অনিয়ম বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নিন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে। তবু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তাদের বাড়িভাড়া দেয়া হয় সিটি করপোরেশন এলাকার নিয়ম অনুযায়ী, যা জাতীয় বেতন স্কেলের পরিপন্থী। ৫ শতাংশ হারে অতিরিক্ত বাড়িভাড়া দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষতি হয়েছে বছরে প্রায় চার কোটি টাকা।

শুধু বাড়িভাড়ার ক্ষেত্রে নয়, আরও আটটি ক্ষেত্রে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে। এতে দুই অর্থবছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ২৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) এক প্রতিবেদনে অনিয়মের এ চিত্র উঠে এসেছে।

ইউজিসির প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম ও আর্থিক অপচয়ের যে চিত্র উঠে এলো সেটা অত্যন্ত হতাশাজনক। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এসব অনিয়ম দীর্ঘকাল ধরেই চলছে এবং শুধু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েই নয়, দেশের প্রায় সবগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই নানারকম অনিয়ম হচ্ছে। এসব নিয়ে গণমাধ্যমে বহু আলোচনা হয়েছে, লেখালেখি হয়েছে। কিন্তু অনিয়ম প্রতিরোধে কেউ ব্যবস্থা নেয়নি, অনিয়মের হোতাদের দমন করেনি, এমনকি ইউজিসিও চুপ করে বসে থেকেছে। যেন অনিয়মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ারই কোন নিয়ম নেই। কিংবা যা চলছে সেটা চলতে দেয়াই একটা স্বতঃসিদ্ধ নিয়ম।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় দাঁড়িয়ে আছে জনগণের কষ্টার্জিত অর্থের ওপর। সেই অর্থের অপচয় কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। দেরিতে হলেও ইউজিসি যে অনিয়ম ও অপচয়ের চিত্র প্রকাশ করেছে সেটা প্রশংসনীয়। আমরা আশা করব, ইউজিসির উল্লেখিত প্রতিবেদনকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম ও অসঙ্গতি খতিয়ে দেখা হবে। ইউজিসি যে সুপারিশ দিয়েছে, তা দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক কর্মকাণ্ডে দুর্নীতি হয়ে থাকলে যারা এর সঙ্গে যুক্ত তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে। রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় করে কেউ পার পাবে, তা কোনভাবেই কাম্য নয়।

রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৩ মহররম ১৪৪২, ২৫ ভাদ্র ১৪২৭

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অপচয় কাম্য নয়

অনিয়ম বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নিন

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরে। তবু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তাদের বাড়িভাড়া দেয়া হয় সিটি করপোরেশন এলাকার নিয়ম অনুযায়ী, যা জাতীয় বেতন স্কেলের পরিপন্থী। ৫ শতাংশ হারে অতিরিক্ত বাড়িভাড়া দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষতি হয়েছে বছরে প্রায় চার কোটি টাকা।

শুধু বাড়িভাড়ার ক্ষেত্রে নয়, আরও আটটি ক্ষেত্রে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে। এতে দুই অর্থবছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ২৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) এক প্রতিবেদনে অনিয়মের এ চিত্র উঠে এসেছে।

ইউজিসির প্রতিবেদনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম ও আর্থিক অপচয়ের যে চিত্র উঠে এলো সেটা অত্যন্ত হতাশাজনক। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এসব অনিয়ম দীর্ঘকাল ধরেই চলছে এবং শুধু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েই নয়, দেশের প্রায় সবগুলো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই নানারকম অনিয়ম হচ্ছে। এসব নিয়ে গণমাধ্যমে বহু আলোচনা হয়েছে, লেখালেখি হয়েছে। কিন্তু অনিয়ম প্রতিরোধে কেউ ব্যবস্থা নেয়নি, অনিয়মের হোতাদের দমন করেনি, এমনকি ইউজিসিও চুপ করে বসে থেকেছে। যেন অনিয়মের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ারই কোন নিয়ম নেই। কিংবা যা চলছে সেটা চলতে দেয়াই একটা স্বতঃসিদ্ধ নিয়ম।

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় দাঁড়িয়ে আছে জনগণের কষ্টার্জিত অর্থের ওপর। সেই অর্থের অপচয় কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। দেরিতে হলেও ইউজিসি যে অনিয়ম ও অপচয়ের চিত্র প্রকাশ করেছে সেটা প্রশংসনীয়। আমরা আশা করব, ইউজিসির উল্লেখিত প্রতিবেদনকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনিয়ম ও অসঙ্গতি খতিয়ে দেখা হবে। ইউজিসি যে সুপারিশ দিয়েছে, তা দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক কর্মকাণ্ডে দুর্নীতি হয়ে থাকলে যারা এর সঙ্গে যুক্ত তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনতে হবে। রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় করে কেউ পার পাবে, তা কোনভাবেই কাম্য নয়।