বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় লড়াই করেন জিয়াউদ্দিন তারিক আলী

দেশপ্রেমিক মানুষের দুষ্প্রাপ্যতা অসাম্প্রদায়িক স্বদেশ প্রতিষ্ঠার অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করবে। করোনার রাহুগ্রাসের মাঝে আমরা অনেক দেশপ্রেমিক গুণীজনকে হারিয়েছি। দীর্ঘ সময় থেকে দেশের রাজনীতিতে গণতন্ত্র, সংস্কৃতি ও সৃজনশীলতার চর্চা যথাযথ না হওয়ার ফলে সমাজে গ্রগতির চেতনার চিন্তকের সংখ্যা ক্ষীণতরের পথে। আমাদের অভিজ্ঞতা রাজনৈতিক কর্মকা-ের বাইরে সংস্কৃতি ও উদারতার চর্চার সমাজকর্মীরা দলে দলে মূলধারার রাজনীতিকে অগ্রসর করে নিতে উদ্যোগী হয়ে দেশের যে কোন সংকটে সামনের সারিতে অবস্থান নিয়ে মানুষকে সংগঠিত করতেন, উৎসাহ যোগাতেন সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি জিয়াউদ্দিন তারিক আলীর।

গতকাল সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি, সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চের যুগ্ম সমন্বয়ক ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি সদ্য প্রয়াত জিয়াউদ্দিন তারিক আলীর মৃত্যুতে ভার্চুয়াল নাগরিক শোক সভায় বক্তারা এসব মন্তব্য করেন। সভা সঞ্চালনা করেন সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন প্রেসিডিয়াম সদস্য খুশী কবির। সভায় সারাদেশের নেতা-কর্মী ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিসহ সব শ্রেণী পেশার শতাধিক প্রতিনিধি ভার্চুয়াল শোক সভায় সক্রিয় ছিলেন।

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শোক সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, ঐক্য ন্যাপ সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি, সুলতানা কামাল, রামেন্দু মজুমদার প্রেসিডিয়াম সদস্য সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক- অসীম কুমার উকিল, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চের সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ তালুকদার, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এমএম আকাশ, নারী নেত্রী রোকেয়া কবির, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত, আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, এ্যারোমা দত্ত সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনে সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ প্রমুখ।

সভায় পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, আপাদমস্তক একজন খাঁটি বাঙালি খুঁজতে গেলে তারিক আলী ছিলেন প্রথম সারিতে। নিরবে সারাজীবন দেশ নিয়ে চিন্তা করেন তারিক আলী। তার ত্যাগ অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। কথায় কাজে কখনও তার জীবদ্দশায় অমিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই কঠিন সময়ে তারিক আলীদের চলে যাওয়া আমাদের ব্যথিত করে। বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে সদা জাগ্রত মানুষটি সারাজীবন সমাজের দরিদ্র, নিপীড়িত, সংখ্যালঘু, আদিবাসী ও নারী-শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠার কাজে নিবেদিত ছিলেন। কোন রাজনৈতিক দলের সরাসরি প্রতিনিধিত্ব না করলেও তিনি রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিষয়ে সচেতন ছিলেন। সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ, লুটেরাদের বিরুদ্ধে সদা সোচ্চার থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অগ্রসর করে নেয়ার একজন কা-ারি ছিলেন তিনি। তার চলে যাওয়া দেশের সংস্কৃতি ও সামাজিক অঙ্গনে শূন্যতা তৈরি করলো।

রাশেদ খান মেনন বলেন, বাংলাদেশটিকে ভালোবেসে যারা জীবনকে উৎসর্গ করেছেন তারা জাতির কাছে সদা শ্রদ্ধার পাত্র। এই সময়ে যেমনটি করে সন্ত্রাসবাদ, মাফিয়া, লুটেরা, ও ধর্মান্ধতাবাদের পৃষ্টপোষক রয়েছে তেমনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে প্রতিষ্ঠা ও শোষণ নিপীড়ন মুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্নে আমৃত্যু ত্যাগীদের সংখ্যাও এখনও কম নয়। তারিক আলী মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরীক্ষিত সৈনিক ছিলেন। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তিনি শ্রেণী বৈষম্য মুক্ত স্বদেশের পক্ষে লড়াই করে গেছেন। আজকে তার শূন্যতার স্থান পূরণীয় নয় বটে, তবে শোষণ ও নীতিহীনতার বিরুদ্ধে মানব মুক্তির লড়াইলে তারিক আলীর চেতনা আমাদের সাহস যোগাবে।

সুলতানা কামাল বলেন, তারিকের সঙ্গে আমার ছোট বেলা থেকেই বন্ধুত্ব ছিল। কিন্তু কাজের সম্পর্ক দিয়েই তা সুদৃঢ় ভীত পায়। সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের মাধ্যমে তা অন্যমাত্রায় স্থাপিত হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এমএম আকাশ বলেন, তার চলে যাওয়ার সংবাদ আমার কাছে আকাশ ভেঙে পড়ার অবস্থা হয়। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নির্মাণ করে তিনি অবিস্মরণীয় হয়ে থাবে। তার সারল্য ও সহজ সরল মেলামেশা আমাদের সবাইকে মুগ্ধ করে।

ড. নূর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, মুক্তিযুদ্ধকে সমুন্নত রাখার কাজে জাদুঘর প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি এই মানুষটি সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, সাম্প্রদায়িকতা জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চ, ছায়ানট, রবীন্দ্র সংগীত সম্মেলন পরিষদসহ প্রগতির ধারায় আমৃত্যু সক্রিয় ভূমিকা রেখে গেছেন। এতে বুঝা যায় তার পদচারণা সমাজের সর্বস্তরে ছিল। তিনি আজকে নেই তবে তারিক আলী আমাদের ইতিহাসের স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবেন। আমি তার আতœার শান্তি কামনার পাশাপাশি তার ত্যাগ ও আকাক্সক্ষার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার কাজকে অগ্রসর করার তাগিদ অনুভব করছি।

সভাপতির বক্তব্যে ডা. সারওয়ার আলী বলেন, ইতোমধ্যে করোনায় আমরা ড. আনিসুজ্জামান, কামাল লোহানী, জামিলুর রেজা চৌধুরী, তারিক আলীসহ দেশ-বিদেশের অসংখ্য গুণীজনদের হারিয়েছি। আমাদের সামনে এ সব গুণীজনদের স্বপ্নের অনেক কাজ রয়েছে। এই জটিল পরিস্থিতিতে আমাদের অগ্রসর করে নিতে হবে মুক্তিযুদ্ধের অমীমাংসিত অধ্যায় সমূহকে। নীতিনিষ্ঠতা, আন্তরিকতা ও একাগ্রচিত্তে প্রিয় স্বদেশকে সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত, জঙ্গিবাদ, লুটেরা ও শোষণমুক্ত দেখতে চেয়েছিলেন তারিক আলী, সেই কাজে আমাদের মনযোগী হতে হবে। আজ গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে আমি তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। তার শূন্যতা অপূরণীয় থাকবে আমাদের চিন্তা ও চেতনায়। তারিক আলীদের পথ অনুস্মরণ করে অগ্রসর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে যাব আমরা।

আরও খবর
সীমান্ত হত্যা বন্ধে বিএসএফের ফের প্রতিশ্রুতি
আ’লীগের সব পর্যায়ে কমিটিতে পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করতে হবে : কাদের
বাংলাদেশের খাদ্য ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বে রোল মডেল খাদ্যমন্ত্রী
বিআরটিএতে গাড়ি রেজিস্ট্রেশনের মহোৎসব
বিআরটিএতে গাড়ি রেজিস্ট্রেশনের মহোৎসব
আ’লীগের প্রস্তাবিত কমিটির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ
ঘর জমি কাজ হারিয়ে দিশেহারা মানুষ
যশোরে ৬টি অ্যাসেম্বল সেন্টার হচ্ছে
পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হামলা ও ছিনতাই অভিযোগ
দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী কুদ্দুস মোল্লার জীবন সংগ্রাম
নগরে অগ্নিদুর্ঘটনা সমাধানে সদিচ্ছার অভাব : বিআইপি
প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ৯ বছরে ৯ বিয়ে
দু’বোনকে হত্যা করা হয় ঘাতক রিফাত গ্রেফতার হত্যার কথা স্বীকার
হিলিতে ট্রেন লাইনচ্যুত

রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ৩০ মহররম ১৪৪২, ০২ আশ্বিন ১৪২৭

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের ভার্চুয়াল শোকসভা

বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় লড়াই করেন জিয়াউদ্দিন তারিক আলী

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |

দেশপ্রেমিক মানুষের দুষ্প্রাপ্যতা অসাম্প্রদায়িক স্বদেশ প্রতিষ্ঠার অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করবে। করোনার রাহুগ্রাসের মাঝে আমরা অনেক দেশপ্রেমিক গুণীজনকে হারিয়েছি। দীর্ঘ সময় থেকে দেশের রাজনীতিতে গণতন্ত্র, সংস্কৃতি ও সৃজনশীলতার চর্চা যথাযথ না হওয়ার ফলে সমাজে গ্রগতির চেতনার চিন্তকের সংখ্যা ক্ষীণতরের পথে। আমাদের অভিজ্ঞতা রাজনৈতিক কর্মকা-ের বাইরে সংস্কৃতি ও উদারতার চর্চার সমাজকর্মীরা দলে দলে মূলধারার রাজনীতিকে অগ্রসর করে নিতে উদ্যোগী হয়ে দেশের যে কোন সংকটে সামনের সারিতে অবস্থান নিয়ে মানুষকে সংগঠিত করতেন, উৎসাহ যোগাতেন সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি জিয়াউদ্দিন তারিক আলীর।

গতকাল সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি, সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চের যুগ্ম সমন্বয়ক ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি সদ্য প্রয়াত জিয়াউদ্দিন তারিক আলীর মৃত্যুতে ভার্চুয়াল নাগরিক শোক সভায় বক্তারা এসব মন্তব্য করেন। সভা সঞ্চালনা করেন সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন প্রেসিডিয়াম সদস্য খুশী কবির। সভায় সারাদেশের নেতা-কর্মী ও গণমাধ্যমের প্রতিনিধিসহ সব শ্রেণী পেশার শতাধিক প্রতিনিধি ভার্চুয়াল শোক সভায় সক্রিয় ছিলেন।

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত শোক সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, ঐক্য ন্যাপ সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি, সুলতানা কামাল, রামেন্দু মজুমদার প্রেসিডিয়াম সদস্য সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক- অসীম কুমার উকিল, সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চের সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ তালুকদার, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এমএম আকাশ, নারী নেত্রী রোকেয়া কবির, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত, আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, এ্যারোমা দত্ত সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনে সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ প্রমুখ।

সভায় পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, আপাদমস্তক একজন খাঁটি বাঙালি খুঁজতে গেলে তারিক আলী ছিলেন প্রথম সারিতে। নিরবে সারাজীবন দেশ নিয়ে চিন্তা করেন তারিক আলী। তার ত্যাগ অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে। কথায় কাজে কখনও তার জীবদ্দশায় অমিল খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই কঠিন সময়ে তারিক আলীদের চলে যাওয়া আমাদের ব্যথিত করে। বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে সদা জাগ্রত মানুষটি সারাজীবন সমাজের দরিদ্র, নিপীড়িত, সংখ্যালঘু, আদিবাসী ও নারী-শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠার কাজে নিবেদিত ছিলেন। কোন রাজনৈতিক দলের সরাসরি প্রতিনিধিত্ব না করলেও তিনি রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিষয়ে সচেতন ছিলেন। সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ, লুটেরাদের বিরুদ্ধে সদা সোচ্চার থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে অগ্রসর করে নেয়ার একজন কা-ারি ছিলেন তিনি। তার চলে যাওয়া দেশের সংস্কৃতি ও সামাজিক অঙ্গনে শূন্যতা তৈরি করলো।

রাশেদ খান মেনন বলেন, বাংলাদেশটিকে ভালোবেসে যারা জীবনকে উৎসর্গ করেছেন তারা জাতির কাছে সদা শ্রদ্ধার পাত্র। এই সময়ে যেমনটি করে সন্ত্রাসবাদ, মাফিয়া, লুটেরা, ও ধর্মান্ধতাবাদের পৃষ্টপোষক রয়েছে তেমনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে প্রতিষ্ঠা ও শোষণ নিপীড়ন মুক্ত বাংলাদেশের স্বপ্নে আমৃত্যু ত্যাগীদের সংখ্যাও এখনও কম নয়। তারিক আলী মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরীক্ষিত সৈনিক ছিলেন। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তিনি শ্রেণী বৈষম্য মুক্ত স্বদেশের পক্ষে লড়াই করে গেছেন। আজকে তার শূন্যতার স্থান পূরণীয় নয় বটে, তবে শোষণ ও নীতিহীনতার বিরুদ্ধে মানব মুক্তির লড়াইলে তারিক আলীর চেতনা আমাদের সাহস যোগাবে।

সুলতানা কামাল বলেন, তারিকের সঙ্গে আমার ছোট বেলা থেকেই বন্ধুত্ব ছিল। কিন্তু কাজের সম্পর্ক দিয়েই তা সুদৃঢ় ভীত পায়। সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের মাধ্যমে তা অন্যমাত্রায় স্থাপিত হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এমএম আকাশ বলেন, তার চলে যাওয়ার সংবাদ আমার কাছে আকাশ ভেঙে পড়ার অবস্থা হয়। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর নির্মাণ করে তিনি অবিস্মরণীয় হয়ে থাবে। তার সারল্য ও সহজ সরল মেলামেশা আমাদের সবাইকে মুগ্ধ করে।

ড. নূর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, মুক্তিযুদ্ধকে সমুন্নত রাখার কাজে জাদুঘর প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি এই মানুষটি সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, সাম্প্রদায়িকতা জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চ, ছায়ানট, রবীন্দ্র সংগীত সম্মেলন পরিষদসহ প্রগতির ধারায় আমৃত্যু সক্রিয় ভূমিকা রেখে গেছেন। এতে বুঝা যায় তার পদচারণা সমাজের সর্বস্তরে ছিল। তিনি আজকে নেই তবে তারিক আলী আমাদের ইতিহাসের স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবেন। আমি তার আতœার শান্তি কামনার পাশাপাশি তার ত্যাগ ও আকাক্সক্ষার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার কাজকে অগ্রসর করার তাগিদ অনুভব করছি।

সভাপতির বক্তব্যে ডা. সারওয়ার আলী বলেন, ইতোমধ্যে করোনায় আমরা ড. আনিসুজ্জামান, কামাল লোহানী, জামিলুর রেজা চৌধুরী, তারিক আলীসহ দেশ-বিদেশের অসংখ্য গুণীজনদের হারিয়েছি। আমাদের সামনে এ সব গুণীজনদের স্বপ্নের অনেক কাজ রয়েছে। এই জটিল পরিস্থিতিতে আমাদের অগ্রসর করে নিতে হবে মুক্তিযুদ্ধের অমীমাংসিত অধ্যায় সমূহকে। নীতিনিষ্ঠতা, আন্তরিকতা ও একাগ্রচিত্তে প্রিয় স্বদেশকে সাম্প্রদায়িকতা মুক্ত, জঙ্গিবাদ, লুটেরা ও শোষণমুক্ত দেখতে চেয়েছিলেন তারিক আলী, সেই কাজে আমাদের মনযোগী হতে হবে। আজ গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে আমি তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। তার শূন্যতা অপূরণীয় থাকবে আমাদের চিন্তা ও চেতনায়। তারিক আলীদের পথ অনুস্মরণ করে অগ্রসর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে যাব আমরা।