উদ্ধার হয়নি ৮ মাসে
হবিগঞ্জের মাধবপুরের দক্ষিণ বেজুড়া গ্রামে মেয়ের ধর্ষণচেষ্টা মামলা তুলে না নেয়ায় এক ব্যক্তিকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে আসামিদের বিরুদ্ধে। অপহরণের ৮ মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত অপহৃতকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। নিখোঁজের বিষয়টি নিয়ে নানা শঙ্কায় রয়েছেন অপহৃতের স্ত্রী-সন্তানসহ আত্মীয়স্বজনরা। তারা দ্রুত নিজের স্বজনকে ফিরে পেতে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে, স্বামীর সন্ধান চেয়ে প্রথমে মাধপুর থানায় লিখিত অভিযোগ ও পরে সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন অপহৃতের স্ত্রী পারভীন আক্তার।
মামলায় আসামি করা হয়েছে দক্ষিণ বেজুড়া গ্রামের মৃত আয়ূব আলীর ছেলে জসীম মিয়া (৩০), মৃত আনছার আলীর ছেলে অলিদ মিয়া (৩৫), মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে সজিদ মিয়া (৩৫), মৃত খুর্শেদ আলীর ছেলে কামাল মিয়া (৪০), ওয়াদ আলীর ছেলে সফিক মিয়া (৩০) ও শাহীন মিয়া। মামলার বিবরণে জানা যায়- গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর ওই গ্রামের অপহৃত নিজাম উদ্দিনের মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করে অপহরণ মামলার আসামি জসীম মিয়া ও অলিদ মিয়া। এ ব্যাপারে ওই মেয়ে বাদি হয়ে আদালতে তাদের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ চেষ্টা মামলা করা হয়। মামলা দায়েরের পর আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য মাধবপুর থানাকে দায়িত্ব দেন। এ সময় তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার প্রতিবেদন আসামিদের পক্ষে দেয়ায় বাদি আদালতে নারাজি দেয়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নারাজি না-মঞ্জুর করে ফাইনাল রিপোর্ট প্রদান করেন। এ সময় বাদি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন। হাইকোর্ট আপিল গ্রহণ করে আসামিদের নামে নোটিশ প্রেরণ করে। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে আসামিরা।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়- চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি অপহৃত নিজাম উদ্দিন অপহরণ মামলার ২নং স্বাক্ষি রহমত আলীর বাড়িতে কাজ করছিলেন। এ সময় আসামিরা হাইকোর্টের আপিল তুলে নেয়ার জন্য নিজাম উদ্দিনকে চাপ প্রয়োগ করে। তিনি মামলা তুলবেন না বলে জানালে আসামিরা তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধুমকি প্রদান করে। একই দিন আসামি সাজিদ মিয়া নিজাম উদ্দিনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। কিন্তু গভীর রাত হলেও সে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তাকে আর পাওয়া যায়নি। কোন উপায় না পেয়ে অপহৃতের স্ত্রী পারভীন আক্তার মাধবপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু এতেও স্বামীর সন্ধান না পেয়ে গত ২ মার্চ তিনি হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে মামলা বাদি পারভীন আক্তার বলেন- ‘আমার মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা চালালে আমি আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি। কিন্ত মামলা দায়েরের পর আসামিরা আমার স্বামীকে অপহরণ করে নিয়েছে। আমি জানি না তিনি এখন কোথায় আছেন, নাকি আসামিরা তাকে খুন করে ফেলেছে। আমি অনতিবিলম্বে আমার স্বামীকে ফেরত চাই।’
মাধবপুর থানার ওসি ইকবাল হোসেন বলেন- ‘আমাদের কাছে নিজাম উদ্দিনের নিখোঁজের বিষয়ে অভিযোগ দেয়ার পর আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করি। কিন্তু এরমধ্যে তারা আবার আদালতে মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি সিআইডিতে তদন্তাধীন রয়েছে। সিআইডি তদন্ত শুরুর পর আমরা তদন্ত বন্ধ করে দিয়েছি।’
এ ব্যাপারে আদালতের মামলার তদন্তকারী সিআইডি কর্মকর্তা রঞ্জন বলেন- ‘যেহেতু এটি অপহরণ মামলা সেহেতু এটি অনেক জটিল। আমরা গুরুত্ব দিয়ে মামলাটি তদন্ত করে যাচ্ছি। আশা করি দ্রুত অপহৃতকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে।’
মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৫ মহররম ১৪৪২, ২৭ ভাদ্র ১৪২৭
উদ্ধার হয়নি ৮ মাসে
প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ
হবিগঞ্জের মাধবপুরের দক্ষিণ বেজুড়া গ্রামে মেয়ের ধর্ষণচেষ্টা মামলা তুলে না নেয়ায় এক ব্যক্তিকে অপহরণের অভিযোগ উঠেছে আসামিদের বিরুদ্ধে। অপহরণের ৮ মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত অপহৃতকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। নিখোঁজের বিষয়টি নিয়ে নানা শঙ্কায় রয়েছেন অপহৃতের স্ত্রী-সন্তানসহ আত্মীয়স্বজনরা। তারা দ্রুত নিজের স্বজনকে ফিরে পেতে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।
এদিকে, স্বামীর সন্ধান চেয়ে প্রথমে মাধপুর থানায় লিখিত অভিযোগ ও পরে সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন অপহৃতের স্ত্রী পারভীন আক্তার।
মামলায় আসামি করা হয়েছে দক্ষিণ বেজুড়া গ্রামের মৃত আয়ূব আলীর ছেলে জসীম মিয়া (৩০), মৃত আনছার আলীর ছেলে অলিদ মিয়া (৩৫), মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে সজিদ মিয়া (৩৫), মৃত খুর্শেদ আলীর ছেলে কামাল মিয়া (৪০), ওয়াদ আলীর ছেলে সফিক মিয়া (৩০) ও শাহীন মিয়া। মামলার বিবরণে জানা যায়- গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর ওই গ্রামের অপহৃত নিজাম উদ্দিনের মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করে অপহরণ মামলার আসামি জসীম মিয়া ও অলিদ মিয়া। এ ব্যাপারে ওই মেয়ে বাদি হয়ে আদালতে তাদের বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ চেষ্টা মামলা করা হয়। মামলা দায়েরের পর আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য মাধবপুর থানাকে দায়িত্ব দেন। এ সময় তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার প্রতিবেদন আসামিদের পক্ষে দেয়ায় বাদি আদালতে নারাজি দেয়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে নারাজি না-মঞ্জুর করে ফাইনাল রিপোর্ট প্রদান করেন। এ সময় বাদি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন। হাইকোর্ট আপিল গ্রহণ করে আসামিদের নামে নোটিশ প্রেরণ করে। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে আসামিরা।
অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়- চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি অপহৃত নিজাম উদ্দিন অপহরণ মামলার ২নং স্বাক্ষি রহমত আলীর বাড়িতে কাজ করছিলেন। এ সময় আসামিরা হাইকোর্টের আপিল তুলে নেয়ার জন্য নিজাম উদ্দিনকে চাপ প্রয়োগ করে। তিনি মামলা তুলবেন না বলে জানালে আসামিরা তাকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধুমকি প্রদান করে। একই দিন আসামি সাজিদ মিয়া নিজাম উদ্দিনকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। কিন্তু গভীর রাত হলেও সে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তাকে আর পাওয়া যায়নি। কোন উপায় না পেয়ে অপহৃতের স্ত্রী পারভীন আক্তার মাধবপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু এতেও স্বামীর সন্ধান না পেয়ে গত ২ মার্চ তিনি হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ ব্যাপারে মামলা বাদি পারভীন আক্তার বলেন- ‘আমার মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা চালালে আমি আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি। কিন্ত মামলা দায়েরের পর আসামিরা আমার স্বামীকে অপহরণ করে নিয়েছে। আমি জানি না তিনি এখন কোথায় আছেন, নাকি আসামিরা তাকে খুন করে ফেলেছে। আমি অনতিবিলম্বে আমার স্বামীকে ফেরত চাই।’
মাধবপুর থানার ওসি ইকবাল হোসেন বলেন- ‘আমাদের কাছে নিজাম উদ্দিনের নিখোঁজের বিষয়ে অভিযোগ দেয়ার পর আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করি। কিন্তু এরমধ্যে তারা আবার আদালতে মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি সিআইডিতে তদন্তাধীন রয়েছে। সিআইডি তদন্ত শুরুর পর আমরা তদন্ত বন্ধ করে দিয়েছি।’
এ ব্যাপারে আদালতের মামলার তদন্তকারী সিআইডি কর্মকর্তা রঞ্জন বলেন- ‘যেহেতু এটি অপহরণ মামলা সেহেতু এটি অনেক জটিল। আমরা গুরুত্ব দিয়ে মামলাটি তদন্ত করে যাচ্ছি। আশা করি দ্রুত অপহৃতকে উদ্ধার করা সম্ভব হবে।’