টুটুলের দৃষ্টান্ত ‘সহজপাঠ’ স্কুল

টুটুল চৌধুরী, একাধারে একজন মঞ্চাভিনেতা, নাট্যাভিনেতা, নাট্যকার এবং একজন ব্যাংকার। খুব ছোট্টবেলায় স্কুলে পড়াশুনাকালীন সময়ে প্রায়ই তিনি স্কুল থেকে পালাতেন। যে কারণে বড় ভাই মাসুদ তাকে পিটাতেনও। কিন্তু টুটুল কেন স্কুলে যেতেন না সেই কারণটা কখনও কেউ জানতে চাইতেন না। তাই টুটুল সেই ছোট্টবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন, বড় হয়ে তিনি এমন একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করবেন যাতে যাবার জন্যই আগ্রহী থাকেন শিক্ষার্থীরা। চাকরি জীবন এবং পেশাগত জীবন থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে রাজধানীর শনির আখড়ায় ধনিয়া কলেজের পিছনে নিজেদের জায়গায় টুটুল ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি গড়ে তোলেন ‘সহজপাঠ স্কুল’। এর প্রতিষ্ঠাতা টুটুল চৌধুরী এবং প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষও তিনি। টুটুল চৌধুরীর এই স্কুলে শিক্ষার্থীরা ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত আপাতত শিক্ষা গ্রহন করছে। শুধু পুঁথিগত বিদ্যা পাঠই নয় এর পাশাপাশি সঙ্গীত চর্চা, কবিতা পাঠ, নৃত্য, ছবি আঁকা’সহ আরো অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষার্থীরা নিজেদের পারদর্শী করে

তুলতে পারে। টুটুল চৌধুরী বলেন, ‘সেই ছোটবেলার স্বপ্ন আমার পূরণ হয়েছে, এটা যে সত্যিকার অর্থেই কতো ভালোলাগার তা আসলে বুঝিয়ে বলা খুব কঠিন। আমার এই সহজপাঠ স্কুলে বিশজন শিক্ষক কর্মরত। সহজপাঠ নামটি রেখেছি এ কারণেই যে এখানে খুব সহজে শিক্ষার্থীরা এসে যেন শিক্ষকদের আদর ভালোবাসার মধ্যদিয়ে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। পাশাপাশি অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়েও যেন নিজেদের গড়ে তুলতে পারে। মূলকথা হলো শিক্ষার্থীরা যেন স্কুলে আসতে, পাঠ গ্রহন করতেই যেন আগ্রহী থাকে সবসময় সেভাবেই আমি স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত করেছি। অভিভাবকরা এখন আমাকে প্রায়ই বলেন কিছুটা অসুস্থ হলেও বাচ্চারা স্কুল ফাঁকি দিতে চায় না। এটা যে আমার জন্য কতো বড় আশীর্বাদ তা আসলে ভাষায় প্রকাশের নয়। এই সহজপাঠ আগামী দিনে আরও অনেক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলেই আমার বিশ^াস।’ এদিকে টুটুল চৌধুরী তার অভিনয়ে জীবনে পেশাগতভাবে দেড় যুগেরও বেশি সময় পার করছেন।

তার আপন বড় ভাই প্রয়াত মাসুদ আহমেদ চৌধুরীর নাট্যদল ‘গণছায়া’র ব্যনারে তিনি প্রথম ১৯৮৮ সালে উচ্চমাধ্যমিকে পড়ার সময় মঞ্চ নাটক ‘তদন্ত’তে অভিনয় করেন। ১৯৯৬ সালে ‘থিয়েটার স্কুল’র দ্বাদশ ব্যাচে প্রথম হন তিনি। এর পরপরই তিনি নাট্যদল ‘থিয়েটার’র হয়ে ‘মেরাজ ফকিরের মা’, ‘মাধবী’, ‘দ্রোহ’তে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন টুটুল চৌধুরী। ‘বাংলাদেশ ব্যাংক থিয়েটার’র আয়োজনে তিনি ‘১৩ নং ফেকু ওস্তাগার লেন’ ও ‘ছাড়পত্র’ নাটকেরও নির্দেশনায় দিয়েছেন। তবে পেশাগতভাবে তার অভিনয় শুরু একুশে টিভিতে আজ থেকে দেড় যুগ আগে প্রচারিত ‘ভোলার ডায়েরি’ নাটকে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে। তার অভিনীত প্রথম সিনেমা বেলাল আহমেদ’র ‘অনিশ্চিত যাত্রা’। শিগগিরই মুক্তি পাবে তার অভিনীত ‘আগামীকাল’ সিনেমাটি। এতে তিনি গল্পের কেন্দ্রীয় একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন। টুটুল চৌধুরী বাংলাদেশ ব্যাংকে ডিজিএম হিসেবে কর্মরত। তার স্ত্রী সালমা ডলি রাজশাহী মেট্রোপলিটনে এডিসনাল ডিআইজি হিসেবে কর্মরত।

বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৬ মহররম ১৪৪২, ২৮ ভাদ্র ১৪২৭

টুটুলের দৃষ্টান্ত ‘সহজপাঠ’ স্কুল

বিনোদন প্রতিবেদক |

image

টুটুল চৌধুরী, একাধারে একজন মঞ্চাভিনেতা, নাট্যাভিনেতা, নাট্যকার এবং একজন ব্যাংকার। খুব ছোট্টবেলায় স্কুলে পড়াশুনাকালীন সময়ে প্রায়ই তিনি স্কুল থেকে পালাতেন। যে কারণে বড় ভাই মাসুদ তাকে পিটাতেনও। কিন্তু টুটুল কেন স্কুলে যেতেন না সেই কারণটা কখনও কেউ জানতে চাইতেন না। তাই টুটুল সেই ছোট্টবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন, বড় হয়ে তিনি এমন একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করবেন যাতে যাবার জন্যই আগ্রহী থাকেন শিক্ষার্থীরা। চাকরি জীবন এবং পেশাগত জীবন থেকে প্রাপ্ত অর্থ দিয়ে রাজধানীর শনির আখড়ায় ধনিয়া কলেজের পিছনে নিজেদের জায়গায় টুটুল ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি গড়ে তোলেন ‘সহজপাঠ স্কুল’। এর প্রতিষ্ঠাতা টুটুল চৌধুরী এবং প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষও তিনি। টুটুল চৌধুরীর এই স্কুলে শিক্ষার্থীরা ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত আপাতত শিক্ষা গ্রহন করছে। শুধু পুঁথিগত বিদ্যা পাঠই নয় এর পাশাপাশি সঙ্গীত চর্চা, কবিতা পাঠ, নৃত্য, ছবি আঁকা’সহ আরো অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষার্থীরা নিজেদের পারদর্শী করে

তুলতে পারে। টুটুল চৌধুরী বলেন, ‘সেই ছোটবেলার স্বপ্ন আমার পূরণ হয়েছে, এটা যে সত্যিকার অর্থেই কতো ভালোলাগার তা আসলে বুঝিয়ে বলা খুব কঠিন। আমার এই সহজপাঠ স্কুলে বিশজন শিক্ষক কর্মরত। সহজপাঠ নামটি রেখেছি এ কারণেই যে এখানে খুব সহজে শিক্ষার্থীরা এসে যেন শিক্ষকদের আদর ভালোবাসার মধ্যদিয়ে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। পাশাপাশি অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়েও যেন নিজেদের গড়ে তুলতে পারে। মূলকথা হলো শিক্ষার্থীরা যেন স্কুলে আসতে, পাঠ গ্রহন করতেই যেন আগ্রহী থাকে সবসময় সেভাবেই আমি স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত করেছি। অভিভাবকরা এখন আমাকে প্রায়ই বলেন কিছুটা অসুস্থ হলেও বাচ্চারা স্কুল ফাঁকি দিতে চায় না। এটা যে আমার জন্য কতো বড় আশীর্বাদ তা আসলে ভাষায় প্রকাশের নয়। এই সহজপাঠ আগামী দিনে আরও অনেক দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে বলেই আমার বিশ^াস।’ এদিকে টুটুল চৌধুরী তার অভিনয়ে জীবনে পেশাগতভাবে দেড় যুগেরও বেশি সময় পার করছেন।

তার আপন বড় ভাই প্রয়াত মাসুদ আহমেদ চৌধুরীর নাট্যদল ‘গণছায়া’র ব্যনারে তিনি প্রথম ১৯৮৮ সালে উচ্চমাধ্যমিকে পড়ার সময় মঞ্চ নাটক ‘তদন্ত’তে অভিনয় করেন। ১৯৯৬ সালে ‘থিয়েটার স্কুল’র দ্বাদশ ব্যাচে প্রথম হন তিনি। এর পরপরই তিনি নাট্যদল ‘থিয়েটার’র হয়ে ‘মেরাজ ফকিরের মা’, ‘মাধবী’, ‘দ্রোহ’তে অভিনয় করে প্রশংসিত হয়েছেন টুটুল চৌধুরী। ‘বাংলাদেশ ব্যাংক থিয়েটার’র আয়োজনে তিনি ‘১৩ নং ফেকু ওস্তাগার লেন’ ও ‘ছাড়পত্র’ নাটকেরও নির্দেশনায় দিয়েছেন। তবে পেশাগতভাবে তার অভিনয় শুরু একুশে টিভিতে আজ থেকে দেড় যুগ আগে প্রচারিত ‘ভোলার ডায়েরি’ নাটকে অভিনয়ের মধ্যদিয়ে। তার অভিনীত প্রথম সিনেমা বেলাল আহমেদ’র ‘অনিশ্চিত যাত্রা’। শিগগিরই মুক্তি পাবে তার অভিনীত ‘আগামীকাল’ সিনেমাটি। এতে তিনি গল্পের কেন্দ্রীয় একটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন। টুটুল চৌধুরী বাংলাদেশ ব্যাংকে ডিজিএম হিসেবে কর্মরত। তার স্ত্রী সালমা ডলি রাজশাহী মেট্রোপলিটনে এডিসনাল ডিআইজি হিসেবে কর্মরত।