বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে পিয়াজ

কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দাম বাড়িয়েছে : বাণিজ্যমন্ত্রী 

রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে ভারত সরকারকে অনুরোধ 

দ্রত দাম স্বাভাবিক হবে বলে সরকার জনগণকে আশ্বস্ত করলেও বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে পিয়াজ। এক সপ্তাহ আগে যে পিয়াজের দাম ছিল প্রতিকেজি ৩০ টাকা, গত মঙ্গলবার তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় প্রতিকেজি ১০০ টাকায়। মঙ্গলবারের মতো গতকালও বাড়তি দামেই বিক্রি হয়েছে সব ধরনের পিয়াজ। গতকাল ভারতীয় পিয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকায় এবং দেশি পিয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ১০০ টাকায়। এ পরিস্থিতিতে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ‘কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পিয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এক মাসের মধ্যেই দাম স্বাভাবিক হবে।’ এই পরিস্থিতিতে রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য ভারত সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ।

জানা যায়, গত সোমবার কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই আকস্মিকভাবে বাংলাদেশে পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। পরে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড পিয়াজ রপ্তানি বন্ধের নির্দেশনা জারি করে। ভারতীয় পিয়াজ আমদানি হবে না এমন খবরে দেশের বাজারে বাড়তে শুরু করে পিয়াজের দাম। কিছু অসাধু খুচরা ব্যবসায়ী, পাইকারী ব্যবসায়ী ও আড়তদার সিন্ডিকেট ভোক্তাকে জিম্মি করে দাম বাড়িয়ে দেয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে বাজার মনিটরিং টিম বাজার পরিদর্শন করলেও এই সিন্ডিকেট তাদের মানছে না। বাজার পরিদর্শনের সময় তারা স্বাভাবিক দামে বিক্রি করলেও বাজার মনিটরিং টিম বাজার ত্যাগ করলেই আগের বাড়তি দামে পিয়াজ বিক্রি করা শুরু করে।

এই পরিস্থিতিতে রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য ভারত সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। গত মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম জানান, বাংলাদেশ শীঘ্রই এ বিষয়ে একটি ইতিবাচক ফলের অপেক্ষায় রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানার পরই বাংলাদেশ নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে বিষয়টি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে উত্থাপন করেছে। এই ধরনের নিষেধাজ্ঞার যে কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ভারত বাংলাদেশকে আগেই জানিয়ে দেবে এমন একটি অলিখিত বোঝাপড়া রয়েছে। যারা দাম বাড়ানোর জন্য পিয়াজ মজুদ করছেন আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হওয়ায় বাংলাদেশও অন্যান্য দেশ থেকে পিয়াজ আমদানি করবে।

গতকাল কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, পিয়াজের দাম বৃদ্ধির খবরে বাজারে প্রায় অনেক ক্রেতা পিয়াজ কেনায় ব্যস্ত। কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বাজারে বেশি ভিড় রয়েছে। ভারতের পিয়াজ আসা বন্ধের কারণে যার প্রয়োজন এক কেজি সে কিনছে ১০ কেজি ২০ কেজি। গতকাল খুচরা বাজারে প্রতিকেজি ভারতীয় পিয়াজের দাম ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। আর প্রতিকেজি দেশি পিয়াজের দাম ছিল ১০০ টাকা। নাইমুল ইসলাম নামের একজন খুচরা ব্যবসায়ী সংবাদকে বলেন, ‘পিয়াজের দাম নিয়ে আমরা কিছুই বলতে পারব না। আমরা পাইকারি বাজার থেকে যদি কম দামে কিনতে পারি তাহলে কম দামে বিক্রি করতে পারব। আর বেশি দামে কিনলে বেশি দামেই বিক্রি করতে হবে। পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি দেশি পিয়াজ কিনেছি ৯০ টাকায়, বিক্রি করছি ১০০ টাকায়। প্রতিকেজি ভারতীয় পিয়াজ কিনেছি ৭০ টাকায় বিক্রি করছি ৮০ টাকায়।’

তবে পাইকারি বাজারে এর তার কেনার চেয়ে কম দাম দেখা গেছে। পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি ভারতীয় পিয়াজ গতকাল বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। আর প্রতিকেজি দেশি পিয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। আনোয়ারুল হক নামের একজন পাইকারি ব্যবসায়ী সংবাদকে বলেন, ‘আসলে পিয়াজের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে আমরা কিছুই বলতে পারব না। আমরা আড়ত থেকে যেমন দামে নিয়ে আসি, তেমন দাম অনুযায়ী বিক্রি করতে হয়। দাম বৃদ্ধির জন্য আমাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই।’

এদিকে গতকাল সচিবালয়ে পিয়াজের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সৃষ্ট অস্থিরতা বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেছেন, ভারত সরকারের পিয়াজ রপ্তানি না করার সিদ্ধান্তের সুযোগ নিয়েছে দেশের এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী। আগামী এক মাসের মধ্যে পিয়াজের দাম স্বাভাবিক হবে। বছরে দেশে পিয়াজের ঘাটতি রয়েছে চার লাখ টন। তবে এ মুহূর্তে পিয়াজের কোথাও কোন সংকট নাই। তাই এ মুহূর্তে পিয়াজ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নাই। পর্যাপ্ত পিয়াজ মজুত রয়েছে। আমাদের জানা মতে, বিশেষ করে দেশীয় পিয়াজের বর্তমান মজুত প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন। দেশের পিয়াজ সমৃদ্ধ অঞ্চলগুলোর পাইকারি হাট-বাজারে বিপুল পরিমাণ পিয়াজ ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। সরবরাহও স্বাভাবিক রয়েছে। ভারত পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার কারণে বাজারে মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিকল্প পথে এলসির মাধ্যমে মায়ানমার, মিসর ও তুরস্ক থেকে জরুরিভিত্তিতে পিয়াজ আমদানির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আমদানিকৃত পিয়াজ দেশে পৌঁছালে অল্প সময়ের মধ্যেই সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’

এদিকে ভারতীয় পিয়াজ আমদানি বন্ধ থাকলেও আগের এলসি করা পিয়াজগুলো গতকাল দেশে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভারত থেকে কোন পিয়াজ আসেনি। হিলি স্থলবন্দরের আড়তগুলোতে পিয়াজ কিনতে আসা আবদুল হক জানান, গতকাল হঠাৎ দাম অনেক বেড়ে গিয়েছিল। আজকে আবার এসে দেখি দাম কিছুটা কমেছে। আজ ভারতীয় পিয়াজ আসতে পারে। এজন্যই হয়তো দাম কমেছে। পিয়াজের এমন দাম ওঠানামার কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। বর্তমানে আড়তগুলোতে ভালো মানের প্রতি কেজি পিয়াজ ৫২ থেকে ৬০ টাকা, একটু নিম্ন মানের পিয়াজ ৪০ টাকা কেজি দরে, খুচরাতে যা ৫৫ থেকে ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

হিলি স্থলবন্দরের একজন পিয়াজ আমদানিকারক বলেন, ‘দেশের বাজারে পিয়াজের মূল্যবৃদ্ধি দেখে পর্যাপ্ত পরিমাণে আমদানির জন্য আমরা বেশি পরিমাণে পিয়াজের এলসি খুলেছিলাম। এর বিপরীতে পিয়াজ লোডিং হয়েছে। আমার নিজের ৩০ থেকে ৩৫ ট্রাক পিয়াজ রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে দেশে প্রবেশের অপেক্ষায়। অন্যান্য আমদানিকারকেরও ট্রাক রয়েছে। এই পিয়াজগুলো লোডিং কমপ্লিট হওয়ার পর দেশে আসতে ৬ থেকে ৭ দিন সময় লাগে। ৫/৬ দিন ধরে পিয়াজগুলো ট্রাকে রয়েছে। আবার তিন দিন ধরে পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। মোট ৯ দিন হয়ে গেল। পিয়াজগুলো না ঢুকলে আমরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হব।’

বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৭ মহররম ১৪৪২, ২৯ ভাদ্র ১৪২৭

বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে পিয়াজ

কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দাম বাড়িয়েছে : বাণিজ্যমন্ত্রী 

রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে ভারত সরকারকে অনুরোধ 

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

image

দ্রত দাম স্বাভাবিক হবে বলে সরকার জনগণকে আশ্বস্ত করলেও বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে পিয়াজ। এক সপ্তাহ আগে যে পিয়াজের দাম ছিল প্রতিকেজি ৩০ টাকা, গত মঙ্গলবার তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় প্রতিকেজি ১০০ টাকায়। মঙ্গলবারের মতো গতকালও বাড়তি দামেই বিক্রি হয়েছে সব ধরনের পিয়াজ। গতকাল ভারতীয় পিয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকায় এবং দেশি পিয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতিকেজি ১০০ টাকায়। এ পরিস্থিতিতে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ‘কিছু অসাধু ব্যবসায়ী পিয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এক মাসের মধ্যেই দাম স্বাভাবিক হবে।’ এই পরিস্থিতিতে রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য ভারত সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ।

জানা যায়, গত সোমবার কোন পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই আকস্মিকভাবে বাংলাদেশে পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয় ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। পরে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড পিয়াজ রপ্তানি বন্ধের নির্দেশনা জারি করে। ভারতীয় পিয়াজ আমদানি হবে না এমন খবরে দেশের বাজারে বাড়তে শুরু করে পিয়াজের দাম। কিছু অসাধু খুচরা ব্যবসায়ী, পাইকারী ব্যবসায়ী ও আড়তদার সিন্ডিকেট ভোক্তাকে জিম্মি করে দাম বাড়িয়ে দেয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে বাজার মনিটরিং টিম বাজার পরিদর্শন করলেও এই সিন্ডিকেট তাদের মানছে না। বাজার পরিদর্শনের সময় তারা স্বাভাবিক দামে বিক্রি করলেও বাজার মনিটরিং টিম বাজার ত্যাগ করলেই আগের বাড়তি দামে পিয়াজ বিক্রি করা শুরু করে।

এই পরিস্থিতিতে রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য ভারত সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ। গত মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এম শাহরিয়ার আলম জানান, বাংলাদেশ শীঘ্রই এ বিষয়ে একটি ইতিবাচক ফলের অপেক্ষায় রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি জানার পরই বাংলাদেশ নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের মাধ্যমে বিষয়টি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে উত্থাপন করেছে। এই ধরনের নিষেধাজ্ঞার যে কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ভারত বাংলাদেশকে আগেই জানিয়ে দেবে এমন একটি অলিখিত বোঝাপড়া রয়েছে। যারা দাম বাড়ানোর জন্য পিয়াজ মজুদ করছেন আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হওয়ায় বাংলাদেশও অন্যান্য দেশ থেকে পিয়াজ আমদানি করবে।

গতকাল কারওয়ান বাজারে দেখা যায়, পিয়াজের দাম বৃদ্ধির খবরে বাজারে প্রায় অনেক ক্রেতা পিয়াজ কেনায় ব্যস্ত। কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বাজারে বেশি ভিড় রয়েছে। ভারতের পিয়াজ আসা বন্ধের কারণে যার প্রয়োজন এক কেজি সে কিনছে ১০ কেজি ২০ কেজি। গতকাল খুচরা বাজারে প্রতিকেজি ভারতীয় পিয়াজের দাম ছিল ৮০ থেকে ৯০ টাকা। আর প্রতিকেজি দেশি পিয়াজের দাম ছিল ১০০ টাকা। নাইমুল ইসলাম নামের একজন খুচরা ব্যবসায়ী সংবাদকে বলেন, ‘পিয়াজের দাম নিয়ে আমরা কিছুই বলতে পারব না। আমরা পাইকারি বাজার থেকে যদি কম দামে কিনতে পারি তাহলে কম দামে বিক্রি করতে পারব। আর বেশি দামে কিনলে বেশি দামেই বিক্রি করতে হবে। পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি দেশি পিয়াজ কিনেছি ৯০ টাকায়, বিক্রি করছি ১০০ টাকায়। প্রতিকেজি ভারতীয় পিয়াজ কিনেছি ৭০ টাকায় বিক্রি করছি ৮০ টাকায়।’

তবে পাইকারি বাজারে এর তার কেনার চেয়ে কম দাম দেখা গেছে। পাইকারি বাজারে প্রতিকেজি ভারতীয় পিয়াজ গতকাল বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। আর প্রতিকেজি দেশি পিয়াজ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়। আনোয়ারুল হক নামের একজন পাইকারি ব্যবসায়ী সংবাদকে বলেন, ‘আসলে পিয়াজের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে আমরা কিছুই বলতে পারব না। আমরা আড়ত থেকে যেমন দামে নিয়ে আসি, তেমন দাম অনুযায়ী বিক্রি করতে হয়। দাম বৃদ্ধির জন্য আমাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই।’

এদিকে গতকাল সচিবালয়ে পিয়াজের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সৃষ্ট অস্থিরতা বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেছেন, ভারত সরকারের পিয়াজ রপ্তানি না করার সিদ্ধান্তের সুযোগ নিয়েছে দেশের এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী। আগামী এক মাসের মধ্যে পিয়াজের দাম স্বাভাবিক হবে। বছরে দেশে পিয়াজের ঘাটতি রয়েছে চার লাখ টন। তবে এ মুহূর্তে পিয়াজের কোথাও কোন সংকট নাই। তাই এ মুহূর্তে পিয়াজ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নাই। পর্যাপ্ত পিয়াজ মজুত রয়েছে। আমাদের জানা মতে, বিশেষ করে দেশীয় পিয়াজের বর্তমান মজুত প্রায় ৫ লাখ মেট্রিক টন। দেশের পিয়াজ সমৃদ্ধ অঞ্চলগুলোর পাইকারি হাট-বাজারে বিপুল পরিমাণ পিয়াজ ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। সরবরাহও স্বাভাবিক রয়েছে। ভারত পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার কারণে বাজারে মূল্যবৃদ্ধির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিকল্প পথে এলসির মাধ্যমে মায়ানমার, মিসর ও তুরস্ক থেকে জরুরিভিত্তিতে পিয়াজ আমদানির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আমদানিকৃত পিয়াজ দেশে পৌঁছালে অল্প সময়ের মধ্যেই সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে আসবে।’

এদিকে ভারতীয় পিয়াজ আমদানি বন্ধ থাকলেও আগের এলসি করা পিয়াজগুলো গতকাল দেশে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ভারত থেকে কোন পিয়াজ আসেনি। হিলি স্থলবন্দরের আড়তগুলোতে পিয়াজ কিনতে আসা আবদুল হক জানান, গতকাল হঠাৎ দাম অনেক বেড়ে গিয়েছিল। আজকে আবার এসে দেখি দাম কিছুটা কমেছে। আজ ভারতীয় পিয়াজ আসতে পারে। এজন্যই হয়তো দাম কমেছে। পিয়াজের এমন দাম ওঠানামার কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। বর্তমানে আড়তগুলোতে ভালো মানের প্রতি কেজি পিয়াজ ৫২ থেকে ৬০ টাকা, একটু নিম্ন মানের পিয়াজ ৪০ টাকা কেজি দরে, খুচরাতে যা ৫৫ থেকে ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

হিলি স্থলবন্দরের একজন পিয়াজ আমদানিকারক বলেন, ‘দেশের বাজারে পিয়াজের মূল্যবৃদ্ধি দেখে পর্যাপ্ত পরিমাণে আমদানির জন্য আমরা বেশি পরিমাণে পিয়াজের এলসি খুলেছিলাম। এর বিপরীতে পিয়াজ লোডিং হয়েছে। আমার নিজের ৩০ থেকে ৩৫ ট্রাক পিয়াজ রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে দেশে প্রবেশের অপেক্ষায়। অন্যান্য আমদানিকারকেরও ট্রাক রয়েছে। এই পিয়াজগুলো লোডিং কমপ্লিট হওয়ার পর দেশে আসতে ৬ থেকে ৭ দিন সময় লাগে। ৫/৬ দিন ধরে পিয়াজগুলো ট্রাকে রয়েছে। আবার তিন দিন ধরে পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। মোট ৯ দিন হয়ে গেল। পিয়াজগুলো না ঢুকলে আমরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হব।’