দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ার প্রত্যয় প্রধানমন্ত্রীর

শুদ্ধাচার পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়নের উপায় বের করতে হবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে একটি দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে তোলার শপথ নিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি নিজস্ব উদ্যোগেই ‘শুদ্ধাচার’ ও এর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী গতকাল অ্যানুয়াল পারফমেন্স এগ্রিমেন্ট (এপিএ)-২০২০ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেশে একটি ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই এবং আপনাদেরই এই শুদ্ধাচারের পরিকল্পনা করতে হবে এবং কিভাবে তা বাস্তবায়ন করা যায় সেই উপায় বের করতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই পরিকল্পনা তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছাতে ও তা সফলভাবে কার্যকর করতে হবে। ‘আর যারাই এটা করতে পারবে, তাদের পুরস্কৃত করা হবে।’ প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। প্রধানমন্ত্রী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের দুর্নীতি থেকে মুক্ত থাকার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দেন। তিনি তাদের জনগণের পাশে থাকারও নির্দেশ দেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা যখন কোন কাজ করবেন, তখন তা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে করবেন। কে কি বলল বা কে কি লিখল সেদিকে কান দেবেন না। এসব দিকে কান দিলে কোন কাজই করতে পারবেন না।’ এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, দেশে কিছু মানুষের স্বভাবই হচ্ছে অন্যের সমালোচনা করা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা সামান্য ভুল হলেই অনেক কিছু বলেন (পান থেকে চুন খসলেই সমালোচনা করেন)। কিন্তু তারা দেশ ও দেশের মানুষের জন্য নিজেরা কিছুই করেন না।’ শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকারই অনেক টিভি চ্যানেলকে অনুমোদন দিয়েছে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করেছে। আর এর মাধ্যমেই (সরকারের বিরুদ্ধে) নানা ধরনের অপপ্রচার চলবে।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু আপনাদের (সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী) আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সঠিক কাজটি করে যেতে হবে। যদি আপনাদের এই আত্মবিশ্বাস থাকে যে আপনারা যা করলেন তা জনগণের কল্যাণের জন্য এবং জনগণ এর সুফল ভোগ করবে, তবে আমি বলতে চাই যে আপনারা তাই করুন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের পাশে থাকা প্রতিটি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর দায়িত্ব।

তিনি বলেন, ‘জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছি বলে তাদের পাশে থাকা আমাদেরও দায়িত্ব। আমরা জনগণের কাছে অঙ্গীকারাবদ্ধ। আর যারা সরকারি চাকরি করেন তারাও জনগণের সেবা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

করোনাভাইরাস মহামারী প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে এবং সরকার প্রাথমিক পর্যায়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে কোভিড-১৯ কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি বলেন, অনেকেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করেন। কিন্তু মন্ত্রণালয় যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘এটা মাথায় রাখতে হবে যে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত কর্মীরা কাজ না করে বসে থাকেননি, তারা নিরলসভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কোভিড-১৯ মোকাবিলা করেছেন।’

তিনি বলেন, অনেক চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী কোভিড আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের পাশাপাশি, প্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন এবং এই দুর্যোগপূর্ণ সময়ে জনগণকে সাহায্য করেছেন।’

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে তিনি শিক্ষার্থীদের নিয়ে উদ্বিগ্ন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি তাদের পড়াশোনাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

তিনি বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশ নয়, মহামারীজণিত কারণে সমগ্র বিশ্বের অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে এবং সমগ্র বিশ্বের মানুষ এর জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য তার সরকার ২০১৪-১৫ সালে এপিএ চালু করে।

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে জনগণকে বঞ্চনা মুক্ত করা এবং তাদের সেবা করা। এই কারণে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা এবং কাজের গতিশীলতা আনতে সরকারি কাজকে ফলাফলমুখী করে তোলার জন্য এপিএ চালু করেছি।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ও সচিবরা তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এপিএ স্বাক্ষর করেন।

বিদ্যুৎ বিভাগ ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এপিএ বাস্তবায়নে সেরা কর্মসম্পাদক হিসেবে স্বীকৃতিসহ ক্রেস্ট এবং প্রশংসাপত্র পায়, অন্যদিকে কৃষি মন্ত্রণালয় এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেরা কর্মসম্পাদক হিসেবে মনোনীত হয়।

এছাড়া, আরও সাতটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এপিএ বাস্তবায়নে তাদের অসামান্য কর্মকা-ের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রশংসাপত্র লাভ করে।

মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো হলোÑ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, আইসিটি বিভাগ, তথ্য মন্ত্রণালয়, পল্লী উন্নয়ন এবং সমবায় বিভাগ, মৎস্য ও প্রাণী মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ।

২০১৯-২০ অর্থবছরে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে সততা প্রয়োগের জন্য অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব আবু হেনা মো. রহমতুল মুনিম শুদ্ধাচার পুরস্কার লাভ করেন।

২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে সাফল্যের সঙ্গে জাতীয় অখ-তা কৌশল প্রয়োগের ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সেরা হিসাবে স্বীকৃত পেয়েছে, অন্যদিকে শিল্প মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে দ্বিতীয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়কে তৃতীয় সেরা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এপিএ বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অসামান্য কার্যক্রমের জন্য সংশ্লিষ্ট সচিবদের কাছে ক্রেস্ট এবং প্রশংসাপত্র হস্তান্তর করেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সঞ্চালিত অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বক্তব্য রাখেন।

কোভিড-১৯ প্রতিরোধের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রশংসা প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধ করায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রশংসা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী গতকাল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অ্যানুয়াল পারফর্মেন্স এগ্রিমেন্ট (এপিএ)-২০২০ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘অনেকেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করেন, কিন্তু দেশে এই প্রাণঘাতী ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে মন্ত্রণালয় যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মোকাবিলায় সরকার প্রাথমিক কাজগুলো যথাযথ সময়ে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করায় কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের এটা মাথায় রাখতে হবে যে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ স্বাস্থ্যসেবায় নিয়জিত ব্যক্তিরা এ সময়ে অলসভাবে বসে নেই, তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরলসভাবে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কোভিড-১৯ মোকাবিলা করছেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে অনেক চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী মৃত্যুবরণ করেছেন।

image
আরও খবর
ছয় মাসেও দেশে করোনা সংক্রমণের প্রকৃত চিত্র নেই
দায় তিতাস ডিপিডিসি ও মসজিদ কমিটির
দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ার প্রত্যয় প্রধানমন্ত্রীর
পিয়াজের দাম কমছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
পিয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞায় অনুতপ্ত ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অর্থনীতি সম্পর্কে এডিবির মূল্যায়ন নিয়ে অর্থনীতিবিদদের প্রশ্ন
‘রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে জাতিসংঘের ভূমিকায় বাংলাদেশ হতাশ’
মৃত্যু ৩৬, নতুন শনাক্ত ১,৫৯৩
কুমিল্লায় যাত্রীবাহী বাসে তরুণীকে গণধর্ষণ
চট্টগ্রাম হাটহাজারী মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষণা
ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান সফল হয়নি
৯৩ হাজার সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ ঝরল ৭২ হাজার
রবিউল জবানবন্দি দেয়নি, ফের রিমান্ডে
অস্ত্র মামলায় সাহেদের যাবজ্জীবন চায় রাষ্ট্রপক্ষ

শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৮ মহররম ১৪৪২, ৩০ ভাদ্র ১৪২৭

দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ার প্রত্যয় প্রধানমন্ত্রীর

শুদ্ধাচার পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়নের উপায় বের করতে হবে

বাসস

image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশে একটি দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়ে তোলার শপথ নিয়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি নিজস্ব উদ্যোগেই ‘শুদ্ধাচার’ ও এর পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী গতকাল অ্যানুয়াল পারফমেন্স এগ্রিমেন্ট (এপিএ)-২০২০ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দেশে একটি ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই এবং আপনাদেরই এই শুদ্ধাচারের পরিকল্পনা করতে হবে এবং কিভাবে তা বাস্তবায়ন করা যায় সেই উপায় বের করতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই পরিকল্পনা তৃণমূল পর্যন্ত পৌঁছাতে ও তা সফলভাবে কার্যকর করতে হবে। ‘আর যারাই এটা করতে পারবে, তাদের পুরস্কৃত করা হবে।’ প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। প্রধানমন্ত্রী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সব ধরনের দুর্নীতি থেকে মুক্ত থাকার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দেন। তিনি তাদের জনগণের পাশে থাকারও নির্দেশ দেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা যখন কোন কাজ করবেন, তখন তা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে করবেন। কে কি বলল বা কে কি লিখল সেদিকে কান দেবেন না। এসব দিকে কান দিলে কোন কাজই করতে পারবেন না।’ এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, দেশে কিছু মানুষের স্বভাবই হচ্ছে অন্যের সমালোচনা করা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারা সামান্য ভুল হলেই অনেক কিছু বলেন (পান থেকে চুন খসলেই সমালোচনা করেন)। কিন্তু তারা দেশ ও দেশের মানুষের জন্য নিজেরা কিছুই করেন না।’ শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকারই অনেক টিভি চ্যানেলকে অনুমোদন দিয়েছে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করেছে। আর এর মাধ্যমেই (সরকারের বিরুদ্ধে) নানা ধরনের অপপ্রচার চলবে।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু আপনাদের (সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী) আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সঠিক কাজটি করে যেতে হবে। যদি আপনাদের এই আত্মবিশ্বাস থাকে যে আপনারা যা করলেন তা জনগণের কল্যাণের জন্য এবং জনগণ এর সুফল ভোগ করবে, তবে আমি বলতে চাই যে আপনারা তাই করুন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের পাশে থাকা প্রতিটি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর দায়িত্ব।

তিনি বলেন, ‘জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় এসেছি বলে তাদের পাশে থাকা আমাদেরও দায়িত্ব। আমরা জনগণের কাছে অঙ্গীকারাবদ্ধ। আর যারা সরকারি চাকরি করেন তারাও জনগণের সেবা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

করোনাভাইরাস মহামারী প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে এবং সরকার প্রাথমিক পর্যায়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে কোভিড-১৯ কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি বলেন, অনেকেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করেন। কিন্তু মন্ত্রণালয় যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘এটা মাথায় রাখতে হবে যে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ স্বাস্থ্য সেবায় নিয়োজিত কর্মীরা কাজ না করে বসে থাকেননি, তারা নিরলসভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কোভিড-১৯ মোকাবিলা করেছেন।’

তিনি বলেন, অনেক চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী কোভিড আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের পাশাপাশি, প্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এবং আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন এবং এই দুর্যোগপূর্ণ সময়ে জনগণকে সাহায্য করেছেন।’

করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে তিনি শিক্ষার্থীদের নিয়ে উদ্বিগ্ন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি তাদের পড়াশোনাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

তিনি বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশ নয়, মহামারীজণিত কারণে সমগ্র বিশ্বের অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে এবং সমগ্র বিশ্বের মানুষ এর জন্য ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য তার সরকার ২০১৪-১৫ সালে এপিএ চালু করে।

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে জনগণকে বঞ্চনা মুক্ত করা এবং তাদের সেবা করা। এই কারণে আমরা প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা এবং কাজের গতিশীলতা আনতে সরকারি কাজকে ফলাফলমুখী করে তোলার জন্য এপিএ চালু করেছি।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠানে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব ও সচিবরা তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এপিএ স্বাক্ষর করেন।

বিদ্যুৎ বিভাগ ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এপিএ বাস্তবায়নে সেরা কর্মসম্পাদক হিসেবে স্বীকৃতিসহ ক্রেস্ট এবং প্রশংসাপত্র পায়, অন্যদিকে কৃষি মন্ত্রণালয় এবং জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেরা কর্মসম্পাদক হিসেবে মনোনীত হয়।

এছাড়া, আরও সাতটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এপিএ বাস্তবায়নে তাদের অসামান্য কর্মকা-ের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রশংসাপত্র লাভ করে।

মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো হলোÑ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, আইসিটি বিভাগ, তথ্য মন্ত্রণালয়, পল্লী উন্নয়ন এবং সমবায় বিভাগ, মৎস্য ও প্রাণী মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ।

২০১৯-২০ অর্থবছরে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে সততা প্রয়োগের জন্য অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব আবু হেনা মো. রহমতুল মুনিম শুদ্ধাচার পুরস্কার লাভ করেন।

২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে সাফল্যের সঙ্গে জাতীয় অখ-তা কৌশল প্রয়োগের ক্ষেত্রে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সেরা হিসাবে স্বীকৃত পেয়েছে, অন্যদিকে শিল্প মন্ত্রণালয় এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে দ্বিতীয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়কে তৃতীয় সেরা হিসাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এপিএ বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অসামান্য কার্যক্রমের জন্য সংশ্লিষ্ট সচিবদের কাছে ক্রেস্ট এবং প্রশংসাপত্র হস্তান্তর করেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সঞ্চালিত অনুষ্ঠানে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বক্তব্য রাখেন।

কোভিড-১৯ প্রতিরোধের জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রশংসা প্রধানমন্ত্রীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধ করায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রশংসা করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী গতকাল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অ্যানুয়াল পারফর্মেন্স এগ্রিমেন্ট (এপিএ)-২০২০ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘অনেকেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সমালোচনা করেন, কিন্তু দেশে এই প্রাণঘাতী ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে মন্ত্রণালয় যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যুক্ত হন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনা মোকাবিলায় সরকার প্রাথমিক কাজগুলো যথাযথ সময়ে সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করায় কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদের এটা মাথায় রাখতে হবে যে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীসহ স্বাস্থ্যসেবায় নিয়জিত ব্যক্তিরা এ সময়ে অলসভাবে বসে নেই, তারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরলসভাবে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কোভিড-১৯ মোকাবিলা করছেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে অনেক চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী মৃত্যুবরণ করেছেন।