ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে টানা পাঁচ দিন অপেক্ষার পর অবশেষে সাতক্ষীরার ভোমরা, দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরসহ অন্যান্য বন্দর দিয়ে পিয়াজবাহী ট্রাকগুলো বাংলাদেশে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। ভোমরা বন্দর দিয়ে প্রায় ৩০০টি ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। পাঁচদিন পিয়াজবোঝাই ট্রাক আটকে থাকার কারণে অধিকাংশ পিয়াজে পচন ধরতে শুরু করেছে। তবে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে কোন পিয়াজবাহী ট্রাক গতকাল বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি। আজ বেনাপোল বন্দর দিয়ে আরও কিছু ট্রাক প্রবেশ করবে। ভোমরা, হিলি ও বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এদিকে দেশের খুচরা বাজারেও পিয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
ভোমরা স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ভারতের ঘোজাডাঙ্গা বন্দর থেকে ভোমরা বন্দরে পিয়াজের ট্রাক প্রবেশ করতে শুরু করে। ট্রাক প্রবেশের পর শ্রমিকদের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম বলেন, ‘করোনাকালীন ৯০ দিন বন্ধ থাকায় আমরা এমনিতে ক্ষতির শিকার হয়েছি। তার ওপর ৫ দিন পিয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় আরও ক্ষতির শিকার হই। শেষ পর্যন্ত ভারতীয় পিয়াজ ঢুকতে শুরু করেছে এটাই আমাদের স্বস্তি।’
গত ১৪ সেপ্টেম্বর কোন প্রকার পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ভারত সরকার পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ায় ভারতের ঘোজাডাঙ্গা বন্দরে বাংলাদেশে আমদানিমুখী প্রায় ৩০০ পিয়াজবোঝাই ট্রাক আটকা পড়ে। এরই মধ্যে ওই পিয়াজে পচন ধরতে শুরু করেছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। আমদানিকারক মাকসুদ খান চৌধুরী বলেন, আমার পাঁচ ট্রাক পিয়াজ ঘোজাডাঙা থেকে ফেরত চলে গেছে। এতে আমার অনেক ক্ষতি হয়েছে।’ ওই ৩০০ ট্রাক পিয়াজ ভোমরা বন্দরে ঢুকতে শুরু করলে সংশ্লিষ্টরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন।
হিলি স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, গতকাল সাড়ে ৩টার দিকে ভারত অভ্যন্তর থেকে জিরো পয়েন্ট গেইট অতিক্রম করে হিলি বন্দরে গাড়িগুলো প্রবেশ করে। পিয়াজ আমদানির খবরে বন্দর এলাকায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ব্যবসায়ীরা ভিড় করে। তবে পিয়াজের গুণগত মান নিয়ে দুশ্চিন্তায় আমদানিকারকরা। অনেকে আশঙ্কা করছেন প্রায় ৫ দিন ট্রাক লোড হয়ে থাকার কারণে অধিকাংশ পিয়াজে পচন ধরেছে।
হিলি পানামা পোর্ট জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাপ মল্লিক বলেন, ‘গত সোমবার কোন কারণ ছাড়াই পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে ভারত সরকার। ফলে আগের এলসি করা শত শত পিয়াজ বোঝাই ট্রাক ভারতের অভ্যন্তরে আটকা পড়ে। দুই দেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে গতকাল বিকেলে পিয়াজ বোঝাই ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। পিয়াজের গুণগতমান নষ্ট হয়েছে। দেশের বাজার স্বাভাবিক রাখতে বন্দরে আসা পিয়াজ দ্রুত ছাড়করণ করার ব্যবস্থা করছি যেন ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
অপরদিকে যশোরের বেনাপোল বন্দরে ভারতীয় পিয়াজবাহী ট্রাক প্রবেশের কথা থাকলেও তা প্রবেশ করেনি। ভারতের পেট্রাপোল বন্দর থেকে লিও পারমিশন (আউট পাস) না পাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে বন্দর সূত্রে জানা গেছে। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে আটকে থাকা পিয়াজের ট্রাকগুলো ভারতের সংশ্লিষ্ট রপ্তানিকারকরা পচন ধরার ভয়ে কলকাতার বিভিন্ন বাজারে সরিয়ে নিয়ে গেছে। সেখান থেকে বর্ডারে আসতে কিছুটা সময় লাগছে। আমরা আশা করছি, আজ সকাল থেকে আগের মতো এ বন্দরে পিয়াজ আমদানি হবে।
রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ৩০ মহররম ১৪৪২, ০২ আশ্বিন ১৪২৭
ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞার কারণে টানা পাঁচ দিন অপেক্ষার পর অবশেষে সাতক্ষীরার ভোমরা, দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরসহ অন্যান্য বন্দর দিয়ে পিয়াজবাহী ট্রাকগুলো বাংলাদেশে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। ভোমরা বন্দর দিয়ে প্রায় ৩০০টি ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। পাঁচদিন পিয়াজবোঝাই ট্রাক আটকে থাকার কারণে অধিকাংশ পিয়াজে পচন ধরতে শুরু করেছে। তবে যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে কোন পিয়াজবাহী ট্রাক গতকাল বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি। আজ বেনাপোল বন্দর দিয়ে আরও কিছু ট্রাক প্রবেশ করবে। ভোমরা, হিলি ও বেনাপোল স্থলবন্দর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এদিকে দেশের খুচরা বাজারেও পিয়াজের দাম কমতে শুরু করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
ভোমরা স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ভারতের ঘোজাডাঙ্গা বন্দর থেকে ভোমরা বন্দরে পিয়াজের ট্রাক প্রবেশ করতে শুরু করে। ট্রাক প্রবেশের পর শ্রমিকদের মধ্যে কর্মচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম বলেন, ‘করোনাকালীন ৯০ দিন বন্ধ থাকায় আমরা এমনিতে ক্ষতির শিকার হয়েছি। তার ওপর ৫ দিন পিয়াজ আমদানি বন্ধ থাকায় আরও ক্ষতির শিকার হই। শেষ পর্যন্ত ভারতীয় পিয়াজ ঢুকতে শুরু করেছে এটাই আমাদের স্বস্তি।’
গত ১৪ সেপ্টেম্বর কোন প্রকার পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ভারত সরকার পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ায় ভারতের ঘোজাডাঙ্গা বন্দরে বাংলাদেশে আমদানিমুখী প্রায় ৩০০ পিয়াজবোঝাই ট্রাক আটকা পড়ে। এরই মধ্যে ওই পিয়াজে পচন ধরতে শুরু করেছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। আমদানিকারক মাকসুদ খান চৌধুরী বলেন, আমার পাঁচ ট্রাক পিয়াজ ঘোজাডাঙা থেকে ফেরত চলে গেছে। এতে আমার অনেক ক্ষতি হয়েছে।’ ওই ৩০০ ট্রাক পিয়াজ ভোমরা বন্দরে ঢুকতে শুরু করলে সংশ্লিষ্টরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন।
হিলি স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, গতকাল সাড়ে ৩টার দিকে ভারত অভ্যন্তর থেকে জিরো পয়েন্ট গেইট অতিক্রম করে হিলি বন্দরে গাড়িগুলো প্রবেশ করে। পিয়াজ আমদানির খবরে বন্দর এলাকায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ব্যবসায়ীরা ভিড় করে। তবে পিয়াজের গুণগত মান নিয়ে দুশ্চিন্তায় আমদানিকারকরা। অনেকে আশঙ্কা করছেন প্রায় ৫ দিন ট্রাক লোড হয়ে থাকার কারণে অধিকাংশ পিয়াজে পচন ধরেছে।
হিলি পানামা পোর্ট জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন প্রতাপ মল্লিক বলেন, ‘গত সোমবার কোন কারণ ছাড়াই পিয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করে ভারত সরকার। ফলে আগের এলসি করা শত শত পিয়াজ বোঝাই ট্রাক ভারতের অভ্যন্তরে আটকা পড়ে। দুই দেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে গতকাল বিকেলে পিয়াজ বোঝাই ট্রাক বন্দরে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। পিয়াজের গুণগতমান নষ্ট হয়েছে। দেশের বাজার স্বাভাবিক রাখতে বন্দরে আসা পিয়াজ দ্রুত ছাড়করণ করার ব্যবস্থা করছি যেন ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
অপরদিকে যশোরের বেনাপোল বন্দরে ভারতীয় পিয়াজবাহী ট্রাক প্রবেশের কথা থাকলেও তা প্রবেশ করেনি। ভারতের পেট্রাপোল বন্দর থেকে লিও পারমিশন (আউট পাস) না পাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে বন্দর সূত্রে জানা গেছে। বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে আটকে থাকা পিয়াজের ট্রাকগুলো ভারতের সংশ্লিষ্ট রপ্তানিকারকরা পচন ধরার ভয়ে কলকাতার বিভিন্ন বাজারে সরিয়ে নিয়ে গেছে। সেখান থেকে বর্ডারে আসতে কিছুটা সময় লাগছে। আমরা আশা করছি, আজ সকাল থেকে আগের মতো এ বন্দরে পিয়াজ আমদানি হবে।