বরগুনায় রিফাত হত্যা

রায় ৩০ সেপ্টেম্বর

মিন্নির জামিন বহাল

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায় আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর। হত্যা মামলার দুটি আদালতে জবানবন্দি শেষ হলে জেলা ও দায়ারা জজ আদালত এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে মামলায় সাক্ষী থেকে আসামি হওয়া নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নির জামিন জেলা ও দায়রা জজ আদালত বহাল রেখেছেন।

রাষ্ট্র পক্ষের পিপি ভূবন চন্দ্র হালদার জানান, আসামি পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তি খণ্ডন করার নির্ধারিত তারিখে গতকাল আমরা আদালতে বক্তব্যে রেখেছি। মামলায় অভিযুক্ত কোন আসামি নির্দোষ নয় এটা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। মহামান্য হাইকোর্টের আদেশে মামলার অন্যতম আসামি নিহত রিফাতের স্ত্রী জামিনে থাকায় তার নিয়োজিত আইনজীবীর জিম্মায় মিন্নির জামিন জেলা ও দায়রা জজ আদালত বহাল রেখেছেন বলে জানান তিনি। রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণার সময় জামিনে থাকা রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ কারাগারে থাকা ৮ আসামিসহ ৯ আসামি উপস্থিত ছিলেন। তবে মামলার অন্য আসামি মুসাকে এখনও পলাতক দেখানো হয়েছে।

সকাল ১০টায় আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়ে ১টা পর্যন্ত চলে আদালত। সকাল ৯টার দিকে জামিনে থাকা অন্যতম আসামি আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি তার বাবা ও চাচার সঙ্গে আদালতে আসেন। এ সময় মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর সাংবাদিকদের বলেন, আমার মেয়ে তার স্বামীকে রক্ষার জন্য চেষ্টা করেছেন, পরবর্তীতে রিকশায় করে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন, তা আইনজীবীরা বিজ্ঞ আদালতে সঠিকভাবে প্রমাণে সক্ষম হয়েছেন।

মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, তার মক্কেল যে তার স্বামীকে বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করেছেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা আমার আসামির বিরুদ্ধে কাল্পনিক মনগড়া যে অভিযোগ এনেছেন, তারা আদালতে সঠিকভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করতে সক্ষম করেছেন।

রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় ১ জানুয়ারি চার্জ গঠন করা হয়। ৮ জানুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়ে ৭৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা গতকাল মিন্নির যুক্তিতর্কের মাধ্যমে যুক্তিতর্ক শেষ হলেও তাদের যুক্তি খণ্ডনের জন্য ১৬ সেপ্টেম্বর দিন নির্ধারণ করে আদালত।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে রিফাত শরীফকে গুরুতর আহত করে। গুরুতর আহত রিফাত বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওইদিনই মারা যান।

গত ১ সেপ্টেম্বর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুই ভাগে বিভক্ত অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে পুলিশ। একই সঙ্গে রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ১ নম্বর আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

গত ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালত। অন্যদিকে গত ৮ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনার শিশু আদালত। এ মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মো. মুসা এখনও পলাতক রয়েছেন।

এছাড়া নিহত রিফাতের স্ত্রী মিন্নিসহ অপ্রাপ্তবয়স্ক ৮ আসামি উচ্চ আদালত এবং বরগুনার শিশু আদালতের আদেশে জামিনে রয়েছে।

বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৭ মহররম ১৪৪২, ২৯ ভাদ্র ১৪২৭

বরগুনায় রিফাত হত্যা

রায় ৩০ সেপ্টেম্বর

মিন্নির জামিন বহাল

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, বরগুনা

image

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির রায় আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর। হত্যা মামলার দুটি আদালতে জবানবন্দি শেষ হলে জেলা ও দায়ারা জজ আদালত এ সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে মামলায় সাক্ষী থেকে আসামি হওয়া নিহত রিফাত শরীফের স্ত্রী মিন্নির জামিন জেলা ও দায়রা জজ আদালত বহাল রেখেছেন।

রাষ্ট্র পক্ষের পিপি ভূবন চন্দ্র হালদার জানান, আসামি পক্ষের আইনজীবীদের যুক্তি খণ্ডন করার নির্ধারিত তারিখে গতকাল আমরা আদালতে বক্তব্যে রেখেছি। মামলায় অভিযুক্ত কোন আসামি নির্দোষ নয় এটা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। মহামান্য হাইকোর্টের আদেশে মামলার অন্যতম আসামি নিহত রিফাতের স্ত্রী জামিনে থাকায় তার নিয়োজিত আইনজীবীর জিম্মায় মিন্নির জামিন জেলা ও দায়রা জজ আদালত বহাল রেখেছেন বলে জানান তিনি। রিফাত শরীফ হত্যা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণার সময় জামিনে থাকা রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ কারাগারে থাকা ৮ আসামিসহ ৯ আসামি উপস্থিত ছিলেন। তবে মামলার অন্য আসামি মুসাকে এখনও পলাতক দেখানো হয়েছে।

সকাল ১০টায় আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়ে ১টা পর্যন্ত চলে আদালত। সকাল ৯টার দিকে জামিনে থাকা অন্যতম আসামি আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি তার বাবা ও চাচার সঙ্গে আদালতে আসেন। এ সময় মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর সাংবাদিকদের বলেন, আমার মেয়ে তার স্বামীকে রক্ষার জন্য চেষ্টা করেছেন, পরবর্তীতে রিকশায় করে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন, তা আইনজীবীরা বিজ্ঞ আদালতে সঠিকভাবে প্রমাণে সক্ষম হয়েছেন।

মিন্নির আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, তার মক্কেল যে তার স্বামীকে বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করেছেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা আমার আসামির বিরুদ্ধে কাল্পনিক মনগড়া যে অভিযোগ এনেছেন, তারা আদালতে সঠিকভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করতে সক্ষম করেছেন।

রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় ১ জানুয়ারি চার্জ গঠন করা হয়। ৮ জানুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়ে ৭৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা গতকাল মিন্নির যুক্তিতর্কের মাধ্যমে যুক্তিতর্ক শেষ হলেও তাদের যুক্তি খণ্ডনের জন্য ১৬ সেপ্টেম্বর দিন নির্ধারণ করে আদালত।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নয়ন ও তার সহযোগী সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে রিফাত শরীফকে গুরুতর আহত করে। গুরুতর আহত রিফাত বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওইদিনই মারা যান।

গত ১ সেপ্টেম্বর রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় রিফাতের স্ত্রী মিন্নিসহ ২৪ জনের বিরুদ্ধে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দুই ভাগে বিভক্ত অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে পুলিশ। একই সঙ্গে রিফাত শরীফ হত্যা মামলার ১ নম্বর আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।

গত ১ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার প্রাপ্তবয়স্ক ১০ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালত। অন্যদিকে গত ৮ জানুয়ারি রিফাত হত্যা মামলার অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনার শিশু আদালত। এ মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক আসামি মো. মুসা এখনও পলাতক রয়েছেন।

এছাড়া নিহত রিফাতের স্ত্রী মিন্নিসহ অপ্রাপ্তবয়স্ক ৮ আসামি উচ্চ আদালত এবং বরগুনার শিশু আদালতের আদেশে জামিনে রয়েছে।