শরণখোলায় এডিপির প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়মের অভিযোগ

বাগেরহাটের শরণখোলায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিসহ (এডিপি) উপজেলা উন্নয়ন তহবিলের কাজে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার চারটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সংশ্লিষ্টরা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে সরকারি অর্থ লোপাটের এক প্রকার প্রতিযোগিতা করেছেন। গৃহীত প্রকল্পগুলো ৩০শে জুন ২০২০ সালের মধ্যে দৃশ্যমান করার কথা থাকলেও কিছু প্রকল্প এখনও চলমান। কোথাও আবার সামান্য কাজ করে প্রকল্প সমাপ্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দরপত্রসহ রেজুলেশনের মাধ্যমে ৩৯টি প্যাকেজে শতাধিক প্রকল্পের অনুকূলে ১ কোটি ৩৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ওই সকল প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এক শ্রেণীর অসাধু ঠিকাদার চক্রের যোগসাজশে বিভিন্ন এলাকার রাস্থা নির্মাণ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও পুল সংস্কারসহ নানা প্রকল্পের প্রায় ৫০ ভাগ টাকা দুর্বল তদারকির কারণে আত্মসাত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের কর্তা ব্যক্তিদের তুষ্ট করে সরকারের লাখ লাখ টাকা নয় ছয় করেছেন ঠিকাদার গ্রুপ। সরেজমিনে, দেখা যায় উপজেলার রাজাপুর গোবিন্দ মন্দিরে লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলেও সেখানে সামান্য ইটের গাথুনী দিয়ে এক প্রকার দ্বায় সেরেছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ । এছাড়া দুই লাখ টাকা ব্যায়ে তাফাবাড়ির বড়ই তলা এলাকার ফারুকের বাড়ির সামনের পুল , উত্তর তাফালবাড়ির তুলা তলার পুল , একই এলাকার কালাম মাস্টার বাড়ি সংলগ্ন পুল, উত্তর আমড়া গাছিয়া তোফাজ্জেল হাওলাদার বাড়ির পুল, ধান সাগরের আমীর আলী আকন বাড়ির পুল, খেজুর বাড়িয়া এলাকার কাদের শরীফের বাড়ির সামনের খালে পুল, মধ্য খোন্তাকাটার হাসেম মুন্সী বাড়ির সামনের খালের পুলসহ কয়েকটি পুলে কিছু স্লিপার ও কাঠের তক্তা লাগিয়ে দ্বায় সেরেছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া দুই লাখ টাকায় উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের খাদা এজিম দাখিল মাদ্রাসা সংলগ্ন একটি রাস্থা সংস্কারে কিছু নিম্নমানের ইট ব্যবহার করে। অধিকাংশ অর্থই হজম করেছেন ঠিকাদার। এ বিষয়ে ওই এলাকার দু -জন বাসিন্দা বলেন , দেখেছি কিছু দিন আগে কয়েক শ লোকাল ইট দিয়ে রাস্থাটির মাঝে মাঝে একটু খোঁজ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রাস্থাটি আবার পুর্বের চেহারায় ফিরে গেছে । এছাড়া নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক একই এলাকার এক মুরাব্বি বলেন , এই সব প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে কি না তা দেখার জন্য যাদের তদারকির দায়িত্ব থাকে তারা উধাসীন থাকায় প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে চরম দুর্নীতি হয়। তাছাড়া এখন ঘুষ দিলে সব কিছুই সম্ভব। কারও কোন জবাবদিহিতা না থাকায় জনসাধারণ সরকারের নানামুখী উন্নয়নের তেমন কোন সুফল ভোগ করতে পারেন না। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মো. আশিক ইয়ামিন বলেন , কোন প্রকল্পে অনিয়ম হলে তা বরদাস্থ করা হবে না । এছাড়া এ বিষয় খোঁজ খবর নিয়ে অনিয়মের সাথে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, কোন প্রকল্পের অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেলে বিধিগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ২৯ মহররম ১৪৪২, ০১ আশ্বিন ১৪২৭

শরণখোলায় এডিপির প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়মের অভিযোগ

প্রতিনিধি, শরণখোলা (বাগেরহাট)

বাগেরহাটের শরণখোলায় বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিসহ (এডিপি) উপজেলা উন্নয়ন তহবিলের কাজে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার চারটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে সংশ্লিষ্টরা নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে সরকারি অর্থ লোপাটের এক প্রকার প্রতিযোগিতা করেছেন। গৃহীত প্রকল্পগুলো ৩০শে জুন ২০২০ সালের মধ্যে দৃশ্যমান করার কথা থাকলেও কিছু প্রকল্প এখনও চলমান। কোথাও আবার সামান্য কাজ করে প্রকল্প সমাপ্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দরপত্রসহ রেজুলেশনের মাধ্যমে ৩৯টি প্যাকেজে শতাধিক প্রকল্পের অনুকূলে ১ কোটি ৩৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ওই সকল প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এক শ্রেণীর অসাধু ঠিকাদার চক্রের যোগসাজশে বিভিন্ন এলাকার রাস্থা নির্মাণ, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও পুল সংস্কারসহ নানা প্রকল্পের প্রায় ৫০ ভাগ টাকা দুর্বল তদারকির কারণে আত্মসাত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের কর্তা ব্যক্তিদের তুষ্ট করে সরকারের লাখ লাখ টাকা নয় ছয় করেছেন ঠিকাদার গ্রুপ। সরেজমিনে, দেখা যায় উপজেলার রাজাপুর গোবিন্দ মন্দিরে লাখ টাকা বরাদ্দ থাকলেও সেখানে সামান্য ইটের গাথুনী দিয়ে এক প্রকার দ্বায় সেরেছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ । এছাড়া দুই লাখ টাকা ব্যায়ে তাফাবাড়ির বড়ই তলা এলাকার ফারুকের বাড়ির সামনের পুল , উত্তর তাফালবাড়ির তুলা তলার পুল , একই এলাকার কালাম মাস্টার বাড়ি সংলগ্ন পুল, উত্তর আমড়া গাছিয়া তোফাজ্জেল হাওলাদার বাড়ির পুল, ধান সাগরের আমীর আলী আকন বাড়ির পুল, খেজুর বাড়িয়া এলাকার কাদের শরীফের বাড়ির সামনের খালে পুল, মধ্য খোন্তাকাটার হাসেম মুন্সী বাড়ির সামনের খালের পুলসহ কয়েকটি পুলে কিছু স্লিপার ও কাঠের তক্তা লাগিয়ে দ্বায় সেরেছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া দুই লাখ টাকায় উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের খাদা এজিম দাখিল মাদ্রাসা সংলগ্ন একটি রাস্থা সংস্কারে কিছু নিম্নমানের ইট ব্যবহার করে। অধিকাংশ অর্থই হজম করেছেন ঠিকাদার। এ বিষয়ে ওই এলাকার দু -জন বাসিন্দা বলেন , দেখেছি কিছু দিন আগে কয়েক শ লোকাল ইট দিয়ে রাস্থাটির মাঝে মাঝে একটু খোঁজ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু রাস্থাটি আবার পুর্বের চেহারায় ফিরে গেছে । এছাড়া নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক একই এলাকার এক মুরাব্বি বলেন , এই সব প্রকল্পের কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে কি না তা দেখার জন্য যাদের তদারকির দায়িত্ব থাকে তারা উধাসীন থাকায় প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে চরম দুর্নীতি হয়। তাছাড়া এখন ঘুষ দিলে সব কিছুই সম্ভব। কারও কোন জবাবদিহিতা না থাকায় জনসাধারণ সরকারের নানামুখী উন্নয়নের তেমন কোন সুফল ভোগ করতে পারেন না। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মো. আশিক ইয়ামিন বলেন , কোন প্রকল্পে অনিয়ম হলে তা বরদাস্থ করা হবে না । এছাড়া এ বিষয় খোঁজ খবর নিয়ে অনিয়মের সাথে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, কোন প্রকল্পের অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া গেলে বিধিগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।