শিক্ষককে কান ধরে উঠবস করানোর ভিডিও ভাইরাল

বরিশাল নগরীতে একটি বেসরকারি নাসিং ইনস্টিটিউটের সাবেক খণ্ডকালীন শিক্ষককে কানধরে ওঠবস করার ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সম্প্রতি ফেসবুকে ওই ভিডিও চিত্র আপলোড করা হয়। বহু মানুষ ভিডিওটি শেয়ার করেছেন। তবে কে বা কারা সেটি আপলোড করেছেন সেটি এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। ঘটনার শিকার শিক্ষক মিজানুর রহমান নগরীর জমজম ইনস্টিউটিটে খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করতেন। তিনি ওই ভিডিওর জন্য প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ইমন ও তার স্ত্রী মনিরা বেগমকে দায়ী করেছেন।ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে শিক্ষক মিজানুর রহমান কানধর ধরে ওঠবস করছেন এবং বোরকা পরিহিত এক নারীর পা ধরে ক্ষমা চাইছেন। অন্য কাউকে ছবিতে দেখা না গেলেও তাদের কণ্ঠস্বরে শোনা গেছে। ভিডিওতে ওই শিক্ষক এই বলে শপথ করেন যে, ‘কোন ছাত্রীকে বেশি নম্বর দেবার প্রলোভন দেখিয়ে আর অনৈতিক প্রস্তাব কখনও দিবেন না’। মিজানুর রহমান সজলের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের আয়লা গ্রামে। মিজানুর রহমান সজল মুঠোফোনে বলেন, ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত  জমজম ইনস্টিটিউটের নগরীর রূপাতলী শাখায় ম্যাটস বিভাগে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৮ সালে তিনি ওই প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরি ছেড়ে দিলেও করোনাকালে গত মার্চে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে অনলাইনে ক্লাস করিয়েছিলেন তিনি। 

মিজানুর রহমান সজল বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাকতা করার সময় মো. ইমন ও তার স্ত্রী মনিরাসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে তার বিরোধ দেখা দেয়। তারা ক্লাস ফাঁকি ও লেখাপড়ায় অমনোযোগী ছিল। কিন্ত তারা পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাইয়ে দিতে নানা সময় বহিরাগত কিছু বন্ধুদের দিয়ে চাপ দিয়ে আসছিল। এসব নিয়ে ইমন তার ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। শিক্ষক সজল অভিযোগ করেন, গত ২৫ বা ২৬ আগস্ট হাতেম আলী কলেজ সংলগ্ন এলাকায় ইমন ও তার ৬/৭ জন বন্ধু মিলে মিজানুর রহমানের পথরোধ করে মুঠোফোন ও মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে যায়। তাকে জোরপূর্বক প্রথমে নগরীর অক্সফোর্ড মিশন রোডে ও পরে গোরস্তান রোডে একটি বাসায় নিয়ে মারধর করে। শিক্ষক মিজানুর রহমান সজল বলেন, মারধরের একপর্যায়ে ইমন তাকে কান ধরে ওঠবস করায়। এরপর ইমন তাকে কিছু কথা বলতে বাধ্য করে। সেগুলো একজন মুঠোফোনে ধারণ করে। তারা যেভাবে যা বলতে বলেছে, আমিও তাদের হাত থেকে বাঁচতে তাই বলেছি। ছাত্রের হাতে এভাবে মারধরের শিকার হতে হবে, তা কল্পনাও করতে পারিনি বলে জানান মিজানুর রহমান।

অভিযোগ প্রসঙ্গে ইমতিয়াজ ইমন বলেন, ‘ওই শিক্ষক বিভিন্ন সময়ে নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। প্রতিবাদ করায় তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। তার কারণে আমার স্ত্রী এখনও পাস করতে পারেননি। তাকে ধরে নিয়ে এ ধরনের কাজ করবেন না এমন মুচলেকা নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি কান ধরে বলেছেন এমন কাজ আর করবেন না।’ প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ না করে কেন নিজেরা ব্যবস্থা নিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তিনি তো ওখানে চাকরি করেন না।’ ইমন দাবি করেন, ফেসবুকে এই ভিডিও তিনি প্রকাশ করেননি। জমজম ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক সাজ্জাদুল হক জানান, ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি তিনি দেখেছেন। ভিডিওতে যে শিক্ষককে দেখা গেছে তার নাম মিজানুর রহমান সজল। তিনি দুই বছর আগে চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন। তবে করোনাকালে গত মার্চে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে অনলাইনে ক্লাস নিয়েছেন তিনি। কিন্তু তার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত কোন শিক্ষার্থী লিখিত বা মৌখিক কোন অভিযোগ করেননি। তার সময়ের শিক্ষার্থীরাও পাশ করে চলে গেছেন। যেহেতু মিজানুর রহমানও শিক্ষক হিসাবে নেই তাই ভিডিও চিত্রের বিষয়ে জমজম ইনস্টিউটিট কর্তৃপক্ষের কিছু করণীয় নেই বলে জানান নির্বাহী পরিচালক সাজ্জাদুল হক।

আরও খবর
সিটি মেয়রদের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার তিন মাস আগেই নির্বাচন করতে হবে
পাঁচ কেজির উপরে ড্রোন উড়াতে অনুমতি লাগবে
পার্বত্য এলাকায় সড়ক অবকাঠামো উন্নয়ন করা হচ্ছে : কাদের
ঢাকা আঙ্কারার সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে আগ্রহী প্রধানমন্ত্রী
ভুটানের সঙ্গে পিটিএ করবে বাংলাদেশ
লালমনিরহাট কারাগারে হামলার হুমকি জঙ্গিদের
অবৈধ নির্মাণসামগ্রী উচ্ছেদ অভিযান ও নিলাম
ডক্টরস ফর হেলথ-এর উদ্যোগে করোনা সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ
যশোরে নিহত তিন কিশোরের পরিবারকে কেন ৫০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ নয় : হাইকোর্ট
এক পুলিশ ও চার সৈনিকের ১০ বছর করে কারাদণ্ড
চট্টগ্রামে বোয়ালখালীর সাবেক ওসি হিমাংশুসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ধর্ষণচেষ্টার মামলা না তোলায় কিশোরীর বাবাকে অপহরণ
লাশ আটকে রেখে অতিরিক্ত বিল আদায়
অপরাধীদের সঙ্গে পুলিশের সম্পর্ক থাকলে ব্যবস্থা ডিএমপি কমিশনার
যৌন নির্যাতনে অভিযুক্ত জবি শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কার দাবি
তরুণ প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ থেকে শিক্ষা নিতে হবে মেয়র আইভী

মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৫ মহররম ১৪৪২, ২৭ ভাদ্র ১৪২৭

শিক্ষককে কান ধরে উঠবস করানোর ভিডিও ভাইরাল

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরিশাল

বরিশাল নগরীতে একটি বেসরকারি নাসিং ইনস্টিটিউটের সাবেক খণ্ডকালীন শিক্ষককে কানধরে ওঠবস করার ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। সম্প্রতি ফেসবুকে ওই ভিডিও চিত্র আপলোড করা হয়। বহু মানুষ ভিডিওটি শেয়ার করেছেন। তবে কে বা কারা সেটি আপলোড করেছেন সেটি এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। ঘটনার শিকার শিক্ষক মিজানুর রহমান নগরীর জমজম ইনস্টিউটিটে খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করতেন। তিনি ওই ভিডিওর জন্য প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ইমন ও তার স্ত্রী মনিরা বেগমকে দায়ী করেছেন।ভিডিও চিত্রে দেখা গেছে শিক্ষক মিজানুর রহমান কানধর ধরে ওঠবস করছেন এবং বোরকা পরিহিত এক নারীর পা ধরে ক্ষমা চাইছেন। অন্য কাউকে ছবিতে দেখা না গেলেও তাদের কণ্ঠস্বরে শোনা গেছে। ভিডিওতে ওই শিক্ষক এই বলে শপথ করেন যে, ‘কোন ছাত্রীকে বেশি নম্বর দেবার প্রলোভন দেখিয়ে আর অনৈতিক প্রস্তাব কখনও দিবেন না’। মিজানুর রহমান সজলের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার কনকদিয়া ইউনিয়নের আয়লা গ্রামে। মিজানুর রহমান সজল মুঠোফোনে বলেন, ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত  জমজম ইনস্টিটিউটের নগরীর রূপাতলী শাখায় ম্যাটস বিভাগে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ২০১৮ সালে তিনি ওই প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরি ছেড়ে দিলেও করোনাকালে গত মার্চে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে অনলাইনে ক্লাস করিয়েছিলেন তিনি। 

মিজানুর রহমান সজল বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাকতা করার সময় মো. ইমন ও তার স্ত্রী মনিরাসহ কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে তার বিরোধ দেখা দেয়। তারা ক্লাস ফাঁকি ও লেখাপড়ায় অমনোযোগী ছিল। কিন্ত তারা পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাইয়ে দিতে নানা সময় বহিরাগত কিছু বন্ধুদের দিয়ে চাপ দিয়ে আসছিল। এসব নিয়ে ইমন তার ওপর ক্ষিপ্ত ছিল। শিক্ষক সজল অভিযোগ করেন, গত ২৫ বা ২৬ আগস্ট হাতেম আলী কলেজ সংলগ্ন এলাকায় ইমন ও তার ৬/৭ জন বন্ধু মিলে মিজানুর রহমানের পথরোধ করে মুঠোফোন ও মোটরসাইকেলের চাবি নিয়ে যায়। তাকে জোরপূর্বক প্রথমে নগরীর অক্সফোর্ড মিশন রোডে ও পরে গোরস্তান রোডে একটি বাসায় নিয়ে মারধর করে। শিক্ষক মিজানুর রহমান সজল বলেন, মারধরের একপর্যায়ে ইমন তাকে কান ধরে ওঠবস করায়। এরপর ইমন তাকে কিছু কথা বলতে বাধ্য করে। সেগুলো একজন মুঠোফোনে ধারণ করে। তারা যেভাবে যা বলতে বলেছে, আমিও তাদের হাত থেকে বাঁচতে তাই বলেছি। ছাত্রের হাতে এভাবে মারধরের শিকার হতে হবে, তা কল্পনাও করতে পারিনি বলে জানান মিজানুর রহমান।

অভিযোগ প্রসঙ্গে ইমতিয়াজ ইমন বলেন, ‘ওই শিক্ষক বিভিন্ন সময়ে নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। প্রতিবাদ করায় তিনি আমার ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। তার কারণে আমার স্ত্রী এখনও পাস করতে পারেননি। তাকে ধরে নিয়ে এ ধরনের কাজ করবেন না এমন মুচলেকা নিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তিনি কান ধরে বলেছেন এমন কাজ আর করবেন না।’ প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ না করে কেন নিজেরা ব্যবস্থা নিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তিনি তো ওখানে চাকরি করেন না।’ ইমন দাবি করেন, ফেসবুকে এই ভিডিও তিনি প্রকাশ করেননি। জমজম ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক সাজ্জাদুল হক জানান, ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি তিনি দেখেছেন। ভিডিওতে যে শিক্ষককে দেখা গেছে তার নাম মিজানুর রহমান সজল। তিনি দুই বছর আগে চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন। তবে করোনাকালে গত মার্চে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে অনলাইনে ক্লাস নিয়েছেন তিনি। কিন্তু তার বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত কোন শিক্ষার্থী লিখিত বা মৌখিক কোন অভিযোগ করেননি। তার সময়ের শিক্ষার্থীরাও পাশ করে চলে গেছেন। যেহেতু মিজানুর রহমানও শিক্ষক হিসাবে নেই তাই ভিডিও চিত্রের বিষয়ে জমজম ইনস্টিউটিট কর্তৃপক্ষের কিছু করণীয় নেই বলে জানান নির্বাহী পরিচালক সাজ্জাদুল হক।