রামগড়ে সর. ঘর নির্মাণে অনিয়ম কাজ শেষ না করেই বিল উত্তোলন

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা রামগড় উপজেলায় গৃহহীনদের জন্য সরকারি বাসগৃহ নির্মাণে অনিয়ম, ঘরের নির্মাণ কাজ শেষ না করেই বিল উত্তোলন করা হয়েছে। জেলার রামগড় উপজেলার পাতাছড়া ২নং ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে ২০১৮- ২০১৯ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ(টিআর) কর্মসূচির আওতায় গৃহহীনদের জন্য সরকারি অর্থে ২৪টি দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ প্রকল্পের বরাদ্দ দেয়া হয়। সবগুলো ঘর নির্মাণ শেষ হলেও তার মধ্যে একটি ঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রত্যক্ষ সরেজমিনে দেখা যায়, ২নং পাতাছড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড মেম্বার মো. মহিনউদ্দিনকে এই বাসগৃহ নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হয়, তবে মহিনউদ্দিন সে বাসগৃহ সময়মতো সম্পূর্ণ করতে পারেননি, যা বর্তমানে অসম্পূর্ণ অবস্থায় রয়েছে, কিন্তু বাসগৃহ সম্পূর্ণ নির্মাণ না করেও সে ঘর তৈরির নির্মাণের সব অর্থ অন্যের ঘর দেখিয়ে বিল উত্তোলন করেছেন বলে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানানো হয়।

কর্মসূচি আওতায় গৃহহীন ডাকবাংলা পাড়া গ্রামের সুবেদ আলীর ছেলে মো. তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, সরকারি অর্থে আমার দলিলকৃত জায়গায় পরিষদ থেকে আমার নামে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো টি.আর কর্মসূচি গৃহহীনদের জন্য যে দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণে প্রকল্পে একটি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়, কিন্তু সবার ঘর নির্মাণ হয়ে গেলেও আমার ঘরটি অসম্পূর্ণ রয়ে যায়। আমি ঘর নির্মাণের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত মেম্বারকে বললে সে আমাকে বিভিন্ন খারাপ ভাষায় গালি-গালাজ দিয়ে থাকে। গত ২ বছরেও আমার নামে ঘরটি আমি বুঝে পাইনি। এ বিষয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মনিন্দ্র ত্রিপুরা ও রামগড় সাবেক নির্বাহী অফিসার উম্মে ইসরাত বার বার মেম্বার মহিনউদ্দিনকে বলেছেন, তবুও সে কারও কথা শুনেন নাই। আমার ঘর তো দূরের কথা বরং রাতের অন্ধকারে আমার জায়গা থেকে মাটি কেঁটেও নিয়ে যায়। এতে বাঁধা দিলে সে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি পর্যন্ত দিয়েছে। আমি আমার জায়গাতে সরকারি ঘরের বিষয়ে মেম্বার মহিউদ্দিনের সঙ্গে কথা বললে সে আমাকে চড়, থাপর, কিল ঘুষি লাথি মেরে পরিষদ থেকে বের করে দিয়েছে। বাড়াবাড়ি করলে সন্ত্রাসী বলে মেরে ফেলবে। এদিকে মিডিয়ায় জানার পরে তরিঘরি করে নিম্নমানের কাঠ দিয়ে দরজা জানালা কোন রকম লাগিয়ে দিয়েছে যা বাঁকা হয়ে গেছে। সরকারি ডিজাইন অনুযাই আমার ঘরটি করা হয়নি। ঘরের ভেতরে ফ্লোর করা হয়েছে তা মাঝে মাঝে ফেটে যাচ্ছে। আমার নামে ঘরটি নির্মাণ না করে শুনেছি মেম্বার মহিনউদ্দিন অন্যের ঘরের ছবি দেখিয়ে বিল তুলে নিয়েছে। মোহাম্মদ তোপাজ্জল আরও জানান, আমি চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দিয়েও বিচার পাইনি। এ বিষয়ে মহিনউদ্দিন মেম্বার এর সাথে কথা বললে সে বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে এগিয়ে গেছেন, নির্মাণ কাজ শেষ না করে, কিভাবে বিল তোলা হয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি কোন সৎ উত্তর দিতে পারেননি। ২নং পাতাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিন্দ্র ত্রিপুরা বলেন, আমি সরেজমিনে গিয়ে দেখেছি তোপাজ্জল হোসনের ঘরটি এখনও নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। আমি বলেছি দ্রুত কাজ শেষ করে তোপাজ্জলকে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য।

এই বিষয়ে রামগড় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মনছুর বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো টিআর কর্মসূচির আওতায় গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ অনেক আগেই শেষ করা হয়েছে। তবুও কাজটি কেন হয়নি তা চেয়ারম্যান ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মেম্বারকে চিঠির মাধ্যমে ডাকা হবে এবং তদন্ত করে আইগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ভারপ্রাপ্ত) সহকারী কমিশনার(ভূমি) সজিব কান্তি রুদ্র বলেন, বিষয়টি আমি আসার আগে হওয়ার কারণে তাই আমি অবগত নই। এখন আপনাদের মাধ্যমে যখন জেনেছি এই বিষয়ে আমি দ্রুত দেখব।

মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৫ মহররম ১৪৪২, ২৭ ভাদ্র ১৪২৭

রামগড়ে সর. ঘর নির্মাণে অনিয়ম কাজ শেষ না করেই বিল উত্তোলন

প্রতিনিধি, খাগড়াছড়ি

image

খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা রামগড় উপজেলায় গৃহহীনদের জন্য সরকারি বাসগৃহ নির্মাণে অনিয়ম, ঘরের নির্মাণ কাজ শেষ না করেই বিল উত্তোলন করা হয়েছে। জেলার রামগড় উপজেলার পাতাছড়া ২নং ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে ২০১৮- ২০১৯ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ(টিআর) কর্মসূচির আওতায় গৃহহীনদের জন্য সরকারি অর্থে ২৪টি দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ প্রকল্পের বরাদ্দ দেয়া হয়। সবগুলো ঘর নির্মাণ শেষ হলেও তার মধ্যে একটি ঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। প্রত্যক্ষ সরেজমিনে দেখা যায়, ২নং পাতাছড়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড মেম্বার মো. মহিনউদ্দিনকে এই বাসগৃহ নির্মাণের দায়িত্ব দেয়া হয়, তবে মহিনউদ্দিন সে বাসগৃহ সময়মতো সম্পূর্ণ করতে পারেননি, যা বর্তমানে অসম্পূর্ণ অবস্থায় রয়েছে, কিন্তু বাসগৃহ সম্পূর্ণ নির্মাণ না করেও সে ঘর তৈরির নির্মাণের সব অর্থ অন্যের ঘর দেখিয়ে বিল উত্তোলন করেছেন বলে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সূত্রে জানানো হয়।

কর্মসূচি আওতায় গৃহহীন ডাকবাংলা পাড়া গ্রামের সুবেদ আলীর ছেলে মো. তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, সরকারি অর্থে আমার দলিলকৃত জায়গায় পরিষদ থেকে আমার নামে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো টি.আর কর্মসূচি গৃহহীনদের জন্য যে দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণে প্রকল্পে একটি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়, কিন্তু সবার ঘর নির্মাণ হয়ে গেলেও আমার ঘরটি অসম্পূর্ণ রয়ে যায়। আমি ঘর নির্মাণের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত মেম্বারকে বললে সে আমাকে বিভিন্ন খারাপ ভাষায় গালি-গালাজ দিয়ে থাকে। গত ২ বছরেও আমার নামে ঘরটি আমি বুঝে পাইনি। এ বিষয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মনিন্দ্র ত্রিপুরা ও রামগড় সাবেক নির্বাহী অফিসার উম্মে ইসরাত বার বার মেম্বার মহিনউদ্দিনকে বলেছেন, তবুও সে কারও কথা শুনেন নাই। আমার ঘর তো দূরের কথা বরং রাতের অন্ধকারে আমার জায়গা থেকে মাটি কেঁটেও নিয়ে যায়। এতে বাঁধা দিলে সে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি পর্যন্ত দিয়েছে। আমি আমার জায়গাতে সরকারি ঘরের বিষয়ে মেম্বার মহিউদ্দিনের সঙ্গে কথা বললে সে আমাকে চড়, থাপর, কিল ঘুষি লাথি মেরে পরিষদ থেকে বের করে দিয়েছে। বাড়াবাড়ি করলে সন্ত্রাসী বলে মেরে ফেলবে। এদিকে মিডিয়ায় জানার পরে তরিঘরি করে নিম্নমানের কাঠ দিয়ে দরজা জানালা কোন রকম লাগিয়ে দিয়েছে যা বাঁকা হয়ে গেছে। সরকারি ডিজাইন অনুযাই আমার ঘরটি করা হয়নি। ঘরের ভেতরে ফ্লোর করা হয়েছে তা মাঝে মাঝে ফেটে যাচ্ছে। আমার নামে ঘরটি নির্মাণ না করে শুনেছি মেম্বার মহিনউদ্দিন অন্যের ঘরের ছবি দেখিয়ে বিল তুলে নিয়েছে। মোহাম্মদ তোপাজ্জল আরও জানান, আমি চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দিয়েও বিচার পাইনি। এ বিষয়ে মহিনউদ্দিন মেম্বার এর সাথে কথা বললে সে বিভিন্ন অযুহাত দেখিয়ে এগিয়ে গেছেন, নির্মাণ কাজ শেষ না করে, কিভাবে বিল তোলা হয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি কোন সৎ উত্তর দিতে পারেননি। ২নং পাতাছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিন্দ্র ত্রিপুরা বলেন, আমি সরেজমিনে গিয়ে দেখেছি তোপাজ্জল হোসনের ঘরটি এখনও নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি। আমি বলেছি দ্রুত কাজ শেষ করে তোপাজ্জলকে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য।

এই বিষয়ে রামগড় উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মনছুর বলেন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো টিআর কর্মসূচির আওতায় গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ অনেক আগেই শেষ করা হয়েছে। তবুও কাজটি কেন হয়নি তা চেয়ারম্যান ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মেম্বারকে চিঠির মাধ্যমে ডাকা হবে এবং তদন্ত করে আইগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ভারপ্রাপ্ত) সহকারী কমিশনার(ভূমি) সজিব কান্তি রুদ্র বলেন, বিষয়টি আমি আসার আগে হওয়ার কারণে তাই আমি অবগত নই। এখন আপনাদের মাধ্যমে যখন জেনেছি এই বিষয়ে আমি দ্রুত দেখব।