বাংলাদেশের চিলাহাটি থেকে ভারত হলদিবাড়ী পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথটি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে চালুর বিষয়ে ভারতে অনুরোধ জানিয়েছে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। গতকাল রেলভবনে রেলমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাস। এ সময় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. শামছুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ভারতীয় অর্থায়নে বাংলাদেশ রেলওয়েতে যেসব প্রকল্প চলমান আছে সে প্রকল্পগুলোর বিষয়ে আলোচনা করা হয়। বিশেষ করে ঢাকা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত তৃতীয় ও চতুর্থ এবং টঙ্গী থেকে জয়?দেবপুর পর্যন্ত ডাবল লাইন। এছাড়া নির্মাণ করা হচ্ছে চিলাহাটি থেকে হলদিবাড়ী পর্যন্ত নতুন লাইন, সেখানে ভারতের অং?শের ১৫০ মিটার নির্মাণ করলে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ চালু করা সম্ভব হবে। এটি যাতে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে চালু করা যায় সে বিষয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার কে অনুরোধ জানান রেলমন্ত্রী। ভবিষ্যতে রেল যোগাযোগ ক্ষেত্রে উভয় দেশের সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন উভয়ে।
সাক্ষাৎকালে পঞ্চগড় থেকে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মিত হলে শিলিগুড়ি পর্যন্ত ট্রেন চালানো যাবে সে বিষয়েও আলোচনা করেন রেলপথ মন্ত্রী। এ সময় দুই দেশের মধ্যকার চালু কা?র্গো ও পণ্যবাহী ট্রেন বিষয়ে আলোচনা হয় এবং এটি দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি বড় সাফল্য বলে আলোচনা হয়। ভারতের উপহার দেয়া দশটি ইঞ্জিন সম্পর্কে আলোচনা হয় এবং ইঞ্জিনগুলোর সক্ষমতা অনেক ভালো সে সম্পর্কে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ভারতীয় হাইকমিশনকে জানানো হয়। আলোচনাকালে সিরাজগঞ্জে কন্টেইনার ডিপো নির্মাণ বিষয়ক এবং পার্বতীপুরে ভারতীয় অর্থায়নে একটি কোচ কারখানা নির্মাণ বিষ?য়ে আলোচনা হয় বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়।
জানা গেছে, বাংলাদেশের চিলাহাটি থেকে ভারত হলদিবাড়ী পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথটি অনেক পুরানো। ভারত ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তাানের মধ্যে চিলাহাটি ও হলদিবাড়ি হয়ে রেলওয়ে সংযোগ চালু ছিল। ১৯৬৫ সালে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের পর এ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভারতের সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ‘চিলাহাটি এবং চিলাহাটি বর্ডারের মধ্যে রেলপথ নির্মাণ’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৮০ কোটি ১৭ লাখ টাকা। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নের পুরো অর্থ জোগান দেয়া হবে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটি ২০২১ সালের ৩০ জুন মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে। নতুন এই রেললাইন নির্মাণের ফলে বাংলাদেশের মোংলা বন্দর হয়ে ভারতে উত্তর-পূর্ব অংশ, নেপাল এবং ভুটানের মধ্যে যাত্রী চলাচলসহ আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনা সহজ হবে। এর ফলে যোগাযোগ অবকাঠামো মানোন্নয়নের মাধ্যমে বাণিজ্যিক কার্যক্রম জোরদার এবং ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে নতুন ট্রেনের মাধ্যমে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন সহজ হবে। এতে চার দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব ও বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়বে বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়।
বুধবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৬ মহররম ১৪৪২, ২৮ ভাদ্র ১৪২৭
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
বাংলাদেশের চিলাহাটি থেকে ভারত হলদিবাড়ী পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথটি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে চালুর বিষয়ে ভারতে অনুরোধ জানিয়েছে রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন। গতকাল রেলভবনে রেলমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাস। এ সময় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা এবং বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. শামছুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে ভারতীয় অর্থায়নে বাংলাদেশ রেলওয়েতে যেসব প্রকল্প চলমান আছে সে প্রকল্পগুলোর বিষয়ে আলোচনা করা হয়। বিশেষ করে ঢাকা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত তৃতীয় ও চতুর্থ এবং টঙ্গী থেকে জয়?দেবপুর পর্যন্ত ডাবল লাইন। এছাড়া নির্মাণ করা হচ্ছে চিলাহাটি থেকে হলদিবাড়ী পর্যন্ত নতুন লাইন, সেখানে ভারতের অং?শের ১৫০ মিটার নির্মাণ করলে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ চালু করা সম্ভব হবে। এটি যাতে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে চালু করা যায় সে বিষয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার কে অনুরোধ জানান রেলমন্ত্রী। ভবিষ্যতে রেল যোগাযোগ ক্ষেত্রে উভয় দেশের সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন উভয়ে।
সাক্ষাৎকালে পঞ্চগড় থেকে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মিত হলে শিলিগুড়ি পর্যন্ত ট্রেন চালানো যাবে সে বিষয়েও আলোচনা করেন রেলপথ মন্ত্রী। এ সময় দুই দেশের মধ্যকার চালু কা?র্গো ও পণ্যবাহী ট্রেন বিষয়ে আলোচনা হয় এবং এটি দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে একটি বড় সাফল্য বলে আলোচনা হয়। ভারতের উপহার দেয়া দশটি ইঞ্জিন সম্পর্কে আলোচনা হয় এবং ইঞ্জিনগুলোর সক্ষমতা অনেক ভালো সে সম্পর্কে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ভারতীয় হাইকমিশনকে জানানো হয়। আলোচনাকালে সিরাজগঞ্জে কন্টেইনার ডিপো নির্মাণ বিষয়ক এবং পার্বতীপুরে ভারতীয় অর্থায়নে একটি কোচ কারখানা নির্মাণ বিষ?য়ে আলোচনা হয় বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়।
জানা গেছে, বাংলাদেশের চিলাহাটি থেকে ভারত হলদিবাড়ী পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথটি অনেক পুরানো। ভারত ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তাানের মধ্যে চিলাহাটি ও হলদিবাড়ি হয়ে রেলওয়ে সংযোগ চালু ছিল। ১৯৬৫ সালে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধের পর এ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ভারতের সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ‘চিলাহাটি এবং চিলাহাটি বর্ডারের মধ্যে রেলপথ নির্মাণ’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে সরকার। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৮০ কোটি ১৭ লাখ টাকা। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে প্রকল্প বাস্তবায়নের পুরো অর্থ জোগান দেয়া হবে। রেলপথ মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটি ২০২১ সালের ৩০ জুন মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে। নতুন এই রেললাইন নির্মাণের ফলে বাংলাদেশের মোংলা বন্দর হয়ে ভারতে উত্তর-পূর্ব অংশ, নেপাল এবং ভুটানের মধ্যে যাত্রী চলাচলসহ আমদানি ও রপ্তানি কার্যক্রম পরিচালনা সহজ হবে। এর ফলে যোগাযোগ অবকাঠামো মানোন্নয়নের মাধ্যমে বাণিজ্যিক কার্যক্রম জোরদার এবং ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে নতুন ট্রেনের মাধ্যমে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন সহজ হবে। এতে চার দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব ও বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়বে বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়।