প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

ভিয়েতনাম ও কাতার ফেরত ৮৩ প্রবাসীকে এখনও মুক্তি দেয়া হয়নি। ভিয়েতনাম ফেরত ৮১ ও কাতার ফেরত ২ প্রবাসীকে গত ১ সেপ্টেম্বর ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখানো হয়। পুলিশ বলছে, আটককৃত প্রবাসীরা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছেন। তাদের কর্মকাণ্ডে শ্রমবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ কারণে তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। কবে তারা মুক্ত হবে সেটা এখনও অনিশ্চিত। পুলিশ বলছে, আটক ব্যক্তিদের ছেড়ে দেয়া হলে তারা দেশে জঙ্গিবাদসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়তে পারেন। এ কারণে তাদের এখনই ছেড়ে দেয়া যাচ্ছে না। আটক প্রবাসীদের মুক্তির দাবি তুলেছেন তাদের স্বজনরা।

ভিয়েতনাম ও কাতার থেকে যেসব প্রবাসী ফেরত এসেছেন তাদের সবাই প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তাদের যে কাজের কথা বলে বিদেশে নেয়া হয়েছিল সেই কাজ দেয়া হয়নি। বিদেশে যাওয়ার পর তাদের কাছে থাকা পাসপোর্ট ও নগদ অর্থ কেড়ে নেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন বা সরকারের যখন প্রতারিত এসব শ্রমিকের পাশে দাঁড়ানোর কথা তখন তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রবাসে অবর্ণনীয় ভোগান্তি পোহানোর পর এখন নিজ দেশে এসে নতুন ভোগান্তিতে পড়েছেন। দেশের প্রবাসী কল্যাণ বলে যে একটি মন্ত্রণালয় আছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে না। বিদেশে কাজ নিয়ে যাওয়ার সময় বা প্রতারিত ও নিঃস্ব হয়ে ফেরার পর উক্ত শ্রমিকদের জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় কী ভূমিকা রেখেছে সেই প্রশ্ন উঠেছে। যেসব দালাল ও প্রজেক্টের কারণে প্রবাসী শ্রমিকরা সর্বস্ব খুইয়েছেন, অবর্ণনীয় ভোগান্তিতে পড়েছেন তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে- সেটা আমরা জানতে চাইব। প্রবাসী শ্রমিকরা যেন প্রতারণার শিকার না হন সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব যাদের তাদের কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আদায় করা হয়েছে কিনা- সেটা একটা প্রশ্ন। প্রতারক দালাল ও এজেন্ট চক্র এবং এক শ্রেণীর অসাধু সরকারি কর্মকর্তার কারণেই দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে, শ্রমবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। অথচ পুলিশ দায় চাপাচ্ছে নিজস্ব শ্রমিকদের ওপর। পুলিশের এ ভূমিকা নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলতে চাই। আমরা আরও প্রশ্ন তুলতে চাই- সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের বিবেচনাবোধ নিয়ে। যিনি পুলিশের উক্ত বক্তব্যের প্রেক্ষিতে শ্রমিকদের আটক করা বা রাখার ব্যাপারে সম্পতি দিয়েছেন। আমরা জানতে চাই যে, যারা মানব পাচার করে অর্থ পাচার করে তারা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে নাকি অসহায় নিঃস্ব- প্রবাসী শ্রমিকরা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছেন।

আমরা বলতে চাই, দেশে আটক প্রবাসী শ্রমিকদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। যাদের কারণে তারা প্রতারিত হয়েছে সেসব ব্যক্তিদের আটক করে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতারিত শ্রমিকদের অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে আক্ষরিক অর্থে প্রবাসীদের কল্যাণ করতে হবে। অসাধু এজেন্ট, দালাল, দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৩ মহররম ১৪৪২, ২৫ ভাদ্র ১৪২৭

আটক প্রবাসী শ্রমিকদের অবিলম্বে মুক্তি দিন

প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন

ভিয়েতনাম ও কাতার ফেরত ৮৩ প্রবাসীকে এখনও মুক্তি দেয়া হয়নি। ভিয়েতনাম ফেরত ৮১ ও কাতার ফেরত ২ প্রবাসীকে গত ১ সেপ্টেম্বর ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখানো হয়। পুলিশ বলছে, আটককৃত প্রবাসীরা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছেন। তাদের কর্মকাণ্ডে শ্রমবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ কারণে তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। কবে তারা মুক্ত হবে সেটা এখনও অনিশ্চিত। পুলিশ বলছে, আটক ব্যক্তিদের ছেড়ে দেয়া হলে তারা দেশে জঙ্গিবাদসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়তে পারেন। এ কারণে তাদের এখনই ছেড়ে দেয়া যাচ্ছে না। আটক প্রবাসীদের মুক্তির দাবি তুলেছেন তাদের স্বজনরা।

ভিয়েতনাম ও কাতার থেকে যেসব প্রবাসী ফেরত এসেছেন তাদের সবাই প্রতারণার শিকার হয়েছেন। তাদের যে কাজের কথা বলে বিদেশে নেয়া হয়েছিল সেই কাজ দেয়া হয়নি। বিদেশে যাওয়ার পর তাদের কাছে থাকা পাসপোর্ট ও নগদ অর্থ কেড়ে নেয়া হয়। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন বা সরকারের যখন প্রতারিত এসব শ্রমিকের পাশে দাঁড়ানোর কথা তখন তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রবাসে অবর্ণনীয় ভোগান্তি পোহানোর পর এখন নিজ দেশে এসে নতুন ভোগান্তিতে পড়েছেন। দেশের প্রবাসী কল্যাণ বলে যে একটি মন্ত্রণালয় আছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে না। বিদেশে কাজ নিয়ে যাওয়ার সময় বা প্রতারিত ও নিঃস্ব হয়ে ফেরার পর উক্ত শ্রমিকদের জন্য প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় কী ভূমিকা রেখেছে সেই প্রশ্ন উঠেছে। যেসব দালাল ও প্রজেক্টের কারণে প্রবাসী শ্রমিকরা সর্বস্ব খুইয়েছেন, অবর্ণনীয় ভোগান্তিতে পড়েছেন তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে- সেটা আমরা জানতে চাইব। প্রবাসী শ্রমিকরা যেন প্রতারণার শিকার না হন সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব যাদের তাদের কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আদায় করা হয়েছে কিনা- সেটা একটা প্রশ্ন। প্রতারক দালাল ও এজেন্ট চক্র এবং এক শ্রেণীর অসাধু সরকারি কর্মকর্তার কারণেই দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে, শ্রমবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। অথচ পুলিশ দায় চাপাচ্ছে নিজস্ব শ্রমিকদের ওপর। পুলিশের এ ভূমিকা নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলতে চাই। আমরা আরও প্রশ্ন তুলতে চাই- সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটের বিবেচনাবোধ নিয়ে। যিনি পুলিশের উক্ত বক্তব্যের প্রেক্ষিতে শ্রমিকদের আটক করা বা রাখার ব্যাপারে সম্পতি দিয়েছেন। আমরা জানতে চাই যে, যারা মানব পাচার করে অর্থ পাচার করে তারা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে নাকি অসহায় নিঃস্ব- প্রবাসী শ্রমিকরা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছেন।

আমরা বলতে চাই, দেশে আটক প্রবাসী শ্রমিকদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। যাদের কারণে তারা প্রতারিত হয়েছে সেসব ব্যক্তিদের আটক করে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রতারিত শ্রমিকদের অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে আক্ষরিক অর্থে প্রবাসীদের কল্যাণ করতে হবে। অসাধু এজেন্ট, দালাল, দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।