মায়ানমারের উস্কানিমূলক আচরণ, সতর্ক বিজিবি

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মায়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব, কড়া প্রতিবাদ

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্তের ওপারে হঠাৎ ভারি অস্ত্র ও অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে মায়ানমার। সীমান্তের বাইশফাঁড়ি এলাকাসহ আশপাশে নতুন করে সবুজ রঙের তাঁবু টাঙিয়ে অস্থায়ী চৌকি স্থাপন করেছেন মায়ানমার সেনারা। মায়ানমারের এ ধরনের উসকানিমূলক আচরণে শূন্যরেখায় অবস্থানরত রোহিঙ্গারা ও সীমান্তের এপারের বসবাসরত লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ১৪ সেপ্টেম্বর সীমান্তে নজর রাখা এমন একাধিক সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হয়েছে। এদিকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর সীমান্তে মায়ানমারের সেনাদের সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ্য করা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে ঢাকায় মায়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ ওয়েকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছিল। কক্সবাজার-৩৪ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমেদ বলেন, আমরা আমাদের টহলসহ কার্যক্রম জোরদার করেছি। আর সীমান্তে সবাইকে সতর্ক অবস্থানে রেখেছি। এ ব্যাপারে কোনরকম নতুন অনুপ্রবেশসহ কোন ঘটনা ঘটলে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। ওদের এলাকায় সন্দেহজনক গতিবিধিসহ সেনাদের উপস্থিতি আছে সেটিও জেনেছি।

সীমান্তের লোকজন জানায়, মায়ানমার সেনাবাহিনীকে সীমান্তে চৌকি স্থাপনসহ তৎপর দেখা গেছে। বিশেষ করে কয়েকদিন ধরে সীমান্তের তমব্রু থেকে লেবুছড়ি পর্যন্ত এলাকায় এপার থেকে প্রতিদিন মায়ানমার সেনা সদস্যদের নানা তৎপরতার দৃশ্য চোখে পড়ছে। আমাদের সন্দেহ, মায়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের বিজিপির (বর্ডারগার্ড পুলিশ) পোশাক পরে সেখানে অবস্থান করছে। তারা সেখানে ৭-৮টি তাঁবু টাঙিয়ে নতুন অস্থায়ী চৌকি স্থাপন করছে, যা আগে ছিল না। এর আগেও বেশ কয়েকবার সীমান্তে সেনা টহল বৃদ্ধির ঘটনা ঘটেছিল।

শূন্যরেখায় বাস করা রোহিঙ্গা শিবিরের এক নেতা দিল মোহাম্মদ বলেন, দুই দিন ধরে তমব্রু সীমান্তে গাড়ি চলাচল বেড়ে গেছে। যারা আসা-যাওয়া করছে তারা পুলিশ নাকি সেনাবাহিনী সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এই নিয়ে রোহিঙ্গা শিবিরের লোকজন ভয়ে আছে।

সূত্রে জানা গেছে, নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মায়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্য বৃদ্ধি করেছে। তারা সেখানে ভারি অস্ত্র সস্ত্র মজুত করেছে। সীমান্তের এপার থেকেও মায়ানমার সেনাবাহিনীর এ তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিচ্ছিন্নতাবাদী আরাকান আর্মি, রাখাইনের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) দমন এবং মায়ানমারে আগামী ৮ অক্টোবর নির্বাচনসহ রাখাইনে মায়ানমার সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত আরাকান বিদ্রোহী বাহিনীর হেফাজতে থাকা দুই সেনা রোহিঙ্গা গণহত্যার স্বীকারোক্তি দেয়ায় সেনাদের এই তৎপরতা বলে জানা গেছে। তবে এসব তথ্য নিরপেক্ষভাবে যাচাই-বাচাই করা সম্ভব হয়নি।

মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৫ মহররম ১৪৪২, ২৭ ভাদ্র ১৪২৭

তামব্রু সীমান্তে

মায়ানমারের উস্কানিমূলক আচরণ, সতর্ক বিজিবি

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মায়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব, কড়া প্রতিবাদ

প্রতিনিধি, কক্সবাজার

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্তের ওপারে হঠাৎ ভারি অস্ত্র ও অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে মায়ানমার। সীমান্তের বাইশফাঁড়ি এলাকাসহ আশপাশে নতুন করে সবুজ রঙের তাঁবু টাঙিয়ে অস্থায়ী চৌকি স্থাপন করেছেন মায়ানমার সেনারা। মায়ানমারের এ ধরনের উসকানিমূলক আচরণে শূন্যরেখায় অবস্থানরত রোহিঙ্গারা ও সীমান্তের এপারের বসবাসরত লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ১৪ সেপ্টেম্বর সীমান্তে নজর রাখা এমন একাধিক সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, এ বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দফতরে জানানো হয়েছে। এদিকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর সীমান্তে মায়ানমারের সেনাদের সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ্য করা গেছে। এমন পরিস্থিতিতে ঢাকায় মায়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ ওয়েকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছিল। কক্সবাজার-৩৪ বিজিবি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহমেদ বলেন, আমরা আমাদের টহলসহ কার্যক্রম জোরদার করেছি। আর সীমান্তে সবাইকে সতর্ক অবস্থানে রেখেছি। এ ব্যাপারে কোনরকম নতুন অনুপ্রবেশসহ কোন ঘটনা ঘটলে কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। ওদের এলাকায় সন্দেহজনক গতিবিধিসহ সেনাদের উপস্থিতি আছে সেটিও জেনেছি।

সীমান্তের লোকজন জানায়, মায়ানমার সেনাবাহিনীকে সীমান্তে চৌকি স্থাপনসহ তৎপর দেখা গেছে। বিশেষ করে কয়েকদিন ধরে সীমান্তের তমব্রু থেকে লেবুছড়ি পর্যন্ত এলাকায় এপার থেকে প্রতিদিন মায়ানমার সেনা সদস্যদের নানা তৎপরতার দৃশ্য চোখে পড়ছে। আমাদের সন্দেহ, মায়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের বিজিপির (বর্ডারগার্ড পুলিশ) পোশাক পরে সেখানে অবস্থান করছে। তারা সেখানে ৭-৮টি তাঁবু টাঙিয়ে নতুন অস্থায়ী চৌকি স্থাপন করছে, যা আগে ছিল না। এর আগেও বেশ কয়েকবার সীমান্তে সেনা টহল বৃদ্ধির ঘটনা ঘটেছিল।

শূন্যরেখায় বাস করা রোহিঙ্গা শিবিরের এক নেতা দিল মোহাম্মদ বলেন, দুই দিন ধরে তমব্রু সীমান্তে গাড়ি চলাচল বেড়ে গেছে। যারা আসা-যাওয়া করছে তারা পুলিশ নাকি সেনাবাহিনী সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এই নিয়ে রোহিঙ্গা শিবিরের লোকজন ভয়ে আছে।

সূত্রে জানা গেছে, নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মায়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্য বৃদ্ধি করেছে। তারা সেখানে ভারি অস্ত্র সস্ত্র মজুত করেছে। সীমান্তের এপার থেকেও মায়ানমার সেনাবাহিনীর এ তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিচ্ছিন্নতাবাদী আরাকান আর্মি, রাখাইনের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (আরসা) দমন এবং মায়ানমারে আগামী ৮ অক্টোবর নির্বাচনসহ রাখাইনে মায়ানমার সেনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত আরাকান বিদ্রোহী বাহিনীর হেফাজতে থাকা দুই সেনা রোহিঙ্গা গণহত্যার স্বীকারোক্তি দেয়ায় সেনাদের এই তৎপরতা বলে জানা গেছে। তবে এসব তথ্য নিরপেক্ষভাবে যাচাই-বাচাই করা সম্ভব হয়নি।