সীমান্ত হত্যা বন্ধে বিএসএফের ফের প্রতিশ্রুতি

বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতীয় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সেস (বিএসএফ)-এর মহাপরিচালক পর্যায়ের এবারের সম্মেলনেও সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিএসএফ। গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া ৪ দিনের সীমান্ত সম্মেলন গতকাল যৌথ দলিল স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। এবারের সম্মেলনে নতুন ইস্যু ছিল ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে বিএসএফের মানসিক ভারসাম্যহীন ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে পুশইন বন্ধ করা। বিজিবি থেকে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া চোরাচালান, মাদকসহ যেকোন অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে যৌথ টহল জোরদার করা বেশ কিছু ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে উভয় বাহিনী বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিএসএফ মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানা বলেন, ‘আমরা বেশ কিছু বিষয়ে একমত হতে পেরেছি। সীমান্তে উভয় দেশের নিরস্ত্র নাগরিকদের হত্যা, আহত, মারধরের ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করব আমরা। করোনাকালীন সীমান্তবর্তী এলাকায় যৌথ টহল পরিচালনা বন্ধ থাকলেও টহল বৃদ্ধি, জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি এবং সীমান্তে অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে আমরা উভয় পক্ষ একমত হয়েছি। আমরা মনে করি, সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী নাগরিকদের মাঝে আন্তর্জাতিক সীমানা আইনে বিধি-বিধান সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারলে সীমান্তে আক্রমণ বা হামলা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব। বিএসএফ মহাপরিচালক বলেন, তবে আমি কোন হত্যাকাণ্ডকেই ন্যায্যতা দিচ্ছি না। আমি পুনরায় বলছি, আমরা এটাকে (সীমান্ত হত্যা) শূন্যে নামিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমি সম্প্রতি যোগদান করেছি এবং আগামীতে আপনারা এ বিষয়ে অগ্রগতি দেখতে পাবেন। বিএসএফ মহাপরিচালক বলেন, ‘সীমান্তে যেসব অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে তার ৭০ শতাংশ ক্রিমিনাল অ্যাক্টিভিটির জন্য হয়ে থাকে। আর সবগুলোই প্রায় রাত ১০টা থেকে সকাল ৭টার মধ্যে হয়। বাংলাদেশ আমাদের বন্ধু দেশ। এ দেশের সীমান্তের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। এসব অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে যে সব পদক্ষেপ নেয়া দরকার সেগুলো আমরা নেব। সীমান্ত ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক চোরাচালানের বিষয়ে বিএসএফ মহাপরিচালক বলেন, মাদক দুই দেশের সমস্যা। এ নিয়ে আমরা একসঙ্গে কাজ করব। আমাদের লক্ষ্য থাকবে সীমান্ত অতিক্রম করে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাতে মাদক চোরাচালান না ঘটে। বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, ‘বিএসএফের মহাপরিচালক আমাকে আশ্বাস দিয়েছন যে, তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন যাতে আমরা মানুষের প্রাণহানি এড়াতে পারি।’ বাংলাদেশি নাগরিকদের অবৈধভাবে ভারতের ভূখণ্ডে যাওয়া বিজিবির ব্যর্থতা কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, বাংলাদেশের সীমানা চার হাজার ৪২৭ কিলোমিটার। এরমধ্যে অনেক নদী, জলাভূমি, পাহাড় এবং সমভূমি রয়েছ। প্রতি পাঁচ কিলোমিটারে আমাদের সীমান্ত ফাঁড়ি রয়েছে। আমরা প্রযুক্তির সহায়তায় সীমান্ত রক্ষার চেষ্টা করছি।’

বিজিবি সদর দফতর থেকে জানানো হয়, বিএসএফ মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানার নেতৃত্বে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের প্রতিনিধিসহ ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫০তম সীমান্ত ঢাকায় সম্মেলন অংশগ্রহণ করেন। অপরদিকে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।

সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্যে বিজিবি মহাপরিচালক উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও চমৎকার সহযোগিতায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং এই সুসম্পর্ক ও পারস্পরিক সহযোগিতা ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বিএসএফ মহাপরিচালক তাকে এবং ভারতীয় প্রতিনিধি দলকে উষ্ণ অভ্যর্থনা ও আন্তরিক আতিথেয়তার জন্য বিজিবি মহাপরিচালকের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি সীমান্তে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিজিবি ও বিএসএফের যৌথ কার্যক্রমে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (সিবিএমপি) কার্যকরভাবে বজায় রাখার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। উভয়পক্ষ বিদ্যমান পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট ও আস্থা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণে সম্মত হয়েছেন। বিজিবি ও বিএসএফ উভয় মহাপরিচালক সম্মেলনের ফলপ্রসূ আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। উভয়েই সীমান্তে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখতে যৌথভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন উভয়পক্ষ মহাপরিচালক পর্যায়ের পরবর্তী ৫১তম সীমান্ত সম্মেলন আগামী নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভারতের গৌহাটিতে অনুষ্ঠানের ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন।

এবারে সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো হলো- সীমান্তে উভয় দেশের নিরস্ত্র নাগরিকদের হত্যা-আহত এবং মারধরের ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তবর্তী এলাকায় যৌথ টহল পরিচালনা বৃদ্ধি, জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি আরও বেগবান করা এবং প্রয়োজন মাফিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহণসহ সীমান্তে অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে উভয় পক্ষই সম্মত হয়েছেন। ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তে যৌথ টহল পরিচালনাসহ সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ এবং সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী নাগরিকদের মাঝে আন্তর্জাতিক সীমানা আইনের বিধিবিধান সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে সীমান্তে আক্রমণ/হামলার ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে উভয় পক্ষই সম্মত হয়েছেন। সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা- সিবিএমপি এর ওপর গুরুত্বারোপ করে বিভিন্ন ধরনের আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমনের লক্ষ্যে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে সিবিএমপি বাস্তবায়নে এবং উভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী উপকৃত হবে এমন তাৎক্ষণিক ও দরকারি তথ্য বিশেষ করে অধিকতর তদন্তের জন্য আগ্নেয়াস্ত্র চোরাকারবারিদের ডিজিটাল ফটোগ্রাফ উভয় বাহিনীর মধ্যে শেয়ার করতে উভয়পক্ষই সম্মত হয়েছে। উভয় পক্ষই সীমান্ত অপরাধ দমনে এবং আন্তর্জাতিক সীমানার অলঙ্ঘনীয়তা বজায় রাখতে সীমান্তে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করার আশ্বাস দিয়েছেন। মানব পাচার ও অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক সীমানা অতিক্রম করা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে উভয়পক্ষ সম্মত হন। উভয় মহাপরিচালক যার যার দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী মানবপাচারে ক্ষতিগ্রস্তদের যত দ্রুত সম্ভব তাদের উদ্ধার ও পুনর্বাসনের সুবিধার্থে সহায়তা করতেও সম্মত হয়েছেন। উভয়পক্ষই আন্তর্জাতিক সীমানার কাঁটাতারের বেড়া কেটে অপসারণ করা বা বেড়ার ক্ষয়ক্ষতি রোধে যৌথ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে এবং নিয়মিত যৌথ টহল পরিচালনা চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছেন। উভয়পক্ষই অবৈধভাবে সীমানা অতিক্রম/সীমানা লঙ্ঘন করা থেকে সীমান্তবর্তী জনসাধারণকে বিরত রাখতে সম্মত হয়েছে এবং একই সঙ্গে উভয় বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে সীমান্তের অলঙ্ঘনীয়তা বজায় রাখার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন।

বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের অনুপ্রবেশ, বিএসএফ কর্তৃক জোরপূর্বক পুশ-ইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিজিবি। মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের জাতীয়তা যাচাই করতে এবং একে অপরের সহযোগিতায় তাদের হস্তান্তর/গ্রহণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে উভয়পক্ষই সম্মত হয়েছেন। উভয়পক্ষই পূর্ব অনুমোদন ছাড়া ১৫০ গজের মধ্যে কোন ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ না করার বিষয়ে পারস্পরিক সম্মতি জ্ঞাপন করেছে। উভয়পক্ষই বন্ধ থাকা অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজগুলো যত দ্রুত সম্ভব সমাধানের ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন। যৌথ নদী কমিশনের অনুমোদন অনুযায়ী সীমান্ত নদীর তীর সংরক্ষণে সহায়তা প্রদান এবং অননুমোদিতভাবে অভিন্ন সীমান্ত নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ না করতে উভয়পক্ষই সম্মত হয়েছেন। উভয়পক্ষই বিদ্যমান নীতিমালা অনুসরণ করে বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ী ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট ও রিট্রিট সেরিমনি উপলক্ষে দর্শক গ্যালারি নির্মাণে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছেন। বিএসএফ মহাপরিচালক সন্দেহভাজন ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিজিবি ও বাংলাদেশের অন্যান্য বাহিনীর গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সম্ভাব্য অবস্থান ধ্বংস করতে বিজিবি’র অব্যাহত সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। বিজিবি মহাপরিচালক আশ্বস্ত করেন যে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর কোন ক্যাম্প/আস্তানা নেই। বিজিবি মহাপরিচালক আরও বলেন যে, বাংলাদেশ কখনও তার ভূমি কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বা অন্য কোন রাষ্ট্রের বিশেষ করে ভারতের কোন শত্রুপক্ষকে ব্যবহারের সুযোগ দেয়নি এবং ভবিষ্যতেও দিবে না। তিনি এ ব্যাপারে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস প্রদান করেন।

বিএসএফ মহাপরিচালক বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে নতুন ডিজাইনের একসারি বিশিষ্ট কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের বিষয়ে পয়েন্ট উত্থাপন করেন। এ প্রেক্ষিতে বিজিবি মহাপরিচালক জানান যে, নতুন ডিজাইনের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ না করার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যেই জানিয়ে দেয়া হয়েছে। উভয়পক্ষ সীমান্তে অস্ত্র, গোলাবারুদ, বিস্ফোরক দ্রব্য, মাদক, স্বর্ণ এবং জালমুদ্রা পাচার প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সম্মত হয়েছেন। সীমান্তে চোরাচালানী দ্রব্যসহ আটক ব্যক্তিদের সম্পর্কে তাৎক্ষণিক তথ্য এবং উভয় বাহিনীর প্রয়োজন অনুযায়ী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের প্রতিবেদন বিনিময়ের বিষয়ে উভয়পক্ষ সম্মত হয়েছেন। বিজিবি মহাপরিচালক বিএসএফ মহাপরিচালককে আসন্ন পার্বত্য চট্টগ্রাাম অঞ্চলে বিজিবি এয়ার উইংয়ের ২টি হেলিকপ্টারের অধিকতর ট্রেনিং ও অপারেশনাল ফ্লাইটের বিষয়ে অবহিত করেন এবং যেকোন ধরনের বিভ্রান্তি বা ভুল বুঝাবুঝি এড়াতে তাকে তার বাহিনীর প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত অবহিত করার অনুরোধ জানান। তিনি এও পুনর্ব্যক্ত করেন যে, এ ব্যাপারে বিজিবি কর্তৃক বিএসএফের মাঠ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কমান্ডারদের পূর্বেই অবগত করা হবে। বিএসএফ মহাপরিচালক বিজিবি থেকে এ সংক্রান্ত তথ্য প্রাপ্তির পরে স্থানীয় বিএসএফ ইউনিটকে এ বিষয়ে নির্দেশ প্রদানের আশ্বাস দেন।

আরও খবর
আ’লীগের সব পর্যায়ে কমিটিতে পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে : কাদের
বাংলাদেশের খাদ্য ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বে রোল মডেল খাদ্যমন্ত্রী
বিআরটিএতে গাড়ি রেজিস্ট্রেশনের মহোৎসব
বিআরটিএতে গাড়ি রেজিস্ট্রেশনের মহোৎসব
আ’লীগের প্রস্তাবিত কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
ঘর জমি কাজ হারিয়ে দিশেহারা মানুষ
যশোরে ৬টি অ্যাসেম্বল সেন্টার হচ্ছে
পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হামলা ও ছিনতাই অভিযোগ
বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় লড়াই করেন জিয়াউদ্দিন তারিক আলী
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী কুদ্দুস মোল্লার জীবন সংগ্রাম
নগরে অগ্নিদুর্ঘটনা সমাধানে সদিচ্ছার অভাব : বিআইপি
প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ৯ বছরে ৯ বিয়ে
দু’বোনকে হত্যা করা হয় ঘাতক রিফাত গ্রেফতার হত্যার কথা স্বীকার
হিলিতে ট্রেন লাইনচ্যুত

রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ৩০ মহররম ১৪৪২, ০২ আশ্বিন ১৪২৭

বিজিবি-বিএসএফ সম্মেলন শেষে যৌথ দলিলে স্বাক্ষর

সীমান্ত হত্যা বন্ধে বিএসএফের ফের প্রতিশ্রুতি

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

বর্ডারগার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এবং ভারতীয় বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সেস (বিএসএফ)-এর মহাপরিচালক পর্যায়ের এবারের সম্মেলনেও সীমান্ত হত্যা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিএসএফ। গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া ৪ দিনের সীমান্ত সম্মেলন গতকাল যৌথ দলিল স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে শেষ হয়। এবারের সম্মেলনে নতুন ইস্যু ছিল ভারতীয় সীমান্ত দিয়ে বিএসএফের মানসিক ভারসাম্যহীন ভারতীয় নাগরিকদের বাংলাদেশে পুশইন বন্ধ করা। বিজিবি থেকে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এছাড়া চোরাচালান, মাদকসহ যেকোন অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে যৌথ টহল জোরদার করা বেশ কিছু ইস্যুতে একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে উভয় বাহিনী বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিএসএফ মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানা বলেন, ‘আমরা বেশ কিছু বিষয়ে একমত হতে পেরেছি। সীমান্তে উভয় দেশের নিরস্ত্র নাগরিকদের হত্যা, আহত, মারধরের ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করব আমরা। করোনাকালীন সীমান্তবর্তী এলাকায় যৌথ টহল পরিচালনা বন্ধ থাকলেও টহল বৃদ্ধি, জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি এবং সীমান্তে অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে আমরা উভয় পক্ষ একমত হয়েছি। আমরা মনে করি, সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী নাগরিকদের মাঝে আন্তর্জাতিক সীমানা আইনে বিধি-বিধান সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারলে সীমান্তে আক্রমণ বা হামলা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব। বিএসএফ মহাপরিচালক বলেন, তবে আমি কোন হত্যাকাণ্ডকেই ন্যায্যতা দিচ্ছি না। আমি পুনরায় বলছি, আমরা এটাকে (সীমান্ত হত্যা) শূন্যে নামিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমি সম্প্রতি যোগদান করেছি এবং আগামীতে আপনারা এ বিষয়ে অগ্রগতি দেখতে পাবেন। বিএসএফ মহাপরিচালক বলেন, ‘সীমান্তে যেসব অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে তার ৭০ শতাংশ ক্রিমিনাল অ্যাক্টিভিটির জন্য হয়ে থাকে। আর সবগুলোই প্রায় রাত ১০টা থেকে সকাল ৭টার মধ্যে হয়। বাংলাদেশ আমাদের বন্ধু দেশ। এ দেশের সীমান্তের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। এসব অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে যে সব পদক্ষেপ নেয়া দরকার সেগুলো আমরা নেব। সীমান্ত ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক চোরাচালানের বিষয়ে বিএসএফ মহাপরিচালক বলেন, মাদক দুই দেশের সমস্যা। এ নিয়ে আমরা একসঙ্গে কাজ করব। আমাদের লক্ষ্য থাকবে সীমান্ত অতিক্রম করে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাতে মাদক চোরাচালান না ঘটে। বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, ‘বিএসএফের মহাপরিচালক আমাকে আশ্বাস দিয়েছন যে, তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন যাতে আমরা মানুষের প্রাণহানি এড়াতে পারি।’ বাংলাদেশি নাগরিকদের অবৈধভাবে ভারতের ভূখণ্ডে যাওয়া বিজিবির ব্যর্থতা কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, বাংলাদেশের সীমানা চার হাজার ৪২৭ কিলোমিটার। এরমধ্যে অনেক নদী, জলাভূমি, পাহাড় এবং সমভূমি রয়েছ। প্রতি পাঁচ কিলোমিটারে আমাদের সীমান্ত ফাঁড়ি রয়েছে। আমরা প্রযুক্তির সহায়তায় সীমান্ত রক্ষার চেষ্টা করছি।’

বিজিবি সদর দফতর থেকে জানানো হয়, বিএসএফ মহাপরিচালক রাকেশ আস্থানার নেতৃত্বে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের প্রতিনিধিসহ ৬ সদস্যের প্রতিনিধি দল বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫০তম সীমান্ত ঢাকায় সম্মেলন অংশগ্রহণ করেন। অপরদিকে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলামের নেতৃত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিসহ ১৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন।

সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্যে বিজিবি মহাপরিচালক উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ও চমৎকার সহযোগিতায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং এই সুসম্পর্ক ও পারস্পরিক সহযোগিতা ভবিষ্যতে আরও বৃদ্ধি পাবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন। বিএসএফ মহাপরিচালক তাকে এবং ভারতীয় প্রতিনিধি দলকে উষ্ণ অভ্যর্থনা ও আন্তরিক আতিথেয়তার জন্য বিজিবি মহাপরিচালকের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি সীমান্তে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বিজিবি ও বিএসএফের যৌথ কার্যক্রমে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (সিবিএমপি) কার্যকরভাবে বজায় রাখার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। উভয়পক্ষ বিদ্যমান পারস্পরিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক অটুট ও আস্থা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণে সম্মত হয়েছেন। বিজিবি ও বিএসএফ উভয় মহাপরিচালক সম্মেলনের ফলপ্রসূ আলোচনা ও সিদ্ধান্ত নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। উভয়েই সীমান্তে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বজায় রাখতে যৌথভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন উভয়পক্ষ মহাপরিচালক পর্যায়ের পরবর্তী ৫১তম সীমান্ত সম্মেলন আগামী নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভারতের গৌহাটিতে অনুষ্ঠানের ব্যাপারে একমত পোষণ করেছেন।

এবারে সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো হলো- সীমান্তে উভয় দেশের নিরস্ত্র নাগরিকদের হত্যা-আহত এবং মারধরের ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তবর্তী এলাকায় যৌথ টহল পরিচালনা বৃদ্ধি, জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি আরও বেগবান করা এবং প্রয়োজন মাফিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি গ্রহণসহ সীমান্তে অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে উভয় পক্ষই সম্মত হয়েছেন। ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তে যৌথ টহল পরিচালনাসহ সমন্বিত কার্যক্রম গ্রহণ এবং সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী নাগরিকদের মাঝে আন্তর্জাতিক সীমানা আইনের বিধিবিধান সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে সীমান্তে আক্রমণ/হামলার ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে উভয় পক্ষই সম্মত হয়েছেন। সমন্বিত সীমান্ত ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা- সিবিএমপি এর ওপর গুরুত্বারোপ করে বিভিন্ন ধরনের আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমনের লক্ষ্যে ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে সিবিএমপি বাস্তবায়নে এবং উভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী উপকৃত হবে এমন তাৎক্ষণিক ও দরকারি তথ্য বিশেষ করে অধিকতর তদন্তের জন্য আগ্নেয়াস্ত্র চোরাকারবারিদের ডিজিটাল ফটোগ্রাফ উভয় বাহিনীর মধ্যে শেয়ার করতে উভয়পক্ষই সম্মত হয়েছে। উভয় পক্ষই সীমান্ত অপরাধ দমনে এবং আন্তর্জাতিক সীমানার অলঙ্ঘনীয়তা বজায় রাখতে সীমান্তে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করার আশ্বাস দিয়েছেন। মানব পাচার ও অবৈধভাবে আন্তর্জাতিক সীমানা অতিক্রম করা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়ে উভয়পক্ষ সম্মত হন। উভয় মহাপরিচালক যার যার দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী মানবপাচারে ক্ষতিগ্রস্তদের যত দ্রুত সম্ভব তাদের উদ্ধার ও পুনর্বাসনের সুবিধার্থে সহায়তা করতেও সম্মত হয়েছেন। উভয়পক্ষই আন্তর্জাতিক সীমানার কাঁটাতারের বেড়া কেটে অপসারণ করা বা বেড়ার ক্ষয়ক্ষতি রোধে যৌথ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে এবং নিয়মিত যৌথ টহল পরিচালনা চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছেন। উভয়পক্ষই অবৈধভাবে সীমানা অতিক্রম/সীমানা লঙ্ঘন করা থেকে সীমান্তবর্তী জনসাধারণকে বিরত রাখতে সম্মত হয়েছে এবং একই সঙ্গে উভয় বাহিনীর সদস্যদের মাধ্যমে সীমান্তের অলঙ্ঘনীয়তা বজায় রাখার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছেন।

বিজিবির পক্ষ থেকে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের অনুপ্রবেশ, বিএসএফ কর্তৃক জোরপূর্বক পুশ-ইন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিজিবি। মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের জাতীয়তা যাচাই করতে এবং একে অপরের সহযোগিতায় তাদের হস্তান্তর/গ্রহণ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে উভয়পক্ষই সম্মত হয়েছেন। উভয়পক্ষই পূর্ব অনুমোদন ছাড়া ১৫০ গজের মধ্যে কোন ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ না করার বিষয়ে পারস্পরিক সম্মতি জ্ঞাপন করেছে। উভয়পক্ষই বন্ধ থাকা অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজগুলো যত দ্রুত সম্ভব সমাধানের ব্যাপারে সম্মত হয়েছেন। যৌথ নদী কমিশনের অনুমোদন অনুযায়ী সীমান্ত নদীর তীর সংরক্ষণে সহায়তা প্রদান এবং অননুমোদিতভাবে অভিন্ন সীমান্ত নদীর তীর সংরক্ষণ কাজ না করতে উভয়পক্ষই সম্মত হয়েছেন। উভয়পক্ষই বিদ্যমান নীতিমালা অনুসরণ করে বাংলাবান্ধা-ফুলবাড়ী ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট ও রিট্রিট সেরিমনি উপলক্ষে দর্শক গ্যালারি নির্মাণে সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছেন। বিএসএফ মহাপরিচালক সন্দেহভাজন ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিজিবি ও বাংলাদেশের অন্যান্য বাহিনীর গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সম্ভাব্য অবস্থান ধ্বংস করতে বিজিবি’র অব্যাহত সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। বিজিবি মহাপরিচালক আশ্বস্ত করেন যে, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর কোন ক্যাম্প/আস্তানা নেই। বিজিবি মহাপরিচালক আরও বলেন যে, বাংলাদেশ কখনও তার ভূমি কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বা অন্য কোন রাষ্ট্রের বিশেষ করে ভারতের কোন শত্রুপক্ষকে ব্যবহারের সুযোগ দেয়নি এবং ভবিষ্যতেও দিবে না। তিনি এ ব্যাপারে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস প্রদান করেন।

বিএসএফ মহাপরিচালক বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে নতুন ডিজাইনের একসারি বিশিষ্ট কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের বিষয়ে পয়েন্ট উত্থাপন করেন। এ প্রেক্ষিতে বিজিবি মহাপরিচালক জানান যে, নতুন ডিজাইনের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ না করার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত ইতোমধ্যেই জানিয়ে দেয়া হয়েছে। উভয়পক্ষ সীমান্তে অস্ত্র, গোলাবারুদ, বিস্ফোরক দ্রব্য, মাদক, স্বর্ণ এবং জালমুদ্রা পাচার প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সম্মত হয়েছেন। সীমান্তে চোরাচালানী দ্রব্যসহ আটক ব্যক্তিদের সম্পর্কে তাৎক্ষণিক তথ্য এবং উভয় বাহিনীর প্রয়োজন অনুযায়ী প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের প্রতিবেদন বিনিময়ের বিষয়ে উভয়পক্ষ সম্মত হয়েছেন। বিজিবি মহাপরিচালক বিএসএফ মহাপরিচালককে আসন্ন পার্বত্য চট্টগ্রাাম অঞ্চলে বিজিবি এয়ার উইংয়ের ২টি হেলিকপ্টারের অধিকতর ট্রেনিং ও অপারেশনাল ফ্লাইটের বিষয়ে অবহিত করেন এবং যেকোন ধরনের বিভ্রান্তি বা ভুল বুঝাবুঝি এড়াতে তাকে তার বাহিনীর প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত অবহিত করার অনুরোধ জানান। তিনি এও পুনর্ব্যক্ত করেন যে, এ ব্যাপারে বিজিবি কর্তৃক বিএসএফের মাঠ পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কমান্ডারদের পূর্বেই অবগত করা হবে। বিএসএফ মহাপরিচালক বিজিবি থেকে এ সংক্রান্ত তথ্য প্রাপ্তির পরে স্থানীয় বিএসএফ ইউনিটকে এ বিষয়ে নির্দেশ প্রদানের আশ্বাস দেন।