ঝালকাঠীর দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী কুদ্দুস মোল্লা বিগত ৩২ বছর ধরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নারিকেল সুপারি পেড়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। ঝালকাঠী শহরের কিফাইতনগর এলাকার কুদ্দুস মোল্লা ১১-১২ বছর বয়সে অজ্ঞাত জ¦রে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টিশক্তি হারালেও চরম দুর্ভোগেও কারও কাছে হাত পাতেননি। বেছে নেননি ভিক্ষাবৃত্তি।
দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে কয়েক বছর চরম অভাব অনটনে দিন কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত নিজের পায়ে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে বেছে নেন গাছ থেকে নারিকেল-সুপারি পেরে অর্থ উপার্জনের পেশা। ২০ বছর বয়সের তরুণ কুদ্দুস আশপাশের মানুষের নারিকেল-সুপারি পেরে দিয়ে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন। প্রথমদিকে অনেকেই তার জীবনের অনিশ্চয়তার কারণে তাকে দিয়ে নারিকেল-সুপারি পারাতে চাইতেন না। দৃঢ় মনোবল আর সততাকে পুঁজি করে কুদ্দুস মোল্লা ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সেই পেশাকেই আজও ধরে রেখেছেন। ২৫ বছর বয়সের সময় তিনি বিয়ে করে ঘর সংসারও শুরু করেন। একে একে ৩টি কন্যা সন্তান আসে তাদের সংসারে। তবে স্ত্রী ও সন্তানদের মুখ দেখার ভাগ্য হয়নি তার। অভাবের কারণেই সে তার কোন সন্তানকেই পড়াশোনাও করাতে পারেননি। কয়েক বছর আগে কুদ্দুস মোল্লার স্ত্রী মারা গেছেন। তবে শোকে কাতর না হয়ে তিনি তার নিজের পেশার পাশাপাশি কন্যাদেরকেও আগলে রেখেছেন। ইতোমধ্যে বড় মেয়ের বিয়েও দিয়েছেন।
এখন দুমেয়ে নিয়ে তার টানাপড়েনের সংসার। সংসার চালানোর সম্বল নিজের মেধা আর পরিশ্রমী শরীর। এখনও প্রতিদিন কুদ্দুস মোল্লা আশপাশের এলাকাসহ যেখানেই ডাক পড়ে সেখানেই ছুটে যান নারিকেল-সুপারি পাড়তে। ছোট মেয়েকে নিয়ে যান। তার দায়িত্ব হলো গাছ ধরিয়ে দেয়া। কুদ্দুস মোল্লা অবলীলায় উঠে যান গাছের ডগায়। পেড়ে আনেন নারিকেল-সুপারি। বিনিময়ে কেউ গাছপ্রতি ৫০ টাকা আবার কেউ ২-৩টি নারিকেল বা সমমূল্যের সুপারি দেন। তাতেই চলছে কুদ্দুস মোল্লার সংসার। কিন্তু তিনি এখনও ভিক্ষাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে বেছে নেননি বা কারো কাছে হাত পাতেননি।
ঝালকাঠী পৌরসভার মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার চেষ্টা করেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কুদ্দুস মোল্লার খোঁজখবর রাখতে। মেয়রের চেষ্টাতেই তিনি ইতোমধ্যে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর ভাতা লাভের তালিকাভুক্ত হয়েছেন। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কুদ্দুস মোল্লাকে মানবিক সহয়াতা প্রদানের জন্য ঝালকাঠির মেয়র প্রধানমন্ত্রীরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ৩০ মহররম ১৪৪২, ০২ আশ্বিন ১৪২৭
মানবেন্দ্র বটব্যাল, বরিশাল
ঝালকাঠীর দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী কুদ্দুস মোল্লা বিগত ৩২ বছর ধরে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নারিকেল সুপারি পেড়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন। ঝালকাঠী শহরের কিফাইতনগর এলাকার কুদ্দুস মোল্লা ১১-১২ বছর বয়সে অজ্ঞাত জ¦রে আক্রান্ত হয়ে দৃষ্টিশক্তি হারালেও চরম দুর্ভোগেও কারও কাছে হাত পাতেননি। বেছে নেননি ভিক্ষাবৃত্তি।
দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে কয়েক বছর চরম অভাব অনটনে দিন কাটিয়ে শেষ পর্যন্ত নিজের পায়ে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে বেছে নেন গাছ থেকে নারিকেল-সুপারি পেরে অর্থ উপার্জনের পেশা। ২০ বছর বয়সের তরুণ কুদ্দুস আশপাশের মানুষের নারিকেল-সুপারি পেরে দিয়ে জীবিকা নির্বাহ শুরু করেন। প্রথমদিকে অনেকেই তার জীবনের অনিশ্চয়তার কারণে তাকে দিয়ে নারিকেল-সুপারি পারাতে চাইতেন না। দৃঢ় মনোবল আর সততাকে পুঁজি করে কুদ্দুস মোল্লা ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সেই পেশাকেই আজও ধরে রেখেছেন। ২৫ বছর বয়সের সময় তিনি বিয়ে করে ঘর সংসারও শুরু করেন। একে একে ৩টি কন্যা সন্তান আসে তাদের সংসারে। তবে স্ত্রী ও সন্তানদের মুখ দেখার ভাগ্য হয়নি তার। অভাবের কারণেই সে তার কোন সন্তানকেই পড়াশোনাও করাতে পারেননি। কয়েক বছর আগে কুদ্দুস মোল্লার স্ত্রী মারা গেছেন। তবে শোকে কাতর না হয়ে তিনি তার নিজের পেশার পাশাপাশি কন্যাদেরকেও আগলে রেখেছেন। ইতোমধ্যে বড় মেয়ের বিয়েও দিয়েছেন।
এখন দুমেয়ে নিয়ে তার টানাপড়েনের সংসার। সংসার চালানোর সম্বল নিজের মেধা আর পরিশ্রমী শরীর। এখনও প্রতিদিন কুদ্দুস মোল্লা আশপাশের এলাকাসহ যেখানেই ডাক পড়ে সেখানেই ছুটে যান নারিকেল-সুপারি পাড়তে। ছোট মেয়েকে নিয়ে যান। তার দায়িত্ব হলো গাছ ধরিয়ে দেয়া। কুদ্দুস মোল্লা অবলীলায় উঠে যান গাছের ডগায়। পেড়ে আনেন নারিকেল-সুপারি। বিনিময়ে কেউ গাছপ্রতি ৫০ টাকা আবার কেউ ২-৩টি নারিকেল বা সমমূল্যের সুপারি দেন। তাতেই চলছে কুদ্দুস মোল্লার সংসার। কিন্তু তিনি এখনও ভিক্ষাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে বেছে নেননি বা কারো কাছে হাত পাতেননি।
ঝালকাঠী পৌরসভার মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার চেষ্টা করেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কুদ্দুস মোল্লার খোঁজখবর রাখতে। মেয়রের চেষ্টাতেই তিনি ইতোমধ্যে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর ভাতা লাভের তালিকাভুক্ত হয়েছেন। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী কুদ্দুস মোল্লাকে মানবিক সহয়াতা প্রদানের জন্য ঝালকাঠির মেয়র প্রধানমন্ত্রীরও দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।