মিঠাপুকুরে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলাকারী আওয়ামী লীগ নেতা ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

সম্প্রতি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার জায়গীরহাট ঈদুলপুর এলাকায় শত বছর ধরে বসবাস করা ১২টি হিন্দু পরিবারকে উচ্ছেদ করে পুরো জায়গা দখল করার অপচেষ্টায় বাধা দেয়ায় আওয়ামী লীগ নেতার নেতৃত্বে তার দলবলের হামলায় নারীসহ ১০ জন আহত হয়েছেন বলে গত মঙ্গলবার সংবাদে সচিত্র খবর প্রকাশিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা এ ঘটনায় কলেজছাত্রীর গলা টিপে হত্যার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হলেও পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার তো করছেই না উল্টো আসামিরা সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারগুলোর বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়ে তাদের হত্যা করার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, শত বছর ধরে ১২টি হিন্দু পরিবার মিঠাপুকুর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের জায়গীরহাট ঈদুলপুর গ্রামে সরকারের ১৮ শতক জমিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছে। বেশ কিছুদিন ধরে ওই স্থানে বসবাসকারী ১২টি হিন্দু পরিবারকে সেখান থেকে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তোজাম্মেল হোসেন ও তার লোকজন। এ ঘটনায় হামলার শিকার রহত মোহন্ত বাদী হয়ে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ প্রথমে মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে পরদিন শনিবার বিকেলে পুলিশ মামলা রেকর্ড করে।

মামলা করার পরও পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করার কোন পদক্ষেপ নেয়নি। অন্যদিকে মামলা করার পর আওয়ামী লীগ নেতা তোজাম্মেল হোসেন প্রকাশ্যেই তাদের এলাকা থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি প্রদান করছে।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনার খবর প্রায়ই পত্রিকায় আসে। তাদের বাড়িঘর, উপাসনালয় জ্বালিয়ে দেয়া এবং তাদের সম্পত্তি বেদখল করে তাদের নিঃস্ব করে দেয়া হয়। আর এসব অপকর্মের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও পুলিশ। কোন আমলেই কোন সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। বরং দলীয় নেতাকর্মীরা তাদের ওপর নির্যাতন, সম্পত্তি ও বসতভিটা দখল করে অন্যত্র চলে যাওয়ার হুমকি প্রদান করে। বেশিরভাগ সময়ই এসব দলীয় নেতাকর্মীকে মদত দিয়েছে পুলিশ। এ সরকার ক্ষমতার আসার পর সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও সেটা আর বাস্তবায়ন করতে পারেনি বা করার চেষ্টাও করেনি।

দেশে নিত্যদিনই সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ঘটছে। এর সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা বেশি জড়িত। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই নেয়া হয় না। কিন্তু সরকার তো অসাম্প্রদায়িক। এভাবে চলতে থাকলে সংখ্যালঘুরা নিরাপত্তাহীনতায় তো ভুগবেই সেই সঙ্গে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হবে। যেটা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করবে। এবং সরকারের ভাবমূর্তিও প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

মিঠাপুকুর উপজেলার ঈদুলপুর গ্রামের এ ১২টি হিন্দু পরিবারের ওপর হামলা করার দায়ে অভিযুক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি তোজাম্মেল হক ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই সঙ্গে হিন্দু পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন করে নিরাপত্তা দিতে হবে প্রশাসনকে।

রবিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ , ৩০ মহররম ১৪৪২, ০২ আশ্বিন ১৪২৭

মিঠাপুকুরে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলাকারী আওয়ামী লীগ নেতা ও সহযোগীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিন

সম্প্রতি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার জায়গীরহাট ঈদুলপুর এলাকায় শত বছর ধরে বসবাস করা ১২টি হিন্দু পরিবারকে উচ্ছেদ করে পুরো জায়গা দখল করার অপচেষ্টায় বাধা দেয়ায় আওয়ামী লীগ নেতার নেতৃত্বে তার দলবলের হামলায় নারীসহ ১০ জন আহত হয়েছেন বলে গত মঙ্গলবার সংবাদে সচিত্র খবর প্রকাশিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা এ ঘটনায় কলেজছাত্রীর গলা টিপে হত্যার চেষ্টা করে। এ ঘটনায় থানায় মামলা করা হলেও পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার তো করছেই না উল্টো আসামিরা সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারগুলোর বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়ে তাদের হত্যা করার হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, শত বছর ধরে ১২টি হিন্দু পরিবার মিঠাপুকুর উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের জায়গীরহাট ঈদুলপুর গ্রামে সরকারের ১৮ শতক জমিতে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করে আসছে। বেশ কিছুদিন ধরে ওই স্থানে বসবাসকারী ১২টি হিন্দু পরিবারকে সেখান থেকে অন্যত্র চলে যাওয়ার জন্য নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তোজাম্মেল হোসেন ও তার লোকজন। এ ঘটনায় হামলার শিকার রহত মোহন্ত বাদী হয়ে থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ প্রথমে মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে পরদিন শনিবার বিকেলে পুলিশ মামলা রেকর্ড করে।

মামলা করার পরও পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার করার কোন পদক্ষেপ নেয়নি। অন্যদিকে মামলা করার পর আওয়ামী লীগ নেতা তোজাম্মেল হোসেন প্রকাশ্যেই তাদের এলাকা থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি প্রদান করছে।

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনার খবর প্রায়ই পত্রিকায় আসে। তাদের বাড়িঘর, উপাসনালয় জ্বালিয়ে দেয়া এবং তাদের সম্পত্তি বেদখল করে তাদের নিঃস্ব করে দেয়া হয়। আর এসব অপকর্মের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও পুলিশ। কোন আমলেই কোন সরকার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। বরং দলীয় নেতাকর্মীরা তাদের ওপর নির্যাতন, সম্পত্তি ও বসতভিটা দখল করে অন্যত্র চলে যাওয়ার হুমকি প্রদান করে। বেশিরভাগ সময়ই এসব দলীয় নেতাকর্মীকে মদত দিয়েছে পুলিশ। এ সরকার ক্ষমতার আসার পর সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও সেটা আর বাস্তবায়ন করতে পারেনি বা করার চেষ্টাও করেনি।

দেশে নিত্যদিনই সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ঘটছে। এর সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা বেশি জড়িত। অপরাধীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থাই নেয়া হয় না। কিন্তু সরকার তো অসাম্প্রদায়িক। এভাবে চলতে থাকলে সংখ্যালঘুরা নিরাপত্তাহীনতায় তো ভুগবেই সেই সঙ্গে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হবে। যেটা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করবে। এবং সরকারের ভাবমূর্তিও প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

মিঠাপুকুর উপজেলার ঈদুলপুর গ্রামের এ ১২টি হিন্দু পরিবারের ওপর হামলা করার দায়ে অভিযুক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি তোজাম্মেল হক ও তার সহযোগীদের গ্রেফতার করে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই সঙ্গে হিন্দু পরিবারগুলোকে পুনর্বাসন করে নিরাপত্তা দিতে হবে প্রশাসনকে।