কালকিনিতে আড়িয়ালখাঁয় বিলীন বসতবাড়ি-ফসলি জমি

মাদারীপুরের কালকিনিতে আড়িয়াল খাঁ নদে গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে প্রায় ২০টি বসবাড়ি ও ফসলি জমি। ইতোমধ্যে এ নদীর তাণ্ডবে ভিটেমাটি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে অনেকে। বর্তমানে নদীর পানি অনেক কমলেও প্রচণ্ড ভাঙ্গন বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ভাঙ্গন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ৫ গ্রামের মানুষ। এদিকে আড়িয়াল খাঁ নদী ভাঙ্গন কবলিত অনেক মানুষ কোন প্রকার সহযোগিতা না পেয়ে পরিবার নিয়ে অর্ধঅনাহাড়ে দীনযাপন করছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন প্রশাসনের কাছে। আজ শুক্রবার সকালে সরেজমিন ও স্থানীয় লোকজনেরা জানান, উপজেলা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে সাহেবরামপুর আণ্ডারচর গ্রাম। এ গ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে আড়িয়াল খাঁ নদী। এ গ্রাম প্রত্যান্তঞ্চলে হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত হয়ে পড়ে আছে। নেই কোন আধুনিক সুযোগ-সুবিধা। বিগত দিনেও নদী গর্ভে চলে গেছে এ গ্রামের অনেক গাছপাল, বাড়িঘর ও কয়েকশ’ একর ফসলি জমি। কিন্তু তখন কেউ এগিয়ে আসেনি এ গ্রামের মানুষের পাশে। বর্তমানে আড়িয়াল খা নদী গর্ভে আন্ডারচর গ্রামের লঞ্চঘাটের পূর্ব পাশ থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার ধান, আখ ও পাটসহ বিভিন্ন প্রকার ফসলি জমি চলে গেছে। এছাড়া বর্তমানে পুনরায় একের পর এক আড়িয়াল খাঁ নদীর পেটে চলে গেছে আন্ডারচর গ্রামের চানমিয়া সরদার, বজলুল রহমান সরদার, দাদন সরদার, দুদু মিয়া সরদার, বাদশা সরদার, কামাল হাওলাদার ও হাচিনা বেগমসহ প্রায় ২০টি বসতবাড়ি। ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে অর্ধশতাধিক বসতবাড়িসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। বর্তমানে আন্ডারচরসহ ৩টি গ্রামের মানুষ নদী ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। অবহেলিত আন্ডারচর গ্রামের মানুষেরা সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোন প্রকার ত্রাণও পাননি। ক্ষতিগ্রস্ত হাসিনা বেগম ও বিউটি বেগমসহ বেশ কয়েকজন বলেন, আড়িয়াল খাঁ নদী আমাগো ঘড়বাড়ি, জায়গা জমি সব কেড়ে নিয়ে গেছে। পানি কমে অসময় প্রচণ্ড নদে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গন রোধ না করা হলে আমাগো বাকি যা আছে সব নদী চলে যাবে আমরা গ্রামবাসী নদী ভাঙনের হাত থেকে বাঁচতে চাই। এ ছাড়া আমরা কোন সাহায্য-সহযোগিতাও পাইনি। কৃষক মোয়াজ্জেম হোসেন, জলিল শিকদার ও হাবিবুর রহমান শিকদারসহ বেশ কয়েকজন বলেন, আমাগো ফসলের সকল জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। আমরা এখন কিভাবে বাঁচব। আমাগো কৃষকের কান্না কারও কিছু আসে যায় না। আন্ডারচরের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আয়নাল হক বেপারী বলেন, নদী ভাঙ্গনে রাজাচর গ্রামের সব শেষে হয়ে গেছে। আমি চেষ্টা করছি ভাঙ্গন কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। সাহেবরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসান সেলিম বলেন,আড়িয়াল খাঁ ভাঙ্গন বন্ধ করতে বহুবার প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছি। তবে দুঃখের বিষয় এখনও কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। পানি কমলেও ভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধের ব্যবস্থা করা হবে।

শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২২ মহররম ১৪৪২, ২৪ ভাদ্র ১৪২৭

কালকিনিতে আড়িয়ালখাঁয় বিলীন বসতবাড়ি-ফসলি জমি

আশরাফুর রহমান হাকিম, কালকিনি (মাদারীপুর)

মাদারীপুরের কালকিনিতে আড়িয়াল খাঁ নদে গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে প্রায় ২০টি বসবাড়ি ও ফসলি জমি। ইতোমধ্যে এ নদীর তাণ্ডবে ভিটেমাটি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে অনেকে। বর্তমানে নদীর পানি অনেক কমলেও প্রচণ্ড ভাঙ্গন বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ভাঙ্গন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ৫ গ্রামের মানুষ। এদিকে আড়িয়াল খাঁ নদী ভাঙ্গন কবলিত অনেক মানুষ কোন প্রকার সহযোগিতা না পেয়ে পরিবার নিয়ে অর্ধঅনাহাড়ে দীনযাপন করছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন প্রশাসনের কাছে। আজ শুক্রবার সকালে সরেজমিন ও স্থানীয় লোকজনেরা জানান, উপজেলা সদর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে সাহেবরামপুর আণ্ডারচর গ্রাম। এ গ্রামের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে আড়িয়াল খাঁ নদী। এ গ্রাম প্রত্যান্তঞ্চলে হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত হয়ে পড়ে আছে। নেই কোন আধুনিক সুযোগ-সুবিধা। বিগত দিনেও নদী গর্ভে চলে গেছে এ গ্রামের অনেক গাছপাল, বাড়িঘর ও কয়েকশ’ একর ফসলি জমি। কিন্তু তখন কেউ এগিয়ে আসেনি এ গ্রামের মানুষের পাশে। বর্তমানে আড়িয়াল খা নদী গর্ভে আন্ডারচর গ্রামের লঞ্চঘাটের পূর্ব পাশ থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার ধান, আখ ও পাটসহ বিভিন্ন প্রকার ফসলি জমি চলে গেছে। এছাড়া বর্তমানে পুনরায় একের পর এক আড়িয়াল খাঁ নদীর পেটে চলে গেছে আন্ডারচর গ্রামের চানমিয়া সরদার, বজলুল রহমান সরদার, দাদন সরদার, দুদু মিয়া সরদার, বাদশা সরদার, কামাল হাওলাদার ও হাচিনা বেগমসহ প্রায় ২০টি বসতবাড়ি। ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে অর্ধশতাধিক বসতবাড়িসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। বর্তমানে আন্ডারচরসহ ৩টি গ্রামের মানুষ নদী ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। অবহেলিত আন্ডারচর গ্রামের মানুষেরা সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোন প্রকার ত্রাণও পাননি। ক্ষতিগ্রস্ত হাসিনা বেগম ও বিউটি বেগমসহ বেশ কয়েকজন বলেন, আড়িয়াল খাঁ নদী আমাগো ঘড়বাড়ি, জায়গা জমি সব কেড়ে নিয়ে গেছে। পানি কমে অসময় প্রচণ্ড নদে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ভাঙ্গন রোধ না করা হলে আমাগো বাকি যা আছে সব নদী চলে যাবে আমরা গ্রামবাসী নদী ভাঙনের হাত থেকে বাঁচতে চাই। এ ছাড়া আমরা কোন সাহায্য-সহযোগিতাও পাইনি। কৃষক মোয়াজ্জেম হোসেন, জলিল শিকদার ও হাবিবুর রহমান শিকদারসহ বেশ কয়েকজন বলেন, আমাগো ফসলের সকল জমি নদী গর্ভে চলে গেছে। আমরা এখন কিভাবে বাঁচব। আমাগো কৃষকের কান্না কারও কিছু আসে যায় না। আন্ডারচরের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আয়নাল হক বেপারী বলেন, নদী ভাঙ্গনে রাজাচর গ্রামের সব শেষে হয়ে গেছে। আমি চেষ্টা করছি ভাঙ্গন কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। সাহেবরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল হাসান সেলিম বলেন,আড়িয়াল খাঁ ভাঙ্গন বন্ধ করতে বহুবার প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছি। তবে দুঃখের বিষয় এখনও কার্যকর কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। পানি কমলেও ভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধের ব্যবস্থা করা হবে।