অষ্টগ্রামে বাঙ্গালপাড়া-চাতলপাড় ভাঙা রাস্তা ঠিক না করেই জামানত উত্তোলন

হাওড় উপজেলা অষ্টগ্রামে এলজিইডির নির্মিত বাঙ্গালপাড়া-চাতলপাড় রাস্তাটি ভাঙ্গা রেখেই গত মঙ্গলবার জামানতের এক কোটি ২৩ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন অষ্টগ্রাম উপজেলা প্রকৌশলী। উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০১৭ সালে কাজ শুরু করে অষ্টগ্রাম উপজেলার বাঙ্গালপাড়া হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চাতলপাড় পর্যন্ত সাড়ে ৭ কিলোমিটার রাস্তাটি নির্মাণে ব্যয় হয় ৪৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪টি সেতুও রয়েছে। গত ২৭ এপ্রিল ২০২০ রাস্তার কাজের জামানতের মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই রাস্তাটির বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার দু’পাশে সাইট ব্লক সরে যায়। আবার কোথাও রাস্তাটি গর্ত হতে থাকে। আবার কোথায় রাস্তাটির সেতুর দু’পাশেই বড় বড় গর্ত যে কোন সময় রাস্তাটি সংযোগ বিছিন্ন হয়ে যেতে পারে। এমন অবস্থায় উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি অবৈধ মুনাফা পেয়ে জামানতের টাকা ফেরত দিয়েছেন। এ নিয়ে এলাকার লোকজনের মাঝে বিভিন্ন প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে। এদিকে এলাকাবাসী জানায়, রথানী, নাজিরপুর ও লাউড়া গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তাটি যে কোন সময় ভেঙ্গে গিয়ে অষ্টগ্রাম-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রোডটির অস্তিত্ব বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে বাংগালপাড়াÑচাতলপাড় সড়কে গেলে বাংগালপাড়ার শান্তিপুর গ্রামের কাছে অবস্থিত সেতুর দুই পাশেই ভেঙ্গে গিয়ে বড় বড় গর্ত হয়ে যে কোন সময় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও রথানী গ্রামের সামনে ব্লক সরে গিয়ে হুমকির মুখে রাস্তাটি, নাজিরপুর গ্রামে সামনের মোড়ে সাইড ব্লক ভেঙ্গে গিয়ে রাস্তাটি ভাঙতে শুরু করেছে। নাজিরপুর গ্রামের সামনের রাস্তাটি তৈরির পরপর সাইড ব্লক সরে গিয়ে মারাত্মক হুমকিতে রয়েছে। এলাকাবাসী জানান, আগে রাস্তা দেখার জন্য অষ্টগ্রাম অফিস থেকে অফিসারেরা আসত এখন আর তাদের কাউকে দেখা যায় না। এ বিষয়ে উপজেলা এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. কাজী ফারুক হোসেন জানান, জামানত দেয়া হয়েছে নিয়মের মধ্যে। ভাঙ্গা রাস্তা রেখে কিভাবে জামানতের টাকা দেয়ার বিষয়ে স্বাক্ষর করেছেন এমন প্রশ্নের সঙ্গে সঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেন। উপজেলা প্রকৌশলী মো. আমিনুল ইসলাম মৃধা বলেন, বিধি অনুযায়ী ঠিকাদারকে জামানতের টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কোন অনিয়ম করা হয়নি। তিনি আরও বলেন, জামানতের টাকা দিতে গিয়ে উৎকোচ গ্রহণ করার প্রমাণ পেলে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী কে এম আমিরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, ঠিকাদারের জামানতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর গত জুন মাসে রাস্তা ভেঙ্গে যায়। এটা ভেবেই উপজেলা প্রকৌশলী জামানতের টাকা ফেরত দেয়ার প্রস্তাব করেছেন। এ বিষয়টি তদন্তের জন্য অফিসের লোকজনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, রাস্তাটি ঠিকঠাক করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার লিখিত দেয়া হয়েছে। রাস্তাটি ঠিকঠাক না করে থাকলে জামানতের টাকা তোলার সুযোগ নেই।

রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ৩০ মহররম ১৪৪২, ০২ আশ্বিন ১৪২৭

অষ্টগ্রামে বাঙ্গালপাড়া-চাতলপাড় ভাঙা রাস্তা ঠিক না করেই জামানত উত্তোলন

প্রতিনিধি, অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ)

image

হাওড় উপজেলা অষ্টগ্রামে এলজিইডির নির্মিত বাঙ্গালপাড়া-চাতলপাড় রাস্তাটি ভাঙ্গা রেখেই গত মঙ্গলবার জামানতের এক কোটি ২৩ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছেন অষ্টগ্রাম উপজেলা প্রকৌশলী। উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০১৭ সালে কাজ শুরু করে অষ্টগ্রাম উপজেলার বাঙ্গালপাড়া হয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চাতলপাড় পর্যন্ত সাড়ে ৭ কিলোমিটার রাস্তাটি নির্মাণে ব্যয় হয় ৪৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪টি সেতুও রয়েছে। গত ২৭ এপ্রিল ২০২০ রাস্তার কাজের জামানতের মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই রাস্তাটির বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার দু’পাশে সাইট ব্লক সরে যায়। আবার কোথাও রাস্তাটি গর্ত হতে থাকে। আবার কোথায় রাস্তাটির সেতুর দু’পাশেই বড় বড় গর্ত যে কোন সময় রাস্তাটি সংযোগ বিছিন্ন হয়ে যেতে পারে। এমন অবস্থায় উপজেলা প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি অবৈধ মুনাফা পেয়ে জামানতের টাকা ফেরত দিয়েছেন। এ নিয়ে এলাকার লোকজনের মাঝে বিভিন্ন প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে। এদিকে এলাকাবাসী জানায়, রথানী, নাজিরপুর ও লাউড়া গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তাটি যে কোন সময় ভেঙ্গে গিয়ে অষ্টগ্রাম-ব্রাহ্মণবাড়িয়া রোডটির অস্তিত্ব বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে বাংগালপাড়াÑচাতলপাড় সড়কে গেলে বাংগালপাড়ার শান্তিপুর গ্রামের কাছে অবস্থিত সেতুর দুই পাশেই ভেঙ্গে গিয়ে বড় বড় গর্ত হয়ে যে কোন সময় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও রথানী গ্রামের সামনে ব্লক সরে গিয়ে হুমকির মুখে রাস্তাটি, নাজিরপুর গ্রামে সামনের মোড়ে সাইড ব্লক ভেঙ্গে গিয়ে রাস্তাটি ভাঙতে শুরু করেছে। নাজিরপুর গ্রামের সামনের রাস্তাটি তৈরির পরপর সাইড ব্লক সরে গিয়ে মারাত্মক হুমকিতে রয়েছে। এলাকাবাসী জানান, আগে রাস্তা দেখার জন্য অষ্টগ্রাম অফিস থেকে অফিসারেরা আসত এখন আর তাদের কাউকে দেখা যায় না। এ বিষয়ে উপজেলা এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. কাজী ফারুক হোসেন জানান, জামানত দেয়া হয়েছে নিয়মের মধ্যে। ভাঙ্গা রাস্তা রেখে কিভাবে জামানতের টাকা দেয়ার বিষয়ে স্বাক্ষর করেছেন এমন প্রশ্নের সঙ্গে সঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলেন। উপজেলা প্রকৌশলী মো. আমিনুল ইসলাম মৃধা বলেন, বিধি অনুযায়ী ঠিকাদারকে জামানতের টাকা ফেরত দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে কোন অনিয়ম করা হয়নি। তিনি আরও বলেন, জামানতের টাকা দিতে গিয়ে উৎকোচ গ্রহণ করার প্রমাণ পেলে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী কে এম আমিরুজ্জামান সাংবাদিকদের জানান, ঠিকাদারের জামানতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর গত জুন মাসে রাস্তা ভেঙ্গে যায়। এটা ভেবেই উপজেলা প্রকৌশলী জামানতের টাকা ফেরত দেয়ার প্রস্তাব করেছেন। এ বিষয়টি তদন্তের জন্য অফিসের লোকজনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, রাস্তাটি ঠিকঠাক করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার লিখিত দেয়া হয়েছে। রাস্তাটি ঠিকঠাক না করে থাকলে জামানতের টাকা তোলার সুযোগ নেই।