মসজিদের ১০ শতক জমি গোপনে বিক্রি : উত্তেজনা

রংপুরের বদরগঞ্জে কমিটির সদস্যের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে মসজিদের ১০ শতক জমি গোপনে বিক্রি করার ঘটনায় সর্বত্রই তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে এলাকার লোকজনের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম উত্তেজনা। ফলে মসজিদ কমিটির সদস্যরা পূর্বের কমিটির সভাপতিসহ অন্যদের নামে লিখিত অভিযোগ করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের উত্তর বাওচণ্ডির এরশাদ ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায়।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, দু’বছর আগে যমুনেশ্বরী নদীর ওপর এরশাদব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত পুরনো মসজিদ ভেঙ্গে বহুতল মসজিদের ভিত্তি স্থাপন করেন তৎকালীন কমিটির সভাপতি নুর হোসেনসহ সদস্যরা। প্রাথমিক পর্যায়ে তারা স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতা নিয়ে মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করেন। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য ওই মসজিদ নির্মাণে সাড়ে তিন লাখ টাকা বরাদ্দ দেন। এতেও মসজিদের কাজ শেষ হয়নি। ফলে অবশিষ্ট কাজ শেষ করতে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন তৎকালীন মসজিদ কমিটির সদস্যরা। তারা মসজিদের অতি মূল্যবান ১০ শতক জমি বিক্রির পায়তারা করেন। এক পর্যায়ে তারা সফলও হন। তারা অতিগোপনে ১৫ লাখ টাকার জমি মাত্র ৭৭ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। আর ওই জমি কেনেন মসজিদ কমিটির তৎকালিণ কোষাধ্যক্ষ সারাফাত হোসেন। বর্তমান কমিটির সদস্যদের অভিযোগ- মসজিদ নির্মাণের জন্য মাত্র ৭৭ হাজার টাকা জমা দিয়ে বাকি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তৎকালীন কমিটির সদস্যরা। এ নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক। কিন্তু তৎকালীন কমিটির সদস্য মজনু মিয়া বলেন, জমি বিক্রির সময় আমাকে কোন কিছু জানানো হয়নি। তবে বিষয়টি বুঝতে পেরে নিষেধ করেও কোন কাজ হয়নি। বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বর্তমান ওই জমির বাজার দর কমপক্ষে ১৫ লাখ টাকা। পুর্বের কমিটির অনেক সদস্যের সাক্ষর ও টিপসই জালিয়াতি করে ১০ শতক জমি গোপনে বিক্রি করা হয়েছে। এতে মসজিদ নির্মাণের টাকা নয়ছয় করে আত্মসাত করা হয়েছে। ওই টাকার হিসেব তারা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। তৎকালীন কমিটির সভাপতি নুর হোসেন বলেন, মসজিদ নির্মাণের সময় হাতে কোন টাকা ছিল না। এ কারণে সবার সঙ্গে আলোচনা করে জমি বিক্রি করা হয়। এক্ষেত্রে অনেকের সাাক্ষর জাল করা হয়েছে বলেও তিনি স্বীকার করেন। বদরগঞ্জ থানার এসআই অরুপ দত্ত বলেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জমি এভাবে পানির দরে বিক্রি করা কোনভাবেই উচিত হয়নি। তবে বিক্রেতারা ভুল স্বীকার করে জমি ফেরত নেয়ার কথা বলেছেন। এতে সমাধান না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান হাওলাদার জানান- বিষয়টি সমাধান করতে জমি বিক্রেতা নুর ইসলামকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তিনি জমি ফেরত নেয়ার জন্য চেষ্টা করবেন বলে কথা দিয়েছেন।

রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৩ মহররম ১৪৪২, ২৫ ভাদ্র ১৪২৭

মসজিদের ১০ শতক জমি গোপনে বিক্রি : উত্তেজনা

প্রতিনিধি, বদরগঞ্জ (রংপুর)

রংপুরের বদরগঞ্জে কমিটির সদস্যের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে মসজিদের ১০ শতক জমি গোপনে বিক্রি করার ঘটনায় সর্বত্রই তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে এলাকার লোকজনের মাঝে দেখা দিয়েছে চরম উত্তেজনা। ফলে মসজিদ কমিটির সদস্যরা পূর্বের কমিটির সভাপতিসহ অন্যদের নামে লিখিত অভিযোগ করেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মধুপুর ইউনিয়নের উত্তর বাওচণ্ডির এরশাদ ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায়।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, দু’বছর আগে যমুনেশ্বরী নদীর ওপর এরশাদব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত পুরনো মসজিদ ভেঙ্গে বহুতল মসজিদের ভিত্তি স্থাপন করেন তৎকালীন কমিটির সভাপতি নুর হোসেনসহ সদস্যরা। প্রাথমিক পর্যায়ে তারা স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতা নিয়ে মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু করেন। পরে স্থানীয় সংসদ সদস্য ওই মসজিদ নির্মাণে সাড়ে তিন লাখ টাকা বরাদ্দ দেন। এতেও মসজিদের কাজ শেষ হয়নি। ফলে অবশিষ্ট কাজ শেষ করতে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন তৎকালীন মসজিদ কমিটির সদস্যরা। তারা মসজিদের অতি মূল্যবান ১০ শতক জমি বিক্রির পায়তারা করেন। এক পর্যায়ে তারা সফলও হন। তারা অতিগোপনে ১৫ লাখ টাকার জমি মাত্র ৭৭ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। আর ওই জমি কেনেন মসজিদ কমিটির তৎকালিণ কোষাধ্যক্ষ সারাফাত হোসেন। বর্তমান কমিটির সদস্যদের অভিযোগ- মসজিদ নির্মাণের জন্য মাত্র ৭৭ হাজার টাকা জমা দিয়ে বাকি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তৎকালীন কমিটির সদস্যরা। এ নিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক। কিন্তু তৎকালীন কমিটির সদস্য মজনু মিয়া বলেন, জমি বিক্রির সময় আমাকে কোন কিছু জানানো হয়নি। তবে বিষয়টি বুঝতে পেরে নিষেধ করেও কোন কাজ হয়নি। বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বর্তমান ওই জমির বাজার দর কমপক্ষে ১৫ লাখ টাকা। পুর্বের কমিটির অনেক সদস্যের সাক্ষর ও টিপসই জালিয়াতি করে ১০ শতক জমি গোপনে বিক্রি করা হয়েছে। এতে মসজিদ নির্মাণের টাকা নয়ছয় করে আত্মসাত করা হয়েছে। ওই টাকার হিসেব তারা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। তৎকালীন কমিটির সভাপতি নুর হোসেন বলেন, মসজিদ নির্মাণের সময় হাতে কোন টাকা ছিল না। এ কারণে সবার সঙ্গে আলোচনা করে জমি বিক্রি করা হয়। এক্ষেত্রে অনেকের সাাক্ষর জাল করা হয়েছে বলেও তিনি স্বীকার করেন। বদরগঞ্জ থানার এসআই অরুপ দত্ত বলেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের জমি এভাবে পানির দরে বিক্রি করা কোনভাবেই উচিত হয়নি। তবে বিক্রেতারা ভুল স্বীকার করে জমি ফেরত নেয়ার কথা বলেছেন। এতে সমাধান না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান হাওলাদার জানান- বিষয়টি সমাধান করতে জমি বিক্রেতা নুর ইসলামকে থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তিনি জমি ফেরত নেয়ার জন্য চেষ্টা করবেন বলে কথা দিয়েছেন।