গোমতী নদীর ১৩ স্থান থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন

আয়কর ও ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া ইজারা গ্রহীতার কার্যাদেশ নিয়ে প্রশ্ন

কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলা এলাকায় গোমতী নদীর অন্তত ১৩টি স্থান থেকে মেসার্স রিফাত কনস্ট্রাকশনের মালিক ও কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাতসহ তার লোকজন অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া ইজারাগ্রহীতার লোকজনদের হুমকি দেয়া হচ্ছে। গতকাল দুপুরে নগরীর নজরুল এভিনিউ এলাকার মডার্ন কমিউনিটি সেন্টারে সাংবাদিক সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন নদীর পাঁচটি বালুমহালের ইজারাদার মাহাবুবুর রহমান। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা আরফানুল হক রিফাত। তিনি বলেন, আয়কর সনদ ও ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া ইজারাগ্রহীতা কিভাবে ৫টি বালু মহালের কার্যাদেশ পেয়েছেন, তা আমার বোধগম্য নয়। তবে ইজারা প্রদানে কোন অনিয়ম হয়নি বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কুমিল্লা জেলা প্রশাসন থেকে গত ১১ জুন গোমতী নদীর বালু মহাল ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলে মাহাবুবুর রহমানের মেসার্স এম রহমান ও মেসার্স রিফাত কনস্ট্রাকশনসহ (ভূতপূর্ব ইজারাদার) মোট পাঁচটি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশগ্রহণ করে। এতে এক কোটি ৫০ লাখ টাকায় সর্বোচ্চ দরদাতা হওয়ায় মেসার্স এম রহমান প্রতিষ্ঠানটি নদীর পাঁচটি বালু মহালের ইজারা পায়। এদিকে দরপত্রে অংশগ্রহণকারী মেসার্স রিফাত কনস্ট্রাকশনসহ অন্যরা দরপত্রের শর্তানুযায়ী জেলা প্রশাসনে আবেদন দাখিল করে ৬ জুলাই দরপত্র জামানতের পে-অর্ডারের টাকা তুলে নেয়। পরদিন ৭ জুলাই টাকা পরিশোধের পর জেলা প্রশাসন কর্তৃক সাইনবোর্ড টানিয়ে মেসার্স এম রহমান প্রতিষ্ঠানকে পাঁচটি বালু মহালের দখল বুঝিয়ে দেয়া হয়। মেসার্স এম. রহমান প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মাহবুবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসন কর্তৃক তাকে পাঁচটি বালু মহালের দখল বুঝিয়ে দেয়ার পর ভূতপূর্ব ইজারাদারের লোকজন নদীর অন্তত ১৩টি পয়েন্টে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এর প্রতিবাদ করায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী চক্রটি বৈধ ইজারাদার মাহবুবুর রহমান ও তার লোকজনকে প্রাণনাশসহ নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। তাই এসব মাটি ও বালু উত্তোলনের সরঞ্জামাদি প্রশাসন কর্তৃক বাজেয়াপ্ত করাসহ প্রশাসন কর্তৃক কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানাচ্ছি। সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ছিলেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম বাবুল, আওয়ামী লীগ নেতা মনির হোসেন, মাসুদুর রহমান, মোশারফ হোসেন শামীম, রাশেদ মিনহাজ, জাহেদুল আলম, আলী আক্কাছ, মো. সেলিম, শাহরিয়ার মাহমুদ, মনিরুল হক ভূঁইয়া প্রমুখ। এদিকে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ আনা হলেও তা অস্বীকার করেছেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত। তিনি বলেন, ‘যে লাইসেন্সের বিপরীতে ৫টি বালু মহালের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে, তাদের ইনকাম ট্যাক্স ফাইল (আয়কর সনদ) নেই, ট্রেড লাইসেন্স নেই। এসব কাগজ ছাড়া টেন্ডার কোন অবস্থাতেই বৈধ নয়। বিষয়টি সরজমিনে দেখে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছি এবং দেখা করে বলেছি। কিন্তু এরপরও অবৈধ লাইসেন্সের পক্ষে কিভাবে কার্যাদেশ দেয়া হল, এটা আমার বিবেচ্য বিষয় এবং জানার ব্যাপার। এটা কুমিল্লার মানুষেরও জানার ব্যাপার। তিনি আরও বলেন, ‘জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সোয়া কোটি টাকা দিয়ে ইজারাগ্রহীতা কার্যাদেশ নিয়েছে। সে কি করে এতগুলো টাকা দিয়েছে, এতটাকা সে কোত্থেকে পেল এবং কি করে দাখিল করল। তার সাদা টাকার কোন উৎস নাই।’ তবে এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর বলেন, ‘নিয়ম মেনেই বালুমহাল ইজারা দেয়া হয়েছে, এক্ষেত্রে কোন অনিয়ম হয়নি।

আরও খবর
শতভাগ যাত্রী নিয়ে ফ্লাইট চলাচল শুরু আজ থেকে
ঢাকা থেকে রেল সংযোগের পর কক্সবাজার হবে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন নগরী রেলমন্ত্রী
সারাদেশে বিদ্যুতের তার হবে ভূগর্ভে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী
১ অক্টোবর থেকে রাজধানীর ঝুলন্ত তার উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করবে ডিএনসিসি ৩
এসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের মৃত্যু
অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
অনিয়মের তদন্ত রিপোর্ট একসঙ্গে ৭ জনকে অবসর প্রদান
তদন্ত শুরু : আলামত রাসায়নিক পরীক্ষাগারে
ইলিশ ধরা পড়ছে ব্যাপক হারে চিন্তিত মৎস্য বিশেষজ্ঞরা
মানব পাচারের অভিযোগে নৃত্যশিল্পী সোহাগ গ্রেফতার
খাদ্যাভাবে বন্যপ্রাণী ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে

রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৩ মহররম ১৪৪২, ২৫ ভাদ্র ১৪২৭

কুমিল্লায়

গোমতী নদীর ১৩ স্থান থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন

আয়কর ও ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া ইজারা গ্রহীতার কার্যাদেশ নিয়ে প্রশ্ন

প্রতিনিধি, কুমিল্লা

কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলা এলাকায় গোমতী নদীর অন্তত ১৩টি স্থান থেকে মেসার্স রিফাত কনস্ট্রাকশনের মালিক ও কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাতসহ তার লোকজন অবৈধভাবে মাটি ও বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া ইজারাগ্রহীতার লোকজনদের হুমকি দেয়া হচ্ছে। গতকাল দুপুরে নগরীর নজরুল এভিনিউ এলাকার মডার্ন কমিউনিটি সেন্টারে সাংবাদিক সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন নদীর পাঁচটি বালুমহালের ইজারাদার মাহাবুবুর রহমান। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা আরফানুল হক রিফাত। তিনি বলেন, আয়কর সনদ ও ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া ইজারাগ্রহীতা কিভাবে ৫টি বালু মহালের কার্যাদেশ পেয়েছেন, তা আমার বোধগম্য নয়। তবে ইজারা প্রদানে কোন অনিয়ম হয়নি বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কুমিল্লা জেলা প্রশাসন থেকে গত ১১ জুন গোমতী নদীর বালু মহাল ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলে মাহাবুবুর রহমানের মেসার্স এম রহমান ও মেসার্স রিফাত কনস্ট্রাকশনসহ (ভূতপূর্ব ইজারাদার) মোট পাঁচটি প্রতিষ্ঠান দরপত্রে অংশগ্রহণ করে। এতে এক কোটি ৫০ লাখ টাকায় সর্বোচ্চ দরদাতা হওয়ায় মেসার্স এম রহমান প্রতিষ্ঠানটি নদীর পাঁচটি বালু মহালের ইজারা পায়। এদিকে দরপত্রে অংশগ্রহণকারী মেসার্স রিফাত কনস্ট্রাকশনসহ অন্যরা দরপত্রের শর্তানুযায়ী জেলা প্রশাসনে আবেদন দাখিল করে ৬ জুলাই দরপত্র জামানতের পে-অর্ডারের টাকা তুলে নেয়। পরদিন ৭ জুলাই টাকা পরিশোধের পর জেলা প্রশাসন কর্তৃক সাইনবোর্ড টানিয়ে মেসার্স এম রহমান প্রতিষ্ঠানকে পাঁচটি বালু মহালের দখল বুঝিয়ে দেয়া হয়। মেসার্স এম. রহমান প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মাহবুবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসন কর্তৃক তাকে পাঁচটি বালু মহালের দখল বুঝিয়ে দেয়ার পর ভূতপূর্ব ইজারাদারের লোকজন নদীর অন্তত ১৩টি পয়েন্টে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এর প্রতিবাদ করায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী চক্রটি বৈধ ইজারাদার মাহবুবুর রহমান ও তার লোকজনকে প্রাণনাশসহ নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। তাই এসব মাটি ও বালু উত্তোলনের সরঞ্জামাদি প্রশাসন কর্তৃক বাজেয়াপ্ত করাসহ প্রশাসন কর্তৃক কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানাচ্ছি। সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে ছিলেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর জাহাঙ্গীর আলম বাবুল, আওয়ামী লীগ নেতা মনির হোসেন, মাসুদুর রহমান, মোশারফ হোসেন শামীম, রাশেদ মিনহাজ, জাহেদুল আলম, আলী আক্কাছ, মো. সেলিম, শাহরিয়ার মাহমুদ, মনিরুল হক ভূঁইয়া প্রমুখ। এদিকে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ আনা হলেও তা অস্বীকার করেছেন কুমিল্লা মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত। তিনি বলেন, ‘যে লাইসেন্সের বিপরীতে ৫টি বালু মহালের কার্যাদেশ দেয়া হয়েছে, তাদের ইনকাম ট্যাক্স ফাইল (আয়কর সনদ) নেই, ট্রেড লাইসেন্স নেই। এসব কাগজ ছাড়া টেন্ডার কোন অবস্থাতেই বৈধ নয়। বিষয়টি সরজমিনে দেখে পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আমরা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেছি এবং দেখা করে বলেছি। কিন্তু এরপরও অবৈধ লাইসেন্সের পক্ষে কিভাবে কার্যাদেশ দেয়া হল, এটা আমার বিবেচ্য বিষয় এবং জানার ব্যাপার। এটা কুমিল্লার মানুষেরও জানার ব্যাপার। তিনি আরও বলেন, ‘জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সোয়া কোটি টাকা দিয়ে ইজারাগ্রহীতা কার্যাদেশ নিয়েছে। সে কি করে এতগুলো টাকা দিয়েছে, এতটাকা সে কোত্থেকে পেল এবং কি করে দাখিল করল। তার সাদা টাকার কোন উৎস নাই।’ তবে এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর বলেন, ‘নিয়ম মেনেই বালুমহাল ইজারা দেয়া হয়েছে, এক্ষেত্রে কোন অনিয়ম হয়নি।