দেশে নগরীতে অগ্নিকাণ্ডের সমস্যার সুনির্দিষ্ট সমাধানের পথ আগেই চিহ্নিত করা হয়েছে কিন্তু সরকারি সংস্থা ও রাজনৈতিক নেতাদের সদিচ্ছার অভাবে অগ্নিদুর্ঘটনা পুনরাবৃত্তি ঘটছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)। সংগঠনটি বলছে, গত কয়েক বছরে পুরনো ঢাকা কেন্দ্রিক কয়েকটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকশ মানুষ আগুনে পুড়ে মারা যায়। ঘটনাগুলো প্রায় একই রকমের ছিল। এরপরও মানুষ সচেতন হয়নি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পুরোনা ঢাকায় ফের অবৈধভাবে ক্যামিকেল ব্যবসা শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল বিআইপি আয়োজিত ওয়েবিনারে ‘নগরীতে অগ্নিঝুঁকি ও নিরাপত্তা’ শীর্ষক একটি কনফারেন্সে এই মত দেন বিআইপির নেতা ও নগর পরিকল্পনাবিদরা।
কনফারেন্সে সংগঠনটির নেতান্দরা বলেন, ‘নিমতলীর অগ্নিকাণ্ড, চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ড, এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ড এবং সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জের অগ্নিকাণ্ড। সবগুলো অগ্নিকাণ্ডই একই বৃত্তে ঘটে যাওয়া নতুন মোড়কে পুরোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি। কিন্তু এ প্রতিটি সমস্যার সুনির্দিষ্ট সমাধানের পথ আগেই চিহ্নিত করা হয়েছে। অথচ শুধুমাত্র আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় এসব নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। এ কাজটির জন্য যেটি বেশি প্রয়োজন সেই সদিচ্ছাটুকুই নেই সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর।’
অনলাইন কনফারেন্সে বিআইপি সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মুহাম্মদ খান প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সেখানে সমস্যার কারণ ও সমাধানের জন্য বেশ কিছু পরামর্শ তুলে ধরেন। এতে বলা হয়, অপরিকল্পিত নগরায়ন, ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনার অনুপস্থিতি, পরিকল্পনার মান গুলোর সীমিত অনুশীলন, অধিক জনঘনত্ব, প্রাকৃতিক জলাধার ও পুকুরের অভাব, ত্রুটিপূর্ণ বিল্ডিং কাঠামো, কাঠামোর অতি ঘন অবস্থান, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, পর্যাপ্ত আগুন সুরক্ষা এবং জরুরি প্রস্থানের বিধান ছাড়াই উচ্চতর ভবন নির্মাণ, অপর্যাপ্ত প্রবেশ-বাহির এবং ব্যবহার অনুপযোগী সরু রাস্তা, অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবই অগ্নি দুর্ঘটনার বড় কারণ।
অনুষ্ঠানে বিআইপির সভাপতি অধ্যাপক আকতার মাহমুদ বলেন, ‘২০১০ সালে নিমতলির অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরে তদন্ত কমিটি রাসায়নিক গুদামগুলোকে পুরান ঢাকা থেকে সরানোর পরামর্শ দিয়েছিল। তবুও এই ধারণাগুলো কেবল কাগজে রয়ে গেছে। পুরাতন বিল্ডিংগুলোতে সস্তা ভাড়া এবং কম রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের কারণে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং ব্যবসায়ী উভয়ই তা মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে। বিল্ডিংগুলো প্রায়শই বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে ব্যবহৃত হয় এবং সর্বাধিক সাম্প্রতিক সুরক্ষা কোডগুলো অনুসরণ করে নির্মিত হয় না।’ ফলে এগুলো প্রাকৃতিক বা অন্য যেকোন দুর্যোগের ক্ষেত্রে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বলেও জানান তিনি।
রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ৩০ মহররম ১৪৪২, ০২ আশ্বিন ১৪২৭
নিজস্ব বার্তা পরিবেশক |
দেশে নগরীতে অগ্নিকাণ্ডের সমস্যার সুনির্দিষ্ট সমাধানের পথ আগেই চিহ্নিত করা হয়েছে কিন্তু সরকারি সংস্থা ও রাজনৈতিক নেতাদের সদিচ্ছার অভাবে অগ্নিদুর্ঘটনা পুনরাবৃত্তি ঘটছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)। সংগঠনটি বলছে, গত কয়েক বছরে পুরনো ঢাকা কেন্দ্রিক কয়েকটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে কয়েকশ মানুষ আগুনে পুড়ে মারা যায়। ঘটনাগুলো প্রায় একই রকমের ছিল। এরপরও মানুষ সচেতন হয়নি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পুরোনা ঢাকায় ফের অবৈধভাবে ক্যামিকেল ব্যবসা শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা। গতকাল বিআইপি আয়োজিত ওয়েবিনারে ‘নগরীতে অগ্নিঝুঁকি ও নিরাপত্তা’ শীর্ষক একটি কনফারেন্সে এই মত দেন বিআইপির নেতা ও নগর পরিকল্পনাবিদরা।
কনফারেন্সে সংগঠনটির নেতান্দরা বলেন, ‘নিমতলীর অগ্নিকাণ্ড, চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ড, এফআর টাওয়ারে অগ্নিকাণ্ড এবং সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জের অগ্নিকাণ্ড। সবগুলো অগ্নিকাণ্ডই একই বৃত্তে ঘটে যাওয়া নতুন মোড়কে পুরোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি। কিন্তু এ প্রতিটি সমস্যার সুনির্দিষ্ট সমাধানের পথ আগেই চিহ্নিত করা হয়েছে। অথচ শুধুমাত্র আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকায় এসব নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। এ কাজটির জন্য যেটি বেশি প্রয়োজন সেই সদিচ্ছাটুকুই নেই সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর।’
অনলাইন কনফারেন্সে বিআইপি সাধারণ সম্পাদক ড. আদিল মুহাম্মদ খান প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সেখানে সমস্যার কারণ ও সমাধানের জন্য বেশ কিছু পরামর্শ তুলে ধরেন। এতে বলা হয়, অপরিকল্পিত নগরায়ন, ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনার অনুপস্থিতি, পরিকল্পনার মান গুলোর সীমিত অনুশীলন, অধিক জনঘনত্ব, প্রাকৃতিক জলাধার ও পুকুরের অভাব, ত্রুটিপূর্ণ বিল্ডিং কাঠামো, কাঠামোর অতি ঘন অবস্থান, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, পর্যাপ্ত আগুন সুরক্ষা এবং জরুরি প্রস্থানের বিধান ছাড়াই উচ্চতর ভবন নির্মাণ, অপর্যাপ্ত প্রবেশ-বাহির এবং ব্যবহার অনুপযোগী সরু রাস্তা, অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থার অভাবই অগ্নি দুর্ঘটনার বড় কারণ।
অনুষ্ঠানে বিআইপির সভাপতি অধ্যাপক আকতার মাহমুদ বলেন, ‘২০১০ সালে নিমতলির অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরে তদন্ত কমিটি রাসায়নিক গুদামগুলোকে পুরান ঢাকা থেকে সরানোর পরামর্শ দিয়েছিল। তবুও এই ধারণাগুলো কেবল কাগজে রয়ে গেছে। পুরাতন বিল্ডিংগুলোতে সস্তা ভাড়া এবং কম রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের কারণে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং ব্যবসায়ী উভয়ই তা মেনে চলতে ব্যর্থ হয়েছে। বিল্ডিংগুলো প্রায়শই বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে অবৈধভাবে ব্যবহৃত হয় এবং সর্বাধিক সাম্প্রতিক সুরক্ষা কোডগুলো অনুসরণ করে নির্মিত হয় না।’ ফলে এগুলো প্রাকৃতিক বা অন্য যেকোন দুর্যোগের ক্ষেত্রে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ বলেও জানান তিনি।