রাষ্ট্রীয় ২৫টি পাটকল বন্ধের গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, পিপিপি বা লিজ নয়, আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় পাটকল চালু করা, বিজেএমসি’র মাথা ভারি প্রশাসন হ্রাস করা, পাটকল লোকসানের জন্য দায়ী সরকারের ভুল নীতি, দুর্নীতি, লুটপাট বন্ধ এবং শ্রমিকদের ৬ সপ্তাহের হাজিরা, বেতন, ঈদ বোনাসসহ সব বকেয়া অবিলম্বে প্রদান এবং সরকারি-বেসরকারি সব পাটকলে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাম গণতান্ত্রিক জোট বগুড়া জেলা শাখার উদ্যোগে গতকাল বেলা ১১টায় সাতমাথায় সংহতি সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাম গণতান্ত্রিক জোট বগুড়া জেলা সমন্বয়ক সিপিবি জেলা সভাপতি কমরেড জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না। বক্তব্য রাখেন বাম গণতান্ত্রিক জোট বগুড়া জেলার অন্যতম নেতা, বাসদ বগুড়া জেলা আহ্বায়ক কমরেড অ্যাড. সাইফুল ইসলাম পল্টু, গণসংহতি আন্দোলন বগুড়া জেলা সমন্বয়কারী কমরেড আবদুর রশিদ, সিপিবি জেলা সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ফরিদ, বাসদ জেলা সদস্য সচিব সাইফুজ্জামান টুটুল, সিপিবি যুগ্ম সম্পাদক সন্তোষ কুমার পাল, বাসদ জেলা সদস্য মাসুদ পারভেজ, ছাত্র ইউনিয়ন জেলা সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বগুড়া জেলা সভাপতি ধনঞ্জয় বর্মন প্রমুখ নেতারা।
কমরেড জিন্নাতুল ইসলাম বলেন, পাটকল বন্ধ হলে শুধুমাত্র ৫০ হাজার পাটকল শ্রমিকরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, এর সঙ্গে ৪০ লাখ পাটচাষি ও পাট চাষের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত ৪ কোটি মানুষও ক্ষতিগ্রস্ত হবে; ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের জাতীয় অর্থনীতি। পাট বাংলাদেশের একটি স্থায়ী শিল্পের ভিত্তি রচনা করেছিল, যার কাঁচামাল দেশে উৎপাদিত হয়। দেশের চাহিদা পূরণ করে তা রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জিত হয়।
কমরেড অ্যাড.সাইফুল ইসলাম পল্টু বলেন, পাট এবং পাটকল বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত। স্বাধীনতার পর দেশে মোট ৭৭টি পাটকল ছিল। গত ৪৯ বছরে শাসক শ্রেণীর দুর্নীতি ও বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ এর পরামর্শে গৃহীত ভুল নীতির ফলে এশিয়ার বৃহত্তম পাটকল আদমজীসহ প্রায় ৫০টির বেশি পাটকল বন্ধ হয়ে গেছে। করোনা মহামারীতে পুরো দেশের মানুষের জীবন ও জীবিকা যখন বিপন্ন, ঠিক সেই সময় রাষ্ট্রীয় পাটকল লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে, রাষ্ট্রীয় খাতের ২৫টি পাটকল বন্ধ করে হাজার হাজার শ্রমিকদের বেকার করেছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার।
সমাবেশে অন্য নেতারা বলেন, রাষ্ট্রীয় পাটকল পিপিপি বা লিজ নয়, আধুনিকায়ন করে পাট, পাটশিল্প ও পাট চাষি রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, অন্যথায় পাট চাষি ও পাট চাষের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত কোটি কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাদের জীবন ও জীবিকা ধ্বংসের আত্মঘাতী-গণবিরোধী এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য নেতারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান এবং চাল, পিয়াজ, সবজিসহ নিত্য পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয় বর্তমান সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে চলেছে। দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার কোন উদ্যোগ না নিয়ে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের স্বার্থ রক্ষা করছে। প্রস্তাবে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও মানুষের ক্রয় ক্ষমতায় রাখার দাবি জানিয়ে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম বন্ধের আহ্বান জানান।
সোমবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৪ মহররম ১৪৪২, ২৬ ভাদ্র ১৪২৭
প্রতিনিধি, বগুড়া
রাষ্ট্রীয় ২৫টি পাটকল বন্ধের গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার, পিপিপি বা লিজ নয়, আধুনিকায়ন করে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় পাটকল চালু করা, বিজেএমসি’র মাথা ভারি প্রশাসন হ্রাস করা, পাটকল লোকসানের জন্য দায়ী সরকারের ভুল নীতি, দুর্নীতি, লুটপাট বন্ধ এবং শ্রমিকদের ৬ সপ্তাহের হাজিরা, বেতন, ঈদ বোনাসসহ সব বকেয়া অবিলম্বে প্রদান এবং সরকারি-বেসরকারি সব পাটকলে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাম গণতান্ত্রিক জোট বগুড়া জেলা শাখার উদ্যোগে গতকাল বেলা ১১টায় সাতমাথায় সংহতি সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন বাম গণতান্ত্রিক জোট বগুড়া জেলা সমন্বয়ক সিপিবি জেলা সভাপতি কমরেড জিন্নাতুল ইসলাম জিন্না। বক্তব্য রাখেন বাম গণতান্ত্রিক জোট বগুড়া জেলার অন্যতম নেতা, বাসদ বগুড়া জেলা আহ্বায়ক কমরেড অ্যাড. সাইফুল ইসলাম পল্টু, গণসংহতি আন্দোলন বগুড়া জেলা সমন্বয়কারী কমরেড আবদুর রশিদ, সিপিবি জেলা সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ফরিদ, বাসদ জেলা সদস্য সচিব সাইফুজ্জামান টুটুল, সিপিবি যুগ্ম সম্পাদক সন্তোষ কুমার পাল, বাসদ জেলা সদস্য মাসুদ পারভেজ, ছাত্র ইউনিয়ন জেলা সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট বগুড়া জেলা সভাপতি ধনঞ্জয় বর্মন প্রমুখ নেতারা।
কমরেড জিন্নাতুল ইসলাম বলেন, পাটকল বন্ধ হলে শুধুমাত্র ৫০ হাজার পাটকল শ্রমিকরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, এর সঙ্গে ৪০ লাখ পাটচাষি ও পাট চাষের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত ৪ কোটি মানুষও ক্ষতিগ্রস্ত হবে; ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশের জাতীয় অর্থনীতি। পাট বাংলাদেশের একটি স্থায়ী শিল্পের ভিত্তি রচনা করেছিল, যার কাঁচামাল দেশে উৎপাদিত হয়। দেশের চাহিদা পূরণ করে তা রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রাও অর্জিত হয়।
কমরেড অ্যাড.সাইফুল ইসলাম পল্টু বলেন, পাট এবং পাটকল বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে যুক্ত। স্বাধীনতার পর দেশে মোট ৭৭টি পাটকল ছিল। গত ৪৯ বছরে শাসক শ্রেণীর দুর্নীতি ও বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ এর পরামর্শে গৃহীত ভুল নীতির ফলে এশিয়ার বৃহত্তম পাটকল আদমজীসহ প্রায় ৫০টির বেশি পাটকল বন্ধ হয়ে গেছে। করোনা মহামারীতে পুরো দেশের মানুষের জীবন ও জীবিকা যখন বিপন্ন, ঠিক সেই সময় রাষ্ট্রীয় পাটকল লোকসানের অজুহাত দেখিয়ে, রাষ্ট্রীয় খাতের ২৫টি পাটকল বন্ধ করে হাজার হাজার শ্রমিকদের বেকার করেছে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার।
সমাবেশে অন্য নেতারা বলেন, রাষ্ট্রীয় পাটকল পিপিপি বা লিজ নয়, আধুনিকায়ন করে পাট, পাটশিল্প ও পাট চাষি রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, অন্যথায় পাট চাষি ও পাট চাষের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত কোটি কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাদের জীবন ও জীবিকা ধ্বংসের আত্মঘাতী-গণবিরোধী এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার জন্য নেতারা সরকারের প্রতি আহ্বান জানান এবং চাল, পিয়াজ, সবজিসহ নিত্য পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয় বর্তমান সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে চলেছে। দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার কোন উদ্যোগ না নিয়ে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের স্বার্থ রক্ষা করছে। প্রস্তাবে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও মানুষের ক্রয় ক্ষমতায় রাখার দাবি জানিয়ে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম বন্ধের আহ্বান জানান।