ, এএসআই রাশেদুল হক এবং এএসআই কামরুজ্জামান মিন্টুকে আদালত উক্ত আইনে দোষী সাব্যস্ত করেন। অপরাধীদের বিরুদ্ধে পুলিশি হেফাজতে গাড়িচালক ইশতিয়াক হোসেন জনিকে নির্যাতন ও হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় উক্ত সাজা দেয়া হয়।

নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে সাজা দেয়ার ঘটনা দেশের ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। পুলিশি হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর অসংখ্য ঘটনা দেশে ঘটছে। কিন্তু অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে কোন আইনি ব্যবস্থা নেয়া যেত না। ২০১৩ সালে নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন পাস করা হয়। তবে এ আইন ভুক্তভোগী মানুষ বা তাদের স্বজনদের খুব কমই সাহায্য করতে পারছে। যে কারণে এ আইনের অধীনে সুবিচার পেতে দেশের মানুষকে ৭ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। মূলত পুলিশের ভয়ে ভুক্তভোগীরা উক্ত আইনের দ্বারস্থ হন না। সাহস করে কেউ মামলা করলেও তাকে বা তাদের নানা ভাবে পুলিশি হয়রানি করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজির করাও কঠিন হয়ে পড়ে। উল্লিখিত রায়ের পর এ অবস্থার অবসান হবে বলে আমরা আশা করি। নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে আরও যেসব মামলা আছে সেগুলো গতি পাবে এবং দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি হবেÑ সেটা আমাদের আশা।

আদালতে পুলিশ কর্মকর্তাদের অপরাধী প্রমাণ ও আইন অনুযায়ী সাজা হওয়ায় দেশে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো। এ রায়ের মধ্যদিয়ে এটা প্রমাণ হলো যে, অপরাধী যে বা যারাই হোক না কেন তাকে সাজা পেতে হবে। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন। আমরা চাইব, পুলিশি হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যুর যত ঘটনা দেশে ঘটেছে তার প্রতিকার এ আইনের অধীনে করা হোক। পুলিশি হেফাজতে দেশের কোন নাগরিক নির্যাতিত হবেন বা নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা যাবেন সেটা মেনে নেয়া যায় না।