অসহায়ের পাশে মানবিক পুলিশ

রাস্তায় ফেলে যাওয়া মাকে যত্নে হাসপাতালে ভর্তি

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় পুলিশ ও সাংবাদিকদের যৌথ সহযোগিতায় অসহায় এক ষাটোর্ধ বয়সী মা জয়নব বিবিকে উদ্ধার করা হয়। তিনি দীর্ঘ বছর বার্ধক্যজনিত রোগে অসুস্থ থাকায় শয্যাশায়ী ছিলেন। বিছানা থেকে উঠে নিজের কাজটুকু নিজে পর্যন্ত করতে পারতেন না। এমন কি মলত্যাগ পর্যন্ত বিছানায় করতেন। মায়ের সেবা করতে করতে অতিষ্ট হয়ে একমাত্র ছেলে মো. আরিফ হোসেন ও ছেলে বৌ মোসাম্মৎ কুলসুম বিবি মিলে কয়েক মাস আগে ওই মাকে একটি অটো রিক্সায় যোগে নিয়ে ফেলে রাখেন পার্শ্ববর্তী দশমিনা উপজেলার সদর ইউনিয়নের টিটিসি সংলগ্ন পশ্চিম লক্ষীপুর গ্রামে। মা জয়নব কয়েক মাস যাবত সেখানে রোদে পুরে, বৃষ্টিতে ভিজে ক্রমশ মৃত্যুর মুখে পতিত হচ্ছিলেন।

খবর পেয়ে সেখান থেকেই ওই মা জয়নব বিবিকে উদ্ধার করেন পুলিশ কর্মকর্তা। পুলিশের এমন মানবিক ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায়। বৃদ্ধা জয়নব বিবি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের জয়ঘোড়া গ্রামের আলাউদ্দিন আকনের স্ত্রী। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার দশমিনার নলখোলার মোশারেফ হোসেন নামের এক যুবক তার ফেসবুক আইডিতে জয়নব বিবির ঘটনার বিবরন লিখে একটি ছবি পোষ্ট করেন। বৃহস্পতিবার ওই পোস্টটি দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিমের নজরে পড়লে ওইদিনই এস আই মো. ইমানুল ইসলাম ইমন, এস আই মো. মেহেদি হাসান এবং মোশারেফ,সাংবাদিক মামুন তানভীর,সাংবাদিক রিপন কর্মকারকে নিয়ে ওই বৃদ্ধার কাছে যান। পড়ে তাকে উদ্ধার করে গোসল করিয়ে নতুন কাপড় চোপর পরিয়ে দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। জয়নব বিবি জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর নিজে অর্ধাহারে অনাহারে থেকে ছেলে আরিফ হোসেন ও মেয়ে রুনাকে নিজ বুকে আগলে রেখে বড় করেছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, জয়নব বিবি শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে প্রয়োজনীয় খাবার ও অপুষ্টির কারণে তার শরীরে বিভিন্ন- রোগের উপসর্গ রয়েছে। সকল পরীক্ষা নিরীক্ষার পড় তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা চলবে। দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম বলেন, সংবাদটি শুনে ওই বৃদ্ধা মা জয়নব বিরি কাছে ছুটে যাই। গিয়ে তার শারীরিক অবস্থা দেখে আমি স্থির থাকতে পারলাম না। সঙ্গে সঙ্গে তাকে গোসল করিয়ে কিছু খাবার খাইয়ে নিজ গাড়িতে চড়িয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। জয়নব বিবি এখন চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তার হেফাজতে থাকবে।

রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৩ মহররম ১৪৪২, ২৫ ভাদ্র ১৪২৭

অসহায়ের পাশে মানবিক পুলিশ

রাস্তায় ফেলে যাওয়া মাকে যত্নে হাসপাতালে ভর্তি

প্রতিনিধি, দশমিনা (পটুয়াখালী)

image

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় পুলিশ ও সাংবাদিকদের যৌথ সহযোগিতায় অসহায় এক ষাটোর্ধ বয়সী মা জয়নব বিবিকে উদ্ধার করা হয়। তিনি দীর্ঘ বছর বার্ধক্যজনিত রোগে অসুস্থ থাকায় শয্যাশায়ী ছিলেন। বিছানা থেকে উঠে নিজের কাজটুকু নিজে পর্যন্ত করতে পারতেন না। এমন কি মলত্যাগ পর্যন্ত বিছানায় করতেন। মায়ের সেবা করতে করতে অতিষ্ট হয়ে একমাত্র ছেলে মো. আরিফ হোসেন ও ছেলে বৌ মোসাম্মৎ কুলসুম বিবি মিলে কয়েক মাস আগে ওই মাকে একটি অটো রিক্সায় যোগে নিয়ে ফেলে রাখেন পার্শ্ববর্তী দশমিনা উপজেলার সদর ইউনিয়নের টিটিসি সংলগ্ন পশ্চিম লক্ষীপুর গ্রামে। মা জয়নব কয়েক মাস যাবত সেখানে রোদে পুরে, বৃষ্টিতে ভিজে ক্রমশ মৃত্যুর মুখে পতিত হচ্ছিলেন।

খবর পেয়ে সেখান থেকেই ওই মা জয়নব বিবিকে উদ্ধার করেন পুলিশ কর্মকর্তা। পুলিশের এমন মানবিক ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায়। বৃদ্ধা জয়নব বিবি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের জয়ঘোড়া গ্রামের আলাউদ্দিন আকনের স্ত্রী। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার দশমিনার নলখোলার মোশারেফ হোসেন নামের এক যুবক তার ফেসবুক আইডিতে জয়নব বিবির ঘটনার বিবরন লিখে একটি ছবি পোষ্ট করেন। বৃহস্পতিবার ওই পোস্টটি দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিমের নজরে পড়লে ওইদিনই এস আই মো. ইমানুল ইসলাম ইমন, এস আই মো. মেহেদি হাসান এবং মোশারেফ,সাংবাদিক মামুন তানভীর,সাংবাদিক রিপন কর্মকারকে নিয়ে ওই বৃদ্ধার কাছে যান। পড়ে তাকে উদ্ধার করে গোসল করিয়ে নতুন কাপড় চোপর পরিয়ে দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। জয়নব বিবি জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর নিজে অর্ধাহারে অনাহারে থেকে ছেলে আরিফ হোসেন ও মেয়ে রুনাকে নিজ বুকে আগলে রেখে বড় করেছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, জয়নব বিবি শারীরিকভাবে খুবই দুর্বল। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে প্রয়োজনীয় খাবার ও অপুষ্টির কারণে তার শরীরে বিভিন্ন- রোগের উপসর্গ রয়েছে। সকল পরীক্ষা নিরীক্ষার পড় তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা চলবে। দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম বলেন, সংবাদটি শুনে ওই বৃদ্ধা মা জয়নব বিরি কাছে ছুটে যাই। গিয়ে তার শারীরিক অবস্থা দেখে আমি স্থির থাকতে পারলাম না। সঙ্গে সঙ্গে তাকে গোসল করিয়ে কিছু খাবার খাইয়ে নিজ গাড়িতে চড়িয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি। জয়নব বিবি এখন চিকিৎসাধীন আছেন। তিনি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তার হেফাজতে থাকবে।