ক্ষোভ থেকেই আন্দোলন
চট্টগ্রামের হাটহাজারীর দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম (হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার) সহকারী শিক্ষা সচিব মাওলানা আনাস মাদানী হটাও আন্দোলন শুরু করেছিল শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ থেকেই এ আন্দোলন শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। শুধু মাদ্রাসা কেন্দ্রিক অনিয়ম বা স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ নয় আল্লামা আহমদ শফীর এ পুত্রের বিরুদ্ধে হেফাজতের শুরুর সময় থেকে প্রভাব খাটানো, নানাভাবে তার পিতা ও হেফাজত আমিরকে প্রভাবিত করারও অভিযোগ এনেছে আন্দোলনকারীরা। বিশেষ করে মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক হেফাজতের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে কোণঠাসা করার বিষয়টি মানতে পারেনি ছাত্ররা। তবে এসব কারণগুলো মুখ্য হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে আন্দোলনরতরা জানিয়েছেন ৫ দফা দাবি। এসবের মধ্যে এই কারণগুলো স্পষ্ট করে উল্লেখ নেই। নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে আনাস হটাও আন্দোলনের শুরুতেই মাদ্রাসা ছাড়তে বাধ্য হন আনাস মাদানিকে। গতকাল ভাঙচুর করা না হলেও গত বুধবার নানা গুজব তুলে মাদ্রাসার ভেতরে অনেক আসবাপত্র ভাঙেন ছাত্ররা।
এদিকে ছাত্রদের ৫ দফা দাবিতে আন্দোলনের মুখে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে আল-ওই মাদ্রাসাটি। গতকাল কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সহকারী সচিব সৈয়দ আসগর আলী স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কওমি মাদ্রাসাসমূহের কিতাব বিভাগের কার্যক্রম শুরু ও পরীক্ষা গ্রহণের জন্য কতিপয় শর্তসাপেক্ষে অনুমতি প্রদান করা হয়েছিল। এতে বলা হয়, আরোপিত শর্ত যথাযথভাবে প্রতিপালিত না হওয়ায় চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসাটি পুনরাদেশা দেয়া পর্যন্ত নির্দেশক্রমে বন্ধ করা হলো।
এদিকে বিভিন্ন দাবিতে গত বুধবার থেকে হাটহাজারী মাদ্রাসায় বিক্ষোভ করছে ছাত্ররা। এর আগে গত বুধবার রাতে ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে প্রতিষ্ঠানটির সহকারী শিক্ষা সচিব মাওলানা আনাস মাদানীকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
এদিকে মাদ্রাসার ভেতর থেকে ৫ দফা দাবি সম্বলিত একটি লিফলেট পাওয়া গেছে। লিফলেটটিতে লেখা দাবি গুলো হলো, এক. মাওলানা আনাস মাদানীকে অতি বিলম্বে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করতে হবে।
মাদরাসা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কওমি সনদের স্বীকৃতির জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি কর্তৃপক্ষ সাধুবাদ পেতেই পারে। কিন্তু শুকরানার নামে শরিয়া পরিপন্থি দিয়ে সরকার জনগণের কাছে কওমিদের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। আল্লামা আহমদ শফীর পাশে থেকে অবৈধ বলয় গড়ে তুলে তার সঙ্গে মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক ও ব্যক্তিবর্গের দূরত্ব সৃষ্টি করেছেন আনাস মাদানি। তৈরি করেছেন মাদ্রাসার অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা। ঢাকার শাপলা চত্বর এবং বিভিন্ন আন্দোলনে নিহতদের পরিবার ও তাদের খোঁজ-খবর রাখা হয়নি হেফাজত আমিরের পক্ষ থেকে। এর সবটুকুর জন্য দায়ী করা হচ্ছে আনাস মাদানীকেই। গতকাল সকাল থেকে মাদ্রাসার আশপাশে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক রয়েছে।
শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৮ মহররম ১৪৪২, ৩০ ভাদ্র ১৪২৭
ক্ষোভ থেকেই আন্দোলন
চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রামের হাটহাজারীর দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম (হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার) সহকারী শিক্ষা সচিব মাওলানা আনাস মাদানী হটাও আন্দোলন শুরু করেছিল শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভ থেকেই এ আন্দোলন শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। শুধু মাদ্রাসা কেন্দ্রিক অনিয়ম বা স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ নয় আল্লামা আহমদ শফীর এ পুত্রের বিরুদ্ধে হেফাজতের শুরুর সময় থেকে প্রভাব খাটানো, নানাভাবে তার পিতা ও হেফাজত আমিরকে প্রভাবিত করারও অভিযোগ এনেছে আন্দোলনকারীরা। বিশেষ করে মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক হেফাজতের মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে কোণঠাসা করার বিষয়টি মানতে পারেনি ছাত্ররা। তবে এসব কারণগুলো মুখ্য হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে আন্দোলনরতরা জানিয়েছেন ৫ দফা দাবি। এসবের মধ্যে এই কারণগুলো স্পষ্ট করে উল্লেখ নেই। নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে আনাস হটাও আন্দোলনের শুরুতেই মাদ্রাসা ছাড়তে বাধ্য হন আনাস মাদানিকে। গতকাল ভাঙচুর করা না হলেও গত বুধবার নানা গুজব তুলে মাদ্রাসার ভেতরে অনেক আসবাপত্র ভাঙেন ছাত্ররা।
এদিকে ছাত্রদের ৫ দফা দাবিতে আন্দোলনের মুখে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে আল-ওই মাদ্রাসাটি। গতকাল কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সহকারী সচিব সৈয়দ আসগর আলী স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কওমি মাদ্রাসাসমূহের কিতাব বিভাগের কার্যক্রম শুরু ও পরীক্ষা গ্রহণের জন্য কতিপয় শর্তসাপেক্ষে অনুমতি প্রদান করা হয়েছিল। এতে বলা হয়, আরোপিত শর্ত যথাযথভাবে প্রতিপালিত না হওয়ায় চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসাটি পুনরাদেশা দেয়া পর্যন্ত নির্দেশক্রমে বন্ধ করা হলো।
এদিকে বিভিন্ন দাবিতে গত বুধবার থেকে হাটহাজারী মাদ্রাসায় বিক্ষোভ করছে ছাত্ররা। এর আগে গত বুধবার রাতে ছাত্রদের আন্দোলনের মুখে হাটহাজারী মাদ্রাসা থেকে প্রতিষ্ঠানটির সহকারী শিক্ষা সচিব মাওলানা আনাস মাদানীকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
এদিকে মাদ্রাসার ভেতর থেকে ৫ দফা দাবি সম্বলিত একটি লিফলেট পাওয়া গেছে। লিফলেটটিতে লেখা দাবি গুলো হলো, এক. মাওলানা আনাস মাদানীকে অতি বিলম্বে মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করতে হবে।
মাদরাসা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কওমি সনদের স্বীকৃতির জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি কর্তৃপক্ষ সাধুবাদ পেতেই পারে। কিন্তু শুকরানার নামে শরিয়া পরিপন্থি দিয়ে সরকার জনগণের কাছে কওমিদের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। আল্লামা আহমদ শফীর পাশে থেকে অবৈধ বলয় গড়ে তুলে তার সঙ্গে মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক ও ব্যক্তিবর্গের দূরত্ব সৃষ্টি করেছেন আনাস মাদানি। তৈরি করেছেন মাদ্রাসার অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা। ঢাকার শাপলা চত্বর এবং বিভিন্ন আন্দোলনে নিহতদের পরিবার ও তাদের খোঁজ-খবর রাখা হয়নি হেফাজত আমিরের পক্ষ থেকে। এর সবটুকুর জন্য দায়ী করা হচ্ছে আনাস মাদানীকেই। গতকাল সকাল থেকে মাদ্রাসার আশপাশে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক রয়েছে।