বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশের অর্থনীতি মারাত্মক চাপে পড়েছে। সাধারণ ছুটি শেষে অর্থনীতির চাকা আবারও ঘুরতে শুরু করলেও গ্রামীণ অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করা সহজ হবে না বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এ নিয়ে গতকাল সংবাদ এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
মহামারীর মধ্যেও দেশের অর্থনীতিতে নতুন নতুন কিছু রেকর্ড হতে দেখা গেছে। রেমিট্যান্সের নতুন রেকর্ড হয়েছে, রিজার্ভে রেকর্ড হয়েছে। আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বিভিন্ন সংস্থার আশঙ্কার চেয়ে অনেক বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। আবার দারিদ্র্যেরও রেকর্ড হয়েছে। এক হিসাব অনুযায়ী, সাধারণ ছুটির ৬৬ দিনে দেশে প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে। দেশে এবং দেশের বাইরে কর্মরত অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। শুধু পোশাক শ্রমিকই বেকার হয়েছেন ১০ লাখ। প্রায় ১৮ হাজার কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। দেড় কোটিরও বেশি মানুষ কাজ হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে। চাকরি হারিয়ে বিদেশ থেকে ইতোমধ্যে বহু মানুষ দেশে ফিরেছে। ফেরার অপেক্ষায় আছে আরও অনেকে। দেশে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের মানুষদের জীবন-জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
গ্রামীণ অর্থনীতি আগে থেকেই দুর্বল ছিল। গ্রামগুলো এখনও কৃষিনির্ভর হয়ে আছে। কেউ কৃষি খাতের বাইরে কাজ করতে চাইলে তাকে ছুটতে হয় শহরে। কৃষি অর্থনীতিতেই নেই বৈচিত্র্য। পণ্য উৎপাদন করে মধ্যস্বত্বভোগীদের হাতে তুলে দিয়ে লোকসান গোনাই কৃষকদের নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষি কেন্দ্রিক ছোট বা মাঝারি শিল্প গ্রামগুলোতে গড়ে তোলা হয়নি। অবকাঠামো এখনও নাজুক অবস্থায় রয়েছে। মহামারীর বিপর্যয় সামলাতে লাখ লাখ মানুষ শহর এবং বিদেশ থেকে গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে। গ্রামে তাদের থাকবার ঘর হয়তো আছে, কিন্তু খাবার জোটাবার মতো কাজ নেই। অনেকে সঞ্চয় ভেঙে চলছে। অনেকে জমি বিক্রি করছে। গ্রামীণ অর্থনীতি দ্রুত পুনরুদ্ধার করা না গেলে এসব মানুষের একসময় বেচবার জন্য জমি বা খরচ করবার মতো সঞ্চিত কোন অর্থ অবশিষ্ট থাকবে না।
গ্রামীণ অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করতে হলে সরকারকে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। বন্ধ হওয়া কলকারখানা চালু করতে হবে। নতুন নতুন বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে হবে। ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা যেন সহজেই প্রণোদনার অর্থ পান সেটা নিশ্চিত করা জরুরি। পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বাড়াতে হবে। গ্রামগুলোকে কৃষির ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। টেকসই অর্থনৈতিক উন্নতির লক্ষ্যে গ্রামীণ অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনা জরুরি।
শনিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২২ মহররম ১৪৪২, ২৪ ভাদ্র ১৪২৭
বৈশ্বিক মহামারী নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশের অর্থনীতি মারাত্মক চাপে পড়েছে। সাধারণ ছুটি শেষে অর্থনীতির চাকা আবারও ঘুরতে শুরু করলেও গ্রামীণ অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করা সহজ হবে না বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এ নিয়ে গতকাল সংবাদ এ বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।
মহামারীর মধ্যেও দেশের অর্থনীতিতে নতুন নতুন কিছু রেকর্ড হতে দেখা গেছে। রেমিট্যান্সের নতুন রেকর্ড হয়েছে, রিজার্ভে রেকর্ড হয়েছে। আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বিভিন্ন সংস্থার আশঙ্কার চেয়ে অনেক বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। আবার দারিদ্র্যেরও রেকর্ড হয়েছে। এক হিসাব অনুযায়ী, সাধারণ ছুটির ৬৬ দিনে দেশে প্রায় সাড়ে তিন কোটি মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে। দেশে এবং দেশের বাইরে কর্মরত অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। শুধু পোশাক শ্রমিকই বেকার হয়েছেন ১০ লাখ। প্রায় ১৮ হাজার কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। দেড় কোটিরও বেশি মানুষ কাজ হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে। চাকরি হারিয়ে বিদেশ থেকে ইতোমধ্যে বহু মানুষ দেশে ফিরেছে। ফেরার অপেক্ষায় আছে আরও অনেকে। দেশে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের মানুষদের জীবন-জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
গ্রামীণ অর্থনীতি আগে থেকেই দুর্বল ছিল। গ্রামগুলো এখনও কৃষিনির্ভর হয়ে আছে। কেউ কৃষি খাতের বাইরে কাজ করতে চাইলে তাকে ছুটতে হয় শহরে। কৃষি অর্থনীতিতেই নেই বৈচিত্র্য। পণ্য উৎপাদন করে মধ্যস্বত্বভোগীদের হাতে তুলে দিয়ে লোকসান গোনাই কৃষকদের নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কৃষি কেন্দ্রিক ছোট বা মাঝারি শিল্প গ্রামগুলোতে গড়ে তোলা হয়নি। অবকাঠামো এখনও নাজুক অবস্থায় রয়েছে। মহামারীর বিপর্যয় সামলাতে লাখ লাখ মানুষ শহর এবং বিদেশ থেকে গ্রামে গিয়ে আশ্রয় নিচ্ছে। গ্রামে তাদের থাকবার ঘর হয়তো আছে, কিন্তু খাবার জোটাবার মতো কাজ নেই। অনেকে সঞ্চয় ভেঙে চলছে। অনেকে জমি বিক্রি করছে। গ্রামীণ অর্থনীতি দ্রুত পুনরুদ্ধার করা না গেলে এসব মানুষের একসময় বেচবার জন্য জমি বা খরচ করবার মতো সঞ্চিত কোন অর্থ অবশিষ্ট থাকবে না।
গ্রামীণ অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করতে হলে সরকারকে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। বন্ধ হওয়া কলকারখানা চালু করতে হবে। নতুন নতুন বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে হবে। ছোট ও মাঝারি ব্যবসায়ীরা যেন সহজেই প্রণোদনার অর্থ পান সেটা নিশ্চিত করা জরুরি। পাশাপাশি সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতা বাড়াতে হবে। গ্রামগুলোকে কৃষির ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। টেকসই অর্থনৈতিক উন্নতির লক্ষ্যে গ্রামীণ অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনা জরুরি।