মায়ানমার সেনাশাসকদের বিচার ত্বরান্বিত করুন

রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বর নির্যাতনের স্বীকারোক্তি দিয়েছেন মায়ানমারের দুই সেনা সদস্য মিও উইন তুন ও জ নায়ের তুন। ২০১৭ সালে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মায়ানমার সামরিক বাহিনীর ক্লিয়ারেন্স অপারেশনের সমড়ে সৈনিকদের প্রতি নির্দেশ ছিল ‘যাকে দেখবে তাকে গুলি করবে’। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা ও নির্যাতন চালানোর বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেয়ার সময় মায়ানমারের এই দুজন সৈনিক এ কথা বলেছেন। গত মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ফরটিফাই রাইটস এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) তারা দুজন ২০১৭ সালে মায়ানমার সামরিক বাহিনীর ক্লিয়ারেন্স অপারেশনের সময়ে নারী ও শিশুসহ নিরীহ মানুষদের হত্যা, গণকবরে মাটিচাপা দেয়া, ধর্ষণসহ অন্যান্য অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। তারা ১৯ জন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছে, যারা সরাসরি এ ধরনের নৃশংসতা করেছে। স্বীকারোক্তি অনুযায়ী শুধু এ দুজন কমপক্ষে ১৮০ জন রোহিঙ্গা হত্যকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।

এই দুই সেনা সদস্যের অপরাধ স্বীকার করার বিষয়টি ভবিষ্যতে রাজসাক্ষী হিসেবে মামলায় কাজ করবে। মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর সে দেশের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের বিষয়টি কারও অজানা নয়। গোটা বিশ্বই ও খবর জানে। এছাড়া মায়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতনের ভয়াল চিত্র নিয়ে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক কমিশনের রিপোর্টে মায়ানমার সেনাদের দ্বারা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নারীদের ব্যাপক হারে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়ার পর জাতিসংঘের কর্মকর্তারা একে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে অভিহিত করেন। রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে ফেলার চিত্র স্যাটেলাইটেও দেখা গিয়েছিল।

মায়ানমারের সেনা ও সরকার এটা অস্বীকার করে আসছে শুরু থেকেই যে, তারা এসব কিছুই করছে না। কিন্তু তাদের এই বক্তব্য কোথাও গৃহীত হয়নি। এটা ভালো খবর যে, এ দুজন স্বীকার করেছে। তাদের এই স্বীকারোক্তির মাধ্যমে মায়ানমারের সেনাবাহিনীকে আইনের আওতায় আনা সহজ হবে।

এখন যেহেতু এ দুজন সেনা সদস্য স্বীকার করেছে, সেহেতু বাংলাদেশ সরকারকে এর সদ্ব্যবহার করতে হবে। প্রথমত মায়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানোর কৌশলী তৎপরতা শুরু করতে হবে। দ্বিতীয়ত, মায়ানমারের সেনাবাহিনীকে আদালতে নিয়ে যাওয়া যায় কি না বা এই প্রক্রিয়াকে আরও বেগবান করা যায় কিনা সে চেষ্টাও চালাতে হবে।

শুক্রবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২১ মহররম ১৪৪২, ২৩ ভাদ্র ১৪২৭

রোহিঙ্গা নির্যাতনের স্বীকারোক্তি

মায়ানমার সেনাশাসকদের বিচার ত্বরান্বিত করুন

রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বর নির্যাতনের স্বীকারোক্তি দিয়েছেন মায়ানমারের দুই সেনা সদস্য মিও উইন তুন ও জ নায়ের তুন। ২০১৭ সালে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মায়ানমার সামরিক বাহিনীর ক্লিয়ারেন্স অপারেশনের সমড়ে সৈনিকদের প্রতি নির্দেশ ছিল ‘যাকে দেখবে তাকে গুলি করবে’। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা ও নির্যাতন চালানোর বিষয়ে স্বীকারোক্তি দেয়ার সময় মায়ানমারের এই দুজন সৈনিক এ কথা বলেছেন। গত মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা ফরটিফাই রাইটস এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) তারা দুজন ২০১৭ সালে মায়ানমার সামরিক বাহিনীর ক্লিয়ারেন্স অপারেশনের সময়ে নারী ও শিশুসহ নিরীহ মানুষদের হত্যা, গণকবরে মাটিচাপা দেয়া, ধর্ষণসহ অন্যান্য অপরাধের কথা স্বীকার করেছে। তারা ১৯ জন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছে, যারা সরাসরি এ ধরনের নৃশংসতা করেছে। স্বীকারোক্তি অনুযায়ী শুধু এ দুজন কমপক্ষে ১৮০ জন রোহিঙ্গা হত্যকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত।

এই দুই সেনা সদস্যের অপরাধ স্বীকার করার বিষয়টি ভবিষ্যতে রাজসাক্ষী হিসেবে মামলায় কাজ করবে। মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর সে দেশের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের বিষয়টি কারও অজানা নয়। গোটা বিশ্বই ও খবর জানে। এছাড়া মায়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর দেশটির সেনাবাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতনের ভয়াল চিত্র নিয়ে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক কমিশনের রিপোর্টে মায়ানমার সেনাদের দ্বারা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নারীদের ব্যাপক হারে ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়ার পর জাতিসংঘের কর্মকর্তারা একে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে অভিহিত করেন। রোহিঙ্গাদের বাড়িঘর পুড়িয়ে ফেলার চিত্র স্যাটেলাইটেও দেখা গিয়েছিল।

মায়ানমারের সেনা ও সরকার এটা অস্বীকার করে আসছে শুরু থেকেই যে, তারা এসব কিছুই করছে না। কিন্তু তাদের এই বক্তব্য কোথাও গৃহীত হয়নি। এটা ভালো খবর যে, এ দুজন স্বীকার করেছে। তাদের এই স্বীকারোক্তির মাধ্যমে মায়ানমারের সেনাবাহিনীকে আইনের আওতায় আনা সহজ হবে।

এখন যেহেতু এ দুজন সেনা সদস্য স্বীকার করেছে, সেহেতু বাংলাদেশ সরকারকে এর সদ্ব্যবহার করতে হবে। প্রথমত মায়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানোর কৌশলী তৎপরতা শুরু করতে হবে। দ্বিতীয়ত, মায়ানমারের সেনাবাহিনীকে আদালতে নিয়ে যাওয়া যায় কি না বা এই প্রক্রিয়াকে আরও বেগবান করা যায় কিনা সে চেষ্টাও চালাতে হবে।