ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে এক মানবসম্পদ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা

রাজধানীর বারিধারায় অবস্থিত ফ্রন্টডেস্ক বাংলাদেশ লিমিটেড নামের এক মানবসম্পদ প্রতিষ্ঠানে বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির তথ্য পেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট গোয়েন্দাদের একটি দল।

ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভ্যাট ফাঁকির গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল ১০ আগস্ট বারিধারার অফিসে অভিযান চালায়। এতে ভ্যাট আইনের ৮৩ ধারা প্রয়োগে তাদের প্রাঙ্গণের নিজস্ব কম্পিউটার ও সংরক্ষিত বাণিজ্যিক কাগজপত্র জব্দ করা হয়। এসব তথ্যাদি যাচাই করে দেখা যায় ফ্রন্টডেস্ক প্রকৃত সেবা বিক্রয় মূল্য গোপন করে নামমাত্র সেবা মূল্য তাদের ভ্যাট রিটার্নে প্রদর্শন করে বিপুল প্রমাণ ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।

ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতর গতকাল ফ্রন্টডেস্কের বিরুদ্ধে ২১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ভ্যাট রাজস্ব ফাঁকির মামলা করেছে। এই ভ্যাট ফাঁকির দায়ে ন্যায় নির্ণয়নের মাধ্যমে এই রাজস্বের অতিরিক্ত সমপরিমাণ পরিমাণে ব্যক্তিগত জরিমানা আরোপ হতে পারে। ফ্রন্টডেস্ক ভ্যাট আইনের সেবার কোড ০৭২.০০ এর আওতায় ‘মানবসম্পদ সরবরাহ বা ব্যবস্থাপনা’ প্রতিষ্ঠান। এই আইন অনুযায়ী, সেবা বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সর্বমোট প্রাপ্তির উপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রযোজ্য। ভ্যাট গোয়েন্দার তদন্তে দেখা যায় ফেব্রুয়ারি ২০১৫ থেকে জুলাই ২০২০ পর্যন্ত ৩২ কোটি ৮৪ লাখ টাকার সেবা বিক্রয় দেখানো হয়েছে। এর বিপরীতে তারা ভ্যাট দিয়েছে ২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। কিন্তু জব্দ করা কাগজপত্র অনুযায়ী ফ্রন্টডেস্ক প্রকৃত সেবা বিক্রয় করেছে ১২৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

এই বিক্রয়ের উপর ভ্যাট দেয়ার কথা ১৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। মানবসম্পদ প্রতিষ্ঠানটি এই পাঁচ বছরে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে ১৫ কোটি ৭৪ লাখ কোটি টাকা। ভ্যাট আইন অনুসারে যথাসময়ে ভ্যাট না দেয়ায় এই ফাঁকির উপর মাসিক ২ শতাংশ হারে সুদ প্রযোজ্য হয়েছে ৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মোট ২১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা আদায়যোগ্য।

ভ্যাট গোয়েন্দার তদন্তে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি দেশের খ্যাতনামা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে টেকনিক্যাল ও সাধারণ মানবসম্পদ সেবা বিক্রয় করে থাকে। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতিষ্ঠানটি এই সেবা বিক্রয় করে আসছে। দেশের নামিদামি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এই মানবসম্পদ সেবার গ্রাহক। এদের মধ্যে রয়েছে লাফার্জ হোলসিম, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন্স লিমিটেড, মাইক্রো বাংলাদেশ লিমিটেড, ফিনটেক সলিউশন লিমিটেড, বার্জার পেইন্টস লিমিটেড, নোভার্টিস বাংলাদেশ লিমিটেড, পিঅ্যান্ডজি বাংলাদেশ লিমিটেড, অপসোনিন ফার্মা লিমিটেড, রবি এক্সিয়াটা লিমিটেড, জুটন বাংলাদেশ লিমিটেড, এপিএম গ্লোবাল লজিস্টিক লিমিটেড, এমএনএস বাংলাদেশ। ফ্রন্টডেস্ক প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটের আওতাভুক্ত হওয়ায় ভ্যাট ফাঁকির টাকা আদায় এবং ভ্যাট ফাঁকির অপরাধের ন্যায় নির্ণয়নের জন্য ঢাকা উত্তর কমিশনারেটে প্রেরণ করা হবে।

বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৭ মহররম ১৪৪২, ২৯ ভাদ্র ১৪২৭

ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে এক মানবসম্পদ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা

অর্থনৈতিক বার্তা পরিবেশক |

রাজধানীর বারিধারায় অবস্থিত ফ্রন্টডেস্ক বাংলাদেশ লিমিটেড নামের এক মানবসম্পদ প্রতিষ্ঠানে বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির তথ্য পেয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট গোয়েন্দাদের একটি দল।

ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ভ্যাট ফাঁকির গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল ১০ আগস্ট বারিধারার অফিসে অভিযান চালায়। এতে ভ্যাট আইনের ৮৩ ধারা প্রয়োগে তাদের প্রাঙ্গণের নিজস্ব কম্পিউটার ও সংরক্ষিত বাণিজ্যিক কাগজপত্র জব্দ করা হয়। এসব তথ্যাদি যাচাই করে দেখা যায় ফ্রন্টডেস্ক প্রকৃত সেবা বিক্রয় মূল্য গোপন করে নামমাত্র সেবা মূল্য তাদের ভ্যাট রিটার্নে প্রদর্শন করে বিপুল প্রমাণ ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে।

ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতর গতকাল ফ্রন্টডেস্কের বিরুদ্ধে ২১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা ভ্যাট রাজস্ব ফাঁকির মামলা করেছে। এই ভ্যাট ফাঁকির দায়ে ন্যায় নির্ণয়নের মাধ্যমে এই রাজস্বের অতিরিক্ত সমপরিমাণ পরিমাণে ব্যক্তিগত জরিমানা আরোপ হতে পারে। ফ্রন্টডেস্ক ভ্যাট আইনের সেবার কোড ০৭২.০০ এর আওতায় ‘মানবসম্পদ সরবরাহ বা ব্যবস্থাপনা’ প্রতিষ্ঠান। এই আইন অনুযায়ী, সেবা বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সর্বমোট প্রাপ্তির উপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রযোজ্য। ভ্যাট গোয়েন্দার তদন্তে দেখা যায় ফেব্রুয়ারি ২০১৫ থেকে জুলাই ২০২০ পর্যন্ত ৩২ কোটি ৮৪ লাখ টাকার সেবা বিক্রয় দেখানো হয়েছে। এর বিপরীতে তারা ভ্যাট দিয়েছে ২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। কিন্তু জব্দ করা কাগজপত্র অনুযায়ী ফ্রন্টডেস্ক প্রকৃত সেবা বিক্রয় করেছে ১২৯ কোটি ৬৫ লাখ টাকা।

এই বিক্রয়ের উপর ভ্যাট দেয়ার কথা ১৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। মানবসম্পদ প্রতিষ্ঠানটি এই পাঁচ বছরে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে ১৫ কোটি ৭৪ লাখ কোটি টাকা। ভ্যাট আইন অনুসারে যথাসময়ে ভ্যাট না দেয়ায় এই ফাঁকির উপর মাসিক ২ শতাংশ হারে সুদ প্রযোজ্য হয়েছে ৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মোট ২১ কোটি ৪৯ লাখ টাকা আদায়যোগ্য।

ভ্যাট গোয়েন্দার তদন্তে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি দেশের খ্যাতনামা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে টেকনিক্যাল ও সাধারণ মানবসম্পদ সেবা বিক্রয় করে থাকে। ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতিষ্ঠানটি এই সেবা বিক্রয় করে আসছে। দেশের নামিদামি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এই মানবসম্পদ সেবার গ্রাহক। এদের মধ্যে রয়েছে লাফার্জ হোলসিম, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন্স লিমিটেড, মাইক্রো বাংলাদেশ লিমিটেড, ফিনটেক সলিউশন লিমিটেড, বার্জার পেইন্টস লিমিটেড, নোভার্টিস বাংলাদেশ লিমিটেড, পিঅ্যান্ডজি বাংলাদেশ লিমিটেড, অপসোনিন ফার্মা লিমিটেড, রবি এক্সিয়াটা লিমিটেড, জুটন বাংলাদেশ লিমিটেড, এপিএম গ্লোবাল লজিস্টিক লিমিটেড, এমএনএস বাংলাদেশ। ফ্রন্টডেস্ক প্রতিষ্ঠানটি ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটের আওতাভুক্ত হওয়ায় ভ্যাট ফাঁকির টাকা আদায় এবং ভ্যাট ফাঁকির অপরাধের ন্যায় নির্ণয়নের জন্য ঢাকা উত্তর কমিশনারেটে প্রেরণ করা হবে।