ঝুঁকিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমানের করোনাভাইরাস পজেটিভ হওয়ায় সিটি করপোরেশনের অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। কারণ বৃহস্পতিবার রাতে তাদের দু’জনের রিপোর্ট আসার আগে তারা করপোরেশন ও বাইরে একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। এতে তাদরে দায়িত্বহীনতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কেননা হাসপাতালে নমুনা দেয়ার পরও তারা কর্মসূচিতে ছিলেন। বর্তমানে আক্রান্ত এই দু’জন আইসোলেশনে রয়েছেন। করোনা রিপোর্ট পাওয়ার আগেই সিসিকের এই দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি অফিসে কাজ করার পাশাপাশি সভায় অংশ নেন। তবে ওই সভায় কোন ধরনের দূরত্ব কিংবা স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি ।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবের তালিকায় ২৮ নম্বরে রয়েছেন প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান ও ২৯ নম্বরে মেয়র আরিফের নাম রয়েছে।
এদিকে, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী কয়েকদিন আগে সিসিকের পারিষদ নিয়ে চাঁদপুর সফর করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী শামসুল হক, হিসাব কর্মকর্তা আ ন ম মনছুফ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা হানিফুর রহমান। এছাড়া মেয়রের সহকারীরা। এরপর থেকে মেয়র কিছুটা অসুস্থবোধ করেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে আবাসন খাতের বৃহৎ প্রতিষ্ঠান আমীন মোহাম্মদ গ্রুপের ‘সিলেট নগরীর উন্নয়ন প্রকল্প’ উপস্থাপন এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদ, সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও যুগ্ম সচিব বিধায়ক রায় চৌধুরী, সচিব ফাহিমা ইয়াসমিন, প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আজিজ, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আনম মনছুফ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. হানিফুর রহমান, মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী মুহিবুল ইসলাম ইমন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, আমীন মোহাম্মদ গ্রুপের পরিচালক ও চিফ মার্কেটিং অফিসার তানভীরুল ইসলাম ও স্থপতি রাকিব, গ্রুপটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রমজানুল হক নিহাদ।
একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, এর আগে সিসিকের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, ব্যক্তিগত সহকারী মুহিবুল ইসলাম ইমন, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আনম মনছুফ ও মেয়রের বাসার এক নিরাপত্তকর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। বৈঠকে কোন ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি। একজনে সঙ্গে আরেকজন গা ঘেঁষে বসেন। অধিকাংশের মুখে মাস্ক ছিল না। আর যাদের সঙ্গে মাস্ক ছিল তারা অনেকেই মুখে মাস্ক না লাগিয়ে গলায় ঝুলিয়ে রাখেন।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী বলেন, মেয়র ও প্রধান প্রকৌশলীর করোনা শনাক্তের খবর জানার পর থেকে আমি নিজেই ভয়ে আছি। সিসিকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে কেবল আমার বোধহয় এখন পর্যন্ত করোনা হয়নি। কিন্তু এ অবস্থায় অফিসে যাওয়া বন্ধ করে দেয়াও আমার পক্ষে সম্ভব হবে না। এতে নগর ভবনের কার্যক্রম ব্যাহত হবে। ফলে কি করবো বুঝতে পারছি না।
নমুনা জমা দেয়ার পরও কোয়ারেন্টিনে না গিয়ে মেয়র ও প্রধান প্রকৌশলী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ প্রসঙ্গে বলা আমার জন্য বিব্রতকর। সবাই দায়িত্বশীল লোক।
সিলেট স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, বৈঠকে কিংবা কারও সঙ্গে দেখা করার সময় অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। এজন্য নির্দেশনাও দেয়া আছে। কারও যদি করোনা থাকে আর তিনি যদি মানুষের সংস্পর্শে আসেন তাহলে অন্যরাও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২২ মহররম ১৪৪২, ২৪ ভাদ্র ১৪২৭
ঝুঁকিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
বিশেষ প্রতিনিধি
সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমানের করোনাভাইরাস পজেটিভ হওয়ায় সিটি করপোরেশনের অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। কারণ বৃহস্পতিবার রাতে তাদের দু’জনের রিপোর্ট আসার আগে তারা করপোরেশন ও বাইরে একাধিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। এতে তাদরে দায়িত্বহীনতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কেননা হাসপাতালে নমুনা দেয়ার পরও তারা কর্মসূচিতে ছিলেন। বর্তমানে আক্রান্ত এই দু’জন আইসোলেশনে রয়েছেন। করোনা রিপোর্ট পাওয়ার আগেই সিসিকের এই দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি অফিসে কাজ করার পাশাপাশি সভায় অংশ নেন। তবে ওই সভায় কোন ধরনের দূরত্ব কিংবা স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি ।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবের তালিকায় ২৮ নম্বরে রয়েছেন প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান ও ২৯ নম্বরে মেয়র আরিফের নাম রয়েছে।
এদিকে, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী কয়েকদিন আগে সিসিকের পারিষদ নিয়ে চাঁদপুর সফর করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী শামসুল হক, হিসাব কর্মকর্তা আ ন ম মনছুফ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা হানিফুর রহমান। এছাড়া মেয়রের সহকারীরা। এরপর থেকে মেয়র কিছুটা অসুস্থবোধ করেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নগর ভবনের সম্মেলন কক্ষে আবাসন খাতের বৃহৎ প্রতিষ্ঠান আমীন মোহাম্মদ গ্রুপের ‘সিলেট নগরীর উন্নয়ন প্রকল্প’ উপস্থাপন এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, কাউন্সিলর রেজওয়ান আহমদ, সিসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও যুগ্ম সচিব বিধায়ক রায় চৌধুরী, সচিব ফাহিমা ইয়াসমিন, প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল আজিজ, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আনম মনছুফ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. হানিফুর রহমান, মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী মুহিবুল ইসলাম ইমন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, আমীন মোহাম্মদ গ্রুপের পরিচালক ও চিফ মার্কেটিং অফিসার তানভীরুল ইসলাম ও স্থপতি রাকিব, গ্রুপটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রমজানুল হক নিহাদ।
একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, এর আগে সিসিকের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, ব্যক্তিগত সহকারী মুহিবুল ইসলাম ইমন, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আনম মনছুফ ও মেয়রের বাসার এক নিরাপত্তকর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন। বৈঠকে কোন ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়নি। একজনে সঙ্গে আরেকজন গা ঘেঁষে বসেন। অধিকাংশের মুখে মাস্ক ছিল না। আর যাদের সঙ্গে মাস্ক ছিল তারা অনেকেই মুখে মাস্ক না লাগিয়ে গলায় ঝুলিয়ে রাখেন।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী বলেন, মেয়র ও প্রধান প্রকৌশলীর করোনা শনাক্তের খবর জানার পর থেকে আমি নিজেই ভয়ে আছি। সিসিকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে কেবল আমার বোধহয় এখন পর্যন্ত করোনা হয়নি। কিন্তু এ অবস্থায় অফিসে যাওয়া বন্ধ করে দেয়াও আমার পক্ষে সম্ভব হবে না। এতে নগর ভবনের কার্যক্রম ব্যাহত হবে। ফলে কি করবো বুঝতে পারছি না।
নমুনা জমা দেয়ার পরও কোয়ারেন্টিনে না গিয়ে মেয়র ও প্রধান প্রকৌশলী বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ প্রসঙ্গে বলা আমার জন্য বিব্রতকর। সবাই দায়িত্বশীল লোক।
সিলেট স্বাস্থ্য অধিদফতরের সহকারী পরিচালক ডা. আনিসুর রহমান বলেন, বৈঠকে কিংবা কারও সঙ্গে দেখা করার সময় অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। এজন্য নির্দেশনাও দেয়া আছে। কারও যদি করোনা থাকে আর তিনি যদি মানুষের সংস্পর্শে আসেন তাহলে অন্যরাও করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।