স্কুলছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় ধর্ষকের যাবজ্জীবন

আড়াইহাজারে মেধাবী এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে ধর্ষণের ঘটনার আট বছর পর শিল্পপতি রউফ মিয়ার ছেলে ধর্ষক নাঈম হাসানকে (২৮) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। গতকাল দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ শাহীন চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে অপহরণ ও নারী ও শিশু নির্যাতন উভয় অভিযোগে পৃথকভাবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ অভিযুক্তকে দুই লাখ করে চার লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার চার লাখ টাকার মধ্যে দুই লাখ টাকা ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর পরিবারকে দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে আদালত। রায়ের সময় ধর্ষক নাঈম আদালতে উপস্থিত ছিল না। ধর্ষিতার বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছিলেন। দণ্ডিত নাঈম হাসান স্থানীয় ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের উজান গোবিন্দী গ্রামে আবদুর রউফ (রূপ মিয়ার) ছেলে ও ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের দুইবারের চেয়ারম্যান লাক মিয়ার ভাতিজা।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাজী আবদুস সেলিম মোবাইল ফোনে জানান, ধর্ষণের ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদানসহ দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

একই সঙ্গে অপরহণের ঘটনায়ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা-২০১০ সালের নারায়ণগঞ্জ জেলায় পঞ্চম স্থান অর্জনকারী ও ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাওয়া উজান গোবিন্দী বিনাইরচর উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রীকে ২০১২ সালে ৭ এপ্রিল সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে রাস্তা থেকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে রূপগঞ্জের পারাগাঁও এলাকায় নিয়ে ধর্ষণ করে ও পরে অজ্ঞান অবস্থায় বাড়ির সামনের রাস্তায় ফেলে বীরদর্পে চলে যায় ধর্ষক নাইম হাসান। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেলে রেখে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। পরে ধর্ষিতার বাবা বাদি হয়ে অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আড়াইহাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৬ (৪) ১২ইং। নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু মামলা নং- ৫/২০২০ইং। বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করে আদালত।

অভিযোগ রয়েছে, মামলা দায়েরের পর থেকে ধর্ষিতার পরিবারকে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছিল। এছাড়াও এ মামলায় যারা সাক্ষী দিয়েছে তাদেরকে বিভিন্নভাবে সময় শারীরিক নির্যাতন করা হয়। এছাড়াও জামিনে প্রতারণার আশ্রয়সহ বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য দিয়ে আদালতকে বিভ্রান্তি করার চেষ্টা করে কালক্ষেপণ করতে থাকে আসামি পক্ষ। এক পর্যায়ে উচ্চআদালতে মামলার কার্যক্রম ফের স্থগিতের আবেদন করলে গত সপ্তাহে চেম্বার জজ তা খারিজ করে দেন।

আরও খবর
মানসিক ভারসাম্যহীন ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে পুশইনসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা
ঢাবির প্রথম পূর্ণাঙ্গ মাস্টার প্ল্যান অনুমোদন
পিয়াজের আড়তে অভিযান : ৭২ হাজার টাকা জরিমানা
চলছে না ফেরি : ঘাটে আটকে আছে শত শত পণ্যবাহী ট্রাক
রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে মিথ্যা বক্তব্য দেয়ায় বরখাস্ত আতর আলী
বিএনপি নেতা ও আ’লীগ নেত্রীর বিরুদ্ধে নারীর চুল কেটে নির্যাতনের অভিযোগ
পুলিশের প্রথম সাইবার ক্রাইম ইউনিট চালু
যে কোন ব্রান্ডের মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরিবর্তনে দক্ষ ওরা
সাবরিনাসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে চলছে সাক্ষ্য
চট্টগ্রামে প্রতারক চক্র সক্রিয় চাকরির নামে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা
জঙ্গি সম্পৃক্ততা রাজধানীতে দুইজন গ্রেফতার

শুক্রবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৮ মহররম ১৪৪২, ৩০ ভাদ্র ১৪২৭

আড়াইহাজারে

স্কুলছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলায় ধর্ষকের যাবজ্জীবন

প্রতিনিধি, আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ)

আড়াইহাজারে মেধাবী এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণ করে ধর্ষণের ঘটনার আট বছর পর শিল্পপতি রউফ মিয়ার ছেলে ধর্ষক নাঈম হাসানকে (২৮) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। গতকাল দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ শাহীন চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। রায়ে অপহরণ ও নারী ও শিশু নির্যাতন উভয় অভিযোগে পৃথকভাবে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ অভিযুক্তকে দুই লাখ করে চার লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার চার লাখ টাকার মধ্যে দুই লাখ টাকা ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর পরিবারকে দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছে আদালত। রায়ের সময় ধর্ষক নাঈম আদালতে উপস্থিত ছিল না। ধর্ষিতার বাবা বাদী হয়ে মামলা করেছিলেন। দণ্ডিত নাঈম হাসান স্থানীয় ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের উজান গোবিন্দী গ্রামে আবদুর রউফ (রূপ মিয়ার) ছেলে ও ব্রাহ্মন্দী ইউনিয়নের দুইবারের চেয়ারম্যান লাক মিয়ার ভাতিজা।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাজী আবদুস সেলিম মোবাইল ফোনে জানান, ধর্ষণের ঘটনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদানসহ দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

একই সঙ্গে অপরহণের ঘটনায়ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা-২০১০ সালের নারায়ণগঞ্জ জেলায় পঞ্চম স্থান অর্জনকারী ও ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাওয়া উজান গোবিন্দী বিনাইরচর উচ্চবিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রীকে ২০১২ সালে ৭ এপ্রিল সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে রাস্তা থেকে অস্ত্রের মুখে অপহরণ করে রূপগঞ্জের পারাগাঁও এলাকায় নিয়ে ধর্ষণ করে ও পরে অজ্ঞান অবস্থায় বাড়ির সামনের রাস্তায় ফেলে বীরদর্পে চলে যায় ধর্ষক নাইম হাসান। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেলে রেখে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। পরে ধর্ষিতার বাবা বাদি হয়ে অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে আড়াইহাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৬ (৪) ১২ইং। নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু মামলা নং- ৫/২০২০ইং। বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করে আদালত।

অভিযোগ রয়েছে, মামলা দায়েরের পর থেকে ধর্ষিতার পরিবারকে মামলা তুলে নিতে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছিল। এছাড়াও এ মামলায় যারা সাক্ষী দিয়েছে তাদেরকে বিভিন্নভাবে সময় শারীরিক নির্যাতন করা হয়। এছাড়াও জামিনে প্রতারণার আশ্রয়সহ বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য দিয়ে আদালতকে বিভ্রান্তি করার চেষ্টা করে কালক্ষেপণ করতে থাকে আসামি পক্ষ। এক পর্যায়ে উচ্চআদালতে মামলার কার্যক্রম ফের স্থগিতের আবেদন করলে গত সপ্তাহে চেম্বার জজ তা খারিজ করে দেন।