টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামে সবকটি নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। টানা চতুর্থ দফা বন্যায় গত দু’দিনে জেলার প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর আবাদি ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পরেছে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। সেই সঙ্গে চলছে তীব্র ভাঙন। বৃহস্পতিবার বিকেলে ধরলা নদীর পানি ব্রিজ পয়েন্টে ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এছাড়াও তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমরসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এই অবস্থা আরও ৩ থেকে ৪ দিন বিরাজ করবে বলে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস সূত্র জানিয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা নদীর পানি ১৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া ব্রিজ পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারীতে ২৮ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যার ফলে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোগলবাসা, যাত্রাপুরের নুরানী মাদ্রাসাপাড়া ও হলোখানা ইউনিয়নের সারডোরে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙছে উলিপুরের বজরা, থেতরাই এবং নাগেশ্বরীর কালিগঞ্জ ও কচাকাটায়। তীব্র ¯্রােতে রৌমারীর কর্তীমারী, খেদাইমারী ও চর রাজিবপুরের কোদালকাটি এবং মোহনগঞ্জে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। বন্যায় ডুবে গেছে গ্রামীণ সড়কও।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল কুমার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রামে ১২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এই অবস্থা আরও তিন-চারদিন বিরাজ করবে বলে তিনি জানান।
কুড়িগ্রাম ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, ধরলা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে খোঁজ-খবর রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়াও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ২টি ইউনিয়নের ৮টি ওয়ার্ড পানিবন্দী হয়েছে।
কুড়িগ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, উজানে অতিবৃষ্টির কারণে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কুড়িগ্রামের মানুষ চতুর্থদফা বন্যার কবলে পরেছে। বিভিন্ন জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমরা খোঁজ খবর রাখছি। এই মুহূর্তে তীব্র স্র্রোতের কারণে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি অনুকূলে আসলেই উর্ধতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ভাঙন ঠেকাতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অপরদিকে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজার রহমান জানান, গত দু’দিনে নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে ২ হাজার ১০৪ হেক্টর ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। এরমধ্যে আমন ১৮৪০ হেক্টর, মাসকালাই ১২৭ হেক্টর, শাকসবজি ১২৭ হেক্টর ও বাদাম ১০ হেক্টর।
শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৯ মহররম ১৪৪২, ০১ আশ্বিন ১৪২৭
হুমায়ুন কবির সূর্য, কুড়িগ্রাম
টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুড়িগ্রামে সবকটি নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। টানা চতুর্থ দফা বন্যায় গত দু’দিনে জেলার প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর আবাদি ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পরেছে প্রায় ৪০ হাজার মানুষ। সেই সঙ্গে চলছে তীব্র ভাঙন। বৃহস্পতিবার বিকেলে ধরলা নদীর পানি ব্রিজ পয়েন্টে ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এছাড়াও তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমরসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানিও বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এই অবস্থা আরও ৩ থেকে ৪ দিন বিরাজ করবে বলে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস সূত্র জানিয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলা নদীর পানি ১৫ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া ব্রিজ পয়েন্টে বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারীতে ২৮ সেন্টিমিটার ও নুনখাওয়া পয়েন্টে ৬০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বন্যার ফলে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মোগলবাসা, যাত্রাপুরের নুরানী মাদ্রাসাপাড়া ও হলোখানা ইউনিয়নের সারডোরে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙছে উলিপুরের বজরা, থেতরাই এবং নাগেশ্বরীর কালিগঞ্জ ও কচাকাটায়। তীব্র ¯্রােতে রৌমারীর কর্তীমারী, খেদাইমারী ও চর রাজিবপুরের কোদালকাটি এবং মোহনগঞ্জে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। বন্যায় ডুবে গেছে গ্রামীণ সড়কও।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল কুমার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রামে ১২৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এই অবস্থা আরও তিন-চারদিন বিরাজ করবে বলে তিনি জানান।
কুড়িগ্রাম ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার জানান, ধরলা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে খোঁজ-খবর রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়াও ভুরুঙ্গামারী উপজেলার ২টি ইউনিয়নের ৮টি ওয়ার্ড পানিবন্দী হয়েছে।
কুড়িগ্রামের পানি উন্নয়ন বোর্ডে নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, উজানে অতিবৃষ্টির কারণে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। কুড়িগ্রামের মানুষ চতুর্থদফা বন্যার কবলে পরেছে। বিভিন্ন জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। আমরা খোঁজ খবর রাখছি। এই মুহূর্তে তীব্র স্র্রোতের কারণে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি অনুকূলে আসলেই উর্ধতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ভাঙন ঠেকাতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অপরদিকে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজার রহমান জানান, গত দু’দিনে নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধির ফলে ২ হাজার ১০৪ হেক্টর ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। এরমধ্যে আমন ১৮৪০ হেক্টর, মাসকালাই ১২৭ হেক্টর, শাকসবজি ১২৭ হেক্টর ও বাদাম ১০ হেক্টর।