বদলগাছীতে নিকাশী খালের অভাবে জলাবদ্ধ ১০ হাজার বিঘা জমি

নওগাঁর বদলগাছীতে একটি খালের অভাবে প্রায় ১০ হাজার বিঘা জমির ফসল প্রতি বছর বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। উপজেলার কোলা ইউনিয়নের কয়েকটি মাঠে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার কারণে তিন ফসলি আবাদি জমি এখন এক ফসলে পরিণত হয়েছে। আর এই জলাবদ্ধতা নিরসনে একটি খাল খনন ও খালের উত্তর পাশ দিয়ে চলাচলের রাস্তা তৈরির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসীরা।

জানা যায়, উপজেলার কোলা ইউনিয়নের গয়ড়া, বনগ্রাম, শ্যামার, কেশাইল, নিরলী, গাড়াকন্দ, চকের মাঠ এবং কয়াভবানিপুরসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষের গ্রায় ১০ হাজার বিঘা জমির রয়েছে। যেখানে বোরো, আমন ও সবজির আবাদ হয়ে থাকে। এই মাঠের পানি নামার কোন পথ না থাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।

নকশার রেকর্ডে কয়াভবানিপুর গ্রাম থেকে ভাঙাগাড়ি পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার ফুট দূরত্ব সরকারি রাস্তা রয়েছে। তবে তা বাস্তবে নেই। রাস্তার পাশের জমির মালিকরা গত ৫০-৬০ বছর থেকে সেই জমি দখলে নিয়ে চাষাবাদ করছেন। ওই রাস্তাটি দখলমুক্ত করে একটি খাল খনন করা হলে কয়েকটি মাঠের পানি বেজ্রা ব্রিজ হয়ে হাস্তা বিলের ভাঙাগাড়ি দিয়ে তুলশিগঙ্গা নদীতে গিয়ে পড়বে। এতে করে ওইসব মাঠের জলাবদ্ধতা দূর হয়ে তিন ফসলি জমিতে পরিণত হবে। এছাড়া মাঠের ফসল ঘরে উঠানোর জন্য খালের উত্তর পাশ দিয়ে ভ্যান চলাচলের রাস্তার প্রয়োজন।

গয়ড়া গ্রামের কৃষক সোহেল বলেন, বনগ্রামের মাঠে তার প্রায় ১৮ বিঘা ফসলি জমি আছে। এরমধ্যে কয়েক বিঘা জমিতে প্রতি বছর পটল, মরিচ ও বেগুনের চাষাবাদ করেন। এবং কিছু জমিতে পাটের আবাদ করে থাকে। প্রতি বছর বৃষ্টির পানিতে এই মাঠটি প্লাবিত হয়। পানি নামার জায়গা না থাকায় তার সবজিক্ষেতগুলো ডুবে নষ্ট হয়ে যায়। এ বছর বৃষ্টির পরিমাণও বেশি। পাটের জমিতে পানি জমা হয়ে থাকায় তা নষ্ট হয়ে গেছে।

কোলা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাহিনুর ইসলাম স্বপন বলেন, এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে একটি খাল খননের ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। আমার কথা শুনে তিনি সরেজমিনে এসে মাঠটি পরিদর্শন করে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেছেন।

বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহা. আবু তাহির বলেন, ইতোপূর্বে ওই এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। সেখানে সরকারি একটি রাস্তা রয়েছে যা স্থানীয়রা দখল করে রেখেছেন। কয়েকদিন আগে সার্ভেয়ার পাঠিয়ে জরিপ করা হয়েছে। রাস্তার জায়গাটি ছেড়ে দিতে দখলকারীদের নোটিস করা হবে। এরপর খাল খননের উদ্যোগ নেয়া হবে। আশা করছি শীঘ্রই জলাবদ্ধতা নিরসনে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৬ মহররম ১৪৪২, ২৮ ভাদ্র ১৪২৭

বদলগাছীতে নিকাশী খালের অভাবে জলাবদ্ধ ১০ হাজার বিঘা জমি

প্রতিনিধি, বদলগাছী (নওগাঁ)

image

নওগাঁর বদলগাছীতে একটি খালের অভাবে প্রায় ১০ হাজার বিঘা জমির ফসল প্রতি বছর বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। উপজেলার কোলা ইউনিয়নের কয়েকটি মাঠে বৃষ্টির পানি জমে জলাবদ্ধতার কারণে তিন ফসলি আবাদি জমি এখন এক ফসলে পরিণত হয়েছে। আর এই জলাবদ্ধতা নিরসনে একটি খাল খনন ও খালের উত্তর পাশ দিয়ে চলাচলের রাস্তা তৈরির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসীরা।

জানা যায়, উপজেলার কোলা ইউনিয়নের গয়ড়া, বনগ্রাম, শ্যামার, কেশাইল, নিরলী, গাড়াকন্দ, চকের মাঠ এবং কয়াভবানিপুরসহ কয়েকটি গ্রামের মানুষের গ্রায় ১০ হাজার বিঘা জমির রয়েছে। যেখানে বোরো, আমন ও সবজির আবাদ হয়ে থাকে। এই মাঠের পানি নামার কোন পথ না থাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।

নকশার রেকর্ডে কয়াভবানিপুর গ্রাম থেকে ভাঙাগাড়ি পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার ফুট দূরত্ব সরকারি রাস্তা রয়েছে। তবে তা বাস্তবে নেই। রাস্তার পাশের জমির মালিকরা গত ৫০-৬০ বছর থেকে সেই জমি দখলে নিয়ে চাষাবাদ করছেন। ওই রাস্তাটি দখলমুক্ত করে একটি খাল খনন করা হলে কয়েকটি মাঠের পানি বেজ্রা ব্রিজ হয়ে হাস্তা বিলের ভাঙাগাড়ি দিয়ে তুলশিগঙ্গা নদীতে গিয়ে পড়বে। এতে করে ওইসব মাঠের জলাবদ্ধতা দূর হয়ে তিন ফসলি জমিতে পরিণত হবে। এছাড়া মাঠের ফসল ঘরে উঠানোর জন্য খালের উত্তর পাশ দিয়ে ভ্যান চলাচলের রাস্তার প্রয়োজন।

গয়ড়া গ্রামের কৃষক সোহেল বলেন, বনগ্রামের মাঠে তার প্রায় ১৮ বিঘা ফসলি জমি আছে। এরমধ্যে কয়েক বিঘা জমিতে প্রতি বছর পটল, মরিচ ও বেগুনের চাষাবাদ করেন। এবং কিছু জমিতে পাটের আবাদ করে থাকে। প্রতি বছর বৃষ্টির পানিতে এই মাঠটি প্লাবিত হয়। পানি নামার জায়গা না থাকায় তার সবজিক্ষেতগুলো ডুবে নষ্ট হয়ে যায়। এ বছর বৃষ্টির পরিমাণও বেশি। পাটের জমিতে পানি জমা হয়ে থাকায় তা নষ্ট হয়ে গেছে।

কোলা ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাহিনুর ইসলাম স্বপন বলেন, এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে আমি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে একটি খাল খননের ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। আমার কথা শুনে তিনি সরেজমিনে এসে মাঠটি পরিদর্শন করে এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেছেন।

বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহা. আবু তাহির বলেন, ইতোপূর্বে ওই এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। সেখানে সরকারি একটি রাস্তা রয়েছে যা স্থানীয়রা দখল করে রেখেছেন। কয়েকদিন আগে সার্ভেয়ার পাঠিয়ে জরিপ করা হয়েছে। রাস্তার জায়গাটি ছেড়ে দিতে দখলকারীদের নোটিস করা হবে। এরপর খাল খননের উদ্যোগ নেয়া হবে। আশা করছি শীঘ্রই জলাবদ্ধতা নিরসনে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।