পদ্মার ভাঙনের কবলে শিবচর কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউপি ভবন

পদ্মা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে ২ দিনের ব্যবধানে আক্রান্ত হলো মাদারীুপরের শিবচরের চরাঞ্চলের একটি কমিউনিটি ক্লিনিক। এর ২ দিন আগে বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতল ভবনটি নদী ভাঙ্গন আক্রান্ত হয়। ব্যাপক ভাঙ্গনে ইতোমধ্যেই ভবনটির কয়েকটি পিলার নদীতে চলে গেছে। সরিয়ে নেয়া হয়েছে মালামাল। ২০১২ সালে ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি থেকে কয়েক বছর আগেও নদী ছিল প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে। পাশের কমিউনিটি ক্লিনিকটিও গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়। কাজীরসুরা বাজারের অর্ধ শতাধিক দোকানপাটসহ বিস্তৃর্ণ জনপদ ভয়াবহ ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে। চলতি বছর ২ দফা বন্যায় শিবচরের চরাঞ্চলের ৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিলীন হয়। ভাঙ্গন রোধে চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরীর নির্দেশে পানি উন্নয়ন বোর্ড দফায় দফায় জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়। তবে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব হয়নি।

জানা যায়, চলতি বছর ২ দফা বন্যায় পদ্মা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গনে উপজেলার চরাঞ্চলের চরজানাজাত, বন্দরখোলা, কাঁঠালবাড়ি ও মাদবরচর ইউনিয়নের শত শত ঘরবাড়ি, ৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ভেঙে যায়। পদ্মায় পানি কমতে থাকায় আবারও ভাঙ্গন শুরু হয়। ভাঙ্গনে বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতল ভবনটি ও কাজীরসুরা কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন আক্রান্ত হয়। ইতোমধ্যেই ভবনটির নিচে মাটি সরে কয়েকটি পিলার নদীতে চলে গেছে। ২০১২ সালে ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবনটি যেকোন সময় ভেঙে নদীতে বিলীনের আশঙ্কা রয়েছে। ভবনটি থেকে আসবাবপত্রসহ মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে কাজিরসূরা বাজারের অর্ধশত দোকানসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। গত ১৯ আগস্ট বন্দরখোলার কাজিরসূরা ২৬নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবন কাম সাইক্লোন সেন্টার নদীতে বিলীন হয়। এছাড়া ২৩ জুলাই নূরুউদ্দিন মাদবরকান্দি এসইএসডিপি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের দৃষ্টিনন্দন ৩ তলা ভবনটি নদীতে বিলীন হয়। এরপর ২৯ জুলাই কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের ৭৭নং কাঁঠালবাড়ি সরকারি বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেন্টারের ৩ তলা ভবনটিও পদ্মায় বিলীন হয়। মধ্য জুলাইয়ে ভাঙ্গন কবলিত হওয়ায় চরজানাজাত ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয়ের ৩টি স্থাপনা আক্রান্ত হয়। এর আগে ২০১৮ সালে ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয়ের ৩টি ভবন নদীতে বিলীন হয়। চলতি বছর চরাঞ্চলের ৪টি বিদ্যালয় নদীতে বিলীন হয়ে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সহ¯্রাধিক ঘরবাড়ি আক্রান্ত হয়ে আক্রান্তরা অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে।

বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নিজামউদ্দিন বেপারী বলেন, পদ্মার ভয়াবহ ভাঙ্গনে ইতোমধ্যেই আমার ইউনিয়নের দুটি স্কুল, মাদ্রাসা নদীতে বিলীন হয়েছে। নতুন করে ভাঙ্গন শুরু হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ও কমিউনিটি ক্লিনিকের নিচে মাটি সরে গেছে। যেকোন সময় ভবন ২টি নদীতে বিলীন হতে পারে। ঝুঁকিতে রয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক, বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। ভাঙ্গনরোধে চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরী মহোদয়ের নির্দেশে পানি উন্নয়ন বোর্ড একাধিকবার জিও ব্যাগ ডাম্পিং করেছে তাও ভাঙ্গন রোধ হয়নি। এই চরাঞ্চল রক্ষায় আমরা স্থায়ী বাধ দাবি করছি।

বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৭ মহররম ১৪৪২, ২৯ ভাদ্র ১৪২৭

পদ্মার ভাঙনের কবলে শিবচর কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউপি ভবন

শিব শংকর রবিদাস, শিবচর (মাদারীপুর)

পদ্মা নদীর ভয়াবহ ভাঙনে ২ দিনের ব্যবধানে আক্রান্ত হলো মাদারীুপরের শিবচরের চরাঞ্চলের একটি কমিউনিটি ক্লিনিক। এর ২ দিন আগে বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতল ভবনটি নদী ভাঙ্গন আক্রান্ত হয়। ব্যাপক ভাঙ্গনে ইতোমধ্যেই ভবনটির কয়েকটি পিলার নদীতে চলে গেছে। সরিয়ে নেয়া হয়েছে মালামাল। ২০১২ সালে ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি থেকে কয়েক বছর আগেও নদী ছিল প্রায় ৭ কিলোমিটার দূরে। পাশের কমিউনিটি ক্লিনিকটিও গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়। কাজীরসুরা বাজারের অর্ধ শতাধিক দোকানপাটসহ বিস্তৃর্ণ জনপদ ভয়াবহ ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে। চলতি বছর ২ দফা বন্যায় শিবচরের চরাঞ্চলের ৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিলীন হয়। ভাঙ্গন রোধে চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরীর নির্দেশে পানি উন্নয়ন বোর্ড দফায় দফায় জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়। তবে পদ্মার ভয়াবহ ভাঙ্গন রোধ করা সম্ভব হয়নি।

জানা যায়, চলতি বছর ২ দফা বন্যায় পদ্মা নদীর ভয়াবহ ভাঙ্গনে উপজেলার চরাঞ্চলের চরজানাজাত, বন্দরখোলা, কাঁঠালবাড়ি ও মাদবরচর ইউনিয়নের শত শত ঘরবাড়ি, ৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ভেঙে যায়। পদ্মায় পানি কমতে থাকায় আবারও ভাঙ্গন শুরু হয়। ভাঙ্গনে বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদের দ্বিতল ভবনটি ও কাজীরসুরা কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন আক্রান্ত হয়। ইতোমধ্যেই ভবনটির নিচে মাটি সরে কয়েকটি পিলার নদীতে চলে গেছে। ২০১২ সালে ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবনটি যেকোন সময় ভেঙে নদীতে বিলীনের আশঙ্কা রয়েছে। ভবনটি থেকে আসবাবপত্রসহ মালামাল অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে কাজিরসূরা বাজারের অর্ধশত দোকানসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। গত ১৯ আগস্ট বন্দরখোলার কাজিরসূরা ২৬নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবন কাম সাইক্লোন সেন্টার নদীতে বিলীন হয়। এছাড়া ২৩ জুলাই নূরুউদ্দিন মাদবরকান্দি এসইএসডিপি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ের দৃষ্টিনন্দন ৩ তলা ভবনটি নদীতে বিলীন হয়। এরপর ২৯ জুলাই কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের ৭৭নং কাঁঠালবাড়ি সরকারি বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন সেন্টারের ৩ তলা ভবনটিও পদ্মায় বিলীন হয়। মধ্য জুলাইয়ে ভাঙ্গন কবলিত হওয়ায় চরজানাজাত ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয়ের ৩টি স্থাপনা আক্রান্ত হয়। এর আগে ২০১৮ সালে ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয়ের ৩টি ভবন নদীতে বিলীন হয়। চলতি বছর চরাঞ্চলের ৪টি বিদ্যালয় নদীতে বিলীন হয়ে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। সহ¯্রাধিক ঘরবাড়ি আক্রান্ত হয়ে আক্রান্তরা অন্যত্র নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছে।

বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নিজামউদ্দিন বেপারী বলেন, পদ্মার ভয়াবহ ভাঙ্গনে ইতোমধ্যেই আমার ইউনিয়নের দুটি স্কুল, মাদ্রাসা নদীতে বিলীন হয়েছে। নতুন করে ভাঙ্গন শুরু হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ও কমিউনিটি ক্লিনিকের নিচে মাটি সরে গেছে। যেকোন সময় ভবন ২টি নদীতে বিলীন হতে পারে। ঝুঁকিতে রয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক, বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। ভাঙ্গনরোধে চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরী মহোদয়ের নির্দেশে পানি উন্নয়ন বোর্ড একাধিকবার জিও ব্যাগ ডাম্পিং করেছে তাও ভাঙ্গন রোধ হয়নি। এই চরাঞ্চল রক্ষায় আমরা স্থায়ী বাধ দাবি করছি।