৯৩ হাজার সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ ঝরল ৭২ হাজার

দুর্ঘটনাগুলোর কারণ- বেপরোয়া গতি চালকের ক্লান্তি মুখোমুখি সংঘর্ষ পথচারীকে ধাক্কা

সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপের পরও থামছে না দুর্ঘটনা। প্রতিদিন রাজধানী থেকে শুরু করে সড়ক, মহাসড়কসহ বিভিন্ন পয়েণ্টে প্রতিদিন দুর্ঘটনা বাড়ছে। এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১৯৯৪ সাল থেকে শুরু করে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ গত ২৬ বছরে সারাদেশে প্রায় ৯৩ হাজার ৮৫৩টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। এসব দুর্ঘটনার সময় প্রতিদিন শিশু থেকে নানা বয়সের মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রাস্তা পারাপারে শতকরা ১৬ ভাগের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছেন। যানবাহনের মুখোমুখী সংঘর্ষে শতকরা ২৯ দশমিক ৫ ভাগ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার শতকরা ১৩ দমমিক ৭ ভাগ। বাস দুর্ঘটনা শতকরা ১১ দশমিক ৯ ভাগ। পিকআপ দুর্ঘটনা ৬ দশমিক ৮ ভাগ। অন্যান্য দুর্ঘটনা শতকরা ৩৭ ভাগ। এভাবে প্রতি বছর দুর্ঘটনা বেড়েই চলছে।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, ১৯৯৪ সালে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে ৩ হাজার ১৩টি। এসব দুর্ঘটনায় মারা গেছে ১ হাজার ৫৯৭ জন। আর আহত হয়েছেন ২ হাজার ৭৩৬ জন। ১৯৯৫ সালে ৩৩৪৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ১৬৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ২৮৬৪ জন। ১৯৯৬ সালে ৩৭৩৯০টি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ২০৪১ জন। আর আহত হয়েছে ৩৩০১ জন। ১৯৯৭ সালে ৫৪৪৮টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩১৬২ জন মারা গেছে। আর আহত ৫ হাজার ৭৬ জন। ১৯৯৮ সালে ৪৭৬৯টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ৪৫ জনের মৃত্যু ও ৩৯৯৭ জন আহত হয়েছে। ১৯৯৯ সালে ৪৯১৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ৩৩১৪ জনের মৃত্যু ও ৩৪৫৩ জন আহত হয়েছে। ২০০০ সালে ৪৩৫৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৪৩০ জনের মৃত্যু এবং ১৯১১ জন আহত হয়েছে।

২০০১ সালে ৪০৯১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩ হাজার ১০৯ জনের মৃত্যু আহত হয়েছে ৩১৭২ জন। ২০০২ সালে ৪৯১৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৩৯৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর আহত হয়েছে ৩৭৭০ জন। ২০০৩ সালে ৪৭৪৯টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে ৩২৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ৩৮১৮ জন। ২০০৪ সালে ৩৯১৭টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে ২৯৬৮ জনের মৃত্যু এবং ২৭৫২ জন আহত হয়েছে। ২০০৫ সালে ৩৯৫৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ১৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর আহত হয়েছে ২৭৫৫ জন। ২০০৬ সালে ৩৭৯৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর আহত হয়েছে ২৪০৯ জন।

২০০৭ সালে ৪৮৬৯টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে মারা গেছেন ৩৭৪৯৮ জন। আহত হয়েছে ৩২৭৩ জন। ২০০৯ সালে ৩৩৮১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৯৫৮ জনের মৃত্যু ও আহত হয়েছে ২৬৮৬ জন। ২০১০ সালে ২৮২৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬৪৬ জনের মৃত্যু ও ১৮০৩ জন আহত হয়েছে। ২০১১ সালে ২৬৬৭টি দুর্ঘটনায় ২৫৪৬ জনের মৃত্যু ও আহত ১৬৪১ জন। ২০১২ সালে ২৬৩৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৫৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ২১৩৪ জন। ২০১৩ সালে ২০২৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৯৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ১৩৯৬ জন। ২০১৪ সালে ২০২৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২০৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ১৫৩৫ জন। ২০১৫ সালে ২৩৯৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩৭৬ জনের মৃত্যু ও ১৯৫৮ জন আহত হয়েছে। ২০১৬ সালে ২৫৬৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৪৬৩ জনের মৃত্যু ও ২১৩৪ জন আহত হয়েছে। ২০১৭ সালে ২৫৬২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৫১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ১৮৯৮ জন। ২০১৮ সালে ২৬০৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত ১৯২০ জন। ২০১৯ সালে ২৮৫৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১৩৬ জনের মৃত্যু ও ৩৪৮৫ জন আহত হয়েছে। সব মিলিয়ে গত ২৬ বছরে সারাদেশে সড়ক মহাসড়কে ৯৩,৮৫৩টি সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে। এতে মারা গেছেন ৭২ হাজার ৭৭৫ জন। আহত হয়েছে ৭১ হাজার ১৬১ জন। আহতদের মধ্যে অনেকেই পুরো সুস্থ হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করছেন বলে জানা গেছে।

সড়ক দুর্ঘটনার অনুসন্ধানে জানা গেছে, দিনের বেলায় বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে। এর শতকরা হিসেবে ৬৫ দশমিক ৩ ভাগ। রাতে আলোকিত সড়কে ৬ দশমিক ৭ ভাগ। ভোরে বা সন্ধ্যায় শতকরা ১৫ দশমিক ৪ ভাগ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে।

সড়ক দুর্ঘটনায় যানবাহনের ধরন হিসেবে জানা গেছে, প্রাইভেট কার ২ দশমিক ৭ ভাগ। ট্র্যাংকার জিরো পয়েণ্ট ৫ ভাগ। ছোট ট্রাক জিরো পয়েণ্ট ৯ ভাগ। পিকআপ ৬ দশমিক ৮ ভাগ। মাইক্রোবাস ৩ দশমিক ২ ভাগ। সিএনজি অটোরিকশা ও বেবি টেক্সি ১ দশমিক ৪ ভাগ।

দুর্ঘটনা ও সংঘর্ষের ধরন হিসেবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাস্তার ধারে কোন বস্তুতে আঘাত লেগে ৩ দশমিক ৫ ভাগ দুর্ঘটনা ঘটছে। উল্টে গিয়ে দুর্ঘটনা ৪ পয়েণ্ট ৬ ভাগ। দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে ধাক্কা লাগার ঘটনায় ১ দশমিক ৮ ভাগ। রাস্তার উপরস্থ কোন বস্তুতে আঘাত করে দুর্ঘটনা ৩ দশমিক ৫ ভাগ। আর পথচারীর আঘাতজনিত দুর্ঘটনার সংখ্যা শতকরা ১৬ দশমিক ৮ ভাগ। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনার মুখোমুখী ২৯ দশমিক ৫ ভাগ।

দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে জানা গেছে, গাড়ির চাকা রাস্তার কাদায় ডেবে যাওয়া। টায়ার ব্রাস্ট, বিপদজনক বোঝাই, চালকের ক্লান্তি, ভুল ওভারটেকিং, আবহাওয়াজনিত কারণ, সামনের গাড়ির অতি সন্নিকটে চালান, মাত্রাতিরিক্ত গতি ও বেপরোয়া গাড়ি চালানোসহ নানা কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলবারে বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে। এর শতকরা হিসেবে ১৬ দশমিক ৮ ভাগ। বুধবারে ১৬ দশমিক ১ ভাগ। শুক্রবারে ১৪ দশমিক ৪ ভাগ। বৃহস্পতিবারে ১০ দশমিক ৫ ভাগ। শনিবারে ১৫ দশমিক ১ ভাগ। রোববারে ১৪ দশমিক ৪ ভাগ।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ট্রাফিক বিভাগের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো। রাস্তায় ওভারটেকিং করা, সড়ক মহাসড়কে খানাকন্দকসহ নানা কারণে প্রতিদিন দুর্ঘটনা বাড়ছে। এখন অনেকেই ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়াই গাড়ি চালাচ্ছে। আর অনেকেই পুরনো লকার যক্কর গাড়ি চালানোর কারণে সড়কে দুর্ঘটনা বাড়ছে। দুর্ঘটনা রোধে সড়ক পরিবহন আইনসহ নানা পদক্ষেপ নেয়ার পরও ঠেকানো যাচ্ছে না দুর্ঘটনা।

আরও খবর
ছয় মাসেও দেশে করোনা সংক্রমণের প্রকৃত চিত্র নেই
দায় তিতাস ডিপিডিসি ও মসজিদ কমিটির
দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ার প্রত্যয় প্রধানমন্ত্রীর
পিয়াজের দাম কমছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
পিয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞায় অনুতপ্ত ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অর্থনীতি সম্পর্কে এডিবির মূল্যায়ন নিয়ে অর্থনীতিবিদদের প্রশ্ন
‘রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘের ভূমিকায় বাংলাদেশ হতাশ’
মৃত্যু ৩৬, নতুন শনাক্ত ১,৫৯৩
কুমিল্লায় যাত্রীবাহী বাসে তরুণীকে গণধর্ষণ
চট্টগ্রাম হাটহাজারী মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা
ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান সফল হয়নি
রবিউল জবানবন্দি দেয়নি, ফের রিমান্ডে
অস্ত্র মামলায় সাহেদের যাবজ্জীবন চায় রাষ্ট্রপক্ষ
দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ার প্রত্যয় প্রধানমন্ত্রীর

শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৮ মহররম ১৪৪২, ৩০ ভাদ্র ১৪২৭

২৬ বছরে

৯৩ হাজার সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ ঝরল ৭২ হাজার

দুর্ঘটনাগুলোর কারণ- বেপরোয়া গতি চালকের ক্লান্তি মুখোমুখি সংঘর্ষ পথচারীকে ধাক্কা

বাকিবিল্লাহ |

সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপের পরও থামছে না দুর্ঘটনা। প্রতিদিন রাজধানী থেকে শুরু করে সড়ক, মহাসড়কসহ বিভিন্ন পয়েণ্টে প্রতিদিন দুর্ঘটনা বাড়ছে। এক অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১৯৯৪ সাল থেকে শুরু করে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ গত ২৬ বছরে সারাদেশে প্রায় ৯৩ হাজার ৮৫৩টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। এসব দুর্ঘটনার সময় প্রতিদিন শিশু থেকে নানা বয়সের মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রাস্তা পারাপারে শতকরা ১৬ ভাগের বেশি মানুষ মারা যাচ্ছেন। যানবাহনের মুখোমুখী সংঘর্ষে শতকরা ২৯ দশমিক ৫ ভাগ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যুর হার শতকরা ১৩ দমমিক ৭ ভাগ। বাস দুর্ঘটনা শতকরা ১১ দশমিক ৯ ভাগ। পিকআপ দুর্ঘটনা ৬ দশমিক ৮ ভাগ। অন্যান্য দুর্ঘটনা শতকরা ৩৭ ভাগ। এভাবে প্রতি বছর দুর্ঘটনা বেড়েই চলছে।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, ১৯৯৪ সালে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে ৩ হাজার ১৩টি। এসব দুর্ঘটনায় মারা গেছে ১ হাজার ৫৯৭ জন। আর আহত হয়েছেন ২ হাজার ৭৩৬ জন। ১৯৯৫ সালে ৩৩৪৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ১৬৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ২৮৬৪ জন। ১৯৯৬ সালে ৩৭৩৯০টি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ২০৪১ জন। আর আহত হয়েছে ৩৩০১ জন। ১৯৯৭ সালে ৫৪৪৮টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩১৬২ জন মারা গেছে। আর আহত ৫ হাজার ৭৬ জন। ১৯৯৮ সালে ৪৭৬৯টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ৪৫ জনের মৃত্যু ও ৩৯৯৭ জন আহত হয়েছে। ১৯৯৯ সালে ৪৯১৬টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এসব দুর্ঘটনায় ৩৩১৪ জনের মৃত্যু ও ৩৪৫৩ জন আহত হয়েছে। ২০০০ সালে ৪৩৫৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৪৩০ জনের মৃত্যু এবং ১৯১১ জন আহত হয়েছে।

২০০১ সালে ৪০৯১টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে ৩ হাজার ১০৯ জনের মৃত্যু আহত হয়েছে ৩১৭২ জন। ২০০২ সালে ৪৯১৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৩৯৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর আহত হয়েছে ৩৭৭০ জন। ২০০৩ সালে ৪৭৪৯টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে ৩২৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ৩৮১৮ জন। ২০০৪ সালে ৩৯১৭টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে ২৯৬৮ জনের মৃত্যু এবং ২৭৫২ জন আহত হয়েছে। ২০০৫ সালে ৩৯৫৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ হাজার ১৮৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর আহত হয়েছে ২৭৫৫ জন। ২০০৬ সালে ৩৭৯৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১৯৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর আহত হয়েছে ২৪০৯ জন।

২০০৭ সালে ৪৮৬৯টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে মারা গেছেন ৩৭৪৯৮ জন। আহত হয়েছে ৩২৭৩ জন। ২০০৯ সালে ৩৩৮১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৯৫৮ জনের মৃত্যু ও আহত হয়েছে ২৬৮৬ জন। ২০১০ সালে ২৮২৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬৪৬ জনের মৃত্যু ও ১৮০৩ জন আহত হয়েছে। ২০১১ সালে ২৬৬৭টি দুর্ঘটনায় ২৫৪৬ জনের মৃত্যু ও আহত ১৬৪১ জন। ২০১২ সালে ২৬৩৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৫৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ২১৩৪ জন। ২০১৩ সালে ২০২৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৯৫৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ১৩৯৬ জন। ২০১৪ সালে ২০২৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২০৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ১৫৩৫ জন। ২০১৫ সালে ২৩৯৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৩৭৬ জনের মৃত্যু ও ১৯৫৮ জন আহত হয়েছে। ২০১৬ সালে ২৫৬৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৪৬৩ জনের মৃত্যু ও ২১৩৪ জন আহত হয়েছে। ২০১৭ সালে ২৫৬২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৫১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে ১৮৯৮ জন। ২০১৮ সালে ২৬০৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত ১৯২০ জন। ২০১৯ সালে ২৮৫৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১৩৬ জনের মৃত্যু ও ৩৪৮৫ জন আহত হয়েছে। সব মিলিয়ে গত ২৬ বছরে সারাদেশে সড়ক মহাসড়কে ৯৩,৮৫৩টি সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে। এতে মারা গেছেন ৭২ হাজার ৭৭৫ জন। আহত হয়েছে ৭১ হাজার ১৬১ জন। আহতদের মধ্যে অনেকেই পুরো সুস্থ হয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করছেন বলে জানা গেছে।

সড়ক দুর্ঘটনার অনুসন্ধানে জানা গেছে, দিনের বেলায় বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে। এর শতকরা হিসেবে ৬৫ দশমিক ৩ ভাগ। রাতে আলোকিত সড়কে ৬ দশমিক ৭ ভাগ। ভোরে বা সন্ধ্যায় শতকরা ১৫ দশমিক ৪ ভাগ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে।

সড়ক দুর্ঘটনায় যানবাহনের ধরন হিসেবে জানা গেছে, প্রাইভেট কার ২ দশমিক ৭ ভাগ। ট্র্যাংকার জিরো পয়েণ্ট ৫ ভাগ। ছোট ট্রাক জিরো পয়েণ্ট ৯ ভাগ। পিকআপ ৬ দশমিক ৮ ভাগ। মাইক্রোবাস ৩ দশমিক ২ ভাগ। সিএনজি অটোরিকশা ও বেবি টেক্সি ১ দশমিক ৪ ভাগ।

দুর্ঘটনা ও সংঘর্ষের ধরন হিসেবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাস্তার ধারে কোন বস্তুতে আঘাত লেগে ৩ দশমিক ৫ ভাগ দুর্ঘটনা ঘটছে। উল্টে গিয়ে দুর্ঘটনা ৪ পয়েণ্ট ৬ ভাগ। দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িতে ধাক্কা লাগার ঘটনায় ১ দশমিক ৮ ভাগ। রাস্তার উপরস্থ কোন বস্তুতে আঘাত করে দুর্ঘটনা ৩ দশমিক ৫ ভাগ। আর পথচারীর আঘাতজনিত দুর্ঘটনার সংখ্যা শতকরা ১৬ দশমিক ৮ ভাগ। সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনার মুখোমুখী ২৯ দশমিক ৫ ভাগ।

দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে জানা গেছে, গাড়ির চাকা রাস্তার কাদায় ডেবে যাওয়া। টায়ার ব্রাস্ট, বিপদজনক বোঝাই, চালকের ক্লান্তি, ভুল ওভারটেকিং, আবহাওয়াজনিত কারণ, সামনের গাড়ির অতি সন্নিকটে চালান, মাত্রাতিরিক্ত গতি ও বেপরোয়া গাড়ি চালানোসহ নানা কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। প্রতি সপ্তাহে মঙ্গলবারে বেশি দুর্ঘটনা ঘটছে। এর শতকরা হিসেবে ১৬ দশমিক ৮ ভাগ। বুধবারে ১৬ দশমিক ১ ভাগ। শুক্রবারে ১৪ দশমিক ৪ ভাগ। বৃহস্পতিবারে ১০ দশমিক ৫ ভাগ। শনিবারে ১৫ দশমিক ১ ভাগ। রোববারে ১৪ দশমিক ৪ ভাগ।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ট্রাফিক বিভাগের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো। রাস্তায় ওভারটেকিং করা, সড়ক মহাসড়কে খানাকন্দকসহ নানা কারণে প্রতিদিন দুর্ঘটনা বাড়ছে। এখন অনেকেই ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়াই গাড়ি চালাচ্ছে। আর অনেকেই পুরনো লকার যক্কর গাড়ি চালানোর কারণে সড়কে দুর্ঘটনা বাড়ছে। দুর্ঘটনা রোধে সড়ক পরিবহন আইনসহ নানা পদক্ষেপ নেয়ার পরও ঠেকানো যাচ্ছে না দুর্ঘটনা।