তরুণরাই বেশি আক্রান্ত করোনায়

মৃত্যুহার বেশি ষাটোর্ধ্বদের

মৃত্যু ৫০.৩ শতাংশ ষাটোর্ধ্ব, নিচে ৪৯.৯৭ শতাংশ

দেশে গত ছয় মাস পাঁচ দিনে করোনাভাইরাস আক্রান্ত ৩ লাখ ৩৭ হাজারের গ-ি পার করেছে বাংলাদেশ। মৃত্যুসংখ্যা ৫ হাজার ছুঁই ছুঁই। আক্রান্তদের মধ্যে তরুণের সংখ্যা বেশি হলেও মৃত্যু তরুণ-বয়স্ক কাছাকাছি। গতকাল পর্যন্ত সারাদেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে ষাটোর্ধ্ব ২ হাজার ৩৭৩ জন এবং ষাটোর্ধ্বের নিচে ২ হাজার ৩৬০ জন মানুষ মারা গেছেন। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বিশ্বের প্রায় দেশে করোনা আক্রান্ত ও মৃতের দিক থেকে বয়স্করা এগিয়ে। সেখানে বাংলাদেশেও ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশে তরুণ সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। বয়স্ক মানুষ কম আক্রান্ত হলেও মৃত্যুর দিকে তরুণ-বয়স্ক কাছাকাছি। তবে পুরুষ ও নারী মৃত্যুতে রয়েছে বিশাল ফাঁরাক। নারীর তুলনায় পুরুষ তিনগুণ বেশি করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

গতকাল পর্যন্ত দেশে মোট মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৭৩৩ জনের। এরমধ্যে পুরুষ ৩ হাজার ৬৮৬ জন (৭৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ) এবং নারী ১ হাজার ৪৭ জন (২২ দশমিক শূন্য ১২ শতাংশ)। করোনা আক্রান্তে ১৩ সেপ্টম্বর পর্যন্ত ঢাকায় ২ হাজার ২৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ঢাকার বাইরে ২ হাজার ৪৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, করোনা আক্রান্তদের বেশিরভাগ ২১ থেকে ৩০ বছরের তরুণ। মোট আক্রান্তের হারে ২১ থেকে ৩০ বছরের এই বয়সে ২৮ শতাংশ। বয়সভিত্তিক এই তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন ৩১ থেকে ৪০ বছরের মানুষ। ৪০ বছরের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ শতাংশ। আর ৪১ থেকে ৫০ এর সীমায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ এরমধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১১ শতাংশ। তবে সবচেয়ে কম আক্রান্তের হার ১ থেকে ১০ বছরের। বয়সের এই সীমায় আক্রান্তের হার ৩ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ ও ৬০’র অধিক বয়স সীমার মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন আক্রান্ত। বাংলাদেশে গত ছয় মাসে করোনা আক্রান্তে মৃত্যুর সংখ্যা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে- প্রথম শনাক্ত হয় ৮ মার্চ, তার ঠিক ১০ দিন পর প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর কথা জানায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। এরপর থেকে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। ১৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী মৃত্যুর পর ২০ এপ্রিল ১০০ জনের মৃত্যু হয়, ৯ মে ২০০ জন, ২৫ মে ৫০০ জন, ১০ জুন ১ হাজার জন, ২১ জুন ১ হাজার ৫০০ জন, ৩ জুলাই ২ হাজার জন, ১৭ জুলাই ২ হাজার ৫০০ জন, ২৮ জুলাই ৩ হাজার জন, ১২ আগস্ট পৌঁছায় সাড়ে ৩ হাজার মানুষের মৃত্যু। তারপর ১৩ দিনের মাথায় ২৫ আগস্ট মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়, ৭ সেপ্টম্বর সাড়ে ৪ হাজার ছাড়ায় এবং সর্বশেষ গতকাল ১২ সেপ্টম্বর ৩১ জনের মৃত্যুতে সারাদেশে মোট ৪ হাজার ৭৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে সময় লেগেছে : প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ২ মাস ৭ দিনের মাথায় ৫০০ জন। ১৬ দিনের মাথায় ১০০০ জন, ১২ দিনের ১৫০০ জন, ১৩ দিনে ২০০০ জন, ১২ দিনে ২৫০০ জন, ১১ দিনে ৩০০০ জন, ১৫ দিনে ৩৫০০ জন, ১৩ দিনে ৪০০০ জন এবং সর্বশেষ ১৭ দিনের মাথায় ৭০২ জন করোনায় মৃত্যু হয়েছে।

দেশে গত ছয় মাসে করোনা আক্রান্তে মৃত্যুর সংখ্যা : প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের ঘোষণার পরপরই নিয়মিত রোগী শনাক্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে। করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ৪ মাসের মাথায় ১৮ জুন ১ লাখ ২ হাজার ২৯২ জন মানুষ শনাক্ত হয়। পরবর্তী ১ মাসের মাথায় ১৮ জুলাই ২ লাখ মানুষ করোনা আক্রান্ত হন। ২৬ আগস্টে ৩ লাখ করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। সর্বশেষ গতকাল ১২ সেপ্টম্বর দেশে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৪ জন।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ। জনসংখ্যার অনুপাতে নমুনা পরীক্ষাও কম হচ্ছে। এতে প্রত্যন্ত গ্রামে ও শহরের কিছু অঞ্চলে সন্দেহভাজন অনেকে পরীক্ষার বাইরে থেকে যাচ্ছেন। এটা মাথায় রাখা দরকার জনসংখ্যা অনুপাতে করোনা শনাক্তের হার কম এবং মৃত্যুর হার যে অনেকটাই বেশি তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

করোনা সংক্রমণের বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের মিডিয়া সেলের মুখপাত্র ডা. এবিএম শামছুজ্জামান সেলিম সংবাদকে বলেন, করোনা মহামারীতে এখন পর্যন্ত শতকরা হারে ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ৫০ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ মারা গেছেন। শূন্য বয়স থেকে ৬০ বছরের নিচে ৪৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ মানুষ মারা গেছেন। ষাটোর্ধ্বের নিচে মানুষের করোনা সংক্রমণ বেশি থাকলেও মৃত্যুর দিক দিয়ে দেখা যাচ্ছে ষাটোর্ধ্ব এবং ষাটোর্ধ্বের নিচের বয়সে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় একই।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বিশ্বে করোনা আক্রান্ত ছড়িয়ে পড়ায় দেখা গিয়েছে বয়স্ক মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি হয়েছে। সেটির ব্যতিক্রম নয় বাংলাদেশও। তবে আক্রান্তের দিকে বয়স্কদের চেয়ে তুলনামূলক তরুণরা বেশি করোনাভাইরাস আক্রান্ত হচ্ছেন। তরুণদের মাঝে সামাজিক যোগাযোগ কিংবা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতা কমে এসেছে।

করোনা সংক্রমণ বয়স্কদের তুলনায় তরুণরা বেশি হচ্ছেন এ বিষয়ে মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. রওশন আনোয়ার সংবাদকে বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ে তরুণদের সচেতনতা সবচেয়ে কম। তারা করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন না। তাদের ভাবনা এমন যে, করোনা আক্রান্ত হলেও তারা মারা যাবেন না। শারীরিক কোন ধরনের সমস্যা হবে না। তরুণদের এমন ভাবনা সম্পন্ন ভুল। তারা নিজেরা সংক্রমিত হয়ে মারাত্মক বিপদে পড়ছেন। অন্যদিকে তাদের উদাসীনতার কারণে নিজের পরিবারের বয়স্ক পিতামাতা কিংবা আত্মীয়দের বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন।

বিভিন্ন গবেষণায় বৈজ্ঞানিকরা বলছেন, নারীদের শরীরে এক্স ক্রোমোজোমের সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ায় পুরুষের তুলনায় করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধী নারীরা। এছাড়াও মানুষ করোনাভাইরাস আক্রান্ত হলে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে। তরুণদের তুলনায় বয়স্কদের ফুসফুস দুর্বল হওয়ায় বয়স্কদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি হয়। যার প্রকৃত চিত্র কয়েক মাসে ফুটে উঠেছে।

সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৪ মহররম ১৪৪২, ২৬ ভাদ্র ১৪২৭

তরুণরাই বেশি আক্রান্ত করোনায়

মৃত্যুহার বেশি ষাটোর্ধ্বদের

মৃত্যু ৫০.৩ শতাংশ ষাটোর্ধ্ব, নিচে ৪৯.৯৭ শতাংশ

ফারুক আলম

image

দেশে গত ছয় মাস পাঁচ দিনে করোনাভাইরাস আক্রান্ত ৩ লাখ ৩৭ হাজারের গ-ি পার করেছে বাংলাদেশ। মৃত্যুসংখ্যা ৫ হাজার ছুঁই ছুঁই। আক্রান্তদের মধ্যে তরুণের সংখ্যা বেশি হলেও মৃত্যু তরুণ-বয়স্ক কাছাকাছি। গতকাল পর্যন্ত সারাদেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে ষাটোর্ধ্ব ২ হাজার ৩৭৩ জন এবং ষাটোর্ধ্বের নিচে ২ হাজার ৩৬০ জন মানুষ মারা গেছেন। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বিশ্বের প্রায় দেশে করোনা আক্রান্ত ও মৃতের দিক থেকে বয়স্করা এগিয়ে। সেখানে বাংলাদেশেও ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশে তরুণ সবচেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। বয়স্ক মানুষ কম আক্রান্ত হলেও মৃত্যুর দিকে তরুণ-বয়স্ক কাছাকাছি। তবে পুরুষ ও নারী মৃত্যুতে রয়েছে বিশাল ফাঁরাক। নারীর তুলনায় পুরুষ তিনগুণ বেশি করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

গতকাল পর্যন্ত দেশে মোট মৃত্যু হয়েছে ৪ হাজার ৭৩৩ জনের। এরমধ্যে পুরুষ ৩ হাজার ৬৮৬ জন (৭৭ দশমিক ৮৮ শতাংশ) এবং নারী ১ হাজার ৪৭ জন (২২ দশমিক শূন্য ১২ শতাংশ)। করোনা আক্রান্তে ১৩ সেপ্টম্বর পর্যন্ত ঢাকায় ২ হাজার ২৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর ঢাকার বাইরে ২ হাজার ৪৪০ জনের মৃত্যু হয়েছে।

বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, করোনা আক্রান্তদের বেশিরভাগ ২১ থেকে ৩০ বছরের তরুণ। মোট আক্রান্তের হারে ২১ থেকে ৩০ বছরের এই বয়সে ২৮ শতাংশ। বয়সভিত্তিক এই তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন ৩১ থেকে ৪০ বছরের মানুষ। ৪০ বছরের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ শতাংশ। আর ৪১ থেকে ৫০ এর সীমায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ এরমধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা ১১ শতাংশ। তবে সবচেয়ে কম আক্রান্তের হার ১ থেকে ১০ বছরের। বয়সের এই সীমায় আক্রান্তের হার ৩ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ ও ৬০’র অধিক বয়স সীমার মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন আক্রান্ত। বাংলাদেশে গত ছয় মাসে করোনা আক্রান্তে মৃত্যুর সংখ্যা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে- প্রথম শনাক্ত হয় ৮ মার্চ, তার ঠিক ১০ দিন পর প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর কথা জানায় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। এরপর থেকে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। ১৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী মৃত্যুর পর ২০ এপ্রিল ১০০ জনের মৃত্যু হয়, ৯ মে ২০০ জন, ২৫ মে ৫০০ জন, ১০ জুন ১ হাজার জন, ২১ জুন ১ হাজার ৫০০ জন, ৩ জুলাই ২ হাজার জন, ১৭ জুলাই ২ হাজার ৫০০ জন, ২৮ জুলাই ৩ হাজার জন, ১২ আগস্ট পৌঁছায় সাড়ে ৩ হাজার মানুষের মৃত্যু। তারপর ১৩ দিনের মাথায় ২৫ আগস্ট মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়, ৭ সেপ্টম্বর সাড়ে ৪ হাজার ছাড়ায় এবং সর্বশেষ গতকাল ১২ সেপ্টম্বর ৩১ জনের মৃত্যুতে সারাদেশে মোট ৪ হাজার ৭৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে। মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে সময় লেগেছে : প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ২ মাস ৭ দিনের মাথায় ৫০০ জন। ১৬ দিনের মাথায় ১০০০ জন, ১২ দিনের ১৫০০ জন, ১৩ দিনে ২০০০ জন, ১২ দিনে ২৫০০ জন, ১১ দিনে ৩০০০ জন, ১৫ দিনে ৩৫০০ জন, ১৩ দিনে ৪০০০ জন এবং সর্বশেষ ১৭ দিনের মাথায় ৭০২ জন করোনায় মৃত্যু হয়েছে।

দেশে গত ছয় মাসে করোনা আক্রান্তে মৃত্যুর সংখ্যা : প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের ঘোষণার পরপরই নিয়মিত রোগী শনাক্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে। করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ৪ মাসের মাথায় ১৮ জুন ১ লাখ ২ হাজার ২৯২ জন মানুষ শনাক্ত হয়। পরবর্তী ১ মাসের মাথায় ১৮ জুলাই ২ লাখ মানুষ করোনা আক্রান্ত হন। ২৬ আগস্টে ৩ লাখ করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। সর্বশেষ গতকাল ১২ সেপ্টম্বর দেশে মোট আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৪ জন।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৫৩ শতাংশ। জনসংখ্যার অনুপাতে নমুনা পরীক্ষাও কম হচ্ছে। এতে প্রত্যন্ত গ্রামে ও শহরের কিছু অঞ্চলে সন্দেহভাজন অনেকে পরীক্ষার বাইরে থেকে যাচ্ছেন। এটা মাথায় রাখা দরকার জনসংখ্যা অনুপাতে করোনা শনাক্তের হার কম এবং মৃত্যুর হার যে অনেকটাই বেশি তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

করোনা সংক্রমণের বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের মিডিয়া সেলের মুখপাত্র ডা. এবিএম শামছুজ্জামান সেলিম সংবাদকে বলেন, করোনা মহামারীতে এখন পর্যন্ত শতকরা হারে ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে ৫০ দশমিক ৩ শতাংশ মানুষ মারা গেছেন। শূন্য বয়স থেকে ৬০ বছরের নিচে ৪৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ মানুষ মারা গেছেন। ষাটোর্ধ্বের নিচে মানুষের করোনা সংক্রমণ বেশি থাকলেও মৃত্যুর দিক দিয়ে দেখা যাচ্ছে ষাটোর্ধ্ব এবং ষাটোর্ধ্বের নিচের বয়সে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা প্রায় একই।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বিশ্বে করোনা আক্রান্ত ছড়িয়ে পড়ায় দেখা গিয়েছে বয়স্ক মানুষের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি হয়েছে। সেটির ব্যতিক্রম নয় বাংলাদেশও। তবে আক্রান্তের দিকে বয়স্কদের চেয়ে তুলনামূলক তরুণরা বেশি করোনাভাইরাস আক্রান্ত হচ্ছেন। তরুণদের মাঝে সামাজিক যোগাযোগ কিংবা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতা কমে এসেছে।

করোনা সংক্রমণ বয়স্কদের তুলনায় তরুণরা বেশি হচ্ছেন এ বিষয়ে মুগদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. রওশন আনোয়ার সংবাদকে বলেন, করোনাভাইরাস নিয়ে তরুণদের সচেতনতা সবচেয়ে কম। তারা করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন না। তাদের ভাবনা এমন যে, করোনা আক্রান্ত হলেও তারা মারা যাবেন না। শারীরিক কোন ধরনের সমস্যা হবে না। তরুণদের এমন ভাবনা সম্পন্ন ভুল। তারা নিজেরা সংক্রমিত হয়ে মারাত্মক বিপদে পড়ছেন। অন্যদিকে তাদের উদাসীনতার কারণে নিজের পরিবারের বয়স্ক পিতামাতা কিংবা আত্মীয়দের বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন।

বিভিন্ন গবেষণায় বৈজ্ঞানিকরা বলছেন, নারীদের শরীরে এক্স ক্রোমোজোমের সংখ্যা দ্বিগুণ হওয়ায় পুরুষের তুলনায় করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধী নারীরা। এছাড়াও মানুষ করোনাভাইরাস আক্রান্ত হলে ফুসফুসের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে। তরুণদের তুলনায় বয়স্কদের ফুসফুস দুর্বল হওয়ায় বয়স্কদের মৃত্যুর ঝুঁকি বেশি হয়। যার প্রকৃত চিত্র কয়েক মাসে ফুটে উঠেছে।