করতোয়া-বাঙ্গালী নদীর বালু উত্তোলনে হুমকিতে ছয় সেতু

গোবিন্দগঞ্জে করতোয়া ও বাঙ্গালী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে সংঘবদ্ধ একটি চক্র। ফলে হুমকিকে পড়েছে সংযোগ সড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি ব্রিজ-সেতু। বালু উত্তোলন বন্ধে স্থানীয়রা ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে এলেও থেমে নেই বালু উত্তোলন। হুমকিতে পড়া ব্রিজ-সেতুগুলো হলো ,উপজেলার কাটাখালী সেতু, বড়দহ সেতু, ফুলাহার সেতু, দেওয়ানতলা সেতু, মজিদের ঘাট সেতু ও পাশের একটি রেল সেতু। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের কাটাখালী সেতু ও পাশের রাখালবুরুজ ইউনিয়নে বড়দহ সেতু এলাকায় করতোয়া নদীতে এবং কাটাবাড়ী ইউনিয়নের ফুলাহার ব্রিজ থেকে ভাসমান মেশিন বসিয়ে কয়েক বছর ধরে বালু উত্তোলন করছে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা। ফলে কাটাখালী, বড়দহ ও ফুলাহার ব্রিজ তিনটি ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

অপরদিকে, উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের দেওয়ানতলা এলাকায় বাঙ্গালী নদী থেকে একই কায়দায় বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে আসছে বালু খেকোরা। ফলে বাঙ্গালী নদীর ওপর অবস্থিত দেওয়ানতলা ব্রিজ ছাড়াও একটি রেলসেতু ও স্থানীয় মজিদের ঘাট ব্রিজটি হুমকির মুখে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাইবান্ধা সদরসহ সাঘাটা, ফুলছড়ি উপজেলায় যোগাযোগের মাধ্যম দেওয়ানতলা সড়কটিও।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকার প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট বছরের পর বছর ধরে করতোয়া ও বাঙ্গালী নদী থেকে বালু উত্তোলন করে অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে হুমকিতে পড়েছে ব্রিজ-সেতুসহ কয়েকটি সংযোগ সড়ক। এছাড়া বালু উত্তোলনে বিস্তীর্ণ আবাদি জমি ধসে গিয়ে ভূমি শ্রেণীর পরিবর্তন ঘটছে। বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। তারা আরও জানান, এসব বালু পরিবহনের একমাত্র বাহন ট্রাক্টর। ওভারলোডের এসব ট্রাক্টরের অবাধ চলাচলে ধসে যাচ্ছে রাস্তাসহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ।

এর প্রতিকারে মানববন্ধন-স্মারকলিপি প্রদানসহ টানা আন্দোলন চালিয়ে এলেও বন্ধ হয়নি অবৈধ বালু উত্তোলন-ব্যবসা। তারা আরও জানান, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন মাঝে-মধ্যে অভিযান চালিয়ে জেল-জরিমানা করলেও বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে সংঘবদ্ধ চক্রটি। এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রামকৃষ্ণ বর্মন জানান, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এতে ৭ লাখ টাকা জরিমানাসহ প্রায় ৩০টি বালু তোলা মেশিন ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ-ধ্বংস করা হয়েছে। এসব অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলাও হয়েছে। চলমান এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।

রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৩ মহররম ১৪৪২, ২৫ ভাদ্র ১৪২৭

করতোয়া-বাঙ্গালী নদীর বালু উত্তোলনে হুমকিতে ছয় সেতু

প্রতিনিধি, গোবিন্দগঞ্জ (গাইবান্ধা)

image

গোবিন্দগঞ্জে করতোয়া ও বাঙ্গালী নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে সংঘবদ্ধ একটি চক্র। ফলে হুমকিকে পড়েছে সংযোগ সড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি ব্রিজ-সেতু। বালু উত্তোলন বন্ধে স্থানীয়রা ধারাবাহিক আন্দোলন চালিয়ে এলেও থেমে নেই বালু উত্তোলন। হুমকিতে পড়া ব্রিজ-সেতুগুলো হলো ,উপজেলার কাটাখালী সেতু, বড়দহ সেতু, ফুলাহার সেতু, দেওয়ানতলা সেতু, মজিদের ঘাট সেতু ও পাশের একটি রেল সেতু। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার ফুলবাড়ী ইউনিয়নের কাটাখালী সেতু ও পাশের রাখালবুরুজ ইউনিয়নে বড়দহ সেতু এলাকায় করতোয়া নদীতে এবং কাটাবাড়ী ইউনিয়নের ফুলাহার ব্রিজ থেকে ভাসমান মেশিন বসিয়ে কয়েক বছর ধরে বালু উত্তোলন করছে অবৈধ বালু ব্যবসায়ীরা। ফলে কাটাখালী, বড়দহ ও ফুলাহার ব্রিজ তিনটি ধসের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

অপরদিকে, উপজেলার মহিমাগঞ্জ ইউনিয়নের দেওয়ানতলা এলাকায় বাঙ্গালী নদী থেকে একই কায়দায় বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করে আসছে বালু খেকোরা। ফলে বাঙ্গালী নদীর ওপর অবস্থিত দেওয়ানতলা ব্রিজ ছাড়াও একটি রেলসেতু ও স্থানীয় মজিদের ঘাট ব্রিজটি হুমকির মুখে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাইবান্ধা সদরসহ সাঘাটা, ফুলছড়ি উপজেলায় যোগাযোগের মাধ্যম দেওয়ানতলা সড়কটিও।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকার প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট বছরের পর বছর ধরে করতোয়া ও বাঙ্গালী নদী থেকে বালু উত্তোলন করে অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে হুমকিতে পড়েছে ব্রিজ-সেতুসহ কয়েকটি সংযোগ সড়ক। এছাড়া বালু উত্তোলনে বিস্তীর্ণ আবাদি জমি ধসে গিয়ে ভূমি শ্রেণীর পরিবর্তন ঘটছে। বিপন্ন হচ্ছে পরিবেশ। তারা আরও জানান, এসব বালু পরিবহনের একমাত্র বাহন ট্রাক্টর। ওভারলোডের এসব ট্রাক্টরের অবাধ চলাচলে ধসে যাচ্ছে রাস্তাসহ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ।

এর প্রতিকারে মানববন্ধন-স্মারকলিপি প্রদানসহ টানা আন্দোলন চালিয়ে এলেও বন্ধ হয়নি অবৈধ বালু উত্তোলন-ব্যবসা। তারা আরও জানান, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন মাঝে-মধ্যে অভিযান চালিয়ে জেল-জরিমানা করলেও বালু উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে সংঘবদ্ধ চক্রটি। এ ব্যাপারে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রামকৃষ্ণ বর্মন জানান, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে ধারাবাহিক অভিযানের অংশ হিসেবে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এতে ৭ লাখ টাকা জরিমানাসহ প্রায় ৩০টি বালু তোলা মেশিন ও অন্যান্য সরঞ্জাম জব্দ-ধ্বংস করা হয়েছে। এসব অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলাও হয়েছে। চলমান এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।