রাজধানীর সবুজবাগের নন্দীপাড়া এলাকায় জান্নাতুল ফেরদৌস (২৫) নামে এক গৃহবধূকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। সবুজবাগের নন্দীপাড়ায় গত সোমবার রাতের হত্যকা-ে জড়িত মনিরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে।
জান্নাতুলের পরিবারের দাবি, হত্যকা- পরিকল্পিত। তবে পুলিশ জানিয়েছে, চুরি করার সময় চিনে ফেলে জান্নাতুলকে খুন করা হয়েছে। ঘাতক মনির ওই ভবনেই নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করত।
এদিকে হাজারীবাগের বসিলা এলাকায় অজ্ঞাত ব্যক্তিকে (৪৫) শ্বাসরোধ এবং খিলগাঁও নন্দীপাড়ায় এলাকায় অজ্ঞাত যুবক (২৫) জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। পৃথক ঘটনায় লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (সবুজবাগ জোন) শাহ আলম মো. আকতারুল ইসলাম সংবাদকে জানান, হত্যাকা-টি নৃশংস। আমরা যখন যাই তখন মায়ের লাশের পাশে দেড় বছরের শিশুকে দেখতে পাই। নৃশংস এ হত্যকা-ের ঘটনায় ঘাতক মনিরকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে রিমান্ড হেফাজতে আনব। আশপাশের লোকজনের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে। শুধু চুরির উদ্দেশ্যে হত্যকা- না হত্যাকা-ের নেপথ্যে অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল সেটি তদন্ত চলছে। নিহত ওই গৃহবধূর বাবা ও মা ঢাকায়ই থাকেন। তাদের দেশের বাড়ি চাঁদপুরে। গৃহবধূর বাবা বয়স্ক। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে দ্রুত সময়ের মধ্যে দাফনের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে।
সবুজবাগ থানার ওসি মাহবুব আলম জানান, নন্দীপাড়ার লাল মসজিদসংলগ্ন সাততলা বাড়ির চারতলায় পরিবার নিয়ে থাকতেন গৃহবধূ জান্নাতুল ফেরদৌস। তার স্বামী মোস্তাফিজ গুলশানের একটি হোটেলের ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেন। এ দম্পতির এক সন্তান রয়েছে। প্রাথমিকভাবে তদন্তে জানা গেছে, স্বামী সন্তানকে নিয়ে জান্নাতুল যে বাসায় থাকেন ওই বাড়িটির নির্মাণকাজ শেষ হয়নি এখনও। চারতলার উপরের ফ্লোরগুলোর কাজ চলছিল। সেখানে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন মনির। গত সোমবার রাত ৯টার দিকে মনির গৃহবধূ জান্নাতুলের বাসার পেছনের গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। সে সময় গৃহবধূ তাকে দেখে ফেলে। সঙ্গে সঙ্গেই মনির তার মুখ জাপটে ধরে। গৃহবধূ চিৎকার করতে চাইলে হাতে থাকা ছুরি দিয়ে পিঠে একে একে সাতটি আঘাত করে। তারপরও এক ঝটিকায় গৃহবধূ মনিরের হাত থেকে ছুটে গিয়ে চিৎকার করতে করতে দৌড়ে গিয়ে বেডরুমে ঢোকেন। মনিরও দৌড়ে যায় সেখানে। বিছানায় ফেলে গলা কেটে জান্নাতুলের মৃত্যু নিশ্চিত করে। গলা কাটতে গিয়ে নিজের হাতের আঙুলও কেটে যায় মনিরের। এরমধ্যে চিৎকার শুনে তিনতলাসহ আশপাশের লোকজন দৌড়ে উপরে চলে আসে। নিচে গেলে ধরা পড়ার ভয়ে মনির পেছনের দরজা দিয়ে আবার উপরে চলে যায়। নিজের রুমে গিয়ে শুয়ে থাকার ভান করে। এরমধ্যে খবর পেয়ে আমরা ওই বাড়িতে ছুটে যাই। গিয়ে দেখি, পেছনের দরজার কাছে ফোঁটা ফোঁটা রক্ত। এমনকি চারতলা থেকে পাঁচ তলায় ওঠার সিঁড়িতেও লেগেছিল রক্ত। পরে উপরে উঠে মনিরকে পাওয়া যায়। তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে হত্যাকা-ের কথা স্বীকার করে। পুলিশ দাবি করেছে ‘চুরি করতে গিয়ে বাধা পেয়ে সে এই হত্যাকা- ঘটিয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, নিহত গৃহবধূর স্বামী প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে বাসায় ফিরতেন। বাসায় গৃহবধূ তার ছোট্ট শিশু সন্তানকে নিয়ে থাকতেন। এই বিষয়টি জানত খুনি মনির। মনির প্রায় ছয় মাস ধরে ওই বাসায় নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিল। বর্তমানে সাময়িকভাবে নির্মাণকাজ বন্ধ থাকলেও মনির একাই ভবনে পানি দেয়ার কাজ করত।
ডিএমপির সবুজবাগ জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার রাশেদ হাসান জানান, মনির চুরি করতেই ওই বাসায় ঢুকেছিল নাকি অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল তা জানার জন্য তদন্ত চলছে। তবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে চুরির জন্য ঢুকেছিল বলে স্বীকার করেছে। আমরা নিহত গৃহবধূর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্তের পর বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে।
আরও ২ জনের লাশ উদ্ধার
এদিকে নৃংশভাবে হত্যকা-ের শিকার আরও দুই অজ্ঞাত পুরুষের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মোহাম্মদপুরের বসিলা এবং খিলগাঁও থানার নন্দীপাড়া এলাকা থেকে দুই জনের লাশ উদ্ধার হয়। এরমধ্যে বসিলা থেকে উদ্ধার হওয়া ব্যক্তির হাত পা বেধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় আর খিলগাঁও থেকে উদ্ধার হওয়া পুরুষকে জবাই করে হত্যা করে মাথা নিয়ে যায় খুনিরা।
হাজারীবাগ বসিলা এলাকার একটি বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত ব্যক্তির বয়স ৪৫ বছর। লাশ উদ্ধারের সময় বাসার খাটের সঙ্গে তার পা বাঁধা ও মুখে বালিশ চাপা দেয়া অবস্থায় পায় পুলিশ। গতকাল বেলা পৌনে ১১টার দিকে বসিলা হাইস্কুলের পাশের একটি বাসা থেকে লাশটি পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, ওই ব্যক্তিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
হাজারীবাগ থানার ওসি সাজিদুর রহমান সাজিদ জানান, বসিলা হাইস্কুলের পাশের একটি বাসায় এ হত্যকা-ের ঘটনা ঘটে। তাকে হত্যার পর লাশ ভেতরে রেখে দরজা বাইরে থেকে তালাবদ্ধ রেখে চলে যায় ঘাতকরাওই ব্যক্তির গলায়ও ধারাল অস্ত্রের আঘাত করছে। ওসি আরও জানান, এক মাস আগে এক নারীকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে একটি বাসার নিচতলায় সাবলেট ভাড়া নেন। যাকে স্ত্রী পরিচয়ে ঘরে তুলেছেন তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে সবকিছু পরিষ্কার হবে। খুন হওয়া ব্যক্তির কথিত স্ত্রীকে খোঁজা হচ্ছে। ওই ব্যক্তির পরিচয় বের করারও চেষ্টা চলছে।
এদিকে খিলগাঁও নন্দীপাড়ার একটি বাড়ির পিছন থেকে অজ্ঞাত ২৫ বছর বয়সী এক যুবকের মস্তকবিহীন লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
খিলগাঁও থানার ওসি ফারুকুল আলম জানান, পূর্ব নন্দীপাড়া ৬ নাম্বার রোডের সিদ্দিকুর রহমানের বাড়ির পেছনের দক্ষিণ পাশ থেকে গলাকাটা অবস্থায় অজ্ঞাত ওই যুবকের মস্তকবিহীন লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের পরনে ছিল কালো রঙের প্যান্ট। মস্তক না থাকায় তার পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, অন্য কোথায় হত্যা করে এখানে দেহ ফেলে রাখা হয়েছে অথবা ওইখানে হত্যা করে মাথা নিয়ে গেছে খুনিরা। নিহতের পরিচয় বের করার জন্য ফিঙ্গার প্রিন্ট নেবে পুলিশ। পরিচয় পাওয়া গেলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। এ বিষয়ে পুলিশ কাজ করছে।
বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৬ মহররম ১৪৪২, ২৮ ভাদ্র ১৪২৭
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
রাজধানীর সবুজবাগের নন্দীপাড়া এলাকায় জান্নাতুল ফেরদৌস (২৫) নামে এক গৃহবধূকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। সবুজবাগের নন্দীপাড়ায় গত সোমবার রাতের হত্যকা-ে জড়িত মনিরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এর আগে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করে।
জান্নাতুলের পরিবারের দাবি, হত্যকা- পরিকল্পিত। তবে পুলিশ জানিয়েছে, চুরি করার সময় চিনে ফেলে জান্নাতুলকে খুন করা হয়েছে। ঘাতক মনির ওই ভবনেই নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করত।
এদিকে হাজারীবাগের বসিলা এলাকায় অজ্ঞাত ব্যক্তিকে (৪৫) শ্বাসরোধ এবং খিলগাঁও নন্দীপাড়ায় এলাকায় অজ্ঞাত যুবক (২৫) জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। পৃথক ঘটনায় লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (সবুজবাগ জোন) শাহ আলম মো. আকতারুল ইসলাম সংবাদকে জানান, হত্যাকা-টি নৃশংস। আমরা যখন যাই তখন মায়ের লাশের পাশে দেড় বছরের শিশুকে দেখতে পাই। নৃশংস এ হত্যকা-ের ঘটনায় ঘাতক মনিরকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে রিমান্ড হেফাজতে আনব। আশপাশের লোকজনের সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে। শুধু চুরির উদ্দেশ্যে হত্যকা- না হত্যাকা-ের নেপথ্যে অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল সেটি তদন্ত চলছে। নিহত ওই গৃহবধূর বাবা ও মা ঢাকায়ই থাকেন। তাদের দেশের বাড়ি চাঁদপুরে। গৃহবধূর বাবা বয়স্ক। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে দ্রুত সময়ের মধ্যে দাফনের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হয়েছে।
সবুজবাগ থানার ওসি মাহবুব আলম জানান, নন্দীপাড়ার লাল মসজিদসংলগ্ন সাততলা বাড়ির চারতলায় পরিবার নিয়ে থাকতেন গৃহবধূ জান্নাতুল ফেরদৌস। তার স্বামী মোস্তাফিজ গুলশানের একটি হোটেলের ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেন। এ দম্পতির এক সন্তান রয়েছে। প্রাথমিকভাবে তদন্তে জানা গেছে, স্বামী সন্তানকে নিয়ে জান্নাতুল যে বাসায় থাকেন ওই বাড়িটির নির্মাণকাজ শেষ হয়নি এখনও। চারতলার উপরের ফ্লোরগুলোর কাজ চলছিল। সেখানে নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন মনির। গত সোমবার রাত ৯টার দিকে মনির গৃহবধূ জান্নাতুলের বাসার পেছনের গেট দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে। সে সময় গৃহবধূ তাকে দেখে ফেলে। সঙ্গে সঙ্গেই মনির তার মুখ জাপটে ধরে। গৃহবধূ চিৎকার করতে চাইলে হাতে থাকা ছুরি দিয়ে পিঠে একে একে সাতটি আঘাত করে। তারপরও এক ঝটিকায় গৃহবধূ মনিরের হাত থেকে ছুটে গিয়ে চিৎকার করতে করতে দৌড়ে গিয়ে বেডরুমে ঢোকেন। মনিরও দৌড়ে যায় সেখানে। বিছানায় ফেলে গলা কেটে জান্নাতুলের মৃত্যু নিশ্চিত করে। গলা কাটতে গিয়ে নিজের হাতের আঙুলও কেটে যায় মনিরের। এরমধ্যে চিৎকার শুনে তিনতলাসহ আশপাশের লোকজন দৌড়ে উপরে চলে আসে। নিচে গেলে ধরা পড়ার ভয়ে মনির পেছনের দরজা দিয়ে আবার উপরে চলে যায়। নিজের রুমে গিয়ে শুয়ে থাকার ভান করে। এরমধ্যে খবর পেয়ে আমরা ওই বাড়িতে ছুটে যাই। গিয়ে দেখি, পেছনের দরজার কাছে ফোঁটা ফোঁটা রক্ত। এমনকি চারতলা থেকে পাঁচ তলায় ওঠার সিঁড়িতেও লেগেছিল রক্ত। পরে উপরে উঠে মনিরকে পাওয়া যায়। তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে সে হত্যাকা-ের কথা স্বীকার করে। পুলিশ দাবি করেছে ‘চুরি করতে গিয়ে বাধা পেয়ে সে এই হত্যাকা- ঘটিয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, নিহত গৃহবধূর স্বামী প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে বাসায় ফিরতেন। বাসায় গৃহবধূ তার ছোট্ট শিশু সন্তানকে নিয়ে থাকতেন। এই বিষয়টি জানত খুনি মনির। মনির প্রায় ছয় মাস ধরে ওই বাসায় নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করছিল। বর্তমানে সাময়িকভাবে নির্মাণকাজ বন্ধ থাকলেও মনির একাই ভবনে পানি দেয়ার কাজ করত।
ডিএমপির সবুজবাগ জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার রাশেদ হাসান জানান, মনির চুরি করতেই ওই বাসায় ঢুকেছিল নাকি অন্য কোন উদ্দেশ্য ছিল তা জানার জন্য তদন্ত চলছে। তবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে চুরির জন্য ঢুকেছিল বলে স্বীকার করেছে। আমরা নিহত গৃহবধূর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। ময়নাতদন্তের পর বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে।
আরও ২ জনের লাশ উদ্ধার
এদিকে নৃংশভাবে হত্যকা-ের শিকার আরও দুই অজ্ঞাত পুরুষের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মোহাম্মদপুরের বসিলা এবং খিলগাঁও থানার নন্দীপাড়া এলাকা থেকে দুই জনের লাশ উদ্ধার হয়। এরমধ্যে বসিলা থেকে উদ্ধার হওয়া ব্যক্তির হাত পা বেধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় আর খিলগাঁও থেকে উদ্ধার হওয়া পুরুষকে জবাই করে হত্যা করে মাথা নিয়ে যায় খুনিরা।
হাজারীবাগ বসিলা এলাকার একটি বাসা থেকে উদ্ধার হওয়া অজ্ঞাত ব্যক্তির বয়স ৪৫ বছর। লাশ উদ্ধারের সময় বাসার খাটের সঙ্গে তার পা বাঁধা ও মুখে বালিশ চাপা দেয়া অবস্থায় পায় পুলিশ। গতকাল বেলা পৌনে ১১টার দিকে বসিলা হাইস্কুলের পাশের একটি বাসা থেকে লাশটি পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, ওই ব্যক্তিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
হাজারীবাগ থানার ওসি সাজিদুর রহমান সাজিদ জানান, বসিলা হাইস্কুলের পাশের একটি বাসায় এ হত্যকা-ের ঘটনা ঘটে। তাকে হত্যার পর লাশ ভেতরে রেখে দরজা বাইরে থেকে তালাবদ্ধ রেখে চলে যায় ঘাতকরাওই ব্যক্তির গলায়ও ধারাল অস্ত্রের আঘাত করছে। ওসি আরও জানান, এক মাস আগে এক নারীকে স্ত্রী পরিচয় দিয়ে একটি বাসার নিচতলায় সাবলেট ভাড়া নেন। যাকে স্ত্রী পরিচয়ে ঘরে তুলেছেন তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে সবকিছু পরিষ্কার হবে। খুন হওয়া ব্যক্তির কথিত স্ত্রীকে খোঁজা হচ্ছে। ওই ব্যক্তির পরিচয় বের করারও চেষ্টা চলছে।
এদিকে খিলগাঁও নন্দীপাড়ার একটি বাড়ির পিছন থেকে অজ্ঞাত ২৫ বছর বয়সী এক যুবকের মস্তকবিহীন লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
খিলগাঁও থানার ওসি ফারুকুল আলম জানান, পূর্ব নন্দীপাড়া ৬ নাম্বার রোডের সিদ্দিকুর রহমানের বাড়ির পেছনের দক্ষিণ পাশ থেকে গলাকাটা অবস্থায় অজ্ঞাত ওই যুবকের মস্তকবিহীন লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতের পরনে ছিল কালো রঙের প্যান্ট। মস্তক না থাকায় তার পরিচয় নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে, অন্য কোথায় হত্যা করে এখানে দেহ ফেলে রাখা হয়েছে অথবা ওইখানে হত্যা করে মাথা নিয়ে গেছে খুনিরা। নিহতের পরিচয় বের করার জন্য ফিঙ্গার প্রিন্ট নেবে পুলিশ। পরিচয় পাওয়া গেলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। এ বিষয়ে পুলিশ কাজ করছে।