লাশ আটকে রেখে অতিরিক্ত বিল আদায়

সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বিল, ৫ ঘণ্টা লাশ আটকে রেখে টাকা আদায় এবং করোনা রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ হওয়ার পরও রোগীকে কোভিড-১৯ ইউনিটে রেখে চিকিৎসা প্রদানের জন্য হাসপাতালটির বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।

গতকাল সিলেট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজি বরাবারে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন দক্ষিণ সুরমার উপজেলার সিলাম ইউনিয়নের উলালমহল গ্রামের মৃত নাসির উদ্দিনের ভাতিজা আবদুল বারী।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, দক্ষিণ সুরমার উপজেলার সিলাম ইউনিয়নের উলালমহল গ্রামের নাসির উদ্দিন (৬০) গত ৩ সেপ্টেম্বর রাত ২টায় শ্বাসকষ্ট নিয়ে নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। ভর্তির পর রোগীকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করোনা ইউনিটে নিয়ে যেতে চাইলে স্বজনরা ‘করোনা নেগেটিভ’ রিপোর্ট দেখান। তবু স্বজনদের কথা উপেক্ষা করে কর্তব্যরতরা রোগীকে সাধারণ ওয়ার্ডে না রেখে করোনা ইউনিটে নিয়ে যান।

রোগীকে করোনা ইউনিটে নিয়ে পজেটিভ রোগীর মতোই চিকিৎসা প্রদান করা হয়। একদিন পর রোগীর শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে তাকে করোনায় মুমূর্ষু রোগীর মতো রক্তের প্লাজমা দেয়ার কথা বলেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। তবে স্বজনরা সম্মত না হলে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

শনিবার ভোররাত ৪টার দিকে নাসির উদ্দিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। রোগীর মৃত্যুর পর স্বজনদের হাতে ৭৭ হাজার ৪৭২ টাকার বিল ধরিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিলে শুধু পিপিই এবং সুরক্ষাসামগ্রী বাবদ প্রতিদিন ধরা হয় ৪ হাজার ২৫০ টাকা।

বড় অঙ্কের বিল এবং গভীর রাত হওয়ার কারণে স্বজনরা টাকা বকেয়া রেখে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ দেননি। ওই সময় সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল জব্বার জলিল হাসপাতালে কর্তব্যরতদের ফোন করে মৃতদেহ নিয়ে গিয়ে স্বজনর দাফন-কাফনের সুযোগ দেয়ার সুপারিশ করেন এবং নিজে উপস্থিত হয়ে বিল পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু আবদুল জব্বার জলিলের সেই অনুরোধও রাখেননি হাসপাতালে কর্তব্যরতরা। পরে সকাল ৯টায় আবদুল জব্বার জলিল হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে বিলের টাকা পরিশোধ করার পরই লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

অভিযোগপত্রে আবদুল বারী বলেন, ‘নর্থ ইস্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে আমার চাচাকে করোনা রোগী সাজিয়ে চিকিৎসা প্রদানে বাধ্য করেছে। ফলে যেখানে দুই দিনে ১০-১৫ হাজার টাকা বিল আসার কথা, সেখানে আমাদের বিল পরিশোধ করতে হয়েছে ৭৪ হাজার টাকা। এছাড়াও টাকার জন্য লাশ আটকে রেখে অমানবিক কাজ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

আরও খবর
সিটি মেয়রদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার তিন মাস আগেই নির্বাচন করতে হবে
পাঁচ কেজির উপরে ড্রোন উড়াতে অনুমতি লাগবে
পার্বত্য এলাকায় সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন করা হচ্ছে : কাদের
ঢাকা আঙ্কারার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী প্রধানমন্ত্রী
ভুটানের সঙ্গে পিটিএ করবে বাংলাদেশ
লালমনিরহাট কারাগারে হামলার হুমকি জঙ্গিদের
অবৈধ নির্মাণসামগ্রী উচ্ছেদ অভিযান ও নিলাম
ডক্টরস ফর হেলথ-এর উদ্যোগে করোনা সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ
যশোরে নিহত তিন কিশোরের পরিবারকে কেন ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ নয় : হাইকোর্ট
এক পুলিশ ও চার সৈনিকের ১০ বছর করে কারাদণ্ড
চট্টগ্রামে বোয়ালখালীর সাবেক ওসি হিমাংশুসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ধর্ষণচেষ্টার মামলা না তোলায় কিশোরীর বাবাকে অপহরণ
শিক্ষককে কান ধরে উঠবস করানোর ভিডিও ভাইরাল
অপরাধীদের সঙ্গে পুলিশের সম্পর্ক থাকলে ব্যবস্থা ডিএমপি কমিশনার
যৌন নির্যাতনে অভিযুক্ত জবি শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কার দাবি
তরুণ প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে শিক্ষা নিতে হবে মেয়র আইভী

মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৫ মহররম ১৪৪২, ২৭ ভাদ্র ১৪২৭

লাশ আটকে রেখে অতিরিক্ত বিল আদায়

প্রতিনিধি, সিলেট

সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বিল, ৫ ঘণ্টা লাশ আটকে রেখে টাকা আদায় এবং করোনা রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ হওয়ার পরও রোগীকে কোভিড-১৯ ইউনিটে রেখে চিকিৎসা প্রদানের জন্য হাসপাতালটির বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।

গতকাল সিলেট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজি বরাবারে এ অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন দক্ষিণ সুরমার উপজেলার সিলাম ইউনিয়নের উলালমহল গ্রামের মৃত নাসির উদ্দিনের ভাতিজা আবদুল বারী।

অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, দক্ষিণ সুরমার উপজেলার সিলাম ইউনিয়নের উলালমহল গ্রামের নাসির উদ্দিন (৬০) গত ৩ সেপ্টেম্বর রাত ২টায় শ্বাসকষ্ট নিয়ে নর্থ ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন। ভর্তির পর রোগীকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ করোনা ইউনিটে নিয়ে যেতে চাইলে স্বজনরা ‘করোনা নেগেটিভ’ রিপোর্ট দেখান। তবু স্বজনদের কথা উপেক্ষা করে কর্তব্যরতরা রোগীকে সাধারণ ওয়ার্ডে না রেখে করোনা ইউনিটে নিয়ে যান।

রোগীকে করোনা ইউনিটে নিয়ে পজেটিভ রোগীর মতোই চিকিৎসা প্রদান করা হয়। একদিন পর রোগীর শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে তাকে করোনায় মুমূর্ষু রোগীর মতো রক্তের প্লাজমা দেয়ার কথা বলেন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা। তবে স্বজনরা সম্মত না হলে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

শনিবার ভোররাত ৪টার দিকে নাসির উদ্দিন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। রোগীর মৃত্যুর পর স্বজনদের হাতে ৭৭ হাজার ৪৭২ টাকার বিল ধরিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিলে শুধু পিপিই এবং সুরক্ষাসামগ্রী বাবদ প্রতিদিন ধরা হয় ৪ হাজার ২৫০ টাকা।

বড় অঙ্কের বিল এবং গভীর রাত হওয়ার কারণে স্বজনরা টাকা বকেয়া রেখে মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ লাশ দেননি। ওই সময় সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি আবদুল জব্বার জলিল হাসপাতালে কর্তব্যরতদের ফোন করে মৃতদেহ নিয়ে গিয়ে স্বজনর দাফন-কাফনের সুযোগ দেয়ার সুপারিশ করেন এবং নিজে উপস্থিত হয়ে বিল পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু আবদুল জব্বার জলিলের সেই অনুরোধও রাখেননি হাসপাতালে কর্তব্যরতরা। পরে সকাল ৯টায় আবদুল জব্বার জলিল হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে বিলের টাকা পরিশোধ করার পরই লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

অভিযোগপত্রে আবদুল বারী বলেন, ‘নর্থ ইস্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে আমার চাচাকে করোনা রোগী সাজিয়ে চিকিৎসা প্রদানে বাধ্য করেছে। ফলে যেখানে দুই দিনে ১০-১৫ হাজার টাকা বিল আসার কথা, সেখানে আমাদের বিল পরিশোধ করতে হয়েছে ৭৪ হাজার টাকা। এছাড়াও টাকার জন্য লাশ আটকে রেখে অমানবিক কাজ করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।